আটত্রিশ
ইতিহাসখ্যাত শেফার্ডসটাউনের নীরব রাস্তায়, বয়ফ্রেণ্ডের বাড়ির সামনে গাড়ি পার্ক করল সিণ্ডি পোর্টম্যান। শিগগিরই এ-বাড়িতে স্থায়ী হওয়ার কথা ওর।
আবছাভাবে শুনতে পাচ্ছে, বাড়ির ভিতর ঘেউ ঘেউ জুড়েছে কুকুরটা।
হেডলাইট আর ইঞ্জিন বন্ধ করে বেরিয়ে এল গাড়ি থেকে। চপল পায়ে সিঁড়ি ভাঙল দরজার।
কুকুরের ডাক এখন জোরালো। কিঞ্চিৎ অস্বাভাবিক এটা বুস্টারের বেলায়। ঠাট্টা করে প্রায়ই বলে ফিল—মানুষকে এত পছন্দ ল্যাব্রাডরটার, চোরডাকাত এলেও চেটে দেবে তার হাত-গাল।
ডুপ্লিকেট চাবি রয়েছে সিণ্ডির কাছে। তালা খুলে পা রাখল আধো-অন্ধকার হলওয়েতে।
ওকে স্বাগত জানাতে ছুটে এল বুস্টার। কিছু একটা নিয়ে উত্তেজিত মনে হচ্ছে ওটাকে। সমানে লেজ নাড়ছে, আর শ্বাস ফেলছে ফোঁস ফোঁস করে।
‘এই যে, হ্যানসাম!’ কুকুরটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল হবু মালকিন। ‘পেশাব পেয়েছে, তা-ই না? আচ্ছা, বাবা… আচ্ছা… পেছনের উঠনে নিয়ে যাচ্ছি এক্ষুণি।’
হলওয়ের আলো জ্বালতে হাত বাড়াল মেয়েটা।
‘ক্লিক’ শব্দে সুইচ অন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকট এক অগ্নি-বিস্ফোরণ গ্রাস করল ওকে।
সদর-দরজা আর হলের জানালাগুলো চুরমার করে বিশাল এক অগ্নিগোলক গড়িয়ে গেল রাস্তার দিকে। তীক্ষ্ণ আওয়াজে পাড়া মাথায় তুলল বাইরে দাঁড় করানো গাড়ির অ্যালার্ম
চড়চড় শব্দে পুড়ছে বাড়িটা। ধোঁয়া বেরোচ্ছে ভলকে ভলকে। মিটমিট শুরু করল রাস্তার বাতিগুলো।
যার যার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে পাড়াপড়শিরা। একটা বাচ্চা কেঁদে উঠল কোথাও তারস্বরে। কেউ একজন গলা ফাটাচ্ছে টেলিফোনে। ঘটনার ভয়াবহতা দেখে বিলাপ জুড়ল এক বয়স্কা মহিলা।
খ্যানখেনে আওয়াজ তুলে কিছুক্ষণ বাদে যখন হাজির হলো ফায়ার ডিপার্টমেন্ট আর পুলিসের গাড়ি, ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা এক পাটি জুতো ছাড়া আর কিছুই পেল না তারা সিণ্ডি পোর্টম্যানের। বিস্ফোরণ উড়িয়ে এনে ফেলেছে ওটাকে রাস্তায়।