।। সাবিত্রী- মাহাত্ম্য।।
কেশান্তঃ ষোড়শ বর্ষে ব্রাহ্মণস্য বিধীয়তে। রাজন্য বন্ধোদ্বাবিংশে বৈশ্যস্য এ্যধিকেততঃ।।১।। অমন্ত্ৰিকা সদা কার্যা স্ত্রীণাং চূড়া মহীপতে। সংস্কারহেতোঃ কার্যস্য যথাকালং বিভাগশঃ।। ২।। বৈবাহিকো বিধিঃ স্ত্রীণাং সংস্কারো নৈগমঃস্মৃত। নিবসেদ্বা গুরোর্বাপি গৃহে বাগ্নিপরিক্রিয়া।।৩।।
এই অধ্যায়ে প্রণবের অর্থ বর্ণন, সাবিত্রী মাহাত্ম্য বর্ণন এবং উপনয়ন সংস্কার বিধির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
মহর্ষি সুমন্তু বললেন, ব্রাহ্মণের ষোড়শ বর্ষ, ক্ষত্রিয়ের দ্বাবিংশ এবং বৈশ্যের পঞ্চবিংশ বর্ষ মধ্যে কেশান্ত করা বাঞ্ছনীয়।।১।।
তিনি বললেন, হে মহীপতি, স্ত্রীলোকে চূড়াকরণ করে নেওয়া প্রয়োজন।।২।।
স্ত্রীলোককে বিবাহ করার যে প্রক্রিয়া তা বেদানুকুল।।৩।।
এষ তে কথিতো রাজন্নৌপনায়নিকো বিধিঃ। দ্বিজাতীনাং মহাবাহো উৎপত্তিব্যজ্ঞকঃ পরঃ।।৪।। কর্মযোগমিদানীং তে কথয়ামি মহাবল। উপণীয় গুরুঃ শিষ্যং প্রথমং শৌচমাদিশেৎ।। ৫।। আচারমগ্নিকাযং চ সন্ধোপাসনমেব চ। অধ্যাপয়েও সচ্ছিয্যান্সদাচান্ত উদভমুখঃ।।৬।। ব্রহ্মাজ্ঞলিকরো নিত্যমধ্যাপ্যো বিজিত্তেন্দ্রিয়ঃ। লঘুবাসাস্তথৈকাগ্রঃ সুমনা সুপ্রতিষ্ঠিতঃ ।।৭ ।। ব্রহ্নারম্ভেহবসানে চ পাদৌ পূজ্যৌ গুরোঃ। সংহত্য হস্তাবধ্যেয়ং স হি ব্ৰহ্মাজ্ঞলিঃ সমৃতঃ।।৮।। ব্যত্যস্তপাণিনা কাৰ্যমুপসংগ্রহণং গুরোঃ। সত্যেন সত্যঃ সপ্রষ্টব্যো দক্ষিণন তু দক্ষিণঃ।।৯।।
হে রাজন, উপনয়ন সম্পর্কিত বিধি তোমাকে আমি বলেছি। হে মহাবাহু, যা দ্বিজাতিগণের শ্রেষ্ঠ উৎপত্তিব্যঞ্জক। ৪।
হে মহাবলী, এবার তোমাকে কর্মযোগ বিধির সম্পর্কে বলবো। গুরুদেবের কর্তব্য হল প্রথমে নিজ শিষ্যের উপনয়ন সংস্কার করে তাকে শৌচ রাখার জন্য উপদেশ প্রদান করা।।৫।।
বিভিন্ন আচারাদি, অগ্নিকার্য এবং সন্ধ্যাহ্নিক গুরুদেব তাকে শেখাবেন। সৎশিষ্য আচারান্তপূর্বক উত্তরমুখ হয়ে সর্বদা ব্রহ্মাঞ্জলি করবেন এবং জিতেন্দ্রিয় শিষ্য স্বাধ্যায় অনুশীলন করবেন। অধ্যয়নকালে লঘু ও স্বল্প বস্ত্র ধারণ করতে হয়্য, তথা একাগ্রচিত্তে ও সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে অধ্যয়ন করা উচিৎ।।৬-৭।।
বেদাধ্যয়নের পূর্বে ও সমাপ্তিকালে শ্রীগুরুর চরণ বন্দনা করা উচিৎ। দুটি হাত সংহত করে অধ্যয়ন আরম্ভ করা উচিৎ। এরূপ হাত স্থাপন করাকে ব্রহ্মাঞ্জলি বলে।।৮।।
ব্যপ্তস্থ হস্ত দ্বারা গুরুদেবের পাদস্পর্শপূর্বক প্রণাম করা উচিৎ। বাম হস্ত দ্বারা বামপদ এবং দক্ষিণ হস্ত দ্বারা দক্ষিণপদ স্পর্শ করা উচিৎ।।৯।।
অধ্যেষ্যমাণং তু গুরুনিত্যকালমতান্দিতঃ। অধীত্ব ভো ইতি ব্রূয়াদ্বিরামোহস্তিতি বারয়েৎ।।১০।। ব্রহ্মণঃ প্রণবং কুর্মাদাদাবন্তে চ সর্বদা। স্রবত্যনোংকৃতং পূর্বং পরস্তাচ্চ বিশীর্যতে।।১১।। শ্রয়তাং চাপি রাজেন্দ্র যথোংকারং দ্বিজোহইতি। প্রাক্কুলানপর্যুপাসীনঃ পবিত্রেশৈচর পাবিতঃ।।১২।। প্রাণায়ামৈস্ত্রিভিঃ পুতস্ততত্ত্বোং কারমহতি। ওঁকারলক্ষণং চাপি শৃণুস্ব কুরুনন্দন।।১৩।। অকারং চাপকোরং চ মকারং চ প্রজাপতিঃ। বেদত্রয়াত্তু নিগৃহ্য ভূর্ভুবঃ স্বীরতীতিচ।।১৪।। শ্রিভ্য এব তু বেদেভ্যঃ পাদং পাদমদূদুহৎ। তদিত্যচোহস্যাঃ সাবিত্রা পরমেষ্ঠী প্রজাপতিঃ।।১৫।
প্রত্যহ গুরুদেব তন্দ্রাভংগ করে শিষ্যগণকে “অধ্যয়ন শুরু কর” ইত্যাদি বলে নির্দেশ দেওয়া মাত্র অধ্যয়ন শুরু করা উচিৎ এবং “বিরাম কর” বললে তবেই অধ্যয়ন বন্ধ করা উচিৎ।।১০।।
‘ব্রহ্ম’ অর্থাৎ বেদ অধ্যয়নের পূর্বে ও সমাপ্তিতে সর্বদা প্রণব (ওঁকার) উচ্চারণ করা উচিৎ। যে ব্যক্তি বেদাধ্যয়নের পূর্বে ওঁকার উচ্চারণ করেন না তিনি স্রবিত হন এবং পরে জীর্ণরূপ ধারণ করেন।।১১।।
হে রাজেন্দ্র, কোন্ প্রকার দ্বিজ ওঁকারের যোগ্য তা শ্রবণ করুন। দন্ডাগ্ৰভাগ দ্বারা পর্যুপাসনা করলে ব্যক্তি পবিত্রতা লাভ করেন। তিন প্রাণায়ামের দ্বারা পূত হন এবং পুনরায় তিনি ওঁকারের যোগ্য হন হে কুরুনন্দন, এখন ওঁকারের লক্ষণও শ্রবণ করনি।।১২-১৩।।
প্রজাপতি ব্রহ্মা তিন প্রকার বেদ থেকে ‘অ’কার, ‘উ’কার এবং ‘ম’কার সংগ্রহ পূর্বক এবং “ভূ-ভূর্বঃ স্বঃ” সংগ্রহ করে এর রচনা করেন। তিনবেদ থেকে পিতামহ পরমেষ্ঠী প্রজাপতি এই সাবিত্রী ঋচের প্রতিটি পাদদোহন করেছেন।।১৪-১৫।।
এতদক্ষরমেতাং চ জপন্ধ্যাহৃতি পূর্বিকাম্ সন্ধ্যয়োরুভয়োর্বিপ্রো বেদ পূণ্যেন যুজ্যতে।।১৬।। সহস্রকৃত্বত্ত্বভ্যস্য বহিরেতন্ত্রিকং দ্বিজঃ। মহতোহপ্যেনস্য মাসাত্ত্বচেবাহিবিমুচ্চতে।।১৭।। এতদ্দর্চা বিসংযুক্তঃ কালে চ ক্রিয়য়া স্বয়া। বিপ্রক্ষত্রিয়বিভোনির্গহণাং যাতি সাধুযু।।১৮।। শুনুযৈরকমনারাজনপরমং ব্রহ্মণৌ মুখম্। ওঁ কার পূর্বিকাস্তিস্রো মহাব্যাহৃতয়োহব্যয়া।।১৯।। ত্রিপদ চৈব সাবিত্রী বিজ্ঞেয়া ব্রহ্মণো মুখম্। সোহধীতেহন্যহন্যেতাং ত্ৰীনি বর্ষাণ্যতন্দ্ৰিতঃ।।২০।। স ব্রহ্ম পরমভ্যেতি বায়ুভূতঃ স্বমূর্তিমান্। একক্ষরং পরং ব্রহ্ম প্রাণায়ামঃ পরন্তপঃ।।২১।। সাবিত্র্যাস্ত পরং নাস্তি মৌনাৎসত্যং বিশিষ্যতে। তপঃ ক্ৰিয়া হোমক্রিয়া তথা দানক্রিয়া নৃপঃ।।২২।।
প্রণব এবং এই ব্যহৃতি মন্ত্র উভয়ই প্রত্যহ সন্ধ্যাহ্নিককারী ব্যক্তি বেদপাঠরূপ পুণ্য অর্জন করতে পারেন।।১৬।।
এই ত্রিক প্রত্যহ একসহস্রবার জপ করলে ব্রাহ্মণ এক মাসের মধ্যে মহাপাপ থেকে মুক্ত যেমন নিজ বল্কল থেকে সৰ্প মুক্ত হয়।।১৭।।
এই মন্ত্রের অর্চনা যিনি করেন না এবং সঠিক সময়ে ক্রিয়ারহিত হন সেই ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্য সাধুব্যক্তিদের দ্বারা নিন্দিত হন।।১৮।।
হে রাজন, তুমি অকাগ্রচিত্তে ব্রহ্মের পরমমুখের শ্রবণ কর। পূর্বে ওঁকারযুক্ত তিন ব্যহৃত মন্ত্র অব্যয়।।১৯।।
ত্রিপদা সাবিত্রীকে ব্রহ্মার মুখরূপে পরিচিত। যিনি প্রত্যহ পাঠপূর্বক তিন বৎসর এক ও অতিন্দ্রিয় হয়ে পাঠ করেন তিনি বায়ুভূত আকাশমূর্তি ধারণ করে পরমব্রহ্মকে প্রাপ্ত হন। একাক্ষর ওঁকার পরব্রহ্ম স্বরূপ এবং প্রাণায়াম হল সব থেকে বড় তপ।।২০-২১।।
সাবিত্রীমন্ত্রের পরে আর কিছু নেই। মৌন থেকে সত্য বিশিষ্ট। তপক্রিয়া, অক্ষয়ান্তাঃ সদা রাজন্যযাহ ভগবামনুঃ অবরং ত্বক্ষরং জ্ঞেয়ং ব্রহ্ম চৈব প্রজাপতিঃ।।২৩।। বিধিযজ্ঞাৎসদা রাজ্ঞপমজ্ঞো বিশিষ্যতে। নানাবিধোগুণোদ্দেশৈঃ সূক্ষ্মাখ্যা তৈনৃপোত্তম।।২৪।। উপাংশুঃ স্যাল্লক্ষগুণঃ সাহস্রৌ মানসঃ স্মৃতঃ। মে পাকযজ্ঞাশ্চাত্বারো বিধিযজ্ঞেন চান্বিতাঃ।।২৫।। সর্বে তে উপযজ্ঞস্য কলাং নাইতি ষোড়শীম্। উপাদেব তু সংসিধ্যেদ্ ব্রাহ্মণো নাত্র সংশয়ঃ।।২৬।। কুর্মাদন্যত্র বা কুর্মান্মৈত্রো ব্রাহ্মণ উচ্যতে। পূর্বাং সন্ধ্যা জপংস্তিষ্টেৎ সাবিত্রীমার্কদর্শনাৎ।।২৭।। পশ্চিমাং তু সমাসীনঃ সম্যগৃক্ষবিভাবনাৎ। দিনস্যাদৌ ভবেৎপূর্বা শর্বর্যাদৌ তথা পরা।।২৮।।
হোমক্রিয়া এবং দানক্রিয়া অক্ষয়মাল দান করে। ভগবান মনু একথাই বলেছেন।।২২-২৩।।
হে রাজন, বিধি যজ্ঞ থেকে যজ্ঞ বিশেষরূপে পরিচিত। কারণ জপযজ্ঞ নানাপ্রকার গুণোদ্দেশ অপেক্ষা সূক্ষ্ম এবং আখ্যাত যুক্ত।।২৪।।
উপাংশ জপ লক্ষ গুণসম্পন্ন। মানস জপ সহস্রগুণ সম্পন্ন এবং চারপাক যজ্ঞ বিধিযজ্ঞের সংগে যুক্ত হয়।।২৫।।
এই সকল জপযজ্ঞের ষোড়শকলা বর্তমান নেই, ব্রাহ্মণ জপের দ্বারা তা সংসিদ্ধ করেন, এতে কিছুমাত্র সংশয় নেই।।২৬।।
জপযজ্ঞকারী ব্রহামণ অন্য কিছু করুন বা না করুন তিনি ‘মৈত্র’ রূপে পরিচিতি লাভ করেন, যিনি সূর্যদর্শনের পূর্বে সন্ধ্যাতে সাবিত্রী জপ করার জন্য স্থিত থাকেন।।২৭।।
পশ্চিম সন্ধ্যা নক্ষত্র এবং তারাগণকে দর্শন করার পূর্বে সম্যগ্ররূপে সমাসীন হয়ে সন্ধ্যাহ্নিক করা উচিৎ। সূর্যোদয়ের পূর্বে প্রাতঃকালীন সন্ধ্যা করা কর্তব্য এবং রাত্রি সমাগত হওয়ার পূর্বে সায়াহ্নকালীন সন্ধ্যা উপাসনা করা উচিৎ।।২৮।
সনক্ষয়া পরা জ্ঞেয়া অপরা সদিবাকরা। জপংস্তিষ্টপরাং সন্ধ্যা নৈশমেনো ব্যপোহতি।।২৯।। অপরাং তু সমাসীনো মলং হন্তি দিবাকৃতম্। নোপতিষ্টতি যঃ পূর্বা নোপাস্তে পশ্চিমাং নৃপঃ।।৩০।। সশূদ্রহিকাৰ্যঃ সর্ব সমাদ্বিজকর্মণঃ। অপাং সমীপে নীয়তো নৈত্যকং বিধিমাস্থিতঃ।।৩১।। সাবিত্রীমপ্যধীয়ীত গত্বাহরণ্যং সমাহিতঃ। বেদোপকরণে রাজন্ স্বাধ্যায়ে চৈব নৈত্যকে।।৩২।। নাত্র দোমোস্ত্যণধ্যায়ে হোমমন্ত্রে বা বিভো। নৈত্যকে ণাস্ত্যনধ্যায়ো ব্রহ্মসত্রংহিতঃ স্মৃতম্।।৩৩।। ব্রহ্মাহূতি হৃতং পূন্যমনধ্যায়বষট কৃতম্। ঋগেকাং যত্ত্বধীয়ীত বিধিণা নিয়তো দ্বিজঃ।।৩৪।।
নক্ষত্রযুক্ত সন্ধ্যাপরা এবং দিবাকর অর্থাৎ সূর্যযুক্ত সন্ধ্যাকে অপরা বলে পরা সন্ধ্যা জপকারী পুরুষ যেখানে উপস্থিত থাকেন সেখানে রাত্রিতে কৃতপরা দূরীভূত হয়।।২৯।।
অপরা সন্ধ্যায় জপকারী পুরুষ দিনকৃত মল দূর করতে সক্ষম হন। হে নৃপ, যে ব্যক্তি পূর্ব ও পশ্চিম সন্ধ্যা উপাসনা করেন না, তাকে শূদ্রের মত মনে করে দ্বিজজাতির সমস্ত কর্ম থেকে বহিস্কৃত করা উচিৎ।।৩০।।
অপরা সন্ধ্যা উপাসনাকারী পুরুষ দিবসকৃত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারেন। যে ব্যক্তি পূর্বা এবং পশ্চিমা সন্ধ্যা উপাসনা করেন না তাঁকে শূদ্র সমতুল হয়ে দ্বিজগণের সমস্ত কর্ম থেকে বহিস্কার করা উচিৎ। জলের সমাপে নিয়মিতরূপে যিনি নিত্যকর্মের অনুষ্ঠান করেন, কোনো অরণ্য মধ্যে একনিষ্ট হয়ে সাবিত্রীর অধ্যয়ন করেন, হে রাজন, তিনি বেদোপরায়ণ এবং বৈদিক আচার পালনে ভুল করলেও তা দোষাবহ হয় না। এছাড়া তিনি হোমমন্ত্রের অনাধ্যায় করলেও তা দোষযুক্ত হয় না।।৩১-৩৩।।
যে ব্রাহ্মণ বিধিপূর্বক প্রত্যহ কেবল একটি মাত্র ঋক্ অধ্যয়ন করেন, তিনি অনাধ্যায় বশতঃ বষট্কৃত পূন্যাকৃতি দ্বারা হবন করে থাকেন।।৩৪।।
তস্য নিত্যং ক্ষরত্যেষা পয়ো মেধ্যং খৃতং মধুঃ অগ্নিশূশ্রাষণং ভৈক্ষমধঃ শয্যাং গুরোহিতম্।।৩৫।। আসমাবর্তনাৎ কৃতোপনয়নো দ্বিজঃ। আচার্যপুত্র শুশ্রূষাং জ্ঞানদো ধার্মিকঃ শুচিঃ।।৩৬।। আপ্তঃ শক্তোন্নদঃ সাধু স্বাধ্যায়ো দশ ধর্মতঃ। নাপৃষ্টঃ কস্যচিদব্রয়ান্ন চান্যায়েন পৃচ্ছতঃ।।৩৭।। জানন্নপি হি মেধাবী জড়বল্লোক আচরেৎ। অধর্মেন চ যঃ প্রাহ যশ্চাধর্মেণ পৃচ্ছতি।।৩৮। তয়োরন্যতরঃ প্রেতি বিদ্বেষং বা নির্গচ্ছতি। ধর্মার্থৌ যত্রন স্যাতাং শুশ্ৰুষা চাপি তদ্বিধা। ন তত্র বিদ্যা বপুষ্যা শুভং বীজমিবোযরে।।৩৯।।
যিনি ঐ ঋক্টি অধ্যয়ন করেন তিনি মেধ্য, পয়ো, ধৃত মধু ক্ষরণ করতে পারেন। অগ্নি শুশ্রূষা তাঁর ভিক্ষাদ্রব্য এবং অধোশয্যা গুরুদেবের হিতকারক।। উপনয়নের পর থেকে সমাবর্তন পর্যন্ত যে দ্বিজ আচার্যপুত্রের শুশ্রূষা করেন তিনি জ্ঞান প্রদানকারী ধার্মিক এবং শুচিরূপে পরিচিতি লাভ করেন।।৩৫-৩৬।।
আপ্ত ব্যক্তি, শক্তোন্নদ এবং সাধু দশধর্মযুক্ত স্বাধ্যায় যোগ্য। কেউ জিজ্ঞাসা না করলে বা অন্যায় কিছু বললে কোনো কিছু করা উচিৎ নয়।।৩৭।।
যিনি মেধাবীপুরুষ তিনি সকল কিছুই জানেন, কিন্তু সবকিছু জানলেও তাঁর এক জড়পুরুষের ন্যায় আচরণ করা উচিৎ। অধর্মীপুরুষ যদি কিছু বলেন বা জিজ্ঞাসা করেন তাঁদের দ্বারা অন্যতর অর্থাৎ তাঁদের থেকে ভালোগুণযুক্ত ব্যক্তি বিনাশ প্রাপ্ত হন বা বিদ্বেষপ্রাপ্ত হন। যেখানে ধর্ম এবং অর্থ–এই দুই প্রকার অবস্থিত থাকে না সেখানে শুশ্রূষা হয় না। অর্থাৎ সে ব্যক্তিকে ‘বিদ্যা’ প্রদান না করা উচিৎ। এই প্রকার পুরুষকে বিদ্যাদান ঊষরভূমিতে বীজ বপনের মতোই নিষ্ফল হয়।।৩৮-৩৯।।
বিদ্যয়ৈব সমং কামং মর্তব্যং ব্রহ্মবাদিনা। আপদ্যপি হি ঘোরায়াং ন ত্বেনামীরির্ণে বপেৎ।। ৪০।। বিদ্যা ব্রাহ্মণমিত্যাহ শেবধিস্তেহসিম রক্ষ মাম্। অসূয়কায় মা প্রাদাস্তযা স্যাং বীর্যবত্তমা।।৪১।। শেবং সুখমুশন্তীহ কেচিজজ্ঞানং প্রচক্ষতে। তৌ ধারয়তি বৈ সম্মাদচ্ছেবধিস্তেন সোচ্যতে।।৪২।।
যমেব তু শুচি বিদ্যান্নিয়ণং ব্রহ্মচারিণম্। তস্মৈ মাং ব্রৃহি বিপ্ৰায় নিধিপায়াস্র মাদিনে।।৪৩।। ব্রহ্ম যস্তৃণনুজ্ঞাতমধীয়ানাদবাপুয়াৎ।।৪৪।। লৌকিকং বৈদিকং বাপি তথাধ্যাত্মিমেব চ। স যাতি নরকং ঘোরং বৌরবং ভীমদর্শণম্।।৪৫।।
ব্রহ্মবাদী পুরুষের উচিৎ কোনো অযোগ্য ব্যক্তিকে তাঁর বিদ্যা প্রদান না করা। বিদ্যাকে সংগে নিয়ে মৃত্যুবরণও শ্রেয়।।৪০।।
বিদ্যা ব্রাহ্মণকে বলেছিলেন, “আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ আমাকে তুমি রক্ষা কর। অসূয়া অর্থাৎ দ্বেয়পোষণকারী ব্যক্তিকে কদাপি আমাকে প্রদান করবে না। তা হলে আমি অধিক বীৰ্য্যবতী হব।।৪১।।
অন্যান্যগণ যাকে ‘সম্পদ সুখ’ বলেন কোনো কোনো বিদ্বান্ ‘জ্ঞান’ এর মাধ্যমে সেই সুখ লাভ করে থাকেন। এই কারণে সেই সকল বিদ্যাকে ‘শেবধি’ বলে অভিহিত করা হয়।।৪২।।
যে ব্যক্তি পরম পবিত্র, নিয়ত এবং ব্রহ্মচর্যধারণকারী তুমি তার নিকট আমাকে (বিদ্যা) বর্ণনা করবে। এই রকম বিপ্রকেই বিদ্যাকথন করতে হয়। কারণ তিনি নিধিরূপে ‘আমাকে’ (বিদ্যা) রক্ষা করতে পারবেন এবং ভ্রম থেকে রক্ষা করতে পারবেন।।৪৩।।
যে ব্যক্তি ব্ৰহ্মজ্ঞান লাভ করেন নি, তিনি অধীয়ান ব্যক্তির নিকট সেই জ্ঞান লাভ করবেন।, লৌকিক বা বৈদিক এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানও এইরূপ যথার্থ ব্যক্তির নিকট গ্রহণ করতে হবে। অন্যথা ব্যক্তি অতিভয়ানক দৰ্শন ‘রৌরব’ নামক নরকপ্রাপ্ত হন।।৪৪-৪৫।।
অনুমাত্রাত্মকং দেহং ষোড়শাধামিতি সমৃতম্। আদদীত মতো জ্ঞানং তং পূর্বমভিবাদয়েৎ।।৪৬।। সাবিত্রী সার মাত্রোপি বরো বিপ্র সুযন্ত্রিতঃ। নায়ন্ত্রিত স্ত্রিবেদোহপি সৰ্বাশী সর্ববিক্রয়ী।।৪৭।। শয্যাসনে ধ্যাচরিতে শ্রেয়সা ন সমাবিশেৎ। শয্যাসনস্থশ্চৈবৈনং প্রত্যুৎ থায়াভিবাদয়েৎ।।৪৮।। উৰ্দ্ধং প্রাণাহ্যৎক্রামন্তি যূনঃ স্থবিরে আগতে। প্রত্যুত্যানাভিবাদাভ্যং পুনস্তান প্রতিপদ্যতে।।৪৯।। অভিবাদনশীলস্য নিত্যং বৃদ্ধোপসেবিনঃ। চত্বারি সম্যগবর্ধন্তে আয়ু প্রজাযশো বলম্।।৫০।।
অণুমাত্রাত্মক দেহ ‘ষোড়শার্ধা’ রূপে পরিচিত। যাঁর থেকে জ্ঞান প্ৰাপ্তি ঘটে তাকে সর্বপ্রথম প্রণাম করা উচিৎ।।৪৬।।
কেবল সাবিত্রীসারকে জানেন এবং তা দমনকারী ব্যক্তি বিপ্রশ্রেষ্ঠরূপে পরিচিত।।৪৭।।
শয্যা এবং আসনে শ্রেষ্ঠ পুরুষগণের সাথে কখনও বসা উচিৎ নয়। শয্যা এবং আসনে উপবেশন করে থাকলে শীঘ্র উত্থানপূর্বক তাদের অভিবাদন করা উচিৎ।।৪৮।
যখন কোনো বয়বৃদ্ধ বা জ্ঞানবৃদ্ধ যুবক পুরুষের সম্মুখে উপস্থিত হন, তখন তার মনে-প্রাণে একপ্রকার অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। যখন তাঁকে দেখে যুবাপুরুষ প্রত্যুত্থান এবং অভিবাদন করতে থাকেন তখন তার চিত্তচাঞ্চল্য শান্ত হয়।।৪৯।।
যে ব্যক্তি নিত্য বয়োজ্যেষ্ঠগণকে অভিবাদন করে থাকেন এবং সর্বদা জ্যেষ্ঠগণকে সেবা-শুশ্রূষা দ্বারা সন্তুষ্ট করেন, তাঁর আয়ু, যশ, প্রজা এবং বল— এই চারপ্রকার বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।।৫০।।
অভিবাদপরো বিপ্রো জ্যয়াং সমভিবাদয়েৎ। অসৌ নামামস্মীতি স্বনাম পরিকীর্তয়েৎ।।৫১।। নামধেয়স্য যে কেচিদভিবাদং ন জানতে। তান্ প্রাজ্ঞোহ হমিতি ব্রূয়াৎস্ত্রিয়ঃ সর্বাস্তয়ৈব চ।।৫২।। তো শব্দং কীর্তয়েদন্তে স্বস্য নান্মৌভিবাদনে। নান্নঃ স্বরূপভাবৌ হি ভো ভাব ঋষিভিঃ স্মৃতঃ।৫৩।। আয়ুস্নাভব সৌম্যেতি বাচ্যোবিপ্রোহভিবাদনে। অকারশ্চস্য নান্নোহতে বাচ্যঃ পূর্বক্ষরঃ পুতঃ।।৫৪।। যো ন বৈত্যভিদস্যং বিপ্রঃ প্রত্যভিবাদনম্। নাভিবাদ্যঃ বিদযা যথা শূদ্ৰস্তথৈব সঃ।।৫৫।। অভিবাদে কৃতে যস্তু ন করোত্য ভিবাদনম্। আশীর্বা কুরুশার্দূল স যাতি নরকং ধ্রুবম্।।৫৬।।
যে বিপ্র অভিবাদন করতে তাদের তাঁর সর্বদা জ্যেষ্ঠগণকে অভিবাদন করা উচিৎ এবং অভিবাদন কালে “আমি অমুক (নিজ নাম) যে আপনাকে প্রণাম নিবেদন করছি”– এরূপ বাক্য উচ্চারণপূর্বক প্রণাম করা উচিৎ।।৫১।। যে ব্যক্তি অভিবাদনকারীর নাম জানেন না, তিনি ‘আমি প্রাজ্ঞ’ এইরূপ উচ্চারণপূর্বক সমস্ত স্ত্রীলোককে অভিবাদন করবেন।।৫২।।
নিজ নাম অভিবাদনের পর ‘ভো’ শব্দ উচ্চারণ করা উচিৎ। কারণ ঋষিগণ ‘ভো ভাব’কে নামের ‘স্বরূপ ভাব’ বলেছেন।।৫৩।।
ব্রাহ্মণ অভিবাদনের অন্তে “হে সৌম্য, আয়ুষ্মান্ ভব” অর্থাৎ দীর্ঘজীবী বও–এই প্রকার আশীষ দান করবেন। নামের অন্তে ‘অ-কার’ এবং পূর্বের স্বরটি প্লুতস্বর উচ্চারণ করা উচিৎ।।৫৪।।
যে ব্রাহ্মণ অভিবাদনের প্রত্যাভিবাদন করেন না তিনি বিদ্বানপুরুষকে কদাপি অভিবাদন করবেন না। কারণ তিনি একপ্রকার শূদ্রতুল্যরূপে পরিগণিত হন।।৫৫।।
অভিবাদন করার পর যিনি প্রত্যাভিবাদন করেন না বা আশীর্বাদ করেন না, তিনি অবশ্যই নরকগমন করেন।।৫৬।।
অভিতি ভগবান্বিষ্ণু বাদয়ামীতি শংকরঃ। দ্বারেব পূজিতৌ তেন যঃ করোত্যভিবাদনম্।।৫৭।। ব্রাহ্মণং কুশলং পৃচ্ছেৎক্ষত্রবন্ধু মনাময়ম্। বৈশ্যং ক্ষেমং সমাগম্য শূদ্রমারোগ্যমেব তু।।৫৮।। ন বাচ্যো দূক্ষিতো নান্মা মবীয়ানপি যোভবেৎ। ভো ভবৎপূর্বকত্বেন ইতি স্বয়ংভূবোহব্রবীৎ।।৫৯।। পরপত্নী তু যা রাজান্ন সংবদ্ধা তু যোনিনঃ। বক্তব্যা ভবতীত্যেবং সুভগে ভগিনীতি চ।।৬০।। পিতৃব্যানমাতুলাহ্রতুলাম্রাজঞ্ছতবত্বিজো গুরু। অসাবহমিতি ব্রৃয়াৎ প্রত্যুস্থায় জখন্যজঃ।।৬১।। মাতৃস্বসা মাতুলানী শ্বশুরথ পিতৃস্বষা। সংপূজ্য গুরুপত্নী চ সমাস্তা গুরুভার্যায়া।।৬২।।
‘অভিবাদন’ শব্দে ‘অভি’ শব্দের দ্বারা ভগবান্ বিষ্ণু এবং ‘বাদয়ামি’ শব্দের দ্বারা ভগবান শিবের স্বরূপকে নির্দেশ করা হয়। যিনি অভিবাদন করেন তিনি প্রকারান্তরে বিষ্ণু ও শিবের পূজা করে থাকেন।।৫৭।।
ব্রাহ্মণের সংগে মিলিত হওয়ার পর তাঁকে কুশল করতে হয়। ক্ষত্রিয়ের অনাময়, বৈশ্যগণের ক্ষেম সমাগমের কথা জানতে হয় এবং শূদ্রের কেবল আরোগ্য জিজ্ঞাসা করা উচিৎ।।৫৮।।
যিনি দীক্ষিত তিনি বয়ঃকনিষ্ঠ হলেও তাঁর নাম উচ্চারণ পূর্বক ডাকা উচিৎ নয়। তাঁকে ‘ভো’, ভবান্ ইত্যাদি সম্বোধনের পূর্বে বলা উচিৎ-স্বায়ম্ভূব এইরূপ বলে থাকেন।।৫৯।।
পরস্ত্রী বা অযোনিসম্বন্ধীগণকে ভবতি, সুভগে এবং ভগিনী ইত্যাদি নামে সম্বোধন করা উচিৎ।।৬০।।
বয়ঃকনিষ্ঠগণ পিতব্য পিতামহ, মাতুল, শ্বশুর, ঋত্বিক এবং গুরুগণের সম্মুখে দন্ডায়মান হয়ে “আমি অমুক” ইত্যাদি বলবেন।।৬১।।
মাতৃস্বসা (মাসীমা), মাতুলানী, শ্বশ্রূমাতা পিতৃস্বসা এবং গুরু পত্নী এঁরা সকলে গুরুপত্নীতুল্যা জ্যারমণী।।৬২।।
জ্যেষ্ঠস্য ভ্রাতুর্যা ভার্যা স্ববণাহন্যহন্যপি। পূজয়ন্ প্রয়তো বিপ্রোযাতি বিষ্ণুসদো নৃপ।।৬৩।। প্রবাদেত্য সংপূজ্যা জ্ঞাতিসম্বন্ধি যোষিতঃ। পিতুর্যা ভগিনী রাজন্ মাতুশ্চাপি বিশাংপতে।।৬৪। আত্মনো ভগিনী যা চ জ্যেষ্ঠা কুরুকুলোদ্বহ। সদা স্বমাতৃবদ্ধতিমাতিষ্ঠেদ্ ভারতোত্তম।।৬৫।। গরীয়সী ততস্তাভ্যো মাতা জ্ঞেয়া নরাধিপ। পুত্রমিত্রভাগিনেয়া ভ্রস্টব্যা হ্যত্মনা সমাঃ।।৬৬।। দশাব্দাখ্যং পৌর সংখ্যং পঞ্চাব্দাখ্যং কলাভৃতাম্। অব্দপূর্বং শ্রোত্রিয়াণাং স্বলেপনাপি স্বযোনিষু।।৬৭।। ব্রাহ্মণং দশবর্ষং চ শতবৰ্যং চ ভূমিপম্। পিতাপুত্রৌ বিজণীয়াদ্ ব্রাহ্মণস্ত তয়োঃ পিতা।।৬৮।।
যে বিপ্র প্রত্যহ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃজায়া এবং সবর্ণা ভার্যাকে নিয়মপূর্বক পূজন করেন তিনি মৃত্যুর পরে বিষ্ণু লোকে গমন করেন।।৬৩।।
হে বিশাংপতি, যখন কোনো ব্যক্তি প্রবাস থেকে প্রত্যাগমন করেন তখন তিনি জ্ঞাতি সম্বন্ধী স্ত্রীগণকে পূজন করবেন। পিতৃস্বসা এবং মাতাকেও তাঁর পূজা করা উচিৎ।।৬৪।।
হে ভারতোত্তম, জ্যেষ্ঠ ভগিনীর সংগে সর্বদা মাতৃতুল্য ব্যবহার করা উচিৎ।।৬৫।।
হে নরাধিপ, এঁদের সকলের চেয়ে নিজমাতাকে গরীয়সী মনে করা উচিৎ। পুত্র, মিত্র এবং ভাগিনেয়কে নিজ আত্মা তুল্য মনে করবে।।৬৬।।
পৌরসখ্য দশবৎসর পরে হয়, পঞ্চাব্দ সখ্যকে বলে কলাভৃৎ, বর্ষপূর্বেই শ্রোত্রিয় সখ্য হয় এবং স্বযোনীসখ্য অতি অল্প সময়েই হয়।।৬৭।।
দশমবর্ষীয় ব্রাহ্মণ এবং শতবয়ঃক্রমের ক্ষত্রিয় রাজা এঁদের দুইজনকে পিতাপুত্র মনে করা উচিৎ। এঁদের দুইজনের মধ্যে পিতা হলেন ব্রাহ্মণ ব্যক্তি।।৬৮।।
ইত্যেবং ক্ষত্রিয়পিতা বৈশ্যস্যাপি পিতামহঃ। প্রপিতামহশ্চ শূদ্রস্য প্রোক্তো বিপ্রো মনীযিভিঃ।।৬৯।। বিত্তং বন্ধুবয়ঃ কর্ম বিদ্যা ভবতি পঞ্চমী। এতানি মান্যস্থানানি গরীয়ো যদ্যদুত্তরম্।।৭০।। পঞ্চাণাং ত্রিযু বর্গ ভূয়াং সি গুণবন্তি চ। যস্য স্যুঃ সোহত্র মানার্হঃ শূদ্ৰোপি গতঃ।।৭১।। চক্রিনো দশমীস্থস্য রোগিনো ভারিণঃ স্ত্রিয়াঃ। স্নাতকস্য তু রাজশ্চ পথা দেয়ো বরস্য চ।।৭২।। এ ষাং সমাগমে রাজন্ স্নাতকো নৃপমানভাক্। অধ্যাপয়েদ্যস্ত শিষ্যং কৃত্বোপনয়ণং দ্বিজঃ।।৭৩।। সরহস্যং সকল্পং চ বেদং ভরতসত্তম্। তমাচাৰ্যং মহাবাহৈা প্ৰবদন্তি মনীষিণঃ।।৭৪।।
এই প্রকারে ক্ষত্রিয় বৈশ্যের পিতৃতুল্য। মনীষিগণ বিপ্ৰ অর্থাৎ ব্রাহ্মণকে শূদ্রের পিতামহ এবং প্রপিতামহ বলেছেন।।৬৯।।
ধন, বন্ধুত্ব, জীবনকাল, কর্ম, বিদ্যা এই পাঁচটি মান্যস্থান। এগুলির মধ্যে উত্তরোত্তর স্থান অধিক মান্য।।৭০।।
তিন বর্গের মধ্যে এই পাঁচটি গুণযুক্ত ব্যক্তি থাকেন। যে ব্যক্তির এই পাঁচটিগুণ আছে তিনি সর্বলোকমান্য। দশমী প্রাপ্ত শূদ্রও মান্য হন।।৭১।।
পথ দিয়ে গমন কালে চক্রীকে (সম্রাট), অতিবৃদ্ধকে রোগীকে, ভারবহনকারীকে, স্ত্রীগণকে স্নাতককে রাজা এবং বরকে পথ প্রথমে ছেড়ে দিতে হয়।।৭২।।
হে তাত, এঁদের সমাগম হলেই স্নাতক ও রাজা পূজনযোগ্য হন। হে রাজন, স্নাতক ও রাজার সমাগম হলেই স্নাতক রাজার মান ভাজন হন।।৭৩।।
হে ভারতসত্তম, যে ব্রাহ্মণ শিষ্যের উপনয়ন সংস্কারপূর্বক তাকে রহস্য এবং কল্পের সংগে বেদাধ্যয়ন করান মনীষিগণ তাঁকেই আচার্য বলেন।।৭৪।।
একাদেশং তু বেদস্য বেদাগান্যপি বা পুনঃ। যোধ্যাপয়তি বৃত্ত্যর্থমুপাধ্যায়ঃ সউচ্যতে।।৭৫।। নিয়েকাদীনি কার্যানি যঃ করোতি নৃপোত্তম। অধ্যাপয়তি চান্যেন স বিপ্রো গুরুরুচ্যতে।।৭৬।। অগ্নাধেয়ং পাকযজ্ঞানগ্নি ষ্টোমাদিকান্ মখান্। যঃ করোতি বৃত্তো যস্য স তস্যাত্বগিহোচ্যতে।।৭৭।। য আবৃণোত্য বিতথং ব্রহ্মনা শ্রবণাবুভৌ। স মাতা স পিতা জ্ঞেয়স্তংন হোৎকথঞ্চন।।৭৮।। উপাধ্যায়া দশাচার্য আচার্যাণাং শতং পিতা। সহস্রেণ পিতুমার্তা গৌরবেনতিরিচ্যতে।।৭৯।। উৎপাদকব্রহ্ম গাত্রোগরীয়ান্ ব্রহ্মদঃ পিতা। ব্রহ্মজনম হি বিপ্ৰস্য প্রেত্য চেহ চ শাশ্বতম্।।৮০।। কামান্নাতা পিতা চৈনং যদুৎপাদয়তো মিথঃ। সম্ভূতি তস্য তাং বিদ্যাদ্যদ্যোনাবভিজায়তে।।৮১।।
যিনি বেদের একাংশ অথবা বেদাংগসমূহ অর্থের বিনিময়ে অধ্যাপনা করেন তিনি উপাধ্যায় নামে পরিচিত।।৭৫।।
হে নৃপোত্তম, যিনি নিষেকাদি কার্য করেন এবং কোনো অন্য ব্যক্তির দ্বারা অধ্যাপনা করান তাঁকে গুরু বলে।।৭৬।।
অগ্ন্যাধেয় পাকযজ্ঞ এবং অগ্নি ষ্টোম ইত্যাদি যজ্ঞ করার জন্য যিনি নিযুক্ত হন তিনি ঋত্বিকরূপে পরিচিত।।৭৭।।
দুইকর্ণকে ব্রহ্ম দ্বারা সত্যকে আবৃত করেন মাতা-পিতা। তাঁদের সংগে কোনো প্রকার অনিষ্ট করা উচিৎ নয়।।৭৮।।
দশউপাধ্যায়ের সমান এক আচার্য, একশ আটার্যতুল্য একপিতা এবং সহস্রপিতা এক মাতার সমান, তিনি অধিক গৌরবান্বিত।।৭৯।।
জন্মদাতা পিতা এবং ব্রহ্মজ্ঞানদানকারী পিতা শ্রেষ্ঠ। কারণ ব্রাহ্মণের ব্রহ্মজন্ম মৃত্যুর পরও শাশ্বত থাকে।।৮০।।
মাতা এবং পিতা কামনা বাসনা দ্বারা সন্তান উৎপন্ন করেন। তাদের উৎপত্তি যোনি থেকে হয়।।৮১।।
আচার্যস্তস্য তাং জাতিং বিবিধদ্বেদপারগঃ। উৎপায়তি সাবিত্ৰ্যা সা সত্যা সাহজরামরা।।৮২।। উপাধ্যায়মাদিতঃ কৃত্বা যে পূজ্যাঃ কথিতাস্তব। মহাগুরু মহাবাহো সর্ব্যোমধিকঃস্মৃতঃ।।৮৩।। গৃহেষু মেষাং কর্তব্যং তাঞ্ছণুযব নৃপোত্তম। স্বকর্ম সু রতা যে বৈ তথা বেদেযু যে রতাঃ। যজ্ঞেযু চাপি রাজেন্দ্র যে চ শ্রদ্ধাসমাশ্রিতাঃ।।৮৪।। ব্রহ্মচার্যাহরেদ্ভৈক্ষং গৃহেভ্যঃ প্রয়তোন্বহম্। গুরোঃ কুলেন ভিক্ষেত স্বজ্ঞাতিকুলবন্ধষু।।৮৫।। অলাভে ত্বন্যগোত্ৰাণাং পূর্বং পূর্বং বিবর্জয়েৎ। স্বর্বং চাপি চরেদগ্রামং পূর্বোক্তানাম সম্ভবে। অন্তবর্জ্যে মহাবাহো ইত্যাহ ভগবান বিভঃ।।৮৬।।
বেদপারঙ্গম আচার্য বিধিপূর্বক সেই জাতি উৎপন্ন করেন, তাকে সাবিত্রী বলা হয়। এই জাতি সত্য, তথা অমর।।৮২।।
উপাধ্যায়াদি সকলেই পূজ্য হন। হে মহাবাহু, মহাগুরু এঁদের সকলের চেয়েও অধিক পূজ্য।।৮৩।।
হে নৃপোত্তম, কোন ব্যক্তির নিকট ভিক্ষাচারণ করা উচিৎ তা এবার জানাব। যে ব্যক্তি নিজ কর্তব্যে রত এবং যিনি বেদের প্রতি অনুগত এবং হে রাজেন্দ্র যিনি যজ্ঞাদি করতে ভালোবাসেন এবং শ্রদ্ধা সমন্বিত পুরুষের গৃহে ব্রহ্মচারী প্রতিদিন সথানিয়মে ভিক্ষা করবেন।।৮৪-৮৫।।
গুরুকুল, নিজ জাতি-কুল বা বন্ধুগৃহে ভিক্ষাচরণ করা উচিৎ নয়। যখন অন্য গোত্রের থেকে ভিক্ষাপ্রাপ্ত না হলে পূর্ব-পূর্বক্রম বর্জন করা উচিৎ।।
হে মহাবাহু, পূর্বোক্ত ব্যক্তিদের বর্জন সম্ভব না হলে সম্পূর্ণ গ্রামে ভিক্ষাচরণ করা উচিৎ। কিন্তু কদাপি গ্রামস্থ অন্ত্যজ শ্রেণীর ব্যক্তিগণের নিকট ভিক্ষাচরণ করা উচিৎ নয়, ভগবান বিভু এইরূপ আদেশই করেন।।৮৬।।
বাচং নিয়ম্য প্রয়তস্ত্বগ্নিং শস্ত্রং চ বজয়েৎ। চাতুর্বর্ণ্যং চরেডেক্ষমলাভে কুরুনন্দন।।৮৭।। আরাদাহৃত্য সমিধঃ সন্নিদধ্যাদগৃহোপরি। সায়ং প্রণস্তু জুহুয়াত্তাভিগ্নিমতন্দ্ৰিতঃ।।৮৮।। ভৈক্ষাচরণমকৃত্ব ণ তমগ্নিং সমিধ্য বৈ। অনাতুরঃ সপ্তরাত্রমবকীণি ব্রতং চরেৎ।।৮৯।। বর্তনং চাস্য ভৈক্ষেন প্রবদন্তি মনীষিণঃ। তসমাদ্ভৈক্ষেণ বৈ নিত্যং নৈকান্নাদী ভ্যাদব্রতী।।৯০।। দৈবত্য ব্রতবদ্রাজনিপত্রে কর্মন্যথযিবৎ। কামমতভ্যর্থিতোহশীয়াদ ব্রতমস্য ন লুপ্যতে।।৯১ ব্রাহ্মণস্য মহাবাহো কর্ম যৎ সমুদাহৃতম্। রাজন্যবৈশ্যয়োনৈর্তৎ পন্ডিতৈঃ কুরুনন্দন।।৯২
হে কুরুনন্দন, বাক্ সংযম, অগ্নি ও শস্ত্র ত্যাগ ব্রহ্মচারীর অবশ্য কর্তব্য। কোথাও ভিক্ষাপ্রাপ্ত না হলে চারবর্ণের মধ্যে ভিক্ষাচরণ করতে হবে।।৮৭।।
গুরুগৃহে সমীপবর্তী বন থেকে সমিধ সংগ্রহপূর্বক ব্রহ্মচারী গৃহোপরি রাখবেন এবং প্রত্যহ অতন্দ্র হয়ে প্রাতঃকাল ও সায়ংকালে হবন করবেন।।৮৮।। ভিক্ষাচরণ এবং অগ্নিতে হবন না করে স্বস্থতা দশাপ্রাপ্ত হলে সাতরাত্রি পর্যন্ত অবকীনিব্রত পালন করতে হয়। রোগাক্রান্ত হলে কোনরূপ প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন হয় না।।৮৯।।
মনীষীগণ ভিক্ষাচরণ দ্বারা ব্রহ্মচারীর জীবিকা নির্বাহের বিষয়ে বলেছেন, ভৈক্ষ অন্নের এক অন্ন যিনি ভোজন করেন না, তিনিই ব্রতী।।৯০।।
ভিক্ষাচরণ দ্বারা ব্রতী যে জীবিকা নির্বাহ করেন, তা উপবাস তুল্য। দৈবত এবং পিত্র্যকর্মে ব্রততুল্য এবং ঋষিদের ন্যায় অভ্যর্থনা করা হয় তাহলে ইচ্ছাপূর্বক ভোজন করবে। এটিও ব্রততুল্য গণ্য করা হয়। এর দ্বারা ব্রহ্মচারীর ব্ৰত লোপ হয় না।।৯১।।
হে মহাবাহু, ব্রাহ্মণের যে কর্মের কথা পন্ডিতগণ বলেছেন। ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যগণকে সে কথা বলেন নি। গুরুদেবের প্রেরণা অনুসারে অথবা প্রেরণা চোদিতোহচোদিতো বাপি গুরুণা নিত্যমেব হি। কুর্মাদধ্য নে যোগমাচাৰ্যস্য হিতেষু চ।।৯৩ বুদ্ধীন্দ্রিয়ানি মনসা শরীরং বাচমেব হি। নিয়ম্য প্রাজ্ঞলিস্তিষ্ঠেদ্বীক্ষমানো গুরোমুখম্।।৯৪ নিত্যমুদ্ধৃতপানিঃ স্যাৎসাধ্বাচারস্তু সংযতঃ। আস্যতামিতি চোক্তঃ সন্নাসীতাভিমুখং গুরৌঃ।।৯৫ বস্ত্ৰবেষৈস্তথানৈস্তু হীনঃ স্যাদগুরুসন্নিধৌ। উত্তিষ্ঠোৎ প্রথমং চাস্য জঘন্যং চাপি সংবিশেৎ।।৯৬ প্রতিক্ষবন সংভাষে তল্পস্থো ন সমাচরেৎ। ন চাসীনো ন ভুঞ্জানো ন তিস্টন্ন পরাভমুখঃ।।৯৭ আসীনস্য স্থিতঃ কুর্মাদভিগচ্ছংশ্চ তিষ্ঠতঃ। প্রত্যুদগন্তা তু ব্ৰজতঃ পশ্চাদ্ধাবংশ্চ ধাবতঃ।।৯৮
না পেয়েও নিত্য অধ্যয়ন করা ব্রহ্মচারীর অবশ্য কর্তব্য এবং নিজ আচার্যদেবের হিত কর্মে যোগদান অবশ্য করা উচিৎ।।৯২-৯৩।।
জ্ঞানেন্দ্রিয়সমূহ মনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করে তথা নিজ শরীর ও বচনকে সংযত করে গুরুমুখ দর্শন করে কৃতাঞ্জলিপুটে অবস্থান করা উচিৎ।।৯৪।।
প্রত্যহ নিরস্ত্র অবস্থায়, সাধু আচার ও সংযত হওয়া আবশ্যক।। যখন আচার্যদেব বলেন, ‘বসে পড়ো’ তখন তাঁর সম্মুখে উপবেশন করা উচিৎ।।৯৫।।
নিজ গুরুদেবের সম্মুখে বস্ত্রবেশহীন এবং অন্নহীন হয়ে থাকা উচিৎ। যখন গুরুদেব উঠে পড়েন তখন গুরুদেবের পূর্বে উত্থান করা এবং গুরুদেবের আসনের নীচে বসা উচিৎ।।৯৬।।
পরাভমুখস্যাভিমুখো দূরস্থসৈত্য চান্তিকম্। নমস্কৃত্য শয়ানস্য নিদেশে তিষ্টেৎ সর্বদা।।৯৭-৯৯।। নীচং শয্যাসনং চাস্য সর্বদা গুরুসন্নিধ্যৌ। গুরোশ্চ চক্ষুবিয়ে ন যথেস্টাসনো ভবেৎ।। ১০০।। নামোচ্চারণমেবাস্য পরোক্ষমপি সুব্রত ন চৈনমনুকুর্বীত গতিভাষণচেস্টিতঃ।।১০১।। পরীবাদস্তমানিন্দ গুরোমত্র প্রবর্ততে। কণৌ তত্র পিধাতবৌ গন্তব্যংবা ততোহন্যতঃ।।১০২।। পরীবাদাদ্রাসভঃ স্যাৎসারমেয়স্তু নিন্দকঃ। পরিভোক্তা কৃমির্ভবতি কীটো ভবতি মৎসরী।।১০৩।।
গুরুদেবের কথা শ্রবণ করার সময় এবং তাঁর সংগে বাক্যালাপ করা কালে কদাপি উপবেশিত হওয়া উচিৎ নয়। উপবেশনপূর্বক, ভোজনপূর্বক দন্ডায়মান হয়ে এবং বিমুখ হয়ে গুরুদেবের কথা শ্রবণ তথা তাঁর সংগে বাক্যালাপ করা উচিৎ নয়। যখন গুরু বসে পড়েন তখন স্বয়ং স্থিত হয়ে যাওয়া উচিৎ, তিনি চলতে শুরু করলে শিষ্যেরও তাঁর সংগে অগ্রসর হওয়া উচিৎ। আবার তিনি দন্ডায়মান থাকলে শিষ্যও দন্ডায়মান থাকবেন। গুরুদেব পুনরায় যখন গমন করবেন তখন শিষ্যও প্রত্যুদ্গমন করবেন। তিনি দৌড়ালে শিষ্যও তাঁর পশ্চাতে দৌড়াবেন।।৯৭-৯৮।।
গুরুদেব যদি পরামুখ অর্থাৎ পশ্চাদমুখী থাকেন তাহলে শিষ্য তাঁর অভিমুখে উপস্থিত হবেন। গুরুদেব যদি দূরে কোথাও স্থিত থাকেন, তাহলে শিষ্য তাঁর সমীপে উপস্থিত হয়ে নমস্কার করবেন এবং তিনি শয়ন করলে তাঁর নির্দেশ সর্বদা পালন করা আবশ্যক।।৯৯।।
নিজ গুরুর কাছে শিষ্যের শয্যাসন নীচে হওয়া প্রয়োজন। গুরুদেবের দৃষ্টি যে পর্যন্ত নিক্ষিপ্ত হয় সেই পর্যন্ত নিজ ইচ্ছানুসারে শয্যাসন করা উচিৎ নয়।।১০০।।
হে সুব্রত, কদাপি পরোক্ষেও গুরুদেবের নাম উচ্চারণ করা উচিৎ নয়। এছাড়া গুরুদেবের গতি, কথাবার্তা ও চেষ্টার অনুকরণ করা বা নকল করা থেকে শিষ্যের বিরত থাকা উচিৎ।।১০১।।
গুরুদেবের নিন্দাবাদ যদি কোথাও হয়, তাহলে শিষ্যের সেটি শ্রবণ করা উচিৎ নয়। তিনি দুটি কান বন্ধ করে স্থান ত্যাগ করবেন।।১০২।।
গুরু পরিবাদ বা অপবাদকারী রাসভযোনি প্রাপ্ত হন। নিন্দাকারী কুক্কুর যোনিৱ এবং গুরুর প্রতি ঈর্ষাকারী কীট যোনি প্রাপ্ত হন।।১০৩।।
দূরস্থো নার্চয়েদেনং নত্ৰুদ্ধো নাস্তিকে স্ক্রিয়াঃ। সানাসনগতো রাজন্নবরুহ্যাভিবাদয়েৎ।।১০৪ প্রতিকূলে সমানে তু নাসীন গুরুণা সহ। অশৃণ্বতি গুরৌ রাজন্ন কিঞ্চিদপি কীর্তয়েৎ।।১০৫।। ইত্যেষ কথিতো ধর্মঃ প্রথমং ব্রহ্মচারিণঃ। গৃহস্থস্যাপি রাজেন্দ্রঃ শূনু ধর্মমশেষতঃ।।১০৬।। কালেপ্রাপ্য ব্রতং বিপ্ৰ ঋতুযোগেন ভারত। প্রলাপয়ন ব্রতং যাতি ব্রহ্মসালৌক্যতাং বিভৌ।। ১০৭।। সদোপণয়নং শস্তং বসন্তে ব্রহ্মণস্য তু। ক্ষত্রিয়স্য ততো গ্রীষ্মে প্রশস্তং মনুরব্রবীৎ।। ১০৮।। প্রাপ্তে শরদি বৈশ্যস্য সদোপণয়নং পরম্। ইত্যেষ ত্রিবিধঃ কালঃ কথিতো ব্ৰত যোজনে।।১০৯।।
গুরুদেবকে দূর থেকে অর্চনা কদাপি শিষ্যগণ করবেন না। আবার গুরুদেব ক্রুদ্ধ হলে বা স্ত্রী সমীপে থাকলে তাঁর অর্চনা করা উচিৎ নয়। কোনো যানে স্থিত হয়ে বা উপবেশন করে গুরুদেবের অর্চনা করা উচিৎ নয়। যান থামিয়ে তবে গুরুদেবের অর্চনা করতে হয়।।১০৪।।
প্রতিকূল বা সমান আসনে কদাপি গুরুদেবের সংগে শিষ্যগণ বসবেন না। গুরুদেব যদি কিছুশ্রবণ না করেন তা হলে কিছু বলা উচিৎ নয়।।১০৫।।
হে রাজেন্দ্র, এই পর্যন্ত ব্রহ্মচারীগণের ধর্ম বলা হল। এবার গৃহস্থের ধর্ম শ্রবণ কর।।১০৬।।
হে ভারত, ব্রাহ্মণ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ঋতুতে ব্রত পালনপূর্বক ব্রহ্ম বা (লোক) প্রাপ্ত হন।। ১০৭।।
ব্রাহ্মণের উপনয়ন সংস্কার বসন্ত ঋতুতে, ক্ষত্রিয়ের গ্রীষ্ম ঋতুতে এবং বৈশ্যের শরৎ ঋতুতে হওয়া প্রশস্ত একথা ভগবান্ মনু বলেন। এইপ্রকারে তিনবর্ণের ব্যক্তিগণের ব্রতযোজনর জন্য তিন প্রকার কালের কথা বলা হয়েছে।।১০৮-১০৯।।