1 of 2

শকওয়েভ – ৬

ছয়

ওরা আলোচনায় মগ্ন, এ সময় দেড় শ’ গজ দূরে ওদের অজান্তে এক অডি স্যালুন এসে থামল সেলেনার ভাড়া করা গাড়ির পাশে। চকচক করছে গাড়িটার মসৃণ কালো বডি।

দু’জন লোক নিঃশব্দে বেরিয়ে এল অডিটার দু’দিকের ফ্রন্ট ডোর খুলে।

সাধারণ চরিত্র নয় এরা।

ড্রাইভার লোকটার বয়স পঁয়তিরিশের মত। রুপালি চুল ছাড়া বর্ণনা দেয়ার মত আর কোনও বিশেষত্ব নেই তার চেহারায়।

অপরজন পাঁচ বছরের বড় হলেও গড়নে হালকা। ঘন, বাদামি চুল মাথায়। চিবুকটা কোদালের মত। আর নাকটা যেন পাতিহাঁসের ঠোঁট।

দু’জনেরই পরনে কালো জিনস আর হালকা জ্যাকেট। চোখে রোদচশমা।

নিরাসক্ত দৃষ্টিতে দেখল একবার হলুদ ভক্সলটা। একটা বাক্যও বিনিময় হলো না দু’জনের মধ্যে। ভোডাফোন ব্র্যাণ্ডের মোবাইল বের করে ওপাশ থেকে ইন্সট্রাকশন নিতে আরম্ভ করল বয়স্কজন। শোনা শেষ হলে, মৃদু নড করল সহচরের উদ্দেশে।

গাড়ির বুট খুলল ড্রাইভার। জলপাই-সবুজ একখানা হোল্ডঅল বেরোল ভিতর থেকে। ভারি এক বা একাধিক জিনিস রয়েছে ওটার মধ্যে। ঘাম ছুটে গেল একা তুলতে গিয়ে।

প্রায়-নির্জন পার্কটা জরিপ করতে লাগল ওরা পেশাদারি দৃষ্টিতে। কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই দূরের বেঞ্চে খুঁজে পেল টার্গেটকে।

কিন্তু সঙ্গের ওই অচেনা লোকটা কে?

দৃষ্টি বিনিময় করল দু’জনে। যদিও কেউ কারও চোখ দেখতে পাচ্ছে না।

সেলফোন হাতে নিল কোদালমুখো। অত্যন্ত হাই- কোয়ালিটি ক্যামেরার ‘জুম’ অপশন ব্যবহার করে ঝটপট গোটা কয়েক ছবি তুলল বেঞ্চে বসা রানা-সেলেনার। এর পর কল করল একটু আগেই কথা বলা নাম্বারটায়।

‘একা নয় টার্গেট,’ জানাল সে ওপাশ থেকে সাড়া পেয়ে। ‘দুনিয়ার আলাপ জুড়েছে বেটি কার সাথে জানি!’

বিরতি। ওপাশের কথা শুনছে বাদামি-চুল।

‘হ্যাঁ, তা-ই বলেছি আমি,’ কথা শেষ হলে মুখ খুলল আবার। ‘ছবি পাঠাচ্ছি আপনাকে।’ কান থেকে ফোন সরিয়ে ঝটপট বাটন টিপল কয়েক বার। ‘পেয়েছেন?’

‘হুম, পেয়েছি,’ গভীর, প্রশান্ত একটা কণ্ঠ বলল অপর প্রান্ত থেকে। ‘ভুল সময়ে ভুল জায়গায় হাজির হয়েছে লোকটা। …তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করো। টার্গেট এখন দুটো।’

শেষ হয়েছে কথা।

হোল্ডঅলের জিনিসগুলো নিয়ে আলাদা হয়ে গেল দুই প্রফেশনাল। পার্কের কিনারা ঘুরে যার যার পজিশন নিল কারও দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। একটুও উত্তেজনা নেই কারও মধ্যে। সিটিং ডাক শিকার করতে চলেছে যেন। শিয়োর শট।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *