ক্রমে স্পষ্ট হয় সব । কে সিংহ, কুকুর, হাতি, সার্কাসের ঘোড়া ;
কে টিয়া, চন্দনা, কংবা হাঙর কুমির ;
বঙ্গোপসাগর থেকে উঠে এসে কলকাতার ভীড়
ঠেলে কে সাঁতার কাটে ; কে ধর্মতলায়
পাঞ্জাবির হাতা নেড়ে উড়ে যেতে চায়
হঠাত্ আকাশে । যেন একে একে সবগুলি অভ্যাসের ফোড়া
ফেটে গেলে ঠিক
বিকেলে তিন পা হেঁটে চিনে নেওয়া যায়
কে ব্যাঘ্র, বিড়াল, হাঁস, ঝুঁটি-কাকাতুয়া ;
এবং কে শাশ্বত নাবিক ।
ক্রমে স্পষ্ট হয় সব । সব কিছু জানা গেল, এমন ধারণা
নিয়ে ঘরে ফিরে গিয়ে ঘুমোনো সহজ হয়, আর
ঘুমের একটু আগে মনে হয়, দারুণ বাহার
খুলেছে রাস্তায়-ঘাটে । সবগুলি ফোড়া
ফাটিয়ে গণ্ডার, বাঘ, সার্কাসের ঘোড়া
ছুটে যায় । মনে হয় ভিড়ের ভিতরে কেউ “হুশ্”
ব’লে উঠেছিল ; তাই ডানা ঝপটিয়ে
নিখিল শূণ্যের দিকে উড়ে চ’লে গেল
কয়েকটি সুন্দর মানুষ ।
আজ এই পৃথিবীর অন্ধকারে মানুষের হৃদয়ে বিশ্বাস
কেবলই শিথিল হয়ে যায়; তবু তুমি
সেই শিথিলতা নও, জানি, তবু ইতিহাসরীতিপ্রতিভার
মুখোমুখি আবছায়া দেয়ালের মতো নীল আকাশের দিকে
ঊর্ধ্বে উঠে যেতে চেয়ে তুমি
আমাদের দেশে কোণো বিশ্বাসের দীর্ঘ তরু নও।
অসাধারণ লিখুনী।