হরির চরণ ব্রত
ব্রতকাল ও ব্রতচারিণী—বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে কুমারী হরির চরণ ব্রত নিয়ে সারা মাস ব্রতপালন করবে। এইভাবে চার বৎসর ব্রত করার পর হবে ব্রত উদযাপন। উদযাপনের সময় সোনা, রূপা আর তামার তিন জোড়া চরণ গড়িয়ে পুজো করতে হবে। তারপর তিনজন ব্রাহ্মণকে খাইয়ে তাঁদের প্রত্যেককে কাপড় আর গামছা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরণ কয় জোড়াও (অভাবে কাঞ্চন-মূল্য) দান করবে।
ব্রত-দ্রব্য: তামার টাট একখানি, শ্বেত চন্দন, ধান, দূর্বা আর ফুল।
ব্রতানুষ্ঠান: তামার টাটে বেশ ভালো করে চন্দন মাখিয়ে আঙুল দিয়ে দুখানি চরণ (পা) আঁকবে। তারপর বুড়ো আঙুল আর মাঝের আঙুল দিয়ে ফুল, দূর্বা, আর ধান ধরে মন্ত্রপাঠ করে সেসব সেই চরণ দুখানির উপর দেবে। কেউ কেউ আবার বুড়ো আঙুল, তার পরের আঙুল (তর্জনী), আর মাঝের আঙুল (মধ্যমা) দিয়ে মল্লিকা ফুল—অভাবে তুলসী পাতা ধরে মন্ত্রপাঠের পর তা চরণ দুখানিতে দিয়ে থাকে। তিনবার মন্ত্র পড়ে তিনবার এইভাবে পুজো করতে হয়।
মন্ত্র:
চন্দনে ডুবু ডুবু হরির পা।
হরি বলেন—মা গো মা।
আজ কেন আমার শীতল পা।।
মা বলেন—
কোন সতী ভাগ্যবতী
সেই পূজেছেন তোমার পা।।
সে কি বর চায়—
আপনাকে সুন্দর চায়, রাজরাজেশ্বর স্বামী চায়।
গুণবতী ঝি চায়, সভা-উজ্জ্বল জামাই চায়।।
অমর বরপুত্র চায়, গিরিরাজ বাপ চায়।
মেনকার মতো মা চায়, দুর্গার মতো আদর চায়।।
রামের মতো পতি,
সীতার মতো সতী,
আলনা-ভরা কাপড়, মরাই-ভরা ধান,
গোয়াল-ভরা গোরু, পাল-ভরা মোষ,
পায়ে আলতা মুখে পান,
পট্টবস্ত্র পরিধান।।
সূক্ষ্ম মল্লিকার ফুলে পূজব হরি গঙ্গাজলে,
থাকব হরির চরণতলে।।
উযোতে পারি তো ইন্দ্রের শচী,
না পারি তো শ্রীকৃষ্ণের দাসী।।
স্বামীর কোলে পুত্র দোলে,
মরণ হয় যেন একগলা গঙ্গাজলে।।
হরির চরণ ব্রত সমাপ্ত।