সন্ধ্যা
− সাতশো বছর ধরি পূর্ব-তোরণ-দুয়ারে চাহিয়া জাগিতেছি শর্বরী। লজ্জায় রাঙা ডুবিল যে রবি আমাদের ভীরুতায়, সে মহাপাপের প্রায়শ্চিত্ত করি যুগে যুগে হায় ! মোদের রুধিরে রাঙাইয়া তুলি মৃত্যুরে নিশিদিন, শুধিতেছি মোরা পলে পলে ভীরু পিতা-পিতামহ-ঋণ ! লক্ষ্মী ! ওগো মা ভারত-লক্ষ্মী ! বল, কতদিনে, বল, − খুলিবে প্রাচী-র রুদ্ধ-দুয়ার-মন্দির-অর্গল ? যে পরাজয়ের গ্লানি মুখে মাখি ডুবিল সন্ধ্যা-রবি, সে গ্লানি মুছিতে শত শতাব্দী দিতেছি মা প্রাণ-হবি! কোটি লাঞ্ছনা-রক্ত-ললাট পুব-মন্দিরদ্বারে মুছে যায় নিতি ললাট-রক্ত রাঙাতে পূর্বাশারে, ‘ওই এল উষা’ ফুকারে ভারত হেরি সে রক্তরেখা, যে আশার বাণী লিখি মা রক্তে, বিধাতা মুছে সে লেখা ! সন্ধ্যা কি কাটিবে না ? কত সে জনম ধরিয়া শুধিব এক জনমের দেনা ? কোটি কর ভরি কোটি রাঙা হৃদি-জবা লয়ে করি পূজা, না দিস আশিস, চণ্ডীর বেশে নেমে আয় দশভুজা ! মোদের পাপের নাহি যদি ক্ষয়, যদি না প্রভাত হয়, প্রলয়ংকরী বেশে আসি কর ভীরুর ভারত লয় ! অসুরের হাতে লাঞ্ছনা আর হানিসনে শংকরী, মরিতেই যদি হয় মা, দে বর, দেবতার হাতে মরি !