শোভাবাজারের নন্দরাম সেনের পরিবারবর্গ
কায়স্থ বংশীয় নন্দরাম সেন ছিলেন ঢাকার কমার্শিয়াল রেসিডেন্টের দেওয়ান। তিনি বাস করতেন শোভাবাজারে। দান ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর খ্যাতি ছিল! জনগণের মধ্যে দারুণ জলকষ্ট দেখা দিলে তিনি বারাসাত, হুগলি প্রভৃতি স্থানে প্রায় বারটি পুষ্করিণী খনন করান। নন্দরাম সেন স্ট্রিটটির নামকরণ হয়েছিল তাঁরই নাম অনুসারে; এই পথের পাশে তিনি মহাদেবের বিরাট মন্দির নির্মাণ করান। বারাসাতের বেশ কয়েকজন ব্রাহ্মণকে তিনি ভূমি দান করেছিলেন; তাঁদের বংশধরগণ এখনও সেই জমি ভোগদখল করছেন। এই বংশে তাঁর পরবর্তী পুরুষ রামচন্দ্র সেন ও গোবিন্দচন্দ্র সেন। ভাষাবিদ গোবিন্দচন্দ্র ইংরেজি, ফরাসী, বাংলা, সংস্কৃত, উর্দু ও ফার্সী ভাষাসমূহ জানতেন। আশি বছর বয়সে তিনি সংস্কৃতে ‘কাশীখন্ড’ গ্রন্থটি রচনা করেন, গ্রন্থখানি হিন্দুদের ঘরে ঘরে এখনও পঠিত হয়। তিনি চার পুত্র রেখে যান। তাঁদের মধ্যে জয়ন্তীচন্দ্র ‘বত্রিশ সিংহাসন’ ও ‘শ্রীসীভানবমীব্রত’ নামক দু’খানি বই লেখেন। বত্রিশ সিংহাসনের বিক্রয়লব্ধ যাবতীয় অর্থ তিনি দরিদ্রদের মঙ্গলের জন্য জেলা দাতব্য সমিতিকে নিয়মিত দান করেন। তাঁর পাঁচ পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শরৎচন্দ্র ‘পিজিং কোড’ নামক একখানি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন।
সেন পরিবারের আগেকার সে প্রাচুর্য আর নেই। বেওন্টায় তাদের একটি ছোট তালুক ও কলকাতায় কিছু বাড়ি ও ভূসম্পত্তি আছে।