রামদাস
যুগসন্ধিতে ভারত যখন সহসা তিমিরময়—
বীর সন্ন্যাসী গাহিয়া উঠিলে নব আলোকের জয়!
অনাগত এক আশার স্বপ্নে নিমিষে উঠিলে জাগি,
মাতিয়া উঠিলে দশের লাগিয়া, দেশ-দেবতার লাগি।
ওহে সাগ্নিক, প্রাণের অনলে জ্বালালে বিশাল শিখা,
যত মোহ মায়া ভ্রান্তি বেদনা নিরাশার কুহেলিকা
স্পর্শে তোমার, হে মহাজাতক, নিমেষে হইল ছাই!
সমাজের বুকে পাতিলে আসন, সংসারে নিলে ঠাই;
স্তিমিত ভীতের আড়ষ্ট গৃহ করা-আয়তন ভেঙে
জাতির মুক্তি, দেশের সেবায় আত্ম-আহুতি মেগে
ঊর্ধ্বগ-হোম জ্বালালে একাকী নিখিল মারাঠাময়!
জরার হৃদয়ে করেছিলে তুমি যৌবন সঞ্চয়
মন্ত্রে তোমার–সংসারে তুমি আসনি উদাসী বেশে;
পাপপ্রপঞ্চ পঙ্কিল পথে নিয়তি বিধির ক্লেশে
সাজো নিকো তুমি সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী উদাসীন;
নিরাশ্যাতিমিরে বসিয়া একাকী অরুণোদয়ের দিন
চেয়েছিলে তুমি, জেগেছিলে তুমি মোহকারাগার ভেঙে
কর্মের জয়ে, ত্যাগের পর্বে, সেবার মহিমা মেগে!
ছত্রপতির হে বিজয়ী গুরু, মারাঠার গৌরব!
চন্দনসম বুকের রক্তে বিতরিলে সৌরভ!
দেশের লাগিয়া ধূপের মতন অনলশিখায় দহি
বেদনা মথিয়া দিকে দিকে গেলে শান্তির বাণী বহি!
তুমি সঁপে গেলে, হে বীর কর্মী, হে প্রেমিক মহীয়ান!