রাত্তির বেলা, একা একা

রাত্তির বেলা, একা একা

বাড়িটা ভাঙাচোরা হলেও দোতলার একখানা ঘর মোটামুটি বাসযোগ্য আছে। একটা জানলায় কিছুই নেই, অন্য জানলাটায় লোহার শিক দেওয়া। দেওয়ালে চুনবালি খসে গেছে অনেক জায়গায়।

মেঝেটা বেশ নোংরা আর কোণে কোণে মাকড়সা জাল বুনেছিল, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি, বিশ্বমামা তবু লম্বা নাকটা কুঁচকে বললেন, আরশোলার নাদির গন্ধ বেরুচ্ছে। এই গন্ধে আমার ঘুম আসবে না।

বিশ্বমামা তাঁর বিখ্যাত নাকে এমন সব গন্ধ পান, যা আমরা পাই না। এ ঘরে ঢুকেই বিশ্বমামা মাকড়সার গন্ধ পেয়েছিলেন, যদিও মাকড়সার গায়ে কোনো গন্ধ থাকে কি না, তা জানি না আমরা কেউ। যাই হোক, জলে ফিনাইল মিশিয়ে ঘরটা ধুয়ে—মুছে দেওয়া হলো।

চরণদাদার বাড়ি থেকে একটা খাটিয়া এনে পেতে দেওয়া হলো এই ঘরে। তার ওপর ধপধপে ফর্সা চাদর। একটা কুঁজোভর্তি জল। ব্যবস্থার কোনো ত্রুটি নেই।

এ বাড়িটার নাম মল্লিকবাড়ি। এককালে মল্লিকরা ছিল এই গ্রামের জমিদার। তিরিশ—চল্লিশ বছর আগে তারা এ গ্রাম ছেড়ে পাকাকি চলে গেছে শহরে। তারপর থেকে বাড়িটা একটু একটু করে ধ্বংস হচ্ছে। এখন দূর থেকে পোড়া বাড়ির মতো দেখায়। তবু আজকালকার দিনে কোনো বাড়ি খালে পড়ে থাকে না। কেউ না কেউ এসে দখল করে নিতই। কিন্তু সন্ধের পর এ বাড়ির ধারে—কাছে কেউ আসে না। ভূতের ভয়। এমনকি এই গ্রামে জটাধারী নামে একটা পাগল আছে, সে পর্যন্ত এখানে থাকতে পারেনি। সেই জটাধারী একবার এই দোতলার ঘরে শুতে এসে হঠাৎ বাবা—রে মা—রে বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে পালিয়েছিল।

বিংশ শতাব্দী শেষ হতে চললো, এখনো ভূতের ভয়? ভূত বলে কিছু আছে নাকি?

চরণদাদা এই গ্রামের স্কুলের হেড মাস্টার। লেখাপড়া জানা মানুষ। এক সময়ে ভালো ফুটবল খেলতেন, একবার নন্দাদেবী পাহাড়ে অভিযানে গিয়ে চূড়ায় উঠেছিলেন। সেই চরণদাদা বললেন, আরে, আমিও কি ভূতে বিশ্বাস করতুম নাকি? আমাকে রাত্তিরবেলা শ্মশানে যেতে বল, আমি একা একা চলে যাব। কিন্তু এই মল্লিকবাড়িটায় সত্যি সত্যি কী যেন আছে। আমি নিজের চোখে দেখেছি।

বিশ্বমামা জিজ্ঞেস করেছিলেন, তুমি কী দেখেছ নিজের চোখে?

চরণদাদা বললেন, বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ফেলে আমি একবার ওখানে রাত কাটাতে গিয়েছিলাম। পারিনি। রাত্তির দশটা— এগারোটা পর্যন্ত কিছুই হয়নি। যেই বারোটা বাজল, ও বাড়িতে কোনো ঘড়ি নেই, থাকতেই পারে না; তবু একটা দেয়াল ঘড়িতে ঢং ঢং করে বারোটা শব্দ পাওয়া গেল পাশের ঘরে। তারপরেই পায়ের শব্দ। হঠাৎ দেখি ঘরের মধ্যে একটা লোক, বেশ দামি ধুতি—পাঞ্জাবি পরা। কিন্তু তার