|| ১ ||
রাজ্য করে রাজচন্দ্র রামপুর শহরে |
বারবাংলার ঘর বান্ ছে ফুলেশ্বরীর পারে ||
গড় খন্দর রাজার লাখের জমিদারী |
হস্তি ঘোড়া আছে রাজার পাইক পটুয়ারী ||
ঢুলী নাগারচী রাজার রাজ্যে বাস করে |
রসুনচকি বাজায় তারা হাফার খানা ঘরে ||
সেইত গীত না শুনিয়া রাজা জাগে বিয়ান বেলা |
দরবারে বসিল রাজা সহিত আমলা ||
সভাজনেরে রাজা ডাক দিয়া কয় |
“নবাবের দরবারে যাইতে উচিত যে বোধ হয় ||”
গণকে ডাকিয়া রাজা দিন স্থির করে |
অষ্ট দিন বাকি আছে যাইতে নবাবের সরে ||
কানা চইতা উভুতিয়া তারা দুইটি ভাই |
পানসী সাজাইতে তারা পাইল ফরমাই ||
ষোল দাঁড় জুইত করে আরও তুলে পাল |
পানসীতে ভরিয়া রাজা তুলে মালামাল ||
আবের কাঁকই লইল রাজা আবের চিরুনী |
আবেতে রাঙ্গিয়া লইল খাড়ি আর বিউনী ||
হাত্তির দাঁতের পাটি লইল গজমতি মালা |
ভেট দিতে নবাবের করিল যে মেলা ||
খাজনা উগাইয়া তঙ্কা লইল দশ হাজার |
গাউইয়া বাজুইয়া লইল সঙ্গে এক ঝাড় ||
উজান পানি বাইয়া রাজা পানসী বাইয়া যায় |
নাগরীয়া যত লোক করিল বিদায় ||
দানদক্ষিণা আদি পূণ্যকার্য করি |
রাণীর কাছে সঁপিয়া গেল কুলের কুমারী ||
চারিদিকে নানা গ্রাম নেহালিয়া দেখে |
ফুলেশ্বরী উথারিয়া পড়ে নরসুন্দার মুখে ||
সেই নদী ছড়াইয়া যায় ঘোড়া-উত্রা বাইয়া |
মেঘনা সায়রে পানসী চলিল ভাসিয়া ||
ঢেউয়ের করে বাইড়াবাইড়ি কাছাড় ভাইঙ্গা পড়ে |
এই মতে যার রাজা নবাবের সরে ||
তিন মাসথাক্যা রাজা জলের উপর |
চাইর মাসে গেল রাজা নবাবের সর ||
সঙ্গের যতেক দ্রব্য যত লোকজনে |
একে একে ভেট দিল নবাবের স্থানে ||
পূবইয়া আবের কাকই আবের চিরুনী |
চক্ষে না দেখেছি শুধু লোকমুখে শুনি ||
শীতল পাটি পাইয়া তবে শিতল হইল মন |
পাইল ভেটের দ্রব্য যত আয়োজন ||
দশ হাজার তঙ্কা পাইয়া খুসী হইল মিঞা |
রাজচন্দ্রে দিলা ঘর বাছাই করিয়া ||
নবাবের সরে রাজা আছে খুসী মন |
ঘরেতে থাকিয়া রাণী দেখিল স্বপন ||