লঙ্কার আচার – বাণী রায়
অবিনাশবাবুর দিদি সম্প্রতি কলকাতায় ভাইয়ের বাড়ি এসেছেন। তিনি চিরকুমারী, গিরিডির একটি আশ্রমে ধর্ম ও নীতি নিয়ে ছিলেন। বয়স বেশি হওয়াতে নির্বান্ধব স্থানে একা থাকা চলল না।
তবে তিনি স্বেচ্ছায় আসনেনি। অবিনাশবাবু হাতে-পায়ে ধরে নিয়ে এসেছেন। চিরকালই অবিনাশবাবু দিদির ভক্ত, শেষবয়সে দিদি একা একা প্রবাসে থাকবেন এটা ভাইয়ের সহ্য হচ্ছিল না। হঠাৎ যদি কিছু অঘটন ঘটে যায়।
এ বাড়িতে নির্দিষ্ট হল দিদির বসবাসের জন্য একখানা বড়ো ঘর, লাগাও গাড়িবারান্দা, বেতের চেয়ারে সজ্জিত। লাগাও একখানা ছোটো ঘরে জিনিসপত্র, ওঁর সেবায় নিযুক্ত দাসী।
পিসির বাইরে থাকার জন্য, সংসার না-করার জন্য দেহ হয়েছিল মজবুত, স্বাস্থ্য ভালো। কিন্তু বাংলার নরম জলহাওয়া হয়তো সহ্য হচ্ছিল না। ওঁর অজীর্ণ রোগ ধরল।
পেটে ব্যথা ওঠে, গা ম্যাজম্যাজ করে, মাধা ধরে, ক্ষিধে হয় না। অবশ্য প্রথম দিনের অম্বল ব্যারামের কারণ আমার জানা। আমি চুপিচুপি বলে দিই এখানে।
অবিনাশবাবুর ছোটো মেয়ে মঞ্জুর রান্নার, খাবার তৈরির শখ চেপেছে।
মঞ্জুর মা বলেন, ‘ভালো, ভালো। আহা, যদি শ্বশুরবাড়ি যায় মেয়ের কত আদর হবে।’ এটা-ওটা তিনি দারুণ উৎসাহে জোগান দেন।
মঞ্জু লাল পাকা লঙ্কার আচার করেছে শিশি ভরে। পিসি খেতে বসেছেন পাথরের টেবলে। সেদিন দেরি হয়ে গেছে তাঁর।
মঞ্জু এসে বলল, ‘পিসি, একটু লঙ্কার আচার খাবেন? আমি তৈরি করেছি।’
পিসির নাম ‘সুবালা’ ছিল। কিন্তু এ বাড়ির সকলে তাঁকে ‘পিসি’ বলে ডাকে। সম্পর্কে বাধলেও তারা ডাকে তাই। ‘ওরে বাবা, লঙ্কা, আমার সহ্য হয় না’—পিসি শিউরে ওঠেন। কিন্তু মঞ্জুর হাতে বোতলের তেলে-ভাসা লাল লাল লঙ্কাগুলো দেখে পিসির কেমন লোভ হল। তিনি ঢোক গিলে বললেন, ‘তা, তুমি নিজের হাতে করেছ যখন, দাও একটু, চেখে দেখি। লঙ্কা না-দিয়ে আচারের কাই দাও একটু। দেখি।’
মঞ্জু সাগ্রহে একগাদা মশলার ঘ্যাঁট দিল। তারপর খেয়ে পিসির কি তারিফ! ‘বাঃ, চমৎকার হয়েছে তো। আমার মুখের স্বাদ ফিরে গেল। এমন আচার পেলে কয়েকটি ভাত বেশি খেতে পারি। তবে একটু তেতো লাগছে যে?’
‘ও কিছু নয়, পাঁচফোড়ন সামান্য পুড়ে গিয়েছিল।’
চক্ষের নিমেষে উৎসাহী মঞ্জু আর একটা শিশি এনে পিসিকে দিল, ‘চার বোতল করেছি। এটা আপনার ঘরে রাখুন। খাবেন ইচ্ছামতন।’
‘কিন্তু আমার অম্বলের ব্যামো। আচার খাওয়াটা কি উচিত হবে?’
‘রোজ না-খান, যেদিন অরুচিমতো হবে সেদিন খাবেন।’
সেই তেতো ও ঝাল-টক আনাড়ি হাতের আচার খেয়ে যা হবার তা হল। পিসির বুকে রাত্রে দারুণ ব্যথা উঠল—অম্বলের ব্যথা। এমনকি ডাক্তার ডাকতে হয়। ভয়ে অবিনাশবাবুকে আচারের বৃত্তান্ত কেউ বলতে সাহস পেল না। পিসিও চেপে গেলেন।
সুতরাং পিসির পাশের ঘরটিতে লোভনীয়ভাবে ভাসমান লঙ্কাসহ আচারের শিশিটা থাকল। ভয়ে পিসি সহজে খাবে না।
পিসির খাস দাসী বিন্দু হাতে-পায়ে ধরে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে দেশে গেছে। তার যা জমিজিরেত দেশে আছে সেগুলো দেওর দেখাশোনা করত। দেওর হঠাৎ তিন দিনের জ্বরে মারা গেল। বিন্দু না-গিয়ে পড়লে এখন সমস্ত বেহাত হয়ে যাবে।
দিদির অসুবিধা হবে ভেবে অবিনাশবাবু ইতস্তত করছিলেন। কিন্তু ধর্মপরায়ণা পিসি বললেন, ‘আহা, বিপদে রক্ষা না-করলে চলে না। যাক না বেচারি। ছোকরা চাকরটা চালিয়ে দেবে।’
পিসির অম্বলের ব্যথা ধরে। সুতরাং পেট খালি রাখা চলবে না। সেজন্য তাঁর মিটসেফে রাজ্যের খাবার মজুত রাখা হত। ঘরে তৈরি খাবার, কিনে-আনা খাবার, ছানা, ক্ষীর, ফল ইত্যাদি।
সেগুলোর লোভে ছোকরা চাকর মহেশ চুরি করতে যেয়ে বাড়ির পোষা কালো বিড়ালের হাতে ধরা পড়েছিল। পিসি আগে কালো বিড়ালকে দু-চক্ষে দেখতে পারতেন না। ‘কালকূটি’, ‘দূর দূর, ছাই, ছাই’ করতেন। বিশেষ করে গোপনে তাঁর গাড়িতে তাঁর সঙ্গে বেড়াতে যেত বলে ক্ষেপে ছিলেন। কিন্তু গোয়েন্দাগিরি করে এই কালো বিড়াল হাতেনাতে মহেশকে ধরিয়ে দেবার পরে পিসি খুশি ছিলেন। কালো বিড়ালও বাড়ির মধ্যে একটা পজিশন পেয়ে গিয়েছিল। ক্রমাগত ভালোমন্দ খেয়ে খেয়ে পিসির দারুণ অক্ষুধা দেখা দিল। কিন্তু ভয়ে ভয়ে লঙ্কার আচারটি স্পর্শ করলেন না। নির্বিবাদে লঙ্কার আচারটি তেলে ভাসতে লাগল। দেখলেই লোভ হয়।
পিসিকে অবিনাশবাবু বিকেলে বেড়াতে যাবার ব্যবস্থা করেছিলেন। সেটাই বহাল হইল। পিসি কিন্তু খালি আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যেতেন। লেকের ধারে হাওয়া খেলে রোগ সারবে বলে অবিনাশবাবু গাড়ি ছেড়ে দিতেন। পিসি বোঝালেন যে লোকের বাড়ি গেলে গল্পগুজবে মনে আনন্দ হয়। তাতেই অম্বল সেরে যাবে।
কালো বিড়ালও মহেশকে একবার চোর বলে ধরিয়ে দেবার পর পিসির সুনজরে পড়েছিল। সে নিজে থেকে পিসির খাবার-দাবার তদারকি করত।
এর মধ্যে পিসি একদিন বোনঝি অনুভার বাড়ি বেড়াতে গেলেন। বোনঝি স্কুলে পড়ায়। মা সুললিতার সঙ্গে এক বাড়িতে থাকে। সুললিতা সুবালার চেয়ে বয়সে ছোটো, কিন্তু দেখায় বড়ো। তিনি তো আর গিরিডির আশ্রমে থাকতে পারেননি!
‘একটু চা খাও দিদি।’
সুললিতার অনুরোধে পিসি বলেন, ‘নারে, খালি পেটে চা খাব না। অম্বলটা বড়োই বেড়েছে আবার।’
‘খালি পেটে খাবার দরকার নেই। ওরে অনুভা, দিদির চায়ের সঙ্গে এক প্লেট ভালো খাবার দিস। তা, হঠাৎ অম্বল বেড়ে উঠল কেন? শুনেছিলাম যে কমে গেছে।’
পিসি হাত উলটে বলেন, ‘অবিনাশের বউ বলে যে লঙ্কার আচার খেয়ে হয়েছে। ভারি তো, একদিন একফোঁটা চেখে দেখেছি মাত্র। লাল লাল বড়ো বড়ো লঙ্কা, মঞ্জু হাতে করে বানিয়েছে আচার। তাই খেয়ে নাকি অম্বল বেড়েছে? হতে পারে?’
সুললিতা লঙ্কার আচারের নামে ঢোঁক গিলে বলেন, ‘না তা কী করে হয়? একদিন মাত্র খেলে।’
‘তবেই দেখ। আমি ভয়ে আর খাই না। মিটসেফের ওপর ধরা আছে।’
ইতিমধ্যে অনুভা চা ও খাবার নিয়ে এল।
বাড়ি থেকে ছানা, ফল, বিস্কিট খেয়ে এলেও এখন পিসি খেলেন দুটো পানতোয়া, দুটো মৌচাক, একটা অতিকায় রাজভোগ।
তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছেন আর বলছেন, ‘এত সব মিষ্টি কি খেতে ভালো লাগে? আহা, লঙ্কার আচারটি পেলে মুখটা বদলাত। ওইটুকু মেয়ে একটা আচার করেছে বটে! দেখলেই তোর খেতে ইচ্ছা হবে।’
সুললিতা আবার ঢোঁক গিলে বলেন, ‘কি করব? অনুভা তো সময় পায় না যে আচার বানাবে। বাজারের আচার ভালো হয় না।’
‘তা কি করবি? ভাগ্য যার যা।’ খাওয়ার শেষে পিসি সদাশয় হয়ে উঠলেন, ‘আচ্ছা, আমি না-হয় তোকে আমার শিশি থেকে ঢেলে খানিকটা পাঠিয়ে দেব। ভালোমন্দ জিনিস নিজের লোককে না-দিয়ে খেতে নেই।’
অনুভা হাসতে হাসতে বলে, ‘যদি না-খাও মাসি, তবে ঘরে রেখেছ কেন? সবসুদ্ধ আমাদের দিয়ে দাও। খেয়ে বাঁচি।’
‘নারে, না, ওই জিনিস হাতছাড়া করা চলে না। চোখের সামনে থাকলেও আনন্দ। তা, খানিকটা দেব বইকি। মঞ্জু একবার করেছে, আবার হয়তো বানাবে।’
‘মাসি, তোমার খাবার-দাবার চুরি যেত। যদি লঙ্কার আচারটাও চুরি যায়?’
‘নারে অনুভা, কালো বিড়াল আমার গোয়েন্দা। সে পাহারা দেয়। কই, আজ কালো বিড়ালকে দেখছি না তো! আমার খাবার সময়ে তোদের ওই পাঁচিলে বসে থাবা গেড়ে অপেক্ষা করত। আমি উঠলে তবেই সে উঠে গাড়িতে যেত। গেল কোথায়? আসেনি নাকি? কেন?’
‘বেড়ালের আবার কেন কী? জন্তুজানোয়ারের মরজি।’ সুললিতা বলেন।
‘নারে, ও জন্তুজানোয়ার নয়। মানুষের চেয়ে বুদ্ধিমান।’
অনুভা এবার হা-হা করে হেসে ওঠে, ‘ও মাসি, একদিন না তুমি ওকে দেখতে পারতে না? এখানে বসেই গালমন্দ দিতে না? বলো?
‘ওরে, একদিনে কি কাউকে চেনা যায়? গিরিডির আশ্রমে বলত, ভগবানকে চিনতে সময় লাগে, সাধনা চাই।’
এবার সকলে হা-হা হাসিতে ফেটে পড়ে। হায় হায়, শেষে কালো বিড়াল পিসির চোখে ভগবানের মাহাত্ম্য পেল! কালে কালে কি বা হবে, পুলিপিঠের ল্যাজ গজাবে!
পিসি অপ্রতিভ হয়ে উঠলেন, ‘যাই, বাড়ি যাই। বউ আবার খাবার নিয়ে বসে থাকবে। খাবার সময় হয়েছে।’
অনুভা পিসিকে এগিয়ে দিতে এল ভাবতে ভাবতে যে এর পরে পিসি দুপুরের খাওয়া এখনি খাবেন কী করে? এরি মধ্যে ওঁর খাবার সময় হয়ে গেল? লঙ্কার আচারের দোষ দেন উনি। আসলে অতিভোজন।
কিন্তু সত্যিই কালো বিড়ালের চিহ্ন নেই। আশ্চর্য। পিসি উদবিগ্ন হয়ে বাড়ি ফিরলেন। কালো বিড়ালটা কি অদৃশ্য হয়ে গেল! একা গাড়িতে তো নিয়মিত সে আসত, পিসিকে ছাড়ত না।
বাড়ি ফিরলেন। হুলস্থুল কাণ্ড। ছোকরা চাকর মহেশ সিঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপছে। সারা বাড়ির লোক জমা হয়েছে সেখানে। হাতে জামায় লঙ্কা, আচারের তেল মাখামাখি।
জানা গেল, পিসিকে গাড়িতে উঠতে দেখেই সে ছুটে দোতলার সিঁড়ির দিকে গেছিল। ওই দেখে নিঃশব্দে কালো বিড়াল গাড়ি থেকে নেমে ওর পেছু পেছু ছুটেছিল। কিছুদিন থেকেই কালো বিড়াল ওর হাবভাব লক্ষ করে তক্কে তক্কে ছিল। আচার চোরকে ধরে ফেলেছে।
অবিনাশবাবু ওকে ধমক দিচ্ছেন, ‘বল, আচার চুরি করে কেন খেলি দিদির ঘর থেকে?’
‘সত্যি বলছি আমি খাইনি। দিব্যি গেলে বলছি।’
অরু বলল, ‘হাতে-মুখে আচারের রস লঙ্কা লেগে আছে, তুই খাসনি তো কে? ভালো চাস তো স্বীকার কর মানে মানে। নইলে তোকে দেখিয়ে দেব।’
‘বাবু, আমি খাইনি, সবে হাতে তুলেছিলাম। ওই বিড়ালটা থাবা দিয়ে ফেলে তাড়া করল আমাকে। চিৎকার করে ধরিয়ে দিল। সত্যি বলছি।’
‘চল তো দেখি কোথায় ফেলেছিস আচার।’ সকলেই ওকে নিয়ে পিসির জিনিসপত্র রাখার ছোটো ঘরটিতে এসে গেল।
‘কই? আচারের চিহ্ন নেই। শুধু কিছু তেল পড়ে আছে।’
‘তবে রে মিথ্যাবাদী, চল তোকে দেশে পাঠিয়ে দিই। এমন চোর আর রাখা চলে না।’ অবিনাশবাবু বলেন।
হঠাৎ কালো বিড়াল ছুটে যেয়ে পিসির পায়ে মাথা ঘষতে লাগল। ম্যাও ম্যাও করে কত কি বলার চেষ্টা পেল।
‘কীরে, তুই কি বলছিস?’ সস্নেহে পিসি বলেন, ‘ক্ষমা করতে বলছিস বুঝি? তা বলতে পারিস। ক্ষমা সব থেকে বড়ো ধর্ম। কিন্তু আচারটা গেল কোথায়?’
কালো বিড়াল আবার পিসির পায়ে মুখ ঘষে হাঁ করে মুখ দেখাল।
পিসি এতক্ষণে বিড়ালের ভাষা বুঝলেন, ‘ও, তুই খেয়েছিস?’
‘সে কি কথা? বিড়াল কখনও লঙ্কার আচার খায় নাকি?’ সকলে সমস্বরে বলে উঠল।
‘তোমরা চুপ করো। আমি ওর মন বুঝতে পারছি। তোমরা বলতে ও কিছু খায় না। আসলে ওর অরুচি হয়ে গেছিল। বিড়ালের খাদ্য ও আর খেতে পারছিল না। রোজ রোজ আমার ঘরে লঙ্কাগুলো দেখে, আমাকে খেতে দেখে, হ্যাঁ, আমি এক-আধটু মাঝে মধ্যে খেতাম বইকি! ওরও লোভ হয়েছিল স্বাভাবিক সেটা। চোর ও ধরেছে ঠিকই, কিন্তু লোভ সামলাতে না-পেরে লঙ্কার টুকরো খেয়ে ফেলেছে। ওর এখন মানুষের খাদ্য প্রয়োজন।’
‘সে কি কথা?’ অবিনাশবাবু হতবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন ।
‘না অবিনেশ, অবাক হবার কিছু নেই। পরশুরামের গল্প ‘লম্বকর্ণে’ যদি ছাগল লম্বকর্ণ সমস্ত কিছু খেতে পারে, সাকির গল্প ‘টবারমোরিতে’ যদি বিড়াল মানুষী ভাষায় জ্ঞান পায়, তবে এ বিড়ালই পারবে না কেন? আমার অরুচির ওষুধ লঙ্কার আচার শুনে বেচারি নিজেরও অরুচি সারাতে এ কাজ করেছে।’
‘এমন কথা কখনও শুনিনি’, চন্দন বলে উঠল।
‘না-শুনলেই সেটা যে ঘটবে না সে কোনো কথা নয়। তুমি ভূমিকম্পের আওয়াজ শুনতে পাও না, এধারে নেপাল ছারখার হয়ে গেল। তার বেলা?’
পিসির যুক্তির উপরে কথা চলে না। নিস্তব্ধ জনতার মধ্যে পিসি সগর্বে বলে চললেন, ‘পৃথিবীতে অবিশ্বাসের কিছু নেই। তবে আমার লোভের জন্যে মহেশ চোর হয়ে উঠল, বিড়ালটা বদভ্যাসে পড়ল, এমন লোভের বস্তু আর আমি ছোঁব না। মহেশ, এবারও সাবধান হোয়ো।’
মহেশ সাগ্রহে চাইল, পিসি যখন চাইছেন না, তখন নিশ্চয় আচারের শিশিটা সে-ই পাবে। অমন রসালো আচার। লক্ষ্মীছাড়া বিড়ালটা মুখে তুলতে দিল না।
পিসি সকলকে অবাক করে ঘোষণা করলেন, ‘ও লঙ্কার আচার এই কালো বিড়াল খাবে। একটু একটু করে দিতে হবে, নইলে বেশি ঝাল খেয়ে রোগ বাধাবে। আর ওকে এখন থেকে মানুষের খাবার আমি খাওয়াব। আজ থেকেই শুরু করি। মঞ্জু, দেখ তো খাবার টেবিল সাজানো হয়েছে কিনা।’
কালো বিড়ালটা কৃতজ্ঞতায় পটাপট শব্দে ল্যাজ নেড়ে দিল একথা শুনে।
আর কী? আমার লঙ্কার আচারের গল্প শেষ হয়ে গেল।