।। সূর্যযোগমাহাত্ম্যবর্ণনম্।।
তমেকক্ষরং ধাম পরং সদসতোমহৎ ভেদাভেদস্বরূপস্থং প্রণিপত্য রবিং নৃপ।।১।। প্রবক্ষামি যথাপূর্বং বিরিঞ্চেণ মহাত্মনা। ঋষীণাং কথিতং পূর্বং তং নিবোধত নরাধিপ।। ২।। আরাধনায় সবিতুমহাত্মা পদ্মসম্ভবঃ। যোগং ব্রহ্মপরং প্রাহ মহষীণাং যথা প্রভুঃ।।৩।। সমস্তবৃত্তিসংরোধাৎকৈবল্য প্রতিপাদকম্। তদা জগৎ পতিব্রহ্মা প্রনিপত্য মহর্ষিভিঃ।।৪।। সর্বেঃ কিলোক্তো ভগবানাত্মযোনিঃ প্রজাহিতম্। যোয়ং যোগো ভগবতা প্রোক্তা বৃত্তিনিরোধজঃ।।৫।।
।। সূর্যযোগ মাহাত্ম্য বর্ণন।।
এই অধ্যায়ে সূর্যদেবের যোগমাহাত্মের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।। সুমন্তু মহর্ষি বললেন, হে নৃপ, তিনি এক অক্ষর, সদ এবং অসদের মধ্যে মহান। ভেদ ও অভেদ স্বরূপেস্থিত। পরধাম সূর্যকে প্রণিপাত করা উচিৎ এবং আমি রবিকে প্রণাম করে তোমাকে বলছি, যেমন মহাত্মা বিরিঞ্চি পূর্বে ঋয়িদের নিকট বলেছিলেন। হে নরাধিপ, এখন তুমি তা জান।।১-২।।
সবিতার আরাধনা করার জন্য মহাত্মা পদ্মম্ভব ব্রহ্মা প্রভু মহর্ষিগণকে ব্রহ্মপরযোগ বলেছিলেন।।৩।।
প্রাপ্তং শক্যঃ স ত্বনেকৈজন্মভিজগয়ঃ পতে। বিষয়া দুজয়া নৃণামিন্দ্রিয়াকর্মিণ প্ৰভো।।৬।। বৃত্তয়শ্চেতসশ্চাপি চঞ্চলস্যাপি দুধরাঃ। রাগাদতঃ কথং জেতুং শক্যা বর্ষশতে রপি।।৭।। ন যোগযোগ্যং ভবতি মন এভিরনির্জিতৈঃ। অল্পায়ুযশ্চ পুরুষা ব্রহ্মণকৃতযুগেপ্যমী।।৮।। ত্রেতায়াং দ্বাপরে চৈব কিমু প্রাপ্তে কলৌ যুগে। ভগবন স্বামুপাসীনান প্রসন্নৌ বক্তমহসি।।৯।। অয়ায়াসেন মেনৈব উত্তরেম ভবাণবম। দুঃখান বুমগ্নাঃ পুরুষা প্রাপ্য ব্রহ্মন মহাপ্লবম।।১০।। উত্তরেম ভবানভৌধিং তথা ত্বমনুচিন্তয়। এ বমুক্তাস্তদা ব্রহ্মা ক্ৰিয়াযোগং মহাত্মণাম্।।১১।। তেষামৃষীমামাচষ্ট নরাণাং হিতকাম্যয়া। আরাধস্নত বিশ্বেশং দিবাকরমতন্দ্রিমণাঃ।।১২।।
সেটি সমস্ত বৃত্তিগুলির সংরোধের দ্বারা কৈবল্য প্রতিপাদক যোগ। সেই সময় জগৎপতি ব্রহ্মার কাছে সমস্ত মহর্ষিগণ বলেছিলেন, প্রজাহিতের জন্য ভগবান্ আত্মযোনি সৃষ্টি করেছেন, তাঁরা আরও বলেছিলেন, হে জগৎপতি, আপনি যে বৃত্তিনিরোধ যোগের কথা বলেছেন, তা অনেক জন্ম ধরে কঠিন পরিস্থিতির মাধ্যমে প্রাপ্ত হওয়া যায়। হে প্রভো, এই বিষয়টি অনের কঠিন পরিস্থিতির দ্বারাও প্রাপ্ত হওয়া যায় না। এটি মনুষ্য ইন্দ্রিয় হঠাৎ কর্তন করার মতো, বৃত্তিগুলি চঞ্চলচিত্ত অপেক্ষা অধিক কঠিন, রাগাদি বৃত্তিসমূহ শতবর্ষেও কিভাবে জয় করা সম্ভব।।৪-৭।।
এই অনির্জিত বৃত্তিসমূহের দ্বারা মনযোগের যোগ্য হয়না। হে ব্রাহ্মণ এই কৃতযুগে মানুষ অল্পায়ু হয়। ত্রেতাও দ্বাপর তথা কলিযুগে তো আয়ু সম্পর্কে বলার কিছু নেই। হে ভগবান, আপনার উপাসনাকারীদের প্রতি প্রসন্নতাপূর্বক সেই বিষয়ে কিছু বলুন।।৮-৯।।
হে ব্ৰহ্মণ, কিভাবে এই সাংসারিক দুঃখ সাগর অতিক্রম করা যয় তা বলুন। সংসার সমুদ্র পারকারী কোনো যোগ মাহাত্ম্য বলুন। ব্রহ্মাজীকে এইরূপ জিজ্ঞাসা করলে প্রত্যুত্তরে তিনি বিশ্বপতি আদিত্য দিবাকরের অতন্দ্র আরাধনার কথা বলেন।।১০-১২।।
বাহ্যালম্বন সাপেক্ষাস্তুমজং জগতঃ পতিম। ইজ্যাপূজানমস্কার শুশ্রূপাভিরহনিশম।।১৩। ব্রতোপবাসৈবিধেব্রাহ্মণানাং চ তপনৈঃ। তৈস্তৈশ্চাভিমতৈঃ কার্যৈযে চ চেতসি তুষ্টিদাঃ।।১৪।। অপরিচ্ছেদ্য মাহাত্ম মারাধয়ত ভাস্করম্। তন্নিষ্টাস্তদগতধিয়স্তৎ কর্মাণস্তদাশ্রয়াঃ।।১৫।। তদৃষ্টয়স্তন্মনসঃ সর্বস্মিনস্ত ইতি স্থিতাঃ। সমস্তানয়থ কর্মাণি তত্ৰ সৰ্বাত্মনাত্মানি।।১৬।। সংন্যসব্ধং বঃ কর্ত সমস্তাবরণক্ষয়ম্। এতত্তদক্ষরং ব্রহ্মা প্রধান পুরুষোবুভৌ।।১৭।। মতো যদিমন্যথা চোভৌ সর্বব্যাপিন্যবস্থিতৌ। পরঃ পরাণাং পরমঃ সৈকঃ সুমনসাং পরঃ।।১৮।। যস্থাদ্ভিন্নমিদং সর্বং যচ্ছেদং সচ্চ নেগতি। মোক্ষকারণমব্যক্তমচিন্ত্যম পরিগ্রহম্। সমারাধ্য জগন্নাথং ক্রিয়াযোগেন মুচ্যতে।।১৯।।
জগৎপতি সূর্য্যদেবকে ইজ্যা, পূজা, নমস্কার, ব্রতোপবাস, তর্পন ইত্যাদি দ্বারা দিবারাত্র আরাধনা করতে থাকো।।১৩।।
ঋষি আগেও বললেন, অপরিচ্ছেদ্য মাহাত্ম্য ভগবান্ ভাস্করের প্রতি তন্নিষ্ঠ হয়ে তার আরাধনা করতে থাকো। তাঁর প্রতি মন ও দৃষ্টি প্রদান করে তাঁর কর্মে নিজেকে সমর্পিত করো। তিনি তোমাদের সমস্ত আবরণ ক্ষয়কর্তা ও অক্ষয় পুরুষ।।১৪-১৭।।
পর ও সুমনস দুইয়ের প্রতিই তিনি সমান দৃষ্টি প্রদান করেন। তিনি ভিন্ন আবার অভিন্ন, অব্যক্ত, অচিন্ত্য, অপরিগ্রহ, জগন্নাথ। তাঁর আরাধনা করলে মুক্তি প্রাপ্ত হওয়া যায়।।১৮-১৯।।
ইতি তে ব্রহ্মণ শ্রুত্বা রহস্যমৃষিসত্তমাঃ।।২০। নরানামুপকারায় যোগশাস্ত্রানি চক্রিরে। ক্রিয়াযোগপরানীহ মুক্তিকারীম্যনেকশঃ।।২১।। আরাধ্যতে জগন্নাথ স্তদনুষ্ঠানতৎপরেঃ। পরমাত্মা স মার্তন্ড সর্বেশঃ সর্বভাবনঃ।।২২।। যান্যুক্তানি পুরাতেন ব্রহ্মণা কুরুনন্দন। তানি তে কুরুশাদুল সর্বপাপহরান্যহম্।।২৩।। বক্ষামি ক্রয়তামদ্য রহস্যমিদমুত্তমম্। সংসারাণবমগ্নানাং বিষয়াক্রান্তচেতসাম্।।২৪।। হংসপোতং বিমা নান্যাক্তিচিদস্তি পরায়ণম্। উত্তিষ্ঠংশ্চিন্তয় রবিং ব্রজংশ্চিন্তয় গোপতিম্।।২৫।। ভুজংশ্চিন্তয় মার্তন্ডং স্বপশ্চিন্তয় ভাস্করম্। এবমেকাগ্রচিত্তস্ত্বং সংশ্রিতঃ সততং রবিম্।।২৬।। জন্মমৃত্যুমহাগ্রাহং সংসারম্ভস্তরিষ্যসি।।২৭।। গ্রহেশমীশং বরদং পুরাণং জগদ্বিধাতারমজং নিত্যম্। সমাশ্রিতা সে রবিমীশিতারং তেষাং ভবো নাস্তি বিমুক্তিভাজাম্।।২৮।।
এইপ্রকারে সমস্ত ঋষিগণ এই রহস্য ব্রহ্মাজীর নিকট শ্রবণ করে সকলে যে’ গম্বাসত্র চর্চা করতে লাগলেন। সেই পরমাত্মা স্বরূপ জগৎপতি মার্তন্ডের আরাধনা করলে তিনি সকলের মঙ্গল করেন।।২০-২২।।
হে কুরুনন্দন, পূর্বে ব্রহ্মাজী পাপহরণকারী যে রহস্য কথা বলেছিলেন, সেই শ্রেষ্ঠ রহস্য আজ আমি বলব, শ্রবণ কর। সংসার সমুদ্রে নিমজ্জিত পুরুষের পক্ষে তা হিতকর। হংসপোত ব্যতীত অন্য কোনো পরায়ণ নেই। সুতরাং সর্বদা যথা গমন, সেবন ইত্যাদি সময়ে রবি চিন্তন কর। এই ভাবে তুমি একাগ্রচিত্তে নিরন্তর রবির সংশয় কর।।২৩-২৬।।
জন্ম-মৃত্যুরূপ এই সংসার যাতনা থেকে মুক্ত হতে গ্রহপতি, বরদাতা, পুরাণপুরুষ, জগৎ বিধাতা অজন্মা রবির আশ্রয় গ্রহণকারী এই সংসারযাতনা থেকে মুক্তি পায়।।২৭-২৮।।