শালিখ

শালিখটার কী হল তাই ভাবি।
        একলা কেন থাকে দলছাড়া।
    প্রথম দিন দেখেছিলেম শিমুল গাছের তলায়,
               আমার বাগানে,
    মনে হল একটু যেন খুঁড়িয়ে চলে।
তার পরে ওই রোজ সকালে দেখি–
        সঙ্গীহারা, বেড়ায় পোকা শিকার ক’রে।
           উঠে আসে আমার বারান্দায়–
        নেচে নেচে করে সে পায়চারি,
           আমার ‘পরে একটুকু নেই ভয়।
                   কেন এমন দশা।
সমাজের কোন্‌ শাসনে নির্বাসনের পালা,
               দলের কোন্‌ অবিচারে
                   জাগল অভিমান।
    কিছু দূরেই শালিখগুলো
           করছে বকাবকি,
        ঘাসে ঘাসে তাদের লাফালাফি,
উড়ে বেড়ায় শিরীষ গাছের ডালে ডালে–
        ওর দেখি তো খেয়াল কিছুই নেই।
জীবনে ওর কোন্‌খানে যে গাঁঠ পড়েছে
        সেই কথাটাই ভাবি।
সকালবেলার রোদে যেন সহজ মনে
        আহার খুঁটে খুঁটে
    ঝরে-পড়া পাতার উপর
        লাফিয়ে বেড়ায় সারাবেলা।
    কারো উপর নালিশ কিছু আছে
        মনে হয় না একটুও তা।
    বৈরাগ্যের গর্ব তো নেই ওর চলনে,
           কিম্বা দুটো আগুন-জ্বলা চোখ।
    কিন্তু ওকে দেখি নি তো সন্ধেবেলায়–
           একলা যখন যায় বাসাতে ডালের কোণে,
        ঝিল্লি যখন ঝিঁ ঝিঁ করে অন্ধকারে,
           হাওয়ায় আসে বাঁশের পাতার ঝর্‌ঝরানি।
               গাছের ফাঁকে তাকিয়ে থাকে
                          ঘুমভাঙানো
                   সঙ্গীবিহীন সন্ধ্যাতারা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *