1 of 2

লাটু খড়িয়া এবং একটি দাঁড়াশ সাপ

লাটু খড়িয়া এবং একটি দাঁড়াশ সাপ

হাতিগুলোর সামনে আগুন জ্বলছিল।

পাশাপাশি বাঁধা ছিল মেঘাঙ্গিনী, বাতাসি, সুলোচনা, প্রিয়ংবদা। মেয়ে হাতিগুলোর পাশে পুরুষগুলো; চন্দ্রচূড়, নীলকান্ত, রাজকান্ত।

তখনও পুবে-আলো ফোটেনি। হলং নদী থেকে ঠাণ্ডা ধোঁওয়া উঠছে। শীত; বড়ো স্যাঁতসেঁতে শীত। আগুনের পাশে বসে মাহুতরা হাত সেঁকছিল। এনামেলের চা-এর গ্লাস হাতে ধরে দু-হাতের পাতা দিয়ে গরম গ্লাস থেকে উষ্ণতা শুষে নিচ্ছিল স্নায়ুতে স্নায়ুতে। হাতিগুলোর ছায়া পড়েছিল পেছনের ডাঙাজমিতে। ওই অন্ধকার রাতের শীতার্ত নির্মোক ফুঁড়ে এক স্বয়ম্ভূ স্বরাট দিন শিগগিরই ভূমিষ্ঠ হবে, এমন আশা ছিল।

লাটু খড়িয়া চা-এর গ্লাসটা নামিয়ে রেখে একটা বিড়ি ধরাল। অন্ধকারকে ভয় করে লাটু। দুর্ধর্ষ ডাকাত বীরেন কাঠামের বংশধর শ্যামসুন্দর কর্মকারও অন্ধকারকে বড়ো ভয় করে। এমনকী এই পাহাড়-পাহাড় অন্ধকারের দূত হাতিগুলোও অন্ধকারকে ভয় করে।

শাল, শিমুল, হাতি সব কিছুই গ্রাস করে নেয় এই বিপুল অন্ধকার।

কিন্তু লাটু খড়িয়া এই অন্ধকারের চেয়েও বেশি ভয় করে আগুনকে। আগুনটা অন্ধকারকে ভেঙে টুকরো করতে পারে তো নাই-ই, উলটে অন্ধকারটাকে আলোর বৃত্তের বাইরে আরও বেশি রহস্যময় গভীর ও ভয়াবহ করে তোলে। এই অন্ধকার ওর মেরুদন্ডের রং কালো করে দিয়েছে।

মাহুত ধনবাহাদুর দর্জি ওদের ডেকে বলল, আর দেরি ক্যান?

অন্যান্য মাহুতরা সাড়া দিল না।

হাতিগুলো তো নয়ই!

রঘু খড়িয়া বিরক্ত গলায় ওদের শুধোল, কী করেন বাহে?

লাটু নিরাসক্ত গলায় বলল, না করি কোনো!

বলেই, উঠে পড়ল বিড়িটা ফেলে দিয়ে। তার পর তার হাতিটাকে বসতে বলল।

একে একে সব হাতিগুলো বসল। মাহুতরা তাদের পিঠে উঠে বসল। কেউ গামছা, কেউ মাফলার গলায় জড়িয়ে, গুঁজে নিল ভালো করে।

অন্ধকার হাতিগুলো, অন্ধকারতর শেষরাতে, হলং ফরেস্ট বাংলোর দিকে এগিয়ে চলল সারিবদ্ধ হয়ে।

লাটু মনে মনে আবার বলল; না করি কোনো।

অর্থাৎ ও কিছু করছে না, এবং হয়তো করার ইচ্ছেও নেই।

একে কি কিছু করা বলে? এই এককালীন স্বাধীন, জংলি, বলশালী হাতিগুলোকে মাথার ওপর ডাণ্ডা মেরে ওরা অবশ করে দিয়েছে। দারিদ্র্য, ভীরুতা, শীত, স্ত্রী-পুত্র, নেশা-ভাং এই পুরুষ মাহুতগুলোর মস্তিষ্কও বিবশ করে দিয়েছে। শিশির-ভেজা নরম ধুলোর ওপরে হাতিদের প্রায় নি:শব্দ পায়ের আওয়াজে, নিজেদের মস্তিষ্কের মধ্যে রক্ত চলাচলের ক্ষীণ ঝিনঝিনি অনুভূতিতে একটাই সুর বাজছে:

‘না করি কোনো।’

হলং নদীর সাঁকো পেরুল ওরা।

বড়ো বড়ো মাছগুলো এই ঠাণ্ডায় ডিগবাজি খাচ্ছে। মাছেদের কি শীত নেই? সাঁকোর ডানদিকের জঙ্গলে যে দাঁড়াশ সাপটা থাকে, সে এখন কোথায় কুন্ডলী পাকিয়ে আছে কে জানে!

হঠাৎ লাটুর মনে হল, ওর নিজেরই মস্তিষ্কে। দাঁড়াশ সাপ নির্বিষ, ঠাণ্ডা। কোনো মানুষই ভয় পায় না দাঁড়াশ সাপকে।

ওরা সব দাঁড়াশ সাপ হয়ে গেছে। এমনকী এককালীন দুর্ধর্ষ ডাকাত বীরেন কাঠামের বংশধর শ্যামসুন্দর কর্মকারও। ওদের কেউই আর ভয় পায় না। কিন্তু ওরা পায়। ডি এফ ও-র জিপের শব্দকে ওরা ভয় পায়। আই জি-র ট্যুর প্রোগ্রামকে ওরা ভয় পায়। ভয় পাওয়ার কারণ নেই কোনো। কিন্তু ভয় পায়। আর তাড়া-খাওয়া দাঁড়াশ সাপের মতো গুটিয়ে যায়। গর্ত খোঁজে। ভয়ের শীত ওদের কাঁপায়। ওদের চাকরি, ওদের সংসার; ওদের সামান্যতা ওদের বড়ো ভীরু করে দিয়েছে।

লাটু খড়িয়া আবার মনে মনে বলল, না করি কোনো।

বাংলোর সামনে হাতিগুলো সার দিয়ে দাঁড়াল। এখন বিভিন্ন কাঠ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ঘরে বাবুরা কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে শুয়ে বেড-টি খাচ্ছেন। এরপর, বাথরুমে বাথরুমে জলের আওয়াজ হবে। তার পর বিচিত্র পোশাক পরে নারী-পুরুষ সব কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসবেন। অন্ধকারে কথার ফুলঝুরি ঝরিয়ে। মাথায় বাঁদুরে টুপি, কোট, জার্কিন, গলায় মাফলার। কাঁধে ক্যামেরা। জলদাপাড়ার বাঁদরগুলোর চেয়েও বেশি বাঁদুরে মনে হয় এই বাবুগুলোকে।

লাটু একটা হাফ-হাতা শার্টের ওপরে ডিপার্টমেন্টের কোট পরেছে। গলায় গামছাটা জড়িয়ে নিয়েছে ভালো করে। হাতির পিঠে বসে বড়ো শীত লাগে। এর চেয়ে নিজের পায়ে হাঁটা ভালো। শরীরে রক্ত চলে, রক্ত ছোটে; রক্ত বাড়ে। গরম লাগে শরীর।

কতরকম লোক আসে এই জঙ্গলের জানোয়ার দেখতে। লাটুদেরও দেখতে। বেঁটে, মোটা, লম্বা, সভ্য, অসভ্য, গর্বিত, বিনয়ী, সাহসী, ভীরু। কতরকম মেয়ে: পদ্মিনী, শঙ্খিনী, হস্তিনীও; মেঘাঙ্গিনী, বাতাসি ও সুলোচনাদের মতো।

ওঁরা জানোয়ার দেখেন, লাটুরা ওঁদের দেখে। মাঝে মাঝে লাটুর ইচ্ছে করে হাতির পিঠ থেকে কিছু লোককে নামিয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে কিছু জানোয়ারকে হাতির পিঠে তুলে নেয়। ভগবান শালা কত মানুষকে জানোয়ার করে, কত জানোয়ারদের মানুষ করে পাঠায়। লাটুর কী করার আছে?

‘না করি কোনো।’

বাবুরা, মায়েরা, সায়েবরা, মেমসায়েবরা সব একে একে এলেন। হাতিগুলো বসল এক এক করে। ওঁরা উঠলেন, বিচিত্র সব শব্দ করে।

এখনও অন্ধকার। লাটুরা এখন তাদের সওয়ারিদের শুধু আবছা আবছা দেখতে পায়। দলে কোনো সুন্দরী থাকলে লাটু প্রার্থনা করে, যেন সে অন্য হাতিতে ওঠে, যাতে তার হাতির মাথার দু-দিকে দু-পা ছড়িয়ে দিয়ে বসে ডাঙশ হাতে করে সে ডাগর মেয়ের দিকে চেয়ে চেয়ে জলদাপাড়ার শীতের স্যাঁতসেঁতে সকালে হেলতে-দুলতে উষ্ণ হয়ে উঠতে পারে।

হাতিগুলো একে একে উঠল। তার পর সারবন্দি চলল।

বাংলোর কাছেই একটা বুড়ো শিমুল। বিরাট বড়ো। বুড়ো হলে কী হয়, ফুল এখনও ফোটে। বুড়োর নাক দিয়ে মাথার চুল দিয়ে ফিসফিস করে শিশির ঝরে। হাতি চলে। মানুষ দোলে। লাটু বুকের দু-পাশে দু-হাত আড়াআড়িভাবে রেখে ডাঙশটা দু-পায়ের মাঝে রেখে একটু ঘুমিয়ে নেয়।

হাতি চলতে থাকে। হলং নদী পেরোয়। মানুষগুলো দোলে, পুবে ধীরে ধীরে কিশোরী মেয়ের মনের মতো, পুঁটিলেখা ফুলের মতো; একটি মাঘের সকাল খোলে।

কাশিয়ার নরম, রুপোলি, বিদেশিনির লোমের মতো মসৃণ শিশির-ভেজা রেশমি-ফুলে প্রথম রোদের সোনা এসে হিরে জ্বালল। পাখিরা জাগল। টিয়া উড়ে গেল প্রথম ভোরের আকাশে সবুজ আবির ছুড়ে দিয়ে। বুলবুলি শিমুলের উঁচু ডালে বসে শিস দিল। ধনেশ পাখি গ্লাইডিং করে করে রোদ পোয়াতে লাগল।

রোদ উষ্ণতর হল। ফিকে গোলাপি থেকে সোনালি। সোনালি থেকে বাদামি। বাদামির পরেই হলুদ। হলুদ হয়েই, হঠাৎ দিন হয়ে গেল। দিনের কোনো রং রইল না। কখনো থাকে না। দিনের রঙের প্রদীপ ধরেই অন্য রং চেনা। দিন পটভূমি; ইজেল। তারই ওপর অন্য সব কিছু স্থাবর-জঙ্গমের ছবি।

হাতি চলল। কোমর দুলল। ঘাস নড়ল। পাখি উড়ল। শিশির ঝরল। হাতি চলল। দিন তখন হাসনুহানার মতো ফুটতে লাগল। দিনের প্রহরে প্রহরে গন্ধ। সে বাস আলাদা। প্রতিপ্রহরের বাস আলাদা। আদুর গায়ের নারীর বাসের মতো। যে জানে, যার নাক আছে; সেই-ই জানে।

পড়াণ্ডি ঘাসের পাতা নড়ল। শিমুল তরুর মূল ভাঙল হাতির পায়ের চাপে। হাতির পায়ের গন্ধ, রাই-সেগুনের গন্ধ, শিমুলের ঋজু শরীরের পুরুষালি গন্ধ, শিশু গাছের গোল গোল মিষ্টি পাতার মেয়েলি গন্ধ, কাশিয়ার গন্ধ, ঢাডডার গন্ধ, ফেলে-যাওয়া পথে যাযাবর চিরপুরুষ তোরসা নদীর গায়ের গন্ধ, নদীর বুকের নুড়ির গন্ধ, শিকারি বাজের শক্ত ডানার গন্ধ, হাতির পিঠে কলকাতার মেয়ের পারফিউমের গন্ধ, লাটু খড়িয়ার বগলের গন্ধ, হাতির পুরীষের গন্ধ, সমস্ত মিলেমিশে ভোরটা, এই সমস্ত সকালটা ম-ম করে উঠল গন্ধে গন্ধে।

লাটুর নেশা লাগল। ঘুম পেতে লাগল।

এমন সময় শ্যামসুন্দর তার আগের হাতি নিয়ে ‘নুনী’তে নামল জলদাপাড়ার পথ ছেড়ে। এখানে ডিপার্টমেন্ট নুন ছড়িয়ে রাখে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে। গাউর আসে, শম্বর আসে, হরিণ আসে, কোটরা আসে, আর আসে গেঁড়া। এক-শিঙের গণ্ডার। জলদাপাড়ার গর্ব। হলং-এ বাবুদের আসার কারণ।

‘নুনী’র প্রতিইঞ্চি মাটি পরীক্ষা করে মাহুতরা গেঁড়ার পায়ের দাগের জন্যে। তার পর পায়ের দাগ দেখে আবার হাতি নিয়ে জঙ্গলে ঢোকে।

যখন একেবারেই চুপচাপ থাকার কথা, ঠিক তখনই লাটুর পুরুষ সওয়ারি কথা বলে ওঠে।

খুব থ্রিলিং। ঘোষসায়েবকে একবার নিয়ে এলে হয় এখানে, কী বলো?

কী জন্যে? ঘুস? মেয়েটি বলল।

ছি: ছি: কী যে বলো?

তবে?

না:, ব্যাটা মহা ঝামেলা লাগাচ্ছে। একটু তেল না দিয়ে উপায় নেই। কনফিডেনশিয়াল ক্যারেক্টার রিপোর্টটা এবার খারাপ করলে প্রোমোশন নির্ঘাত আটকে যাবে। এই প্রোমোশনটা হলে তোমার কোনো শখই আর অপূর্ণ থাকবে না। বুজেচো?

ওঃ।

মেয়েটি বলল।

ঘোষসাহেব তো তুমি বলতে অজ্ঞান। একবার এসো না দুজনে এখানে। কোনো রিসক থাকে না আমার।

লাটু বাংলা বোঝে। লাটু বাঙালিই। আমাদের বঙ্গদেশ অনেক বড়ো। কলকাতার কূপমন্ডূক বাঙালি খোঁজ রাখে না।

মেয়েটি বলল, একথা বলতে তোমার লজ্জা করল না?

লজ্জা? লজ্জা কীসের? তুমি কি আমার ভালো চাও না?

ভালো চাওয়ার সঙ্গে যে-কথা বলছ তার কী সম্বন্ধ? তোমার ভালো চাই বলে, একটা কাঁকড়ার মতো লোকের সঙ্গে রাত কাটিয়ে তাকে নিয়ে গণ্ডার দেখতে হবে আমার? তুমি কি পুরুষ?

লাটু একটা বিড়ি ধরাল; মনে মনে বলল, দাঁড়াশ সাপ। শালা, চিকনি আলু।

শ্যামসুন্দর মুখ দিয়ে একটা আওয়াজ করল। আওয়াজটার মানে হাতিগুলো বুঝল। সওয়ারিরা বুঝল না। হাতিগুলো যার যার মাহুতের কাছ থেকে চাপা আওয়াজ শুনে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।

লাটুর সওয়ারি শুধোল কী? কী? কী?

লাটু, চাপা গলায় বলল, গেঁড়া।

গেঁড়া মানে কী?

গণ্ডার।

তাই? লোকটি বলল।

মেয়েটি বলল, কী মজা।

পুরুষটি ভয়-পাওয়া গলায় বলল, কথা বোলো না। দড়ি ধরে থাকো শক্ত করে।

একটু পরই হাতিগুলো গেঁড়াটাকে ঘিরে ফেলল। কাশিয়ার মধ্যে, ঢাডডার ফাঁকে, পুড়াণ্ডির সবুজ পটভূমিতে গেঁড়াটা দাঁড়িয়েছিল।

গণ্ডারটাও একটা দাঁড়াশ সাপ হয়ে গেছে!

জংলি গণ্ডার অনেক দেখেছে লাটু। কুচবিহারের রাজার শিকারের হাতি চালাত সে একসময়। স্বাধীন, বেপরোয়া, সাহসী গণ্ডার সে অনেকই দেখেছে। এ-গণ্ডারটা বিটি-ছাওয়া। ম্যাদামারা।

সওয়ারি-পুরুষ কাঁপা গলায় বলল, চার্জ করবে না তো?

লাটু বলল, মনে মনে, এটা দাঁড়াশ সাপেদের ভিটে, সব নির্বিষ জলঢোঁড়া, এখানে পুরুষকার নেই, সব ব্যাটার মাথা নীচু, এমনকী গণ্ডারেরও।

হাতিগুলো ঘিরে দাঁড়াল গণ্ডারটাকে।

লাটুর হাসি পেল। জংলি হাতিও অনেক দেখেছে লাটু। লালজির হাতি ধরার ক্যাম্পেও সে কাজ করেছে একসময়। এই হাতিগুলোও দাঁড়াশ সাপ। ডাঙশের ভয়ে, লাটুদের ভয়ে অস্থির। বন্দিদশায় যে বাচ্চাগুলো পয়দা করছে তারা, সেগুলোও মেরুদন্ডহীন, আত্ম-সম্মানজ্ঞানহীন, স্বাধীনতার বোধ বিবর্জিত।

গণ্ডারটা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। ছবি তুলল কেউ কেউ। তার সওয়ারি মেয়েটি বলল, কী মজা!

লাটুর ভালো লাগল মেয়েটাকে খুব। লাটুও দাঁড়াশ সাপ। ওর সব সাহস গ্রীষ্মের ঘাসের মতো বুকের মধ্যে পুড়ে গেছে বহুদিন আগে।

এক সময় অত বড়ো স্বাধীন সবল সুস্থ, স্বমতনির্ভর গণ্ডারটা, গণ্ডার জাতের কুলাঙ্গারটা, হাতির জাতের কুলাঙ্গারদের সামনে, মানুষের জাতের কুলাঙ্গারদের সামনে মাথা নীচু করে ঢাডডার গভীরে ঢুকে গেল।

গেঁড়া দেখে সকলেরই জীবন সার্থক হল। তার পরই ফিরে আসার পালা।

এখন শিমুলের মাথায় রোদ। বাজের গায়ে রোদ। মাথার ওপরে স্বরাট আকাশ। স্বাধীন হাওয়া। বাধাবন্ধহীন আলো। দূরে ফুংসোলিনের পাহাড়শ্রেণি—আদিগন্ত— মুক্তি মুক্তি।

লাটু ভাবল, কী সুন্দর দেশ আমাদের! একমাত্র অনীকিনী তার হাতির পিঠে। মেয়েটাকে বড়ো ভালোবেসে ফেলেছে লাটু।

লাটু একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল।

সওয়ারিদের বাংলোয় নামিয়ে দিয়ে হলং নদীর সাঁকো পেরিয়ে ফিরে আসার সময় দাঁড়াশ সাপটাকে দেখার অনেক চেষ্টা করল লাটু। এ সময়ে রোজই সাপটা রোদ পোয়ায় নদীর পারে। একটা কাটা-গাছের গুঁড়িতে। আজ সাপটাকে দেখতে পেল না।

লাটুর মনে হল, সাপটা লজ্জায় কোথাও চলে গেছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *