পনেরো
ব্যথা এতই তীব্র, হাজার কথা বলেও বোঝানো যাবে না কাউকে। কাবাব তৈরির সময় মাংস থেকে গনগনে সাদা আগুনে ফোঁটা-ফোঁটা চর্বি পড়ে যে রকম শব্দ হয়, ঠিক সেই রকম ফোঁস-ফাঁস আওয়াজ ও ধোঁয়া বেরোচ্ছে ওর গা থেকে। পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধে কুঁচকে গেল রানার গাল।
রণক্ষেত্রে আগেও পেয়েছে ও এমন গন্ধ। কিন্তু নিজের শরীরের মাংস পুড়ে যাওয়ার ব্যাপারটা একেবারেই আলাদা। যতক্ষণ সাধ্য থাকল, কুঠারের চ্যাপ্টা অংশ পেটের ক্ষতে চেপে ধরে রাখল রানা, তারপর হাত থেকে ওটা ফেলে শুয়ে পড়ল গুহার ভেজা মেঝেতে। ফুসফুস বিস্ফোরিত হয়ে বেরোতে চাইল প্রাণপণ আর্তচিৎকার। দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে সামলে রাখল রানা।
তারপর বহুক্ষণ পর চোখ মেলে বুঝল, গুহার ভেতর চারপাশ অন্ধকার। কখন যেন চেতনা হারিয়ে ফেলেছিল ও। মাটি থেকে মাথা তুলে কনুইয়ে ভর করে উঠে বসল। বড্ড অসুস্থ। বনবন করে ঘুরছে মাথা। ব্যথায় দপদপ করছে পেটের ক্ষত। কুঠারটা এখন শীতল। কালো হয়েছে ফলার সমতল অংশটা। ওখানে শুকিয়ে সেঁটে আছে পোড়া রক্ত ও চামড়া। যুদ্ধক্ষেত্রের মত মাংস-পোড়া দুর্গন্ধ ও করডাইটের বিশ্রী কুবাস গুহার বাতাসে।
পেটের ক্ষতের দিকে চাইতে ভয় লাগছে রানার- কী দেখবে কে জানে! হয়তো দেখবে কাজ হয়নি!
দু’সেকেণ্ড পর ভুরু কুঁচকে ওদিকে তাকাল। পুড়ে কালো হয়েছে জায়গাটা। এখন আর রক্ত পড়ছে না। বোতলের ছিপি খুলে কয়েক ঢোক অ্যালকোহল গলায় ঢালল রানা। তাতে সামান্য কমল ব্যথা। চাঁদে ঘুরতে যাওয়ার ওই তেতো ওষুধ যে-কোনও উইস্কির অন্তত তিনগুণ কড়া। তবে কোনও ধরনের বাজে স্বাদ নেই।
তীব্র ব্যথা সহ্য করতে গিয়ে ভাবল রানা, মানুষের মন সত্যিই অদ্ভুত। একবার সেরে গেলে ক্ষতচিহ্ন থাকলেও মনে পড়বে না আজকের এই চরম ব্যথার অনুভূতি। আর প্ল্যাস্টিক সার্জারি করিয়ে নিলে হয়তো একদিন পুরোপুরিই ভুলে যাবে।
এখন ভাল হতো ক্ষতটা সেলাই করে নিতে পারলে। তবে সুঁই-সুতো নেই। শার্টের পরিষ্কার আরেকটা ফালি অ্যালকোহলে ভিজিয়ে ক্ষতের ওপর রাখল রানা। গ্যাফার টেপ (ব্ল্যাক টেপ) ছিঁড়ে আটকে দিল জায়গাটার ওপর। এবার আর সরে যাবে না কাপড়ের টুকরো। ফিল্ড ড্রেসিং হিসেবে মন্দ হয়নি ওর হাতের কাজ। ঠেকিয়ে দিয়েছে ধুলোবালি। তবে পরে উপযুক্ত ডাক্তারের সাহায্য লাগবে।
শীত লাগছে বলে নগ্ন কাঁধে জ্যাকেট জড়িয়ে নিল রানা। টর্চ নিভিয়ে চুপ করে গুহার দেয়ালে হেলান দিয়ে বসল। জ্বরের রোগীর মত মৃদু কাঁপছে দেহ। এটা ঘটছে রক্তহীনতা ও তীব্র শকের কারণে। একটু স্থির হওয়ার জন্যে আরও কয়েক ঢোক অ্যালকোহল গলায় ঢালল রানা। এ মুহূর্তে সিগারেট পেলে ভাল লাগত। কিন্তু বদ অভ্যেসটা ছেড়ে দিয়েছে। অভ্যাস থাকলেও এখন ধূমপান একেবারেই উচিত হতো না। জঙ্গলের ভেতর বহু দূরে ছড়িয়ে পড়ত পোড়া তামাকের গন্ধ। সহজেই প্রতিপক্ষ বুঝত আশপাশেই আছে তাদের শিকার।
বাইরে সবে ফুটতে শুরু করেছে ধূসর আলো। ভোর হচ্ছে। থমথম করছে চারপাশ। মনের ভেতর রানাকে খুঁচিয়ে চলেছে কিছু প্রশ্ন। ওগুলোর জবাব জেনে নিতে হবে ওর।
প্রথম কথা, মস্তবড় বিপদে জড়িয়ে গেছে ও। কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে এখন অনেক ধরনের প্রমাণ। তারা ধরেই নেবে, লিয বাউয়ারকে খুন করেছে ও। খুনের জায়গায় ওকে দেখেছে কয়েকজন পুলিশ অফিসার। ওই সেইবারের হাতলেও পাওয়া যাবে ওর হাতের আঙুলের ছাপ। হয়তো ক’জন সাক্ষীও থাকবে, যারা সকালে ওই গেস্ট হাউসে ওকে ঢুকতে দেখেছে। অন্তত একজন তো অবশ্যই চিনবে ওকে। বুড়ো মিস্টার রবিনসন। লিযের সঙ্গে ওকে বাজারে যেতে দেখেছেন তিনি। ফরেনসিক পরীক্ষায় ধরা পড়বে মার্সিডিয গাড়ির ভেতর রয়েছে ওর ডিএনএ। দূরের ওই বাজারেও ওর চেহারা ও দৈহিক বর্ণনা দেবে একাধিক দোকানদার। তার ওপর হাম্পি-ডাম্পি’য গ্যারাজে রয়েছে সেই পাঁচ যুবক। তারাও জানাবে, লিয বাউয়ারের সঙ্গে যে যুবক ছিল, তার ছবি দেখেছে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায়।
একবার ওর নাম জানলেই কর্তৃপক্ষ খুঁড়ে বের করবে ওর অতীত সমস্ত রেকর্ড। ফলে ব্যস্ত হয়ে নানান গল্প ফাঁদবে ক্রিমিনাল প্রোফাইলাররা। গাল ফুলিয়ে বলবে, পাগল হয়ে গেছে প্রাক্তন মেজর মাসুদ রানা। আর সাইকোটিক হয়েছে বলেই নিরীহ লিয বাউয়ারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রাচীন এক সেইবার হাতে। ওটা যে কোথা থেকে এল, সেটা নিয়ে ভাববে না কেউ। আর যারা মাথা খাটাতে ভালবাসে, ওটার ব্যাপারে কোনও না কোনও গল্প তৈরি করে নেবে তারাও।
সংক্ষেপে বললে, বাজে ঝামেলায় জড়িয়ে গেছে রানা। পালিয়ে এসে হয়তো আরও বড় বিপদে ফেলেছে নিজেকে 1 এখন সেটাই মনে হচ্ছে ওর। বেশিরভাগ মানুষ ধরে নেবে, অপরাধী বলেই পালিয়ে গেছে ও।
আবার কেউ কেউ ভাববে, ন্যায্য বিচার পেত না বলেই গা ঢাকা দিয়েছে রানা।
আসলে সেসময়ে বাঁচার একমাত্র পথটাই বেছে নিয়েছে ও। মনে কোনও সন্দেহ ছিল না যে ওকে খুন করতে চেয়েছে ডেপুটি শেরিফ বিলি এস. কনরাড।
কিন্তু খুন করতে চাইল কেন?
জানতে হবে এ প্রশ্নের জবাবও।
আরও কিছু কথা ঘুরছে ওর মাথায়।
কেন ইত্য করা অস্ত্র বের করল না লোকটা?
রিভলভারটা আবারও পরীক্ষা করে দেখল রানা।
ফ্রেমের ওপর ফাইল ঘষে তোলা হয়েছে সিরিয়াল নাম্বার। এই কাজ করবে পাকা কোনও অপরাধী। যাতে পরে পুলিশের হাতে ওই অস্ত্র পড়লেও তাকে ধরা না যায়। পুলিশের প্রতিটা অস্ত্রের গুলি কী কারণে খরচ হয়েছে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে হয়। কিন্তু বেআইনি কোনও কারণে চোরাই অস্ত্র থেকে গুলি হলে, জবাব দিতে হবে না সেই পুলিশের। শুধু নিজের আঙুলের ছাপ মুছে ফেললেই হলো।
আসলে কী চেয়েছে কনরাড?
হয়তো প্রমাণ করত এই রিভলভার লিযের খুনির। যে কারণেই হোক সেইবার দিয়ে মহিলাকে খুন করেছে রানা। তারপর কোণঠাসা হয়ে রিভলভার ব্যবহার করেছে পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। অপরাধ জগতে অদ্ভুত কত ঘটনা ঘটে। শপথ নেয়া কোনও পুলিশ অফিসারের কথা অবিশ্বাসের প্রশ্নই উঠত না। ইলেকট্রিক চেয়ারে আরাম করে বসে দুঃখের হাসি হাসত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত মাসুদ রানা।
লিযের বাড়িতে রানা খুন হলে দরজার দিকে ক’বার গুলি করত কনরাড। ওটাই প্রমাণ, সে বাড়িতে ঢুকতেই গুলি করেছে খুনি। এরপর নিজের গুক পিস্তল ব্যবহার করে নিজেও কয়েকটা গুলি করত কনরাড। রিভলভার থেকে নিজের আঙুলের চিহ্ন মুছে সেখানে মৃত রানার আঙুলের ছাপ বসিয়ে দিত ফ্রেম, ব্যারেল ও ট্রিগারে। রিভলভারে কনরাডের আঙুলের ছাপ থাকলেও সন্দেহ করত না কেউ। সহজ গল্প তৈরি করত সে। নাইন-ওয়ান-ওয়ান থেকে ফোন পেয়ে পা রাখে ওই বাড়িতে। তখনই হলওয়েতে দেখে লিয বাউয়ারের লাশ। আর সেই সময়ে তার দিকে গুলি ছোঁড়ে খুনি। কিন্তু বীরের মত আততায়ীর রিভলভারটা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে সে। আর ধস্তাধস্তির সময় নিজের অস্ত্রের বুলেট বিঁধে যায় খুনির মগজে।
ছোরা দিয়ে হামলার কথা পরে ভেবেছে কনরাড। তবে রানা খুন হলে কোনও বিপদে পড়ত না। আততায়ীর দেহে ছোরার আঘাত দেখে সবাই ধরে নিত, সত্যিই লড়াই করেছে তারা দু’জন। ভারী গলায় কনরাড বলত, ‘লিয বাউয়ারের মত আমাকেও গেঁথে ফেলতে গিয়েছিল লোকটা! তবে লড়াইয়ের একপর্যায়ে তার ছোরা গেঁথে যায় তার নিজেরই . পেটে। সব ঘটেছে খুব দ্রুত।’
সহজেই সব হিসেব মিটিয়ে ফেলত কনরাড।
আবার চিন্তা করতে গিয়ে ভুলও হতে পারে রানার। ওর মনে আছে, ক্রুযার থেকে নেমে দৌড়ে উদ্যত রিভলভার হাতে গেস্টহাউসে ঢুকেছে লোকটা। অথচ, তার জানার কথা নয় হলওয়েতে আছে রানা। আরেকটা ব্যাপার, কতজন পুলিশ নিজের বুটের ভেতর লুকিয়ে রাখে ছুরি!
সবই আন্দাজ করছে রানা। তবে ওর মনে হচ্ছে, প্রথম থেকেই এসবে জড়িত ডেপুটি কনরাড। ওকে ফাঁসিয়ে দিতে তাকে ফোন দিয়েছিল কেউ। আর সেজন্যেই বেআইনি অস্ত্র দিয়ে রানাকে খন করতে চেয়েছে সে।
তার কথা বলা মনে পড়ল রানার। লোকটা বলেছিল, ‘তুমি ভালই জানো কীভাবে ঝামেলায় জড়াতে হয়। তবে এবার হাড়ে হাড়ে বুঝবে, বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছ।’
রানার মনে পরের প্রশ্ন এল: আইন মেনে চলবে বলে শপথ করা লুইযিয়ানার এক ডেপুটি শেরিফ কেন এত নোংরামির ভেতর নাক গুঁজে দেবে?
এর মাত্র দুটো কারণ থাকতে পারে।
প্রথমত, নিজেকে রক্ষা করতে চেয়েছে সে। কারণ, ভয় দেখানো হয়েছে তাকে। অথবা ব্ল্যাকমেইল করছে কেউ। অথবা দিচ্ছে মেলা টাকা।
দ্বিতীয় কারণ: বাজে লোকদের বাঁচাতে চেয়েছে কনরাড। কারণ নিজেও সে বেআইনি কাজে জড়িত।
ঘটনা যাই হোক, অপরাধী কোনও দলের সঙ্গে নাক পর্যন্ত ডুবে আছে লোকটা।
কাকতালীয়ভাবে লিয বাউয়ারের গেস্টহাউসে খুনের সময় উপস্থিত ছিল ও— আর তাই খুনি চেয়েছে রানাকে ফাঁসিয়ে দিতে?
এ কথাটা মেনে নিতে পারল না রানা।
মদের দোকানে ডাকাতির সময়ে যে বাঙালি যুবক হাজির হয়েছিল ত্রাতার ভূমিকায়, সেই একই মানুষ কেন জড়িয়ে গেল পরদিন এমন ভয়ঙ্কর এক ঘটনার সঙ্গে?
এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোঠায়
যুক্তি বলে: এটা কাকতালীয় কিছু নয়। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে কাজে নেমেছে খুনি। রানাকে বেছে নেয়া হয়েছে বলির পাঁঠা হিসেবে খুনের দায় চাপিয়ে দেয়ার জন্যে। যদিও ওর জানা নেই, কেন খুন হলো লিয বাউয়ার।
আরেকটা ব্যাপার, ইমার্জেন্সি কল পেয়ে এত দ্রুত চিটিমাচায় কীভাবে পৌঁছুল কনরাড?
ভিলেনিউভ শহরে শেরিফের অফিস থেকে রওনা হলে ওই ছোট বসতিতে পৌঁছতে ব্যয় হতো অন্তত পৌনে একঘণ্টা। রানা যদি ধরেও নেয় ডেপুটির বাড়ি ওখানেই, বা খুব দ্রুত গাড়ি নিয়ে ওখানে হাজির হয়েছে, তবুও তো অন্যভাবে দেখা যেতে পারে গোটা ব্যাপারটাকে!-
হয়তো কোনও ফোনকল যায়ইনি পুলিশ ডিপার্টমেন্টে। আগেই কনরাডকে ফোন দিয়েছে লিযের খুনি। ফোনটা করেছে খুনের বহু আগেই। সেক্ষেত্রে মিলবে কনরাডের হঠাৎ হাজির হওয়ার ব্যাপারটা। রানাকে খুন করে শেরিফকে কনরাড জানাত, সে ঝড়ের বেগে লিয বাউয়ারের বাড়িতে গেছে খুনিকে গ্রেফতার করতে। তবে সেক্ষেত্রে ধরতে হবে, ফোন দেয়ার পর কনরাড আসার আগেই বিদায় নিয়েছে খুনি ও তার সহযোগী।
তা হলে প্রথম থেকেই খুনির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল কনরাডের। অর্থাৎ, লিযের খুনের দায় এড়াতে পারবে না লোকটা।
আরেকটা চিন্তা এল রানার মনে। শিরশির করে উঠল ওর দেহ। এমন কি হতে পারে, ওকে ফাঁসিয়ে দিতেই খুন করা হয়েছে লিযকে?
কিন্তু সেটা করা হবে কেন?
খুনিরা আসলে কারা?
তাদের কী ক্ষতি করেছে লিয বা ও?
চোখ বুজল রানা। ভাবছে, লিযের বাড়ির বাইরে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল খুনি এবং তার সহযোগী। তাদের বয়স ছিল ত্রিশ কি পঁয়ত্রিশ। একজনের চুল লালচে। অন্যজনের চুল দীর্ঘ। তার সঙ্গীই খুন করেছে লিযকে। খুনির পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট ও কালো জ্যাকেট। ভাল করে লোকদুটোর চেহারা দেখতে পায়নি রানা। তবে এটা বুঝেছে, আগে কখনও তাদেরকে দেখেনি ও।
হাম্পি-ডাম্পিয় গ্যারাজের ছেলেদের সঙ্গে ওর বিরোধের কারণে খুন হলো লিয?
খুনি হয়তো মণ্টি ডয়েলের বন্ধু।
রানা রুখে দাঁড়িয়েছিল বলে প্রতিশোধ নিয়েছে?
এদিকের সমাজ খুব ছোট গণ্ডিতে আবদ্ধ। সবাই একে অপরকে চেনে। ডয়েল হয়তো ভাল করেই চিনত কে লিষ বাউয়ার। জানত, মহিলা গেস্টহাউস খুলেছে চিটিমাচায়।
কিন্তু প্রতিশোধ নিতে চাইবে কেন তারা?
কিছুই তো ঘটেনি!
লড়তে গিয়েও পিছিয়ে গেছে রানা।
মন্টি ডয়েলের দলের চোখে ও তো একজন কাপুরুষ। জিতে গেছে তারা।
তা ছাড়া, যেভাবে পরিকল্পনা করে ওকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে, মনে হয় না এত বুদ্ধি রাখে ওই দলের কেউ।
একজন অনুগত ডেপুটি শেরিফকে নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা তাদের থাকার কথা নয়।
না, হিসেব থেকে বাদ দিতে হবে মষ্টি ডয়েল আর তার সঙ্গীদেরকে।
ধরে নেয়া যায়, মদের দোকানের মালিক ও ডাকাতির সঙ্গেও তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
রানার এবার মনে পড়ল, ওর জীবনে গোপন কিছু আছে তা বলেছিল লিয। পরে আহত অবস্থায় ফিসফিস করে বলেছে: ‘ওরা… জেনে গেছে… তাই মেরে ফেলত…’
লিষের মা’র কথা অনুযায়ী, ইতিহাসের গোপন কিছুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাদের। শেলি লং ল্যান্স নামের অচেনা এক মহিলার সঙ্গে এসব জড়িত। খুন করা হয়েছে তাকেও। তা বহু বছর আগের কথা। সেসবের সঙ্গে কীভাবে যেন জড়িয়ে গিয়েছিল লিয বাউয়ার।
আর এখন নিজেও এসবে জড়িয়ে পড়েছে রানা।
দীর্ঘক্ষণ চুপচাপ শুয়ে থাকল রানা।
ভোরের লালচে আলো ধীরে ধীরে এসে পড়ছে মাটির গুহার মেঝেতে। যতই ভাবছে রানা, বুঝতে পারছে মস্তবড় এই ঝামেলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে হলে আগে জানতে হবে, কী ছিল লিযের সেই গোপন সত্য।
ওটা জানলেই হয়তো দেখা হবে লিযের খুনির সঙ্গে। সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবে রানা। আইন মানতেই হবে এমন নয়। প্রয়োজনে নিজের আইনে বিচার করবে লিয খুনের।