সোনালী দুঃখ – ১১

১১

রানী ফিরে এসেছে, ত্রিস্তান চলে গেছে। যেন বজ্রভরা মেঘ দূরে সরে গিয়ে ফুরফুর করছে জ্যোৎস্না। রাজা মার্কের রাজ্য এখন সুখের আগার।

সাধারণ মানুষ পাপপুণ্য মানে। পরস্ত্রীকে ভালোবাসা যে মহাপাপ-সে কথা জানে সাধারণ মানুষ। কিন্তু হুজুর, আমাদের মতো কবিরাই শুধু নিয়মহীন। আমরা সম্পর্ক মানি না, আমরা ভালোবাসা মানি। আমরা জানি, ভালোবাসা বড় দুর্লভ। নিজের স্ত্রীকেই বা ভালোবাসতে জানে ক’জন লোক? একজন পুরুষ একজন নারীকে ভালোবাসেন, এর চেয়ে বড় সম্পর্ক আর কি হবে? তাই, প্রৌঢ় রাজা মার্কের পাশে আমি যখন রানী সোনালিকে মনে মনে দেখি, তখন ত্রিস্তানের জন্যে আমার মন কেমন করে। রানী আবার ফিরে পেয়েছেন রানীর সুখ, আর ওদিকে ত্রিস্তান এখনও লুকিয়ে আছে জঙ্গলে-একা শুয়ে থাকে সারাদিন, নাওয়া-খাওয়ায় মন নেই। মাটির ওপর সে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে, গাছের শুকনো পাতা ঝরে ঝরে পড়ে তার গায়।

রাজা মার্কের মনে আর এক বিন্দুও সন্দেহ আর অভিমানের অস্তিত্ব নেই তখন। রানীকে তিনি তাঁর ভালোবাসা উজাড় করে দিয়েছেন। রানীও প্রাণপণ সেবায় রাজাকে খুশী করার চেষ্টা করছেন। ত্রিস্তানের নাম আর কেউ উল্লেখ করে না।

একদিন রাজা অসময়ে ফিরে এলেন অন্তঃপুরে। সমস্ত মুখ-চোখ লাল। এসেই বিছানায় শুয়ে পড়লেন। রানী এসেছিলেন রাজার ধরা চূড়া খুলতে, রাজার গম্ভীর মুখ দেখেই তাঁর বুক কেঁপে উঠলো। তবে কি জানাজানি হয়ে গেছে যে ত্রিস্তান এখনও রাজ্য ছেড়ে যায়নি? ত্রিস্তান কি ধরা পড়লো? অতি কষ্টে নিজেকে সামলে রানী জিগ্যেস করলেন, মহারাজ, আজ আপনার মন ভালো নেই। রাজ্যে কি নতুন কোনো বিপদ হয়েছে?

রাজা শুকনো হেসে বললেন, না রানী, কিছু তো হয়নি I

—কিন্তু মহারাজ, আপনার মুখের চেহারা কি রকম বদলে গেছে। -ও কিছু না! এসো আমরা বরং পাশা খেলি দুজনে।

—মহারাজ, আপনি কি যেন গোপন করছেন। না, বলুন আমাকে।

এদিকে হয়েছে কি সেদিন সভা শেষ হবার পর সেই তিনজন বদমাশ নাইট আবার রাজার কাছে এসেছিল গুজগুজ করতে। তারা বলছিল, মহারাজ, প্রজারা একটা কথা কানাকানি করছে, সেটা আপনাকে না জানিয়ে পারছি না। ওরা বলছে, আপনি বিনা বিচারে একবার রানীকে পুড়িয়ে মারার শাস্তি দিয়ে যেমন অন্যায় করেছিলেন এবারেও তেমনি বিনা বিচারে রানীকে ঘরে তুলে নেওয়া অন্যায়। হাজার হোক, এতদিন পরপুরুষের সঙ্গে থেকে-

—চোপরাও। দূর হয়ে যাও আমার সামনে থেকে। রাজা চেঁচিয়ে উঠেছিলেন, এখনও তোমাদের নিবৃত্তি হয়নি? তোমাদের জ্বালায় প্রাণাধিক ত্রিস্তানকে আমি বিদায় দিয়েছি। এখন রানীকেও আবার সরাতে চাও! ত্রিস্তান যখন দ্বন্দ্বযুদ্ধে ডেকেছিল, তখন সাহস ছিল কোথায়? আমি ঢের সয়েছি, আর নয়! দূর হয়ে যাও!

