সুপারস্টার আইনস্টাইন

সুপারস্টার আইনস্টাইন

অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের চরিত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য কী? যে-বৈশিষ্ট্যের জন্যে তিনি আমাদের যুগযুগান্তরের প্রেরণা? যে-বৈশিষ্ট্যের জন্যেই তিনি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, তাঁর জীবনকাহিনির টান কোনওদিন ফুরিয়ে যাওয়ার নয়!

আইনস্টাইন নিজে জানাচ্ছেন তাঁর চরিত্রের মহত্তম বৈশিষ্ট্যটির কথা—

the ability to rise above mere existence by sacrificing oneself through the years for an impersonal goal. This is the best, indeed the only way, in which we can make ourselves independent from personal fate and from other human beings.

কোনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নয়, সম্পূর্ণ এক নৈর্ব্যক্তিক উদ্দেশ্যে নিজের আনন্দ-সুখ-সমৃদ্ধিকে বছরের পর বছর ত্যাগ করে নিছক জৈবিক অস্তিত্বের উপরে উঠে যাওয়ার শক্তিই আমার চরিত্রের সবচেয়ে বড় চিহ্ন। এইটেই সবচেয়ে ভাল উপায়, এমনকী একমাত্র উপায়, আমাদের ব্যক্তিগত নিয়তি ও মানুষের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের।

এই কথাগুলি বীজমন্ত্রের মতো, যার মধ্যে নিহিত আছে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সমস্ত সংগ্রাম ও সাফল্যের প্রেরণা। আজীবন তিনি সত্যের সন্ধানী। বিশ্বজগৎ সম্পর্কে বিচিত্র প্রশ্নে আলোকিত হয়েছেন সারাজীবন। খুঁজেছেন রহস্যের উন্মোচন। সরে গেছে অন্ধকার। সমাধান করেছেন বহু প্রশ্নের। কিন্তু কখনও ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি, খ্যাতি, অর্থ, সুখ-সম্পদের জন্যে ভাবেননি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। তিনি জানতে চেয়েছেন ঈশ্বরের মন। বিজ্ঞান তাঁর কাছে সত্যসন্ধানের উপায়। তাই তাঁর জীবনকাহিনি কঠিন ব্রত, ক্লান্তিহীন পরিশ্রম, লোভমুক্ত বিলাসবিমুখ ত্যাগের গল্প।

তবু সারাজীবনের সাধনা, সংগ্রাম আর ত্যাগের মহিমা হয়েই যেন এল অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের জীবনে বিস্ময়কর সাফল্য, অভূতপূর্ব খ্যাতি, অনন্য ব্যক্তিগত বর্ণময়তা। সমগ্র বিশ্ব জানাল তাঁকে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর স্বীকৃতি ও সম্মান। তাঁর বিপুল প্রতিভা পেল বিশ্বের শ্রদ্ধা ও নতি।

ঠিক কখন কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কি নিজেও জানতেন এমন ঘটবে? তাঁর নির্জন, ক্লান্তিহীন, একাগ্র বিজ্ঞানসাধনা তো শুধু চেয়েছে সত্যের এষণা ও উন্মোচন। খ্যাতি ও অর্থের কথা তো তিনি ভাবেননি কখনও।

তবু সারাজীবনের ত্যাগব্রত ও বিশ্বরহস্যের সন্ধান তাঁকে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত করল খ্যাতির অলৌকিক শীর্ষে। রাতারাতি বদলে গেল তাঁর জীবন। আকাশে-বাতাসে শুধু তাঁর জয়ধ্বনি। লক্ষ লক্ষ মানুষের উৎসাহ তাঁকে ঘিরে! প্রণতি তাঁরই কাছে!

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন দাবি করলেন, মহাশূন্য সোজা নয়, বাঁকা!

তার মানে?

তার মানে, আলো যদি সামনের দিকে চলতেই থাকে তা হলে চিরদিন সেই আলোক রেখাটি সোজা যাবে না। মহাশূন্য বাঁকা বলে আলোও বেঁকে যাবে।

অর্থাৎ একদিন সেই আলো যেখান থেকে চলতে শুরু করেছিল, সেইখানেই হয়তো ফিরে আসতে পারে।

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কি ঠিক বলছেন? কী করে পরীক্ষা করে দেখা যাবে, আলোর গতিপথ সোজা না বাঁকা?

১৯১৯ সাল। সে-বছর পূর্ণ সূর্যগ্রহণ। সূর্যগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে দুই জায়গায় বসানো হল দুটি ক্যামেরা।

একটি ক্যামেরা দক্ষিণ আমেরিকায়। আর একটি ক্যামেরা পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে একটি দ্বীপে।

একটি ক্যামেরার দৃষ্টি পথ মেঘে ঢাকা পড়লেও অন্য ক্যামেরাটি দিয়ে গ্রহণের ছবি তোলা যাবে— তাই দুটি ক্যামেরা। ক্যামেরা দুটি সরাসরি তাকিয়ে সূর্যের দিকে। সাধারণত সূর্যের আলোর এত জোর যে ক্যামেরার লেন্স ধাঁধিয়ে যায়। ঝলসে-যাওয়া লেন্সে আলোর যাত্রা পথের ছবি তোলা যায় না। কিন্তু পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় সূর্য আর পৃথিবীর মাঝখানে চলে এল চাঁদ। ফলে সূর্যের আলো স্তিমিত হয়ে পৃথিবী প্রায় অন্ধকার হয়ে গেল। ক্যামেরার লেন্স আর ঝলসে গেল না। সম্ভব হল আলোর গতিপথের ছবি তোলা।

ছবিতে কী দেখা গেল? দেখা গেল, সত্যিই আলোর পথ বেঁকে যাচ্ছে, সূর্যের উপস্থিতির প্রভাবে।

১৯১৯-এর ৭ নভেম্বর— জগৎ জুড়ে প্রকাশিত হল এই সংবাদ— অ্যালবার্ট আইনস্টাইন নির্ভুল। আলো মহাশূন্যে বেঁকে যায়!

একটি ছোট্ট ছড়ায় চমৎকারভাবে বলা হল সেই কথা—

All doubts have been spent.

At last it has been found

Light is naturally bent

to Einstein’s great renown!

আলোর পথ আকাশে যায় বেঁকে

আর যে তাতে নেই কোনও সন্দেহ

ভুবন জুড়ে উঠল জয়ধ্বনি

আইনস্টাইন ঠিক বুঝেছেন তাকে!

ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটির বিদগ্ধ সদস্যরা আর রয়্যাল অ্যাসট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বিখ্যাত সদস্যরা একসঙ্গে বসলেন মিটিংয়ে, পিকাডিলির বারলিংটন হাউসে। এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্বীকৃতি জানাবার জন্যে এই মিটিং। প্রত্যেকের মনের মধ্যে একটিই প্রশ্ন— সূর্যগ্রহণ থেকে কী জানা গেল!

মঞ্চে উপবিষ্ট রয়্যাল সোসাইটির চেয়ারম্যান, ইলেকট্রন-এর আবিষ্কারক স্যার জে. জে. টমসন। আর দর্শক আসনে বসে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপক, দার্শনিক অ্যালফ্রেড নর্থ হোয়াইটহেড!

মঞ্চের পিছনে আইজ্যাক নিউটনের বিশাল একটি ছবি-তিনিও যেন উপস্থিত এই মিটিংয়ে।

হোয়াইটহেড লিখলেন, The whole atmosphere of tense interest was exactly that of the Greek drama. We were the chorus commenting on the decree of destiny and in the background the picture of Newton to remind us that the greatest of scientific generalizations was, now, after more than two centuries, to receive its first modification.

অসামান্য এই উক্তি। গ্রিক নাটক যেমন উত্তেজনা জাগিয়ে তোলে ঠিক তেমনি উদ্বেগ আর উত্তেজনা চারধারে। আমরা এই মুহূর্তে যেন সবাই গ্রিক নাটকের ‘কোরাস’— আমাদের মুখ থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে ভবিষ্যতের বাণী! পিছনে নিউটনের প্রতিকৃতিটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, মহত্তম বৈজ্ঞানিক মতবাদের কথা, প্রায় দুশো বছর পরে বৈজ্ঞানিক ভাবনাতে যুক্ত হল নতুন মাত্রা— এই প্রথম!

স্যার জে. জে. টমসন বললেন, One of the greatest achievements of human thought.

মানুষের ভাবনা কতদূরে, কোন মাত্রায় পৌঁছতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন!

আইনস্টাইন নিজে তখন কোথায়? তিনি তখন বার্লিনে! তিনি হাজার হাজার মানুষের এই উৎসাহ, উত্সব, উচ্ছ্বাসের মধ্যে থাকলেন না বটে, কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছল এই ঐতিহাসিক সভার বাণী ও শংসা।

তাঁর মনে কোনও অহংকার নেই। তিনি তাঁর মনের আনন্দ প্রকাশ করলেন একটি নতুন বেহালা কিনে। আর মনে মনে বুঝলেন, স্যার আইজ্যাক নিউটনের যুগ বদলাল।

কিন্তু তবু তিনি নত হলেন নিউটনের কাছেই। লিখলেন এই কথা—

Newton, forgive me. You found the only way, which in your age, was just about possible for a man of highest thought and creative power.

নিউটন, ক্ষমা করুন আমাকে। আমি জানি, যে-পথ আপনি দেখিয়েছিলেন, আপনার সময়ে সেই পথ দেখাতে পারতেন শুধু আপনারই মতো কোনও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিশীল ধীময় মানুষ!

খ্যাতির প্লাবনকে থামিয়ে রাখতে পারলেন না অ্যালবার্ট আইনস্টাইন।

তাঁর থিওরি অফ জেনারেল রিলেটিভিটি নাড়া দিল বিশ্বের চেতনাকে। এই বিশ্ব দ্বিতীয় মহাযুগ্ধের দ্বারা তখন ক্ষতবিক্ষত।

মানুষ তখন চাইছে এমন কিছু ঘটুক যা আবার মানুষের মননের জয়কে ধ্বনিত করবে।

আইনস্টাইন সেই মুহূর্তে হয়ে উঠলেন ভাবনার নায়ক। তাঁর মধ্যে মানুষ আবার ফিরে পেল নিজের অস্তিত্বের অহংকার ও প্রত্যয়। ‘Einstein’s theory of relativity burst into the consciousness of a world that was weary of war and yearning for a triumph of human transcendence.’

১৯১৯-এর ৭ নভেম্বর লন্ডন ‘টাইমস’-এ প্রকাশিত হল জার্মান পরাজয়ের কথা।

একই কাগজে পাশাপাশি বেরোল এই খবর—

Revolution in Science

New Theory of the Universe

Newtonian Idieas Overthrown.

বিজ্ঞানে বিপ্লব

মহাজগৎ সম্পর্কে নতুন ধারণা

নিউটনের ভাবনা পরিবর্তিত।

আইনস্টাইনের বিশ্বভাবনা নিয়ে সংবাদপত্রে লেখা হল— আইনস্টাইনের ভাবনা পরিবর্তন করবে আমাদের বিশ্ববীক্ষণের, জন্ম নেবে নতুন ভুবনদর্শন, যে দর্শন এ-পর্যন্ত মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের যাবতীয় ভাবনাকে ধুয়েমুছে দেবে— a philosophy that will sweep away nearly all that has hitherto been accepted.

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ বেরল এই হেডলাইন—

Lights all askew in the heavens!

Einstein Theory Triumphs

Stars Not Where They Seemed or Calculated to be.

কে ভাবছে আকাশের তারাদের কথা?

তখন তো মর্ত্যের তারা আইনস্টাইনই একমাত্র তারা!

তিনি তো শুধু বিজ্ঞানী নন। তারকা হওয়ার যাবতীয় মালমশলাও যে তাঁর মধ্যে ভর্তি: Einstein had just the ingredients to be transformed into a star!

কী এই মালমশলা?

পৃথিবী মহানন্দে আবিষ্কার করল, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন একেবারেই নন এক বর্ণহীন শুকনো পণ্ডিত যিনি শুধু বইপড়া বিদ্যে আর বড় বড় দর্শনের কথা জাহির করে বেড়ান। একজন সেলিব্রিটির মধ্যে যা-যা আমরা চাই, সবই যে আছে আইনস্টাইনের মধ্যে!

তাঁর বয়স মাত্র চল্লিশ।

তাঁর মধ্যে আছে মানুষের মন জয় করার ক্ষমতা।

তিনি এতবড় বিজ্ঞানী হয়েও বেশ রসিক।

চমৎকার কথা বলেন তিনি।

বিশেষ করে নারীর মন জয় করতে তিনি পারঙ্গম!

এই তো সেদিন এক সুন্দরী মেয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনার থিওরি অফ রিলেটিভিটি আমাকে সহজ করে বুঝিয়ে দিতে পারবেন?

একটুও বিরক্ত হলেন না আইনস্টাইন। সামান্য হেসে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললেন, When a man sits with a pretty girl for an hour, it seems like a minute. But let him sit on a hot stove for a minute and it’s longer than an hour. That’s relativity!

অ্যালবার্ট আইনস্টাইনকে দেখতে শুধু হ্যানসামই নয়, তাঁকে ভিড়ের মধ্যেও নজরে পড়ে, তিনি যে ‘বিশেষ’, যাকে বলে distinctive, অন্যদের থেকে আলাদা।

পোশাকে আলাদা। এক মাথা সচেতনভাবে অবিন্যস্ত চুলের বিন্যাসে আলাদা। বোধদীপ্ত চাউনিতে আলাদা। বাক্যের ঝলকে আলাদা। এই সবকিছুর সঙ্গে তাঁর বিশ্বজোড়া খ্যাতি। তিনি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন!

তারকা হওয়ার জন্যে এর চেয়ে বেশি কী লাগে?

প্রতিদিন তাঁর জন্যে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে চিঠি। কত মানুষ আলাপ করতে চায় তাঁর সঙ্গে। কত মানুষ চায় তাঁর সাক্ষাৎকার। কেউ-কেউ চায় শুধু একটি চিঠি— তাঁর সই করা!

আইনস্টাইন তাঁর এই নতুন জীবন প্রসঙ্গে লেখেন—

It’s so dreadful that I can barely breathe anymore, not to mention getting around to any sensible work. Since the flood of newspaper articles, I’ve been so deluged with questions, invitations and requests that I dream I’m burning in Hell and the postman is the Devil eternally roaring at me, hurling new bundles of letters at my head because I have not yet answered the old ones.

নতুন জীবনে আইনস্টাইন প্রায় রুদ্ধশ্বাস। নিশ্বাস ফেলার সময় নেই তো কাজ করবেন কী করে! খবরের কাগজে তাঁর বিষয়ে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন, নিমন্ত্রণ, অবরোধের প্লাবনে ভেসে যাচ্ছেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন! তাঁর মনে হচ্ছে তিনি দহিত হচ্ছেন নরকে। আর সেই নরকের শয়তান হল পোস্টম্যান। সারাক্ষণ যেন তাঁরই উদ্দেশে রেগে গর্জন করছে সে আর ছুঁড়ে মারছে তার দিকেই নতুন নতুন চিঠির বান্ডিল। পুরনো চিঠিগুলোর এখনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি— তাই এই শাস্তি।

আইনস্টাইনের সুপারস্টার-গ্ল্যামার, মহাতারকা-উজ্জ্বলতা কোন তুঙ্গে পৌঁছেছিল? একটি নিদর্শন দিলেই বোঝা যাবে। চার্লি চ্যাপলিন তাঁকে নিয়ে গেলেন হলিউডে তাঁর ‘সিটি অফ লাইটস’-এর উদ্বোধনে। এ-যুগে রকস্টারকে দেখে যেভাবে চিত্কার আর হুল্লোড় করে ভক্তের দল সেইভাবেই আইনস্টাইনকে দেখেও পাগল হয়ে প্রায় দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিল মানুষ। সেই সময়ের জার্মান কনসালের মতে, তেমন কোনও পরিচিত কারণ ছাড়াই আইনস্টাইনের ব্যক্তিত্ব উস্কে দেয় ‘মাস হিস্টিরিয়া’, শুধু রোম্যান্টিক স্বপ্নবিলাসীদের মধ্যেই নয়, মাথা ঠান্ডা মানুষের মধ্যেও। শুধু হলিউডেই নয়, সব জায়গাতেই একইরকম ছবি।

কিন্তু সত্যিই কি প্রচারবিমুখ ছিলেন আইনস্টাইন?

তা হয়তো নয়। সব তারকার মতো তিনিও পছন্দ করতেন প্রচার, ক্যামেরার ঝলক, তাঁকে ঘিরে মানুষের ভিড়।

তাঁর সম্পর্কে লেখক সি. পি. স্নোর মন্তব্য—

There was a streak in him that enjoyed the photographers and the crowds.

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আজও সুপারস্টার।

তাঁর তারকামহিমার কাছাকাছি আর কোনও বিজ্ঞানী আজও আসতে পারেননি।

তাঁর বিষয়ে কত গল্প দেশ থেকে দেশান্তরে— কোনওটা সত্যি, কোনওটা হয়তো মিথ্যে।

আগেই বলেছি, তাঁর জীবন কাহিনিতে মিশে গেছে মিথ এবং মিথ্যা। যেমন হয় সব তারকার জীবনে।

তাঁর অপূর্ব আবেদন যতখানি বিজ্ঞানী হিসেবে, ততখানিই মানুষ হিসেবে।

তাঁর মেধার দীপ্তি, তাঁর অবিস্মরণীয় সৃষ্টিশীলতা, তাঁর ভাবনার ব্যাপ্তি, তাঁর দর্শনের গভীরতা, তাঁর ভুবনচেতনার মৌলিকতা, তাঁর স্বাধীন চিন্তার সাহস— সব মিলিয়ে তিনি সেই সুপারস্টার। তিনি এখনও আমাদের প্রেরণা, তাঁর জীবন আমাদের কাছে নিয়ে আসে একটিই বার্তা— নিজেকে উজাড় করে স্বার্থহীনভাবে কাজ করলে সব বাধা অতিক্রম করে মানুষ পৌঁছতে পারে উত্কর্ষের কোন পরম বিন্দুতে!

নিবিড় ঘন আঁধারে জ্বলিছে ধ্রুবতারা।

… … …

বিষাদে হয়ে ম্রিয়মাণ বন্ধ না করিয়ো গান।

সফল করি তোলো প্রাণ টুটিয়া মোহকারা॥

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *