বাইশ
ফোর্ট উইলিয়ামের পুলিশ স্টেশন।
সরু এক ফাইল সামনে নিয়ে ডেস্কে বসে আছে জেসিকা থমসন। মনোযোগ নেই ওটার দিকে। ভাবছে: মাসুদ রানার সঙ্গে কাটিয়ে দেয়া কয়েকটি মুহূর্তের কথা। এরই ভেতর বুঝে গেছে, অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে পারবে ভিনদেশি যুবককে। কখনও কাউকে ঠকাবে না সে। তবে মুক্তবিহঙ্গের মত উন্মুক্ত মানুষটা— জড়াবে না সে সংসারের বাঁধনে। ভাবনাটা মনে আসতেই আনমনে নিজেকে প্রশ্ন করল জেসিকা: তুমি কি বাঁধতে চাও ওকে? কয়েক মুহূর্ত পর জবাব দিল ওর মন: বনের পাখি কখনও পোষ মানে? তবে তুমিও তো চাও ওর সঙ্গে দূর থেকে দূরে হারিয়ে যেতে। আর বিদায়ক্ষণ এলে ঠোঁটে হাসি আর চোখে জল নিয়ে মেনে নেবে। তখন শুরু হবে তোমার নীরব অপেক্ষার পালা: কবে আবার ফিরবে অদ্ভুত মানুষটা—তাই না?
বিড়বিড় করে ‘ওচ, এসব কী ভাবছি,’ বলে চাপা শ্বাস ফেলল জেসিকা। ফাইল খুলে চোখ বোলাল। কাছের একটা খামার থেকে চুরি হয়ে গেছে কিছু যন্ত্রপাতি। তবে এখনই তদন্ত না করলেও চলবে। আজকের মত শেষ হয়ে এল ওর ডিউটি।
একটু পর থানা থেকে বেরিয়ে হাসপাতালে গেল জেসিকা। রিসেপশন রুমে দেখা হলো ডক্টর লরেনের সঙ্গে। অনুরোধ করতেই তিনি রাজি হলেন রোগীকে দেখাতে। কেবিনে ঢুকে জেসিকা দেখল, এখনও জ্ঞান ফেরেনি পিটার হ্যাননের। বেডের চারপাশে নানান জটিল মেশিন ও টিউব। ছোটবেলার বন্ধুকে লাশের মত পড়ে থাকতে দেখে মনটা ভয়ানক খারাপ হয়ে গেল জেসিকার। চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু মুছে বেরিয়ে এল হাসপাতাল থেকে। মনে পড়ল ওকে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে মাসুদ রানা।
গ্রামে ফিরে বাড়িতে বসে যুবকের কথাগুলো নিয়ে ভাবল জেসিকা। রাতের খাবার সেরে শুয়ে পড়লেও মাথায় ঘুরতে লাগল নানান চিন্তা। মাঝরাত পর্যন্ত বারবার মনের ভেতর গম গম করল রানার গম্ভীর কণ্ঠ। চোখের সামনে ভেসে উঠল মায়াভরা কালো দুটো মণি। গতকাল পাবে আগুনের ধারে ওরা ছিল কাছাকাছি। তারপর কটেজে। অথচ, কোথায় যেন ছিল দু’জনের ভেতর বিশাল এক ব্যবধান। মানুষটার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছে, তাতে এত ভাল লাগা তৈরি হওয়ার কথা নয় ওর মনে। অথচ অমোঘ এক শক্তিশালী চুম্বকের আকর্ষণে যেন তার দিকে ছুটে চলেছে ওর কঠিন, পুলিশ-মন।
ট্রাক্টরের পার্টস চুরির রিপোর্ট লিখতে গিয়ে হাঁফ ধরে গিয়েছিল। তখন বিরক্ত হয়ে ফাইল বন্ধ করে পুলিশ কমপিউটার সিস্টেমে ঢুকে জেনেছে, পাবের শান্তি বিনষ্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ম্যাকডোনাল্ড ও তার দুই বন্ধুকে। তিনদিন পর আদালতে তোলা হবে তাদেরকে। ম্যাকডোনাল্ড মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে আছে জেনে অবাক হয়নি জেসিকা। অন্যদু’জন এখন জেলখানায়। অতীতে আইন ভাঙার অপরাধে নতুন করে চালু করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা।
হলওয়েতে গিয়ে পারকুলেটর মেশিন থেকে জঘন্য স্বাদের কফি নেবে কি না ভাবছে জেসিকা, এমনসময় অফিসে ঢুকল থানার জুনিয়র অফিসার বব ডব্লিউ. লিন। বয়সে জেসিকার চেয়ে দুই কি তিন বছরের ছোট হবে। বড়বেশি ছটফটে। তার কাছেই নতুন তথ্য পেল জেসিকা।
’বুঝলেন,’ সামনের চেয়ারে বসে শুরু করল তরুণ, ‘পিটার হ্যাননের ওপর হামলা হওয়ায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
ববের ছেলেমি দেখে হাসছিল জেসিকা, শুকিয়ে গেল ওর হাসি। দেরি না করে জানতে চাইল, ‘তাই? কাকে গ্রেফতার করেছে?’
‘জিম অ্যাণ্ডারসন।’
‘অ্যাণ্ডারসন?’ তাকে চেনে জেসিকা। গত কয়েক মাস ধরেই ডেভেলাপারদের কাজে নানাভাবে বাধা দিচ্ছে সে। আরও কয়েকজন পরিবেশবাদীকে নিয়ে ডেভেলাপারদের সাইটের মেইন গেটের সামনে আস্তানা গেড়েছে। তাদের দাবি, যেন কাটা না হয় পাইনের জঙ্গল। অ্যাণ্ডারসনের ওপর প্রথম থেকেই চোখ ছিল পুলিশের। আগেও কয়েকবার অন্যের এলাকায় ঢুকে ঝামেলা করেছে সে। ইংল্যাণ্ডে ভেঙেছে দুই ডেভেলাপারের ব্যক্তিগত গাড়ির কাঁচ। সেজন্যে . কয়েক মাস জেলও খেটেছে। সুখে থাকতে ভূতে কিলায় বলে কথা আছে না, ভাবল জেসিকা। তবে এবার খুব গুরুতর অপরাধের জন্যে ধরা হয়েছে তাকে। যদি প্রমাণ হয় সে-ই দোষী, আগামী বহু বছরেও বেরোতে পারবে না জেল থেকে।
‘অবাক হয়েছেন?’ জানতে চাইল বব। ‘আজ সকালেই ডেভেলাপারদের সাইটের কাছ থেকে তাকে ধরা হয়েছে। পুলিশি রেইডে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমাদের হিরো ইন্সপেক্টর জন মুরে। তার পায়ে পায়ে ছিল সার্জেন্ট ডানকান রিড। ওই লোকটাকে মোটেই দেখতে পারি না। ছোট শহরের সাংবাদিক হলেই ভাল করত। অ্যাণ্ডারসনকে নিয়ে এসে বগল বাজাচ্ছে। বারবার শোনাচ্ছে কী দুর্ধর্ষভাবে তাকে গ্রেফতার করেছে।’
‘জানতাম না অ্যাণ্ডারসনকে সন্দেহভাজনদের মধ্যে রাখা হয়েছে,’ অবাক হয়ে বলল জেসিকা।
‘কেউ জানত না। মুরে আর রিড যা খুশি করছে।’
‘অ্যাণ্ডারসনের মোটিভ কী? তার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া গেছে? কোনও সাক্ষী আছে?’
কাঁধ ঝাঁকাল লিন। ‘আমাদের কাউকে কিছু বলেনি। তা ছাড়া, তাদের তো ধারণা আমরা এতই নিম্নপদস্থ অফিসার যে ধরতে গেলে মানুষই নই।’
ভুরু কুঁচকে গেল জেসিকার। ‘রবার্ট উইলসনের ব্যাপারে কিছু জানা গেল?’
‘তার ব্যাপারে আবার কী?’
‘হ্যানন-উইলসন ফার্মে হামলা করেনি পরিবেশবাদীরা। তো তারা যদি পিটারকে আহত করে থাকে, স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে রবার্টকেও তারাই খুন করেছে। এ ব্যাপারে আমাদের ইন্সপেক্টর আর সার্জেন্ট কী ভাবছেন?’
‘আমার জানা নেই। পিটার হ্যানন তো বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরলে হয়তো বহু কিছুই জানা যাবে।’
‘অ্যাণ্ডারসনের গ্রেফতারটা বড়বেশি কাকতালীয় বলে মনে হচ্ছে না?’
আবারও কাঁধ ঝাঁকাল বব। ‘আমরা বলার কে?’ গলা নিচু করল সে, ‘বুঝলেন, আপনাকে যা বলছি তার সরই একটু আগে শুনেছি অফিসার স্কটের কাছ থেকে। রেইডে ছিল সে। আমিও যেতে পারলে খুশি হতাম। কিন্তু কপাল মন্দ।’
‘ওখানে যেতে পারলে খুশি হতে কেন?’
‘আপনি তো আর সব জানেন না। পুলিশের গাড়ি থেকে অফিসাররা নেমে পড়তেই ভীষণ ভয় পেল হিপ্পিগুলো। এদিক-ওদিক ছুটছিল। তবে কম্বল মুড়ি দিয়ে মটকা মেরে শুয়ে ছিল জিম অ্যাণ্ডারসন। কম্বল কেড়ে নিতেই সবাই দেখল
সে ন্যাংটো ভাঁড়! কপাল মন্দ না হলে এমন দুর্দান্ত দৃশ্য কেউ মিস করে? বলুন, এটা ভাল লাগে কারও?’
‘বাদ দাও তো ওসব, বব।’
এক কান থেকে আরেক কানে গেল তরুণের চওড়া হাসি। ‘আগে পুরোটা শুনুন। লাফিয়ে উঠে কম্বল কাঁধে ফেলে নরকবাসী বাদুড়ের মত উড়ে গিয়ে জঙ্গলে ঢুকতে চেয়েছিল অ্যাণ্ডারসন। তাকে ধাওয়া করল সার্জেন্ট রিড আর ছয় সেপাই। হিপ্পিগুলোর কারও গায়ে একরত্তি সুতো ছিল না। গলা ফাটিয়ে আর্তনাদ করতে করতে জঙ্গলে গিয়ে ঢুকল তারা। যাই হোক, শেষমেশ অ্যাণ্ডারসন সহ ধরে আনা হলো আরও পাঁচ হিপ্পিকে। … জেসিকা, আপনি শুনছেন তো? কী হলো? উদাস হয়ে গেলেন যে?’
চিন্তার গভীরে ডুব দিয়েছে জেসিকা। সুযোগ পেলে অদ্ভুত সব গল্প ফাঁদে অফিসার স্কট। তবে তার দেয়া তথ্য সঠিক হলে পিটারকে আহত করেছে অ্যাণ্ডারসন। অথচ এদিকে রানার বক্তব্য অনুযায়ী: রবার্ট খুন হয়েছে সোনার মোহরের ষড়যন্ত্রের কারণে। এসবের পেছনে আছে অন্য কোনও দল। সোনার মোহরের খোঁজ পাওয়ার জন্যেই পিটিয়ে আহত করা হয়েছে পিটারকে। একই কারণে মহাবিপদে আছে তার চাচা বেন হ্যাননও। গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার পর জানা যায়নি কোথায় গেছে মানুষটা। ওদিকে রবার্ট ও পিটারের দুই কেসে পরিবেশবাদীরা দোষী হলে, বুনো হাঁসের পেছনে ছুটছে মাসুদ রানা। অবশ্য, হঠাৎ করেই ভুল ধারণা থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে রানা, তাকে তেমন ধরনের মানুষ বলে মনে হয়নি জেসিকার।
‘কী, কিছু বলছেন না যে?’ বলল তরুণ অফিসার, ‘বহুদিন এত ভাল কাহিনী শুনিনি। এসব শুনে আপনি মজা পাননি?’
‘স্বীকারোক্তি দিয়েছে?’ জানতে চাইল জেসিকা।
‘কে স্বীকারোক্তি দেবে?’
‘জিম অ্যাণ্ডারসন? জবানবন্দি দিয়েছে সে?
‘না, গলা ফাটিয়ে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ করছে। তার কোনও দোষ নেই। ভুল লোককে ধরে আনা হয়েছে। সরকার থেকে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। সবই বড়লোকদের নিষ্ঠুর চক্রান্ত।’
জিম অ্যাণ্ডারসন বোধহয় এখন জানালাহীন ইন্টারভিউ রুমে, ভাবল জেসিকা। তার পেট থেকে খবর বের করতে চাইছে ইন্সপেক্টর মুরে আর সার্জেন্ট রিড। মুখে জেসিকা বলল, ‘তদন্ত করে দেখুক। এসব জানালে বলে অনেক ধন্যবাদ।’
‘শুনলেন বলে আপনাকেও ধন্যবাদ। আমি কফির জন্যে প্যাসেজে যাচ্ছি, তো আপনি কি এক কাপ কফি নেবেন?’
‘না, চাইলে তুমি খাও। আমি বাঁচতে চাই।’
‘ঠিক আছে। মেলা কাজ আছে। আমি চললাম।’ ঠোঁট গোল করে জনপ্রিয় একটি সুরে শিস বাজাতে বাজাতে জেসিকার অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গেল তরুণ অফিসার।
জেসিকা বুঝল, এখন আর মন বসাতে পারবে না কাজে। কিছুই ভাল লাগছে না। জানালা দিয়ে দেখল বাইরের দিকে। ফোর্ট উইলিয়ামের আকাশে জমেছে গাঢ় ধূসর মেঘ। বহু দূরে সফেদ বরফে ছাওয়া পাহাড়-চূড়া। চিন্তাগুলো গুছিয়ে নিতে চাইল জেসিকা। ওর মনে হচ্ছে না খুন বা আহত করার দোষে আটকানো যাবে জিম অ্যাণ্ডারসনকে। কখনও বড় কোনও অপরাধ করেনি। তা ছাড়া, তার বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ আছে বলেও মনে হচ্ছে না। ইন্সপেক্টর মুরে আর সার্জেণ্ট রিড তদন্ত না করেই গ্রেফতার করেছে লোকটাকে।
জেসিকার মনে পড়ল, ক’দিন আগে ইন্টারভিউ রুমে বেন হ্যাননের সঙ্গে মুরে আর রিডের বলা কথাগুলো। প্রথম থেকেই রবার্টের মৃত্যুটাকে দুর্ঘটনা বলে চালাতে চেয়েছে তারা। পিটারের বক্তব্যের কোনও মূল্য ছিল না। রবার্টের খুনের কেসও গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি এরা। আমলে নেয়নি পোচারের ভূমিকা। কোনও খোঁজখবরও করেনি তার ব্যাপারে। অথচ সোনার কয়েনের কথা উঠতেই বেন হ্যাননের কাছে জানতে চাইল, ওগুলো কোথায় পেয়েছে রবার্ট আর পিটার। ওই তথ্য জেনে নেয়া যেন খুব জরুরি। তখন না ভাবলেও জেসিকার পরে মনে হয়েছে, হালকা সুরে বলা দুই অফিসারের কথার ভেতর লুকিয়ে ছিল একরাশ দুশ্চিন্তা। চট্ করে সেটা বুঝে গিয়েছিল বেন হ্যানন। তারপর সে যখন জানাল নিজেই তদন্ত করবে, রীতিমত রেগে গেল তারা।
আগে বা পরে কোনও ধরনের তদন্ত করেনি মুরে আর রিড। ইন্টারভিউ রুমে তাদের কথাগুলো কানে বাধছিল জেসিকার। পরে গতকাল রাতে রানার সঙ্গে আলাপ হওয়ায় আরও বেশি চিন্তিত হয়ে গেছে। বারবার মনে হয়েছে, কিছু গোপন করছে মুরে আর রিড। আজকে জিম অ্যাণ্ডারসনকে গ্রেফতার করেছে বলে এখন মনে হচ্ছে, বড়বেশি ব্যস্ত হয়ে তার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছে এরা। ডেভেলাপারদের হয়ে কাজ করতে গিয়ে পরিবেশবাদীদের হাতে পিটার আহত হলে, রবার্টের খুঁজে পাওয়া সোনার কয়েনের ব্যাপারে এত আগ্রহী হবে কেন দুই অফিসার?
ওই দুই কেসে খাপে খাপে বসছে না অনেক কিছুই। জেসিকার ধারণা: বেআইনি কোনও খেলায় জড়িয়ে গেছে এই দুই অফিসার। এমন কী অ্যাণ্ডারসনের মুখ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করলেও খচ খচ করবে ওর বুকের ভেতরটা। রবার্ট ঘনিষ্ঠ বন্ধু না হলেও ছোটবেলায় হাসিখুশি পিটারকে আপন ভাইয়ের মতই ভালবাসত ও। বেচারা আহত হওয়ায় মনে খুব কষ্ট পেয়েছে। পিটারের জ্ঞান ফিরলে অনেক কিছুই জানা যেত। তবে যেহেতু আপাতত সেটা হচ্ছে না, ওর নিজেরই বোধহয় তদন্ত করা উচিত।
আসল সত্য জেনে নেয়া জরুরি হলেও বড় অফিসারদের তদন্তে নাক গলাতে গেলে যে-কোনও সময়ে বরখাস্ত হবে জেসিকা। বারবার ওর মনে হচ্ছে, ক্ষমতাধর এক বা একাধিক লোককে আড়াল করছে মুরে ও রিড। কাজেই সন্দেহের তীর যেন ওর দিকে না আসে, সেটা মাথায় রেখে সাবধানে এগোতে হবে ওকে। কিছুক্ষণ ভাবার পর কীভাবে তদন্ত করবে, তা স্থির করল জেসিকা।