শূন্য থেকে সাম্যে
সবাই মাটি, পাথর, বরফ অতিক্রম করে শূন্যতায় গিয়ে পৌঁছে।
কিন্তু আমি শূন্যতা অতিক্রম করে এখানে এসে পৌঁছেছি।
এই তো আমার পায়ের নীচে মাটি। হাত বাড়ালেই তোমার
রক্ত মাংসের ধুকপুকানি, নিঃশ্বাসের গরম বাতাস
অনুভব করি। আমি স্নেহ, মায়া মমতার ওপর আমার
হাত বিছিয়ে দিতে পারি। আমি শূন্যতা থেকে এসেছি
বলে আমার একটা পাওয়ার ইচ্ছা হাতল ধরার
স্বপ্নের মত আমার সামনে দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে
চলে যায়। আমি প্রতিটি পালক পড়ার শব্দের
মধ্যে ডানাওয়ালা হাসের দ্রুতগতি অনুভব করি।
আমি শূন্যতা থেকে এসেছি বলে আমার মধ্যে
এক ধরনের আছে, আছে সংগীত গুঞ্জরিত হয়।
এস্রাজটি কোথায় বাজছে তা অবশ্য আমি
বলতে পারব না। তবে সেই রেওয়াজ শোনার
টিকেট আমি জন্ম থেকেই নিজের পোশাক
হাতড়ে পেয়ে গেছি।
আমি শূন্যতা থেকে এসেছি বলেই সমস্ত
স্পর্শযোগ্য বিষয় আমার কাছে স্বাদ ও গন্ধযুক্ত
খাদ্যের মত মনে হয়। যেন এই মুহূর্তে বেইজিং-এর কোন
রেস্তোরা থেকে হাজার বছর আগে অবলুপ্ত ধোঁয়া ওড়া নীল
‘লবস্টার’ রাঙা করে আমার পাতে তুলে
দিয়েছে মৎস্যকুমারীর মত সুন্দরী এক চীনা বালিকা।
তার মুখে এখনও লেগে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই লং মার্চের
আদব, ‘তা-তাও জিপান জেন’।
জাপানী এনিমিরা নিপাত যাক।
আমি শূন্য থেকে এসেছি বলেই রক পাখির ডিমের মত
ঐশ্বর্যভরা পৃথিবীকে বুকের ভেতর অনুভব করি।
কি উষ্ণ, কি সমুদ্রের তৃপ্তিতে ভরা,
কি হীরকের দ্যুতিতে সমুজ্জ্বল বরফের প্রান্তর।
এই তো পৃথিবী। এই তো আমার আত্মা আমার
আছে, আছে অনিঃশেষ শব্দের দোলনা।
কে এর উপর প্রভুত্ব করবে। সাম্য, মৈত্রী ও ভালবাসা
ছাড়া? ভ্রাতৃত্বের বন্টন ছাড়া?