রেড ফিঙ্গার – ৩০

অধ্যায় ৩০

মায়েহারা নাওমিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলো কোবায়াশি স্বয়ং। মাতসুমিয়াও তার সাথে ঢুকে পড়লো জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে। কাদো কাদো গলায় প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছে নাওমি। সেই সাথে বিরক্তও হচ্ছে ভীষণ।

“ইউনা কাসুগাইয়ের সাথে কখন দেখা হয় তোমার?

“সেদিনই। স্কুল থেকে আসার পর।”

“তুমি যোগাযোগ করেছিলে ওর সাথে?”

“না, ও নিজেই আসতে চেয়েছিল। আমার স্কুলব্যাগে লাগানো সুপার প্রিন্সেসের চাবির রিংটা দেখে জিজ্ঞেস করে কোত্থেকে কিনেছি।”

“বলেছিলে?”

“হ্যাঁ, আকিহাবারা থেকে কিনেছিলাম।”

“এরপর?”

“তখন ও জানতে চায় আমার কাছে সুপার প্রিন্সেসের কোন অ্যাকশন ফিগার আছে কিনা। একটা ওয়েবসাইটে ওগুলো দেখেছিল ইউনা। ও যে এরকম প্রশ্ন করবে, তা আশা করিনি।”

“সেই সময় কোথায় ছিলে তোমরা?”

“আমাদের বাসার কাছেই, রাস্তায়।”

“তখন তুমি বলো তোমার কাছে অনেক অ্যাকশন ফিগার আছে। ওগুলো দেখাতে চেয়েছিলে, নাকি?”

“হ্যাঁ। তখন ইউনা বলে ওর কাছেও আছে অনেকগুলো, তবে আমারগুলো দেখতে চায়।”

“দেখাবে বলে কথা দিয়েছিলে?“

“ছবি পাঠাতে বলে ও। আমি মানা করিনি। ওর স্কুল ব্যাজের উল্টোদিকে ইমেইল অ্যাড্রেস লেখাই ছিল। ছবি দেখে যদি ওর মনে হয় কোনটা ওর কাছে নেই, তখন আমার বাসায় আসবে বলে। ঠিকানা জানিয়ে দেই আমি।”

“বাসায় এসেই ছবি পাঠিয়ে দিয়েছিলে, তাই তো?’

“হ্যাঁ, বাসায় এসে যত দ্রুত সম্ভব ছবি তুলে ওই ইমেইল অ্যাড্রেসে পাঠিয়ে দেই।”

“কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পড়ে ও?”

“হ্যাঁ, সাড়ে পাঁচটার দিকে।”

“বাসায় তখন একাই ছিলে তুমি?”

“আমার দাদী ছিল তার ঘরে। কিন্তু সে বাইরে খুব একটা বের হয় না।”

“তোমার অ্যাকশন ফিগারগুলো দেখিয়েছিলে ইউনাকে?”

“জ্বি।”

“কোথায়?“

“লিভিং রুমে।”

এখন অবধি কোন প্রশ্নের জবাব দিতে দ্বিধাবোধ করেনি নাওমি। কন্ঠস্বরও কাঁপছে না। কিন্তু পরবর্তী প্রশ্নটা শোনার পর পুরোপুরি বদলে গেল তার আচরণ।

“মেয়েটার গলা চেপে ধরেছিলে কেন?”

চেহারা রক্তিম হয়ে উঠলো নাওমির।

“জানি না,” ফিসফিসিয়ে বললো ছেলেটা।

“জানবে না কেন? অবশ্যই জানো। কোন একটা কারণ তো ছিলই, তাই না?”

“কারণ ও চলে যেতে চেয়েছিল?’

“চলে যেতে চেয়েছিল?”

“আমি আমার অ্যাকশন ফিগারগুলো দেখানোর পরেও থাকোতে চাইছিল না।”

“এজন্যে গলা চেপে ধরলে?”

“জানি না আমি…”

এরপর শামুকের মত নিজেকে গুটিয়ে নিল নাওমি। কোবায়াশি শত চেষ্টা করেও তার পেট থেকে কোন কথা বের করতে পারল না। গলা চড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলে মাটিতে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে পড়লো ছেলেটা। পুরো শরীর কাঁপছে থরথর করে।

নাওমিকে কিছুটা ধাতস্থ হতে দিয়ে ইন্টারোগেশন রুম থেকে বের হতে যাবে ওরা, এসময় ছেলেটা বলে ওঠে, “সব আমার বাবা-মা’র দোষ।”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *