সংঘাত প্রশান্ত – বর্মন রায়
সেটা ছিল উনিশশো সাতানব্বইয়ের অক্টোবরের তের তারিখ। শনিবার চারিদিকে বিসর্জনের করুণ ঢাকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে প্রতিমা বিসর্জনের পর্ব চলছে। রাত তখন সাড়ে দশটা হবে। ঠিক এই সময় ময়নাগুঁড়ি গ্রামের সরু কাঁচা রাস্তা ধরে একজন মানুষকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল।
লোকটার মাথায় একটা বিরাট চটের বস্তা ছিল। বোঝার চাপে ঘাড়টা যেন ধনুকের মত বেঁকে যাচ্ছিলো।
এতক্ষণ সে কুঁজো হয়ে হাঁটছিলো। হাঁটতে হাঁটতে বোঝর চাপে পা দুটো অসম্ভব টলছিলো। একটু পরেই কাঁচা রাস্তা পার হয়ে একটা কঁকা মাঠ পড়ল। মাঠে মধ্যে বহুদিনের পুরনো একটা পাতকুয়োর কাছে এসে থমকে দাঁড়াল।
আগন্তুকের মুখে একটা ভীত সন্তস্ত্র ভাব; বোঝাটাকে কাঁধ থেকে খুব সন্তর্পণে নামিয়ে নিল।
পকেট থেকে একটা টর্চ বার করে, এক হাতে টর্চ জ্বেলে, বস্তার মুখে বা দড়িটাকে টান মেরে খুলে দিল। এইবার টর্চের জোরালো আলোয় এই শেষবারের মত। নিজের স্ত্রীকে একবার ভালো করে দেখে নিল।
কপালের লাল টকটকে সিঁদুরের টিপটা এখনও জ্বল জ্বল করছে।
ঘণ্টা খানেক আগেই সম্পূর্ণার মৃত্যু হয়েছে। চোখদুটো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে।
একটু পরেই মৃতদেহটাকে বস্তা বন্দী করল। বস্তা সমেত ডেডবডিটাকে যখন কুয়োর মধ্যে ফেলে দেওয়া হল, ময়নাগুঁড়ি বারোয়ারি পূজোমণ্ডপের বিসর্জন তখন সাঙ্গ হল। ঘন ঘন ঢাক আর কাঁসর ঘন্টার আওয়াজে রাত্রি নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেল।
এবার তার ফিরে যাবার পালা।
লোকটা কুঁয়োতলার ধার ঘেষে অন্ধকারেই দ্রুত পা চালিয়ে তার বাড়িতে গেল। প্রয়োজনীয় টাকা পয়সা আগে থাকতেই সঙ্গে নিয়েছিল। এবারে বাইরে থেকে ঘরের দরজায় তালা দিল। তারপর এদ্দিনের পুরনো তল্লাট ছেড়ে সূচিভেদ্য অন্ধকার ভেদ করে ম্যাজিকের মত কোথায় মিলিয়ে গেল।
.
২.
পরদিন ঠিক সক্কাল বেলায় ময়নাগুঁড়ি গ্রামে একটা ধুন্দুমার কাণ্ড। কুঁয়োর মধ্যে একটা পচা গন্ধকে কেন্দ্র করে গোটা তল্লাটে যেন হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল।
গ্রামেরই এক বয়স্ক ভদ্রলোক সকাল বেলায় পাতকুঁয়োর পাশ দিয়ে পায়চারি করতে করতে হেঁটে আসছিলেন। হঠাৎ একটা বিশ্রি পচা গন্ধ নাকে আসতে থমকে গেলেন। উত্তেজিত হয়ে গ্রামের পাঁচজনকে ডেকে ব্যাপারটা জানাতেই থানায় একটা খবর দেওয়া হল।
মৃতদেহটাকে যখন টেনে তোলা হল, দেখা গেল ওটা একটা আস্ত মৃতদেহ। জলে ভিজে মুখটা যেন বিকৃত হয়ে গেছে। হাত পা গুলো জমে কাঠ হয়ে গেছে।
ময়নাগুঁড়ির প্রত্যেকটা তোক মৃতদেহটাকে চেনে। মেয়েটি বিবেক দাসের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। বয়স বোধহয় কুড়ি বাইশের বেশি হবে না। প্রাথমিক কাজকর্মের পর ডেড় বডিটাকে পোস্ট মর্টমে পাঠানো হল। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে দেখা গেল, সম্পূর্ণার গলায় ফাঁসের দাগ।
তদন্তের শুরুতেই পুলিশ কিন্তু এ ব্যাপারে বিবেক দাসকেই প্রথমে সন্দেহ করল। বিবেক দাসের সন্ধানে এখানে ওখানে নানা সূত্র ধরে হন্নে হয়ে ঘুরল। কিন্তু কোথায় সে? লোকটা যেন কপূরের মত মিলিয়ে গেছে।
অথচ মাস আষ্টেক আগে কর পরিবারের মেয়ে সম্পূর্ণার বিয়ে হয়েছিলো এক সাধারণ পরিবারে।
পাত্রটি ব্যবসায়ী। নদীয়া জেলার ময়নাগুঁড়ি গ্রামে ওর নিজের বাড়ি। লোকটা একটু অদ্ভুত প্রকৃতির। বদমেজাজি তো ছিলই, তার ওপর হাড় কেপ্পন আর আধ পাগল বলে লোকে ওকে এড়িয়ে চলত। লু যা হোক, বিয়ের পর বেশ চলছিলো ওদের জীবন। হঠাৎ করে ওদের জীবনে নেমে আসে এক গুরুতর সংঘাত।
সেদিন সন্ধেবেলা। বিকেল থেকেই একটানা টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছিলো। সন্ধেবেলায় গা ধুয়ে সম্পূর্ণা দেখল, রান্নাঘরে আনাজ-পত্র কিছুই নেই। খানকতক আলু পেঁয়াজ ছাড়া সবজির ঝুড়িটা প্রায় খালি।
এদিকে ঘরে চাল বাড়ন্ত, আটা নেই, তেল নই, নুন নেই। আসলে গত তিনদিন ধরে বাজার সদাই বলতে গেলে কিছুই হয়নি।
সম্পূর্ণা বাজারের কথা জিগ্যেস করতে বিবেক দাস গম্ভীর হয়ে গেল।
একটা নড়বড়ে চেয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক দাস সেইসময় বসবার ঘরের ডুম বদলাচ্ছিলো।
ইতিপূর্বে শোবার ঘরে চল্লিশ পাওয়ারের বাল ছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে পঁচিশ পাওয়ারের বাল লাগানোর কথাটা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
আসলে কারেন্ট খরচা দিন দিন বেড়েই চলেছে তাই এহেন বিধি ব্যবস্থা। এতে কেউ হোঁচট খাক, কী স্বল্প আলোয় চোখে কম দেখুক, সম্পূর্ণার স্বামীর তাতে কোনো মাথা ব্যথা নেই। মোদ্দা কথা, অপচয় বন্ধ হলেই হল।
বিবেক দাস ঘরে কোনো বৈদ্যুতিক পাখাও রাখেনি। ওটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু কে বুঝবে সে কথা?
যাই হোক, এরই মধ্যে বাজারের থলি হাতে সম্পূর্ণা শোবার ঘরে গিয়ে আবার উঁকি দিল। একটু ঝঝের সঙ্গেই জিগ্যেস করল কী হল, বাজারে যাবে না।
বিবেক দাস ভুরু কুঁচকে পেছনে তাকিয়ে সম্পূর্ণাকে দেখল।
—অ্যাঁ? কাকে বলছ?
—মানে, ঘরে তো কিছুই নেই। তেল নুন সব কিছু বাড়ন্ত। বিবেক দাস একটা হতাশার ভঙ্গি করে কাঁধ ঝাঁকালো।
—অ্যাঁ? সব কিছুই বাড়ন্ত?
বিবেকদাসকে কিঞ্চিৎ চিন্তিত দেখাল।
—ঠিক আছে, আজতো আবার বর্ষার দিন। তুমি বরং খিচুড়ি বানাও।
প্রথম প্রথম সম্পূর্ণা এইসব কথা অর্থাৎ ওরকম যা হোক করে চালাবার ব্যাপারটা চুপচাপ মেনে নিত। কিন্তু ক্রমেই সব কিছু কেমন অসহ্য হয়ে উঠছিল। এদিকে বিবেক দাসের ব্যবসার অবস্থাও ইদানিং খুব একটা ভাল যাচ্ছিলো না। আর্থিক অবস্থা দিন দিন পড়ে আসছিল। কিন্তু টাকা পয়সার যতই টানাটানি চলুক, সংসার চালাবার ব্যাপারে কোনোরকম মনই নেই।
প্রথম প্রথম সম্পূর্ণা বাপের বাড়িতেই বেশির ভাগ কাটাতো। কিন্তু সে আর কদ্দিন। নিজের ঘর, স্বামীর ঘর, সে স্বাদ তো বাপের বাড়িতে আর পাওয়া যাবে না।
যাইহোক, সব কিছু দেখে শুনে সম্পূর্ণ নিজেই সংসারের হাল ধরল। এদিক সেদিক করে কিছুদিন চালাবার পর যখন দেখল আর কোনো উপায় নেই, তখন নিজের বিয়ের গয়নায় হাত দিল।
প্রতীক বলে একটি ছেলে সম্পূর্ণার কাছে প্রায়ই আসত। প্রতীকদের বাড়িটা ছিল দুতিনটে ঘর পরে। সম্পূর্ণাকে সে বৌদি বলে ডাকত। সম্পূর্ণার তো কোনো নিজের ভাই ছিল না, তাই প্রতীককে সে ভাইয়ের মত দেখত।
প্রতীক ছেলেটি সত্যি ভাল। তার ওপর পরোপকারীও বটে। তা, বিবেক দাস এই ব্যাপারটাকে অর্থাৎ সম্পূর্ণার সঙ্গে ওর মেলামেশাটা ভাল চোখে দেখত না।
সেদিন সন্ধের দিকে প্রতীক এসেছে, ওর হাতে সম্পূর্ণার দেওয়া গয়না। এক ভরি ওজনের সোনার এক জোড়া রিসলেট। এগুলো বিক্রি করে সম্পূর্ণাকে সে বেশ কিছু টাকা পয়সা দেবে বলে উঠোন পেরিয়ে চলে যাচ্ছে, সেই সময় বিবেক দাস প্রথমে প্রতীককে দেখে তারপর সম্পূর্ণাকে দেখে থমকে গেল।
বিবেক দাস কিন্তু এই নিয়ে সেদিন সম্পূর্ণাকে কিছুই বলে নি। তবে ভয়ঙ্কর নাটকীয় ঘটনাটা ঘটে গেলে দিন কয়েক পর।
সেদিন বিজয়া দশমী। শনিবার। অক্টোবরের তের তারিখ।
ঐ দিন সন্ধ্যায় প্রতীক গয়না বিক্রির টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছে, সেইসময় বিবেক দাসের সঙ্গে চোখাচোখি দেখা।
প্রতীক চলে যাবার পর বিবেক দাস ঘরে দরজাটাকে বন্ধ করে দিল। একটা মিথ্যে সন্দেহের বশে ওর চোখ দুটো যেন শ্বাপদের মত জ্বলছিল।
সম্পূর্ণাকে সে প্রথমে কিছুই জিগ্যেস করল না। একটা অব্যক্ত যন্ত্রণায় ভেতরে ভেতরে ফুঁসছিলো।
একটু পরেই কোমরে হাত রেখে বিবেক দাস গর্জে উঠল। সম্পূর্ণাকে সে সরাসরি জিগ্যেস করল, এই শয়তানি, নষ্ট মেয়েছেলে কোথাকার। তোর তলে তলে এই?’
সম্পূর্ণা ফুঁসে উঠল, ‘কি বলতে চাও তুমি, স্পষ্ট করে বল।‘
—প্রতীক কেন আসে, মনে করিস আমি কিছু বুঝি না?
-ওঃ, আমি কিছু বুঝি না। বউকে খাওয়াতে পার না, সংসারে কোনো দিকে চোখ নেই তার আবার বড় বড় কথা।
বাইরে তখন ঘন ঘন মেঘ গর্জনের সঙ্গে বিদ্যুত চমকাচ্ছিলো। বিবেক দাস নিজেকে সামলাতে পারেনি।
একধাক্কায় সম্পূর্ণাকে মাটিতে ফলে দিয়ে হিংস্র ক্রোধে ঝাঁপিয়ে পড়ল। তারপর সে কী অত্যাচার! এলোপাতাড়ি ঘুষি চালিয়ে চুল ধরে টানতে টানতে সম্পূর্ণার ভারী দেহটাকে রান্না ঘরে ঢুকিয়ে দিল।
সম্পূর্ণার উঠে দাঁড়াবার ক্ষমতা ছিল না। বাধা দেওয়াতো দূরের কথা।
বিবেকদাস রান্নঘরের হুড়কোটাকে বাইরে থেকে টেনে দিল। তারপর আক্রোশে ফুঁসতে ফুসতে ঘর থেকে বাইরে স্টেরয়ে এল।
ওদিকে এরকম একটা মিথ্যে অপবাদের যন্ত্রণা নিয়ে সম্পূর্ণার মাথায় তখন আগুন জ্বলছিলো! হাঁটুতে মুখ গুঁজে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে অনেকক্ষণ কাঁদল। কাঁদতে কাঁদতে নিজের কপাল চাপড়ালো। একসময় নিজেকে শক্ত করল, উঠে দাঁড়িয়ে পরনের শাড়িটাকে এক হ্যাচকা টানে খুলে নিল। তারপর—
.
বিবেকদাস ফিরে এসেছিল আধঘণ্টা বাদেই।
রান্নাঘরের হুড়কো খুলে ভেতরে ঢুকতে যাবে, একটা অস্ফুট গোঙানির মত শব্দ করে স্পিং-এব মত ছিটকে বেরিয়ে এল।
রান্নাঘরের কড়িকাঠ থেকে সম্পূর্ণার দেহটা ঝুলছে।
হতভম্বের মত বিবেক দাস খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। ধীরে ধীরে সম্বিত ফিরে পেল। ঘটনার আকস্মিকতায় সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগল। কড়িকাঠ থেকে চোখ ফিরিয়ে মেঝের ওপর বসে পড়ল।
সামান্য একটা ঘটনায় সম্পূর্ণা যে অমন একটা কাণ্ড করবে, ব্যাপারটা যেন তার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না।
যাইহোক, একটু পরে নিজেকে সামলে নিল। একটা অজানা আশংকায় বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। ঠাণ্ডা মাথায় বিবেক দাস ভেবে দেখল, সম্পূর্ণার দেহটা এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে, তারপর এ বাড়ি ছেড়ে দূরে কোথাও গা ঢাকা দিতে হবে।
কড়িকাঠ থেকে সম্পূর্ণার দেহটা বিবেকদাস দ্রুত হাতে টেনে নামিয়ে নিল। ডেডবডিটাকে একটা বস্তায় পুরে মুখটাকে ভালো করে বেঁধে নিল, তারপর বস্তাটাকে কাঁধে ফেলে অন্ধকারেই বাইরে বেরিয়ে এল।
রাত তখন দশটা বাজে। কাছেই একটা পাতকুঁয়ো ছিল। বস্তা সমেত দেহটাকে পাতকুয়োয় ফেলে দিয়ে অ্যাদ্দিনকার পুরনো গ্রাম ছেড়ে চিরদিনের মত হারিয়ে গেল।
.
৩.
এই ঘটনার পর প্রায় এক বছর কেটে গেছে। ময়নাগুঁড়ি গ্রামের লোকেরা বিবেক দাস আর সম্পূর্ণার কথা প্রায় ভুলেই গেছে।
সেবারও পূজোর টাইম। দিনটা শুক্রবার।
ময়নাগুঁড়ি গ্রামের বারোয়ারি পূজো মণ্ডপের সামনে বেশ কিছু লোক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিসর্জন দেখছে।
আজ বিজয়া দশমী। বিকেল থেকেই টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে।
সেই সময় অন্ধকার রাস্তা ধরে একজন লোক ধীরে ধীরে বেরিয়ে এল। তার পরনের পোষাকটা এখানে ওখানে ছিঁড়ে গেছে। মুখে একগাল কাঁচা পাকা খোঁচা খোঁচা দাড়ি। মাথায় এলো-মেলো রুক্ষ চুল। এই মুহূর্তে ওকে দেখলে মনে হবে যেন অনুশোচনার আগুনে পুড়ে বুকটা একেবারে ছাই হয়ে গেছে।
একটু দূরেই একটা ফাঁকা মাঠ। মাঠের ধারেই একটা বড় পাতকুঁয়ো। লোকটা সেখানে গিয়ে থেমে গেল।
গাঢ় অন্ধকারের বুকে পাতকুয়োর ধারটা সেই মুহূর্তে নির্জন হয়ে আছে। সেইসঙ্গে খেপে খেপে অনেক দূর থেকে ঝিঝির ডাক শোনা যাচ্ছে।
লোকটা হঠাৎ হাত দুটো জোড় করে আকাশের দিকে তুলে ধরে কার কাছে ক্ষমা চাইল। একটু পরে নিচু হল। কুঁয়োর পাড়ে মাথা নেড়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে অনেকক্ষণ কাঁদল, পরমুহূর্তেই একটা ভয়ঙ্কর কাণ্ড
কুঁয়োর গভীরে একটা ঝপাং শব্দ হল। তারপর একটা ভারী দেহের পতন ও চাপা আর্তনাদের সঙ্গে সঙ্গে কুঁয়োর আশপাশটা নির্জন হয়ে গেল।
.
পরদিন সকাল।
সকালবেলার টাটকা রোদে চারিদিক ঝলমল করছে।
বেলা যখন একটা, সেইসময় দুপুরের দিকে একটা তীব্র পচা গন্ধে পাতকুঁয়োর আশপাশটা ভরে গেল।
গীর্ঘ এক বছর বাদে কুঁয়োর ধার থেকে আবার পচা গন্ধ পেয়ে গোটা তল্লাটে যেন আলোড়ন পড়ে গেল।
বিকেলের দিকে কুঁয়োর জলে একটা মৃতদেহ ভেসে উঠল। ভেসে ওঠা দেহটা যখন টেনে তোলা হল, দেখ গেল দুর্গন্ধময় দেহটা আর কারো নয়। সম্পূর্ণার স্বামী অর্থাৎ বিবেক দাসের মৃতদেহ।
দেহটা জলে ভিজে ফুলে গেছে। চোখ দুটো অনুশোচনায় ভরে গেছে। ঢল ঢলে চোখের চাউনি দিয়ে সে যেন বলতে চাইছে, সম্পূর্ণা, যদি পার—আমাকে তুমি রুমা কোরো।