৩.২ রাবণচ্ছত্র

রাবণচ্ছত্র

আমরা এ-পর্য্যন্ত যে-সকল প্রাণীর জীবনের কথা বলিলাম, তাহারা লোনা জলে থাকে না। পুকুর, খাল, বিল এবং নালাতেই ইহাদের বাস। কিন্তু সমুদ্রের লোনা জলেও এই শাখার প্রাণীর অভাব নাই। নানা আকার ধরিয়া এই প্রাণীদেরই নানা জাতি সমুদ্রের সকল অংশে চলাফেরা করে। ইহাদের কাহাকেও জেলি মাছ, কাহাকেও মেডুসা ইত্যাদি নানা নাম দেওয়া হয়। পুরীর সমুদ্রের ধারের লোকেরা এই রকম এক প্রাণীকে রাবণচ্ছত্র নাম দিয়াছে। শুঁয়োগুলিকে জলের নীচে রাখিয়া ইহারা মাথায় দিবার ছাতির মত সমুদ্রের জলে ভাসিয়া বেড়ায়। তার পরে, কাছে ছোট মাছ বা জলের পোকা পাইলেই শুয়োঁ জড়াইয়া সেগুলিকে মুখে পুরিয়া দেয়। এক-একটি প্রাণী লইয়া এই ছত্র হয় না; একই জাতির অনেক প্রাণী মিলিয়া এক একটা ছত্র নির্ম্মাণ করে। এখানে রাবণচ্ছত্রের একটা ছবি দিলাম। দেখিতে ঠিক ছাতার মত নয় কি? তোমরা যদি কখনো কলিকাতার মিউজিয়ম্ অর্থাৎ যাদুঘর দেখিতে যাও, তবে সমুদ্রের এই সকল প্রাণীদের চেহারা দেখিতে পাইবে। নানা জায়গা হইতে এই শাখার অনেক প্রাণী জোগাড় করিয়া সেখানে বোতলের মধ্যে পুরিয়া রাখা হইয়াছে। সমুদ্র হইতে আমরা অনেক দূরে বাস করি, কাজেই জীবন্ত অবস্থায় এই প্রাণীদিগকে দেখা আমাদের ভাগ্যে হঠাৎ ঘটিয়া উঠিবে না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *