ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

স্ত্রীগণের গৃহধর্ম বর্ণন

।। স্ত্রীণাং গৃহধর্ম বিধিবৰ্ণনম্।।

।। স্ত্রীগণের গৃহধর্ম বিধি বৰ্ণন।।

যা পতিং দৈবতং পশ্যেণমনোবাক্কায়কর্মভিঃ। তচ্ছরীরাধজাতের সর্বদা হিতমারেৎ।।১।। তৎপ্রিয়াংপ্রিবৎপশ্যেত্তদ্বেষ্যাং দ্বেয্যবৎ সদা। অর্ধমানর্থমুক্তে ভ্যোহযুক্তা চাস্য নিবর্ততে।।২।।

স্ত্রীর কর্তব্য হল যে সে নিজ নিজ পতিকে মন, কথা, কর্ম্ম এবং শরীর দিয়ে পূর্ণরূপ দেবতার সমান বুঝে নেবে বা মনে করবে। পত্নী নিজে তাঁর পতির অর্ধেক শরীর থেকে উৎপন্ন হয়েছে বলে সর্বদা পতির হিত কামনা করবে।।১।।

পতির প্রিয়কে প্রিয় দেখবে এবং পতির দেষ্যকে সর্বদা দ্বেষ্য রূপে দেখতে হবে। আর পতির অধর্ম দ্বারা ও অনর্থে যুক্ত ব্যক্তির থেকেও সে নিবৃত্ত হবে।।২।।

প্রিয়ং কিমস্য কিং পথ্যং সাম্যং চাস্য কথং ভবেৎ। জ্ঞাত্বেবং সর্বভূত্যেষু ন প্ৰমাদ্যৈত বৈ দ্বিজাঃ।।৩।। দেবতাপিতৃকাযেষু ভর্তুঃ স্নানাশনাদিযু। সৎকারেহভ্যাগতানাং চ যথৌচিত্যং ন হাপয়েৎ।।৪।। বৈশমাত্মা চ শরীরং হি গৃহিনীনাং দ্বিধা কৃতম্। সংস্কর্তব্যং প্রযত্নেন প্রথমং পশ্চিমাদপি।।৫।। কৃত্বা বেশ্ম সুসং মৃষ্টং ত্রিকালবিহিতাচণম্। বৃত্তকর্মোপভোগানাং সংস্কর্তব্যং যথোচিতম্।।৬।। প্রাতমধ্যা পরাহ্নে বহিমধ্যান্তরেষু চ। গৃহসম্মার্জনং কৃত্বা নিষ্কারান্ন নিশি ক্ষিপেৎ।।৭।।

হে দ্বিজগণ! এর প্রিয় কি আর হিতকর কি তথা এর সাম্য কি প্রকারে হবে এই ভাবে ভালোমতো জ্ঞান প্রাপ্ত করেই সমস্ত ভৃত্যকে চালিত করা উচিত।।৩।।

গৃহস্থাশ্রমে পত্নীর কর্তব্য হল ওনাকে দেবতা এবং পিতৃকার্যে তথা পতির স্নান এবং ভোজন প্রভৃতি কার্যে এবং অভ্যাগতদের সৎকারে যা ঔচিত্য আছে তাদের ত্যাগ না করা।।৪।।

বেশ এবং আত্মা গৃহিনীদের যে এই দুই প্রকার শরীর বলা হয়েছে। অতঃপর যে প্রথম অর্থাৎ ঘর তার পিছনেও প্রথমে প্রযত্নপূর্বক সংস্কার করতে হবে। তাৎপর্য হল শরীরের অধিক যত্নে গৃহ সংস্কার করতে হবে।।৫।।

তিনকালে যা অর্জনের বিধান আছে তা ভালোভাবে স্বচ্ছ এবং সুসংস্কৃত করতে হবে। বৃত্তকর্ম এবং উপভোগের যথোচিত সংস্কার করা উচিত।।৬।।

প্রাতঃকাল, মধ্যকাল আর অপরাহ্নকালে বাহির, মধ্য-তে এবং অন্তঃপুরে গৃহের সম্মার্জন করে যা নিষ্কাসিত পদার্থ হয় সেগুলি রাত্রে ফেলা উচিত নয়।।৭।।

গোমহিষ্যাদিশলানাং তৎপুরীষাদিমাত্রকম্। ব্যপণেয়ং তু যত্নেন সম্মার্জনা প্রসাধনম্।।৮।। দাসকর্মকরাদীনাং বাহ্যাভ্যন্তচারিণাম্। পোষণাদিবিধিং বিদ্যাদনুষ্ঠানং চ কৰ্মসু।।৯।। শাকমূলফলাদীনাং বল্লীনামৌমদস্য চ। সংগ্রহ সৰ্ব্বীজানাং যথাকালং যথাবলম্।।১০।। তাম্রকাংস্যায়সদীনাং কাষ্ঠবেণুময়স্য চ। মৃন্ময়ানাং চ ভান্ডানাং বিবিধিণাং চ সংগ্রহম্।।১১।। কুন্ডকাদিজলদ্রোন্যা কলশোদং চতালুকাঃ। শাকপাত্রাণ্যনেকানি স্নেহানাং গোরসস্য চ।।১২।। মুসলং কন্ডণীয়ং তু যন্ত্রকং চুর্ণচালণী। দোহন্যো নেত্রকং মহা মন্ডন্যঃ শৃংখলানি চ।।১৩।।

গো মহিষের পুরীষ প্রভৃতি রাখার যে পাত্র আছে তা পরিষ্কার করতে হলে সেখান থেকে ময়লা প্রথমেই অপনীত করতে হবে এবং বড় সমাজনী দ্বারা সেখানের প্রসাধন করতে হবে।।৮।।

যা দাস কর্মকারী চাকর আছে এবং যা বাহির এবং ভিতরে বিচরণ করে তাদের সবার পোষণ করার বিধিকে ভালোভাবে জানতে হবে তথা এও জানতে হবে এক গৃহিনীর কর্তব্য হল তাকে কি কি কাজ করাতে হবে।।৯।।

শাক মূল এবং ফল প্রভৃতির বল্লী এবং ঔষধের তথা সব প্রকার বীজের কাল ও বল অনুসারে সংগ্রহ করতে হবে।।১০।।

তামা, কাঁসা এবং লোহা প্রভৃতি ধাতুর এবং কঞ্চি আর বাঁশের এবং মাটির বিবিধ প্রকার পাত্রের সংগ্রহও স্ত্রীদেরকে রাখতে হবে।।১১।।

কুন্ডক প্রভৃতি জল দ্রোণ পরিমাণ কলশোদ এবং তালুক, অনেক শাক পাত্র, স্নেহ (চর্বি) এবং গোরস-এর সংগ্রহ করতে হবে।।১২।।

সংদংশ কুন্ডিকা শূলাঃ পট্টপিপ্পলকো দূষৎ। ডাবিকা হস্তকো দবী ভ্রাষ্টসফুটলকানি চ।। ১৪। তুলাপ্রস্থাদিমানানি মার্জন্যঃ পিটাকানি চ। সর্বমেতৎ প্রকুর্বীত প্রযত্নেন চ সর্বদা।।১৫।। হিংগ্বাদিকমথো জাজী পিপ্পল্যো মরিচানি চ। রাজিকা ধান্যকং শুন্টী ত্রিচতুজাতকানি চ।। ১৬।। লবণং ক্ষারবর্গাশ্চ সৌবীরকপরুষকৌ। দ্বিদলামলকং চিংচা সর্বাশ্চ স্নেহাজাতয়ঃ।।১৭।। শুষক কাষ্টানি বল্লুরমরিষ্টা পিষ্টমাষয়োঃ। বিকারাঃ পয়সশ্চাপি বিবিধাঃ কন্দজাতয়ঃ।।১৮।। নিত্যনৈমিত্তিকানাং হি কাৰ্যাৰ্ণামুপয়োনতঃ। সর্বমিত্যাদি সংগ্রাহ্যং যথাবদ বিভবোচিতম্।।১৯।। যৎ কার্যাণাং সমুৎপত্তাবুপাহতুং ন দৃশ্যতে। তৎ প্রাগেব যথাযোগং সংগৃহীয়াৎ প্রযত্নতঃ।।২০।। ধান্যানাং খৃষ্টপিষ্টানাং ক্ষুন্নোপহতয়োরপি। ভৃশং শুয়কাদ্রসিদ্ধাণাং ক্ষয়বৃদ্ধী নিরুপয়েৎ।।২১।।

মূসল, কন্তনী যন্ত্র আর চূর্ণ ছাকার চালুনী, দুধ দোহন করার দোহনী পাত্র, নেতী, মথনী আর শৃঙ্খলা, সন্দংশ, কুন্ডিকা, শূল, পট্টপিপ্পলক পাথর, ডালিয়া, হস্তক এবং কড়াই, তুলাযন্ত্রের বাটখারা এবং পিষ্টক এই সবের সংগ্রহ সর্বদা যত্নসহকারে স্ত্রীর করা উচিত, যা সমস্ত নিত্য গৃহকর্মে প্রয়োজনীয় বস্তুগুলি আছে।।১৩-১৫।।

এখন পর্যন্ত পাত্র তথা অন্য জিনিসের সংগ্রহ বিষয়ে বলা হল। এবার মশলা প্রভৃতি উপস্কর যা খাবার তৈরী করার জন্য আবশ্যক তার সংগ্রহ বিষয়ে বলা হচ্ছে–হিং, জিরা, হলুদ, মরিচ, সর্ষে, ধনে, তিন বা চার জাতক, লবণ তথা ক্ষারবর্গ, সৌবীরক এবং পরুষক, দাল, আমলা সকল প্রকারের স্নেহজাতীয় তেল প্রভৃতি পদার্থের সংগ্রহ করা উচিত।।১৬-১৭।।

শঙ্ক কাঠ, বল্লুরমরিষ্টা, পেষণ করা মাসকলাই, দুধের বিকার অর্থাৎ দই, খোয়া প্রভৃতি এবং অনেক প্রকার কন্দ সংগ্রহ করে গৃহিনীর ঘরে রাখা আবশ্যক। এটি স্ত্রীলোকেরই কর্তব্য।।১৮।।

এতে নিত্য কর্মের উপযোগ হেতু নৈমিত্তিক কর্মের শেষে সবকিছু সংগ্রহ করতে হবে এবং তা নিজ আর্থিক স্থিতির অনুকুলেই করতে হবে।।১৯।।

যখন কার্য উপস্থিত হবে তখন এই সব প্রস্তুত হবে না। তাই প্রথম থেকেই কার্য শুরুর পূর্বে যথাযথ প্রযত্ন পূর্বক করতে হবে।।২০।।

ঘৃত এবং পিষ্ট ধান্যের তথা যা ক্ষুণ্ণ এবং উপহত তারও খুব শুষ্ক, আর্দ্র এবং সিদ্ধের ক্ষয় ও বৃদ্ধিরও একটানা নজর রাখা আবশ্যক।।২১।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *