কালি মধুযামিনীতে জ্যোৎস্নানিশীথে কুঞ্জকাননে সুখে ফেনিলোচ্ছল যৌবনসুরা ধরেছি তোমার মুখে । তুমি চেয়ে মোর আঁখি- ' পরে ধীরে পাত্র লয়েছ করে , হেসে করিয়াছ পান চুম্বনভরা সরস বিম্বাধরে , কালি মধুযামিনীতে জ্যোৎস্নানিশীথে মধুর আবেশভরে । তব অবগুণ্ঠনখানি আমি খুলে ফেলেছিনু টানি , আমি কেড়ে রেখেছিনু বক্ষে তোমার কমলকোমল পাণি — ভাবে নিমীলিত তব যুগল নয়ন , মুখে নাহি ছিল বাণী । আমি শিথিল করিয়া পাশ খুলে দিয়েছিনু কেশরাশ , তব আনমিত মুখখানি সুখে থুয়েছিনু বুকে আনি — তুমি সকল সোহাগ সয়েছিলে , সখী , হাসিমুকুলিত মুখে কালি মধুযামিনীতে জ্যোৎস্নানিশীথে নবীনমিলনসুখে । আজি নির্মলবায় শান্ত উষায় নির্জন নদীতীরে স্নান-অবসানে শুভ্রবসনা চলিয়াছ ধীরে ধীরে । তুমি বাম করে লয়ে সাজি কত তুলিছ পুষ্পরাজি , দূরে দেবালয়তলে উষার রাগিণী বাঁশিতে উঠিছে বাজি এই নির্মলবায় শান্ত উষায় জাহ্নবীতীরে আজি । দেবী , তব সিঁথিমূলে লেখা নব অরুণসিঁদুররেখা , তব বাম বাহু বেড়ি শঙ্খবলয় তরুণ ইন্দুলেখা । এ কী মঙ্গলময়ী মুরতি বিকাশি প্রভাতে দিয়েছ দেখা । রাতে প্রেয়সীর রূপ ধরি তুমি এসেছ প্রাণেশ্বরী , প্রাতে কখন দেবীর বেশে তুমি সমুখে উদিলে হেসে — আমি সম্ভ্রমভরে রয়েছি দাঁড়ায়ে দূরে অবনতশিরে আজি নির্মলবায় শান্ত উষায় নির্জন নদীতীরে ।