—মহারাজ, শুধু শুধু রাগ করে তো প্রজাদের মুখ বন্ধ করতে পারবেন না। আমরা রানীকে সন্দেহ করছি না। কিন্তু, রানী যখন সতীই, তখন একবার অগ্নিপরীক্ষায় দাঁড়ালেই তো সব সন্দেহ মিটে যায়!

—অগ্নিপরীক্ষা? আবার তোমাদের ষড়যন্ত্র? দূর হয়ে যাও তোমরা! নইলে–

–মহারাজ, রানী অগ্নিপরীক্ষায় দাঁড়াতে রাজী না হলেই লোকে সন্দেহ করবে। -আর একটা কথা বললেই তোমাদের আমি ফাঁসি দেবো! আমি আর সহ্য করতে পারছি না! দূর হয়ে যাও আমার রাজ্য থেকে!

নাইট তিনজন তখন সদর্পে উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিল, মহারাজ, আমাদের নিজস্ব জমিদারি আছে। আমাদের অধীনে নিজস্ব সৈন্য আছে। আমরা আত্মরক্ষা করতে পারি। আমরা চলেই যাচ্ছি। তবু যাবার আগে বলবো, রানী যখন সতীই, তখন অগ্নিপরীক্ষায় আপনার ভয় কি!

রাজা বললেন, ত্রিস্তান নেই বলেই তোমাদের আজ এত সাহস। আমি বরং ত্রিস্তানকে আবার ফিরিয়ে আনবো। তোমাদের আর মুখ দেখতে চাই না।

নাইটদের বিদায় দিয়েই রাজা রাগত মুখে ফিরেছিলেন। রানী বারবার প্রশ্ন করতে লাগলেন রাজার রাগের কারণ। রাজা কিছুতে বলতে চান না। তখন রানী বললেন, মহারাজ, আমার মনে হচ্ছে, আমাকে নিয়ে আবার অশুভ কিছু ঘটেছে। মহারাজ, আসামীরও তো অধিকার থাকে তার নামে অভিযোগ শোনার।

রাজা বললেন, রানী, ঐ শয়তান নাইটগুলো তোমার সম্বন্ধে আবার কু-কথা বলতে এসেছিল। আমি এবার তাদের তাড়িয়ে দিয়েছি রাজ্য থেকে। সুতরাং আর সে কথা তোমার শোনবার দরকার কি?

—তবু, মহারাজ, বলুন, কি কথা ওরা বলেছে?

—না, রানী, সে কথা শুনতে চেও না। ওরা অন্যায় কথা বলেছে। আমি ওদের অন্যায়ের শাস্তি দিয়েছি। এখন আর তুমি তা শুনে কেন মন খারাপ করবে?

—মহারাজ, আমার মাথার দিব্যি, বলুন আপনি।

—ওরা তোমাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বলছে!

—অগ্নিপরীক্ষা? সেটা কি মহারাজ?

—তোমাদের দেশে এ নিয়ম নেই বুঝি? তোমাদের দেশই ভালো। রানী, অগ্নিপরীক্ষা হলো সতীত্বের পরীক্ষা। সতী নারী, তাঁর সতীত্বের শপথ করে জ্বলন্ত আগুনের মধ্য থেকে এক খণ্ড লোহা হাতে তুলে নেয়। সত্যিকারের সতীর হাত পোড়ে না! যে মিথ্যে কথা বলে তার হাত পুড়ে যায়। এর নাম ‘অগ্নিপরীক্ষা’।

রানী এ কথা শুনে অবনত মুখে বসে রইলেন। এ পরীক্ষার কথা শোনার পর আর রাজী না হয়ে থাকতে পারে কোনো নারী? সকলেই ভাববে তিনি ভয় পেয়েছেন। তাহলে তিনি বেঁচে থাকবেন কি করে। এ রাজপুরীর সকলেই তাঁকে মনে মনে ঘৃণা করবে তাহলে। সোনালি ধীর স্বরে বললেন, মহারাজ, আমি পরীক্ষা দেবো। আপনি ব্যবস্থা করুন।

রাজা উত্তেজিত হয়ে বললেন, না না, এ বড় ভয়ঙ্কর! যে-কোনো মুহূর্তেই তো কতরকম ভুল হতে পারে! না, রানী, তোমাকে আমি এর মধ্যে যেতে দেবো না!

রানী বললেন, আপনি ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনিও কি আমাকে বিশ্বাস করেন না? আমি অগ্নিপরীক্ষা দেবো, আজ থেকে দশ দিন পর। কিন্তু এখানে নয়, মহারাজ আর্থারের সামনে। রাজা আর্থারকে মান্য করে না, এমন লোক পৃথিবীতে কেউ নেই। আপনার রাজ্যের পাশেই আর্থারের রাজ্য। তার মাঝখানে যে ঝরনা, সেই ঝরনার পাশে হবে অগ্নিপরীক্ষা। আপনি, রাজা আর্থার আর তাঁর বিখ্যাত গোলটেবিলের নাইটদের নিমন্ত্রণ করুন। ওঁদের সামনে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলে আর কেউ পরে অবিশ্বাস করতে সাহসী হবে না। আর কেউ আমাকে কোনো পরীক্ষা দিতে বলবে না।

রাজা মার্ক আরও আপত্তি করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু রানীর জেদ বজায় রইলো। শেষ পর্যন্ত রাজা দূত পাঠালেন আর্থারের কাছে। রানীর প্রস্তাবে রাজা মার্ক যে একেবারে খুশীও হননি, তাও নয়। আপনারা জানেন, মানুষের মন কি বিচিত্র!

রানী তখন খুব গোপনে পেরিনিস নামের একজন বিশ্বস্ত অনুচরকে দিয়ে খবর পাঠালেন ত্রিস্তানের কাছে। বলে পাঠালেন যে, পেরিনিস গিয়ে ত্রিস্তানকে অগ্নিপরীক্ষার সব কথা বলবে। আর বলবে, ত্রিস্তান যেন গোপনে সেখানে উপস্থিত থাকে ছদ্মবেশে। ত্রিস্তান উপস্থিত থাকলে, রানী কোনো পরীক্ষাতেই ভয় করেন না।

রাজা মার্ক নির্দিষ্ট দিনে রানী এবং বহু অনুচর সঙ্গে নিয়ে এলেন সেই ঝরনার পাশে। ঝরনার ওপাশে রাজা আর্থারের তাবু। সিংহাসনে বসে আছেন রাজা আর্থার, আর পৃথিবী-বিখ্যাত নাইটরা রয়েছেন তাঁকে ঘিরে। সামনে আগুন জ্বলছে, সেখানে অগ্নিপরীক্ষা হবে।

ঝরনার অন্য দিকটা অন্য রাজ্য, সুতরাং অনুচররা, সৈন্যসামন্তরা যেতে পারবে না। অনুচরেরা সবাই ঝরনার এ পাশে রইলো। শুধু রাজা মার্ক রানীকে নিয়ে একটা নৌকোয় চড়ে এলেন এপারে। নৌকো যখন পাড়ে লাগলো, তখন পাড়ের সামনে সামান্য কাদা দেখে রানী বললেন, মহারাজ, এখানে নামতে গেলে আমার কাপড় ভিজে যাবে। পায়ে কাদা লাগবে। আমি শুদ্ধভাবে পরীক্ষা দিতি চাই। আমাকে নৌকো থেকেই পাড়ে নামাবার ব্যবস্থা করুন।

পাড়ের কাছে অসংখ্য ভিক্ষুকের সঙ্গে বসে ছিল একজন তীর্থযাত্রী। লোকটির মলিন ছিন্নভিন্ন পোশাক, মুখে একমুখ দাড়ি, চুল ধুলোমাখা আঠা। কিন্তু লোকটা বেশ লম্বা আর শক্তসমর্থ জোয়ান। ভিড়ের মধ্যেও তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে। সে দাঁড়িয়েছিল একেবারে ঝরনার পাশে। রাজা মার্ক তাকেই বললেন, ওহে, তুমি রানীকে চেয়ারসুদ্ধ তুলে পাড়ে নামিয়ে দিতে পারবে? যথেষ্ট ইনাম পাবে। শক্তি আছে তো?

—হ্যাঁ, হুজুর। নিশ্চয়ই পারবো।

লোকটি এসে অবলীলাক্রমে চেয়ারসুদ্ধ রানীকে তুলে নিল। তারপর যখন সে জলে পা দিয়েছে, তখন রানী মুখ নীচু করে খুব আস্তে বললেন, ত্রিস্তান!

তীর্থযাত্রী পলকের জন্য মুখ তুলে তাকালো রানীর দিকে।

রানী তখুনি অন্য দিকে মুখ ফেরালেন। তারপর বললেন, কি তুমি ঠিক পারবে তো? তোমার পা কাঁপছে কেন? ফেলে-টেলে দেবে নাকি?

তীর্থযাত্রী বললো, না, রানীমা ঠিক পারবো। অনেকদিন ব্রত করে উপবাসী আছি, তাই শরীরটা একটু দুর্বল।

রানী এবার আরও আস্তে বললেন, পথিক, আমাকে পাড়ে নামাবার সময় তুমি খুব সাবধানে নামাবে। খুব সাবধানে, বুঝেছো তো?

সে খুব আলতোভাবে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।

পাড়ে এসে চেয়ারটাকে নামাবার সময় তীর্থযাত্রী হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। চেয়ারসুদ্ধ হুড়মুড় করে পড়ে যেতেই রানী ভয়ে লোকটিকে জড়িয়ে ধরলো। কিন্তু এক মুহূর্তেই নিজেকে সামলে উঠে দাঁড়ালেন।

রাজা লোকটির হঠকারিতায় ছুটে এসে পায়ের ঠোক্কর দিয়ে বললেন, হতভাগা, সামর্থ্য নেই, তবে রাজী হলি কেন? প্রহরীরা এসে লোকটিকে মারতে লাগলো-রানীকে ফেলে দেওয়া, এতবড় সাহস! নিজের পোশাক ঠিক করতে করতে রানী করুণাঢালা গলায় বললেন, আহা গরীব লোক, খেতে না পেয়ে বোধহয় দুর্বল হয়ে গেছে। ওকে মেরো না তোমরা। ছেড়ে দাও। এই নাও তুমি।-রানী লোকটির দিকে একটি স্বর্ণমুদ্রা ছুঁড়ে দিলেন। মার খেয়ে লোকটি একটি কথাও বলেনি, মুদ্রাটি তুলে নিয়ে এবার ভিড়ের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালো।

রানী একে একে তাঁর কানের দুল, হাতের চুড়ি, সর্বাঙ্গের সমস্ত অলঙ্কার খুলে খুলে দান করলেন। রানীর পরনে রইলো শুধু পাতলা একটি সাদা সেমিজ। রানীর অমন শ্বেত হংসীর মতো লীলায়িত রূপসী শরীর, শুধুমাত্র কেটি স্বচ্ছ পোশাকে যেন শিল্পী হিসেবে প্রমাণ করলো ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠত্ব। মানুষের মধ্যে কোনো শিল্পী আজ পর্যন্ত ওরকম রূপের সৃষ্টি করতে পারেনি।

দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। তার মধ্যে অনেকক্ষণ পুড়ে পুড়ে একখণ্ড লোহা টকটকে লাল হয়ে আছে। রানীর সর্বশরীর কাঁপছে। তবু তিনি অচঞ্চল পায়ে এগিয়ে এলেন। প্রণাম করলেন অগ্নিকে। তারপর অকম্পিত কণ্ঠে বললেন, দুই দেশের নৃপতি, সমবেত বীরবৃন্দ ও দর্শকগণ! আপনাদের সামনে আজ আমি আমার সত্যের পরীক্ষা দেবো। ঈশ্বর স্বর্গ থেকে দেখছেন; তিনি সব সময়ে সত্যের পক্ষে। মহামান্য সম্রাট আর্থার, আপনি শুনুন, এই আমার সতীত্বের শপথ। আমি ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলছি, আজ পর্যন্ত কোনো পুরুষ আমাকে ছোঁয়নি বা আমি কাউকে ছুঁইনি-একমাত্র আমার স্বামী রাজা মার্ক, আর হ্যাঁ আর একজন- এইমাত্র যে দেখলেন-ঐ গরীব তীর্থযাত্রী আমাকে ফেলে দিয়েছিল-আমি ওকে জড়িয়ে ধরেছিলাম, ওকে ছাড়া আর কাউকে কখনও স্পর্শ করিনি। ঈশ্বর আমার সাক্ষী। আমি অন্তর থেকে এই সত্য উচ্চারণ করেছি। যদি সত্যের যথার্থ মর্যাদা থাকে তবে আগুনও তাকে পোড়াতে পারবে না।

রানী এবার রাজা মার্কের দিকে ফিরে বললেন, মহারাজ, এই শপথই কি যথেষ্ট? উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠায় রাজা মার্ক কথা বলতে পারছিলেন না, ঘাড় নেড়ে তৎক্ষণাৎ সম্মতি জানালেন। রানী তবু বললেন, আপনি আপনার প্রজাদেরও প্রশ্ন করুন, তারা আমার এই অঙ্গীকার মেনে নেবে কিনা! রাজা তখন নদীর অন্য পারে অপেক্ষারত তাঁর দেশবাসীদের উচ্চকণ্ঠে রানীর শপথের কথা শোনালেন। তারাও সম্মতি জানালো তৎক্ষণাৎ।

রানী এবার আগুনের আরও কাছে এগিয়ে এলেন। এখন আর তাঁর শরীর কাঁপছে না। তিনি আবার বললেন, হে অগ্নি, আমার স্বামী এবং ঐ তীর্থযাত্রী এই দুজনকে ছাড়া আমি আর কারুকে কখনও স্পর্শ করিনি। এই আমার সতীত্ব।—তারপর, বিনা দ্বিধায় আগুনের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিনি লোহার টুকরোটা তুলে নিলেন। সবদিক ঘুরে সকলকে উঁচুকরা নিজের হাত দেখালেন। তারপর, লোহাটা ফেলে দিয়ে প্রথমেই স্বস্তিবাচক ক্রুশ-চিহ্ন আঁকলেন নিজের বুকে। হাতের মুঠো খুললেন। পরিষ্কার, অক্ষত সেই নবনীত হাত। একটু ছাইয়ের মলিনতাও লাগেনি। জনতা জয়ধ্বনি দিয়ে উঠলো। রানীর চরিত্র নিষ্কলঙ্ক।

মহান রাজা আর্থার সিংহাসন ছেড়ে উঠে বললেন, আমি এই নারীর সতীত্বের সাক্ষী রইলাম। মা, আর কোনো দুষ্ট লোক যদি তোমাকে কখনও সন্দেহ করে, আমার তরবারি তাকে শাস্তি দেবে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *