হঠাৎ বিকেলবেলা তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল ওরা,
যারা হুমকি দিচ্ছিল বাড়ি ছাড়ো, শহর ছাড়ো, রাজ্য ছেড়ে চলে যাও
কোথাও,
সবচেয়ে ভালো হয় যদি দেশ ছেড়ে চলে যাও খুব দূরের কোনও দেশে।
হতভম্বের মতো বসে ছিলো, মাটি কামড়ে পড়ে ছিলো মাসের পর মাস,
কোথাও যায়নি।
বাড়ি না ছাড়লে বাড়িতেই পচে মরো, এরকম শাসিয়ে যেত রাজার
লোকেরা,
চৌকাঠ ডিঙোতে দেয়নি তাকে, মাসের পর মাস।
শহর জুড়ে কত কিছু নিয়ে প্রতিবাদ, উৎসব শহর জুড়ে
ঝাঁক বেঁধে মানুষ হাঁটছে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা,
শহরে তখন একজনের পায়ে শেকল,
কথার চেঁচামেচি চারদিকে,অথচ ওদিকে
একজনের মুখে আতঙ্কের জঞ্জাল ঠেসে মুখ বন্ধ করে দেওয়া।
রাজা তখন নন্দনকাননে মৃদুমন্দ হাওয়ায় দোলেন।
নিষেধাজ্ঞা জারি আছে মাথা থেকে পায়ের নখে,
মাথা অচল করে দাও, অচল না পারো ভোঁতা করে দাও।
চোখ বন্ধ করে রাখো, যেন কিছু দেখতে না হয়,
নাক টাকও বন্ধ রাখো, যেন কিছু শুঁকতে না পারো,
মুখ বন্ধ করে রাখো, যেন মুখ ফসকে কিছু বেরিয়ে না আসে,
বুকের মধ্যে কিছু রেখো না, হৃদয় শূন্য করে দাও।
কোমর, পেট, তলপেট, উরু অবশ করে রাখো,
চলৎশক্তিহীন করে রাখো পা। মাসের পর মাস।
ওভাবেই পড়ে ছিল সে, মাটিকে ভালোবেসে মাটির মতো, মৃতবৎ।
অবশেষে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে রাজ্যছাড়া করা তাকে হলই,
বেঁচে থাকার বেদম ইচ্ছেকে তুলে নিয়ে আবর্জনায় ফেললা হলই,
স্বপ্নটপ্ন ইত্যাদি ফালতু যা ছিল দাউদাউ করে পোড়ানো হল। হলই।
লোকচক্ষুর সামনেই হল।
একটি বাক্যই সে এখন গুহার ভেতরে, অন্ধকারে, দূরে, নিশ্ছিদ্র
নিরাপত্তার মধ্যে বলে,
পুরো ভারতবর্ষকে শুনিয়েই বলে, লং লিভ ডিমোক্রেসি।