সাত
একই দিনে সকাল এগারোটায় পশ্চিম হাইল্যাণ্ড লাইনের ছোট্ট স্পিয়ান ব্রিজ রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে একজন যাত্রী পেল স্থানীয় এক ট্যাক্সি ড্রাইভার। লোকটা মাত্র নেমেছে রেলগাড়ি থেকে। বয়স্ক ও হালকা-পাতলা। মাথায় কদমছাঁট চুল। খোঁচা-খোঁচা ধূসর দাড়ি। লোকটাকে দেখলেই মনে হয় আগে আর্মিতে ছিল সে। তার গন্তব্য কয়েক মাইল দূরের কিনলোকার্ড গ্রাম। নিজেই ট্যাক্সির বুটে রাখল ট্র্যাভেল ব্যাগ। এরপর চেপে বসল পেছন সিটে। বহু বছর ট্যাক্সি চালিয়ে মানুষ চেনার অদ্ভুত ক্ষমতা অর্জন করেছে ড্রাইভার। তার মনে হলো, একসময়ে এই লোক ছিল দুর্ধর্ষ কোনও যোদ্ধা। খুব লম্বা নয়। আকারেও বড় নয়। তবে ইস্পাতের মত কঠিন কী যেন আছে লোকটার ভেতর। হুমকি দিচ্ছে না কাউকে। অশুভ কিছু নেই আচরণে। তবে প্রৌঢ় বড়বেশি চুপচাপ। তার চারপাশে বিরাজ করছে নীরব, শান্ত এক থমথমে পরিবেশ। সেই পরিবেশ বিনষ্ট করা হলে বিপদ হবে যে- কারও। সে বোধহয় গ্লাসগো বা ওদিকের মানুষ। গত কয়েক বছর ছিল গ্রিস বা স্পেনের মত উষ্ণ কোনও দেশে। ধূসর চোখের ভারী পাতা প্রায় ঢেকে রেখেছে মণিদুটোকে। যদিও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে চারপাশের সবকিছু। সাঁই-সাঁই করে পেছনে পড়ছে উত্তর-পশ্চিমের পিচঢালা পথ। ওদিকে চেয়ে আছে সে।
‘মনে হচ্ছে আপনি এদিকের নন,’ আলাপের ভঙ্গিতে বলল ট্যাক্সি ড্রাইভার।
রিয়ারভিউ মিররে তাকে নিরিখ করল ধূসর চোখদুটো। এক কথায় বলল প্রৌঢ়, ‘না।’
‘কারও সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন? আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন কিনলোকার্ড গ্রামে?’
জবাবে মাথা দোলাল প্যাসেঞ্জার। একেবারেই আলাপী নয়। তবে হাল ছাড়ল না ট্যাক্সি ড্রাইভার। ‘আমার নাম টম। টম ম্যাকলিন। আমি থাকি কেয়ারলোচিতে।’
‘আমি বেন হ্যানন,’ নিচু গলায় বলল প্যাসেঞ্জার।
‘পরিচিত হয়ে খুশি হলাম। কোথাও বেড়াতে চাইলে আমাকে ফোন দেবেন, ঠিক আছে?’ পকেট থেকে বিজনেস কার্ড নিয়ে কাঁধের ওপর দিয়ে প্যাসেঞ্জারের দিকে বাড়িয়ে দিল ট্যাক্সি ড্রাইভার।
‘বেশ,’ কার্ডটা নিল বেন হ্যানন। গাড়ির ভেতর আবারও নামল নীরবতা। কিছুক্ষণ পর কিনলোকার্ড গ্রামে পৌঁছে গেল ট্যাক্সি। ঠিকানা জানাল প্যাসেঞ্জার। বাড়ির নম্বর দেখে ছোট এক বাড়ির সামনে থামল ট্যাক্সি ড্রাইভার। গাড়ি থেকে নেমে বুট খুলে নিজের ব্যাগ নিল বেন হ্যানন। চুপচাপ মিটিয়ে দিল ভাড়া। কথা না বাড়িয়ে ট্যাক্সি নিয়ে রওনা হয়ে গেল ড্রাইভার। গ্রামের ফাঁকা রাস্তার দু’দিক দেখে নিয়ে বেন হ্যানন ভাবল, গত এক শতাব্দীতে কিছুই বদলে যায়নি এই গ্রামে। মনে পড়ল ছেলেবেলার স্মৃতি। দূরে কুয়াশামাখা ছোট-বড় নীরব পাহাড়ের সারি। কনকনে শীতের সকালে বাড়িগুলোর চিমনি থেকে ভেসে আসছে কাঠপোড়া ধোঁয়ার অদ্ভুত মায়াবী সুবাস।
ফোনে বাড়ির ঠিকানা জানিয়ে দিয়েছে ভাতিজা পিটার। কাগজটা আরেকবার দেখল বেন হ্যানন। হ্যাঁ, এটাই প্যাট্রিক স্ট্রিটের নয় নম্বর বাড়ি। সামনেই ধূসর পাথরের টেরেস। ইতালিতে ওর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে তৈরি করা খামারবাড়িটার সঙ্গে এটার কোনও মিল নেই। তাতে খুশিই হলো হ্যানন। অর্থনৈতিকভাবে ভাল করছে ওর ভাতিজা। ছোটবেলায় বড় কষ্টে কাটাতে হয়েছে পিটারকে। মরে গেল ওর মা। তার মাত্র চার-পাঁচ বছর পর পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিল বাবা। তখন বাবা-মার ভূমিকায় নামল বেন নিজে। প্রতিদিন ভাবত ভাই আর ভাবীর কথা। কখনও কাউকে না বললেও বারবার মনে হতো, বাচ্চাটার অভিভাবক হিসেবে মোটেই ভাল করছে না সে। তারপর ধীরে ধীরে আর্মি ক্যাম্পে বড় হয়ে উঠল পিটার। লেখাপড়া শেষ করে জানাল ব্যবসা করবে। বেন নিজের জমিয়ে রাখা টাকা দিতে চাইলেও নিল না। ওর বাবার রেখে যাওয়া সামান্য টাকা নিয়ে নেমে পড়ল ব্যবসায়। এরপর দায়দায়িত্ব কমে গেল বেনের। আর্মি থেকে অবসর নেয়ার পর ইতালিতে ঘুরতে গিয়ে পরিচিত হলো মিরাণ্ডা লভেঞ্জোর সঙ্গে। পরিচয় থেকে দু’জনের প্রেম, তারপর বিয়ে। বেন হ্যানন রয়ে গেল ইতালিতে। স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তুলল ছোট্ট একটা খামার। গত দু’বছরে পিটারের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। তবে গতকাল ভাতিজা ফোনে বলেছে, বিপদে আছে সে। আর সেজন্যেই আজ এখানে হাজির হয়েছে বেন হ্যানন। সদর দরজার পাশে ডোরবেল দেখে ওটা টিপে হাসি- হাসি মুখে অপেক্ষায় থাকল সে। বহুদিন পর আবারও দেখা হচ্ছে চাচা-ভাতিজার।
কয়েক মিনিট পেরিয়ে গেলেও ভেতর থেকে দরজা খুলল না কেউ। আরও কয়েকবার বেল বাজাল বেন। একটু পর বুঝে গেল বাড়িতে কেউ নেই। তার চোখ পড়ল বাড়ির সামনের উঠানে। পার্কিং স্পেসে গাড়ি নেই। বোধহয় জরুরি কোনও কাজে গেছে পিটার। অথচ, আগে যে কথা হয়েছে, তাতে তো ওর থাকার কথা বাড়িতেই! একটু বিরক্ত হলো বেন। রেলস্টেশনের পে-ফোন থেকে কল দিয়ে ভেবেছিল ওখান থেকে ওকে গাড়িতে তুলে নেবে পিটার। কিন্তু কয়েকবার ফোনের পরেও কল রিসিভ করেনি ছেলেটা। তখন পিটারের মনে হলো, এই যে জীবনেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করবে না বলে শপথ নিয়েছিল, সেটা হয়তো ভাল করেনি সে। আজ ওটা থাকলে পিটারের সঙ্গে কথা বলতে পারত।
অবশ্য যা করার তো করেই ফেলেছে। তাই আরেকবার পুরনো শপথ ঝালিয়ে নিল, কখনও কিনবে না বিরক্তিকর যন্ত্রটা। ক্রমেই উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জিনিসটা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। এখন আর মাথাটা তেমন চলতে চায় না।
আনমনে এসব ভাবছে বেন, এমনসময় ওপরে কাঁচের জানালার কবাট তোলার সর-সর আওয়াজ শুনতে পেল। দরজা থেকে পিছিয়ে তাকাতেই দেখল, পাশের বাড়ির দোতলার জানালায় এসে দাঁড়িয়েছেন কোঁকড়া সাদা চুলের এক বৃদ্ধা।
‘এক্সকিউয মি, আপনি কি পিটার হ্যাননকে খুঁজছেন?’ জানতে চাইলেন বৃদ্ধা।
মাথা দোলাল বেন। ‘আমি ওর চাচা।’
‘পোলিস আগেই ঘুরে গেছে,’ স্কটিশ উচ্চারণে পুলিশের আগমনের কথা জানালেন মহিলা।
ভুরু কুঁচকে গেল বেনের। ‘পুলিশ? ওরা এখানে এসেছিল কেন?’ আনমনে ভাবল, আগেই না পিটারকে বলেছি, এখনই যেন পুলিশের কাছে না যায়?
বৃদ্ধার পরের কথা শুনে হতবাক হলো বেন।
‘আই, পিটার খুব আহত। ওকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফোর্ট উইলিয়ামের হাসপাতালে।’
‘আহত? কী হয়েছে ওর?’
দুঃখ নিয়ে মাথা নাড়লেন বৃদ্ধা। ‘জানি না তো! তবে মনে হলো খুব গুরুতর কিছু। ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে আজ সকালেই। আপনি বরং হাসপাতালে চলে যান।’
বেনের মাথায় বাজ পড়লেও দৃশ্যত কোনও পরিবর্তন এল না ওর চেহারায়। পকেট থেকে ট্যাক্সি ড্রাইভারের বিজনেস কার্ড নিয়ে মহিলার কাছে জানতে চাইল, ‘ফোনটা একবার ব্যবহার করলে আপনার আপত্তি আছে?’
.
একঘণ্টা পর একই দিনে দ্বিতীয়বারের মত ড্রাইভার টম ম্যাকলিনের ট্যাক্সি ক্যাব থেকে বেরিয়ে এল বেন। সামনেই ফোর্ট উইলিয়াম বেলফোর্ড হাসপাতালের চওড়া সিঁড়ি। কাঁচের দরজা ঠেলে রিসেপশন এরিয়ায় ঢুকে সামনের ডেস্কে গিয়ে দাঁড়াল বেন। ‘আজই ভর্তি হয়েছে পিটার হ্যানন। বলুন তো সে কোথায় আছে?’
‘আপনি কি তাঁর আত্মীয়?’
‘আমি তার আপন চাচা,’ বলল বেন হ্যানন, ‘ও কি গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে? এখন কেমন আছে?’
‘দয়া করে ওদিকের চেয়ারে বসুন, মিস্টার হ্যানন। একটু পর কেউ একজন এসে আপনার সঙ্গে কথা বলবেন।’
এখন বসতে পারবে না বেন। চেয়ারগুলোর সামনে পায়চারি করতে লাগল। ধীরে ধীরে পেরিয়ে গেল আট মিনিট, তারপর একটু দূরের করিডোরের দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন ক্লান্ত চেহারার এক মহিলা ডাক্তার, পরনে সার্জনের পাতলা নীল অ্যাপ্রন। অন্যদিকে যাওয়ার আগেই তাঁর দিকে ছুটে গেল রিসেপশন ডেস্কের মেয়েটি। নিচু গলায় কী যেন বলল। আঙুল তুলে দেখাল বেন হ্যাননকে।
বেনকেই দেখছেন মহিলা ডাক্তার। চেহারায় আষাঢ়ের ঝড়ের কালো মেঘ। বেন বুঝে গেল, আর যাই হোক, ভাল কোনও সংবাদ দেবেন না ওই মহিলা।
ধীর পায়ে তার সামনে এসে থামলেন ডাক্তার। সোনালি চুল খাটো বেণি করা। ইউনিফর্মের বুকের প্লেটে লেখা: ডক্টর লরেন, হেড সার্জন। তিনি কিছু বলার আগেই জানতে চাইল বেন, ‘বলুন তো, আমার ভাতিজা কি মারা গেছে?’
‘না, এখনও বেঁচে আছে,’ শুকনো গলায় বললেন ডাক্তার লরেন। পরের কথাগুলো শুনতে শুনতে দাঁতে দাঁত পিষল বেন। মুঠো হলো দু’হাত। ‘পিটার হ্যাননের এপিডিউরাল হেমাটোমা হয়েছে, ফেটে গেছে চিকবোন, ভেঙে গেছে নিচের চোয়াল, দুই কলারবোন, এ ছাড়া ডানহাতে তৈরি হয়েছে কম্পাউণ্ড ফ্র্যাকচার, বাম পায়ে আরেকটা, এদিকে খুলে গেছে কাঁধের হাত। ভয়ঙ্করভাবে ছেঁচে গেছে মুখ-হাত-পায়ের ত্বক ও পেশি। রোগীর কপাল ভাল যে সে স্বাস্থ্যবান যুবক। নইলে হাল ছেড়ে দিতাম। সাধারণ মানুষ এত নির্যাতনের পর বাঁচতে পারে না।’
পিটারের কাছে রবার্টের মৃত্যুর খবর পেয়েছে বেন। আর এখন এই ভয়াবহ দুঃসংবাদ। শীতল ক্রোধে জ্বলছে ওর হৃৎপিণ্ড। ডাক্তার জানালেন, সকালে স্থানীয় এক মহিলা গাড়ি নিয়ে তাঁর বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল, সেই সময় লকের ধারে ওই পথে পিটারকে গুরুতর আহত অবস্থায় পায়। বরফের মত ঠাণ্ডা বৃষ্টির ভেতর পড়ে ছিল অচেতন যুবক। ওই মহিলা দেরি না করে ৯৯৯ নম্বরে কল করে। আগে সে ছিল নার্স। রোগীর পাল্স্ পরীক্ষা করে বুঝে গিয়েছিল এবার কী করতে হবে। সে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিলে বাঁচত না পিটার হ্যানন।
গ্রামের মানুষ ভেবেছিল, সদ্যমৃত রবার্টের মতই মারাত্মক কোনও দুর্ঘটনায় পড়েছে পিটার। এবার ব্যাখ্যা করে বললেন ডাক্তার লরেন, ‘হাসপাতালে আনলে আমরাও প্রথমে তা-ই ভেবেছি। কিন্তু জখম পরীক্ষা করতে গিয়ে বুঝলাম, ওটা গাড়ি দুর্ঘটনা নয়। যেহেতু বেধড়ক পেটানো হয়েছে, তাই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি। তারা এবার তদন্ত করবে।’
‘তাই করবে, না?’ শুকনো গলায় বলল বেন হ্যানন।
‘আমার ধারণা, অন্তত দু’জন মিলে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে আহত করেছে পিটার হ্যাননকে,’ বললেন ডাক্তার লরেন। ‘আক্রমণকারী সংখ্যায় আরও বেশিও হতে পারে। তাদের কাছে ছিল বেসবল-ব্যাটের মত শক্ত কিছু।’ ধীরে ধীরে মাথা নাড়লেন সার্জন লরেন। ‘আগে কখনও কাউকে এভাবে জখম হতে দেখিনি। ভয়াবহভাবে পিটিয়ে অসহায় একজন যুবককে ফেলে গেছে মৃত্যুর জন্যে।
আগুন জ্বলছে বেন হ্যাননের হৃৎপিণ্ডে। চুপ করে আছে সে। কয়েক মুহূর্ত পর জানতে চাইল, ‘পিটার কি বাঁচবে?’
‘কমপ্লেক্স নিউরোসার্জারির ফ্যাসিলিটি এই হাসপাতালে নেই, তাই খুলি কেটে ট্রেপ্যান করেছি। বলা কঠিন…’
‘জানি ট্রেপ্যানেশন কী,’ শুকনো গলায় বলল বেন। বহু বছর আগে আফ্রিকায় একটি লড়াইয়ে এসএএস বাহিনীর আহত এক সৈনিকের খুলিতে নিজেই ড্রিল করেছিল ও। নইলে চাপ কমত না মগজের ওপর থেকে। সেই মানুষটা আজও বেঁচে থাকলেও ওর জীবনটা মৃত্যুর মতই দুঃসহ আর করুণ।
হাতঘড়ি দেখলেন ডাক্তার লরেন। ‘একঘণ্টার বেশি হলো অপারেশন হয়েছে। রোগী আছে ইনটেনসিভ কেয়ারে। আপাতত শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে জ্ঞান ফিরলে তখন বোঝা যাবে আসলে কেমন আছে। বেশি দুশ্চিন্তা করছি মগজের অপারেশনটার জন্যে। তার কোমা হতে পারে একঘণ্টার, আবার হতে পারে একদিন, একসপ্তাহ কিংবা মাসের পর মাসব্যাপী। ‘
‘অথবা হয়তো জ্ঞানই ফিরল না।’
‘সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না। সেক্ষেত্রে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে আপনাকে।’
‘ওর বাঁচার সম্ভাবনা এক শ’ ভাগের কত ভাগ?’
‘হিসেব কষে বলার উপায় নেই, মিস্টার হ্যানন। যে কোনও কিছু ঘটে যেতে পারে।’
‘আপনি অসত্য বলছেন না বলে ধন্যবাদ, ডক্টর লরেন,’ গম্ভীর কণ্ঠে বলল বেন।
‘এই ধরনের বাজে পরিস্থিতি হলে সবসময় রোগীর আত্মীয়-স্বজনদেরকে জানানো হয়। তবে পিটারের কোনও আত্মীয়কে আমরা খুঁজে পাইনি।’
‘আমিই পিটারের একমাত্র আত্মীয়,’ বলল বেন। ‘ডক্টর, আমি কি ওকে একবার দেখতে পারি? মাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্যে?’
দ্বিধা করলেন ডাক্তার। ‘ওকে দেখে হয়তো মন ভেঙে যাবে আপনার। ‘
ডক্টর লরেন জানেন না, তারুণ্যে আর্মিতে যোগ দেয়ার পর থেকে কত ধরনের কত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মাঝ দিয়ে গেছে বেন হ্যানন। শুকনো গলায় বলল সে, ‘তবুও একনজর দেখব আমার ভাতিজাকে।’
‘তবে একমিনিটের বেশি নয়। আসুন আমার সঙ্গে।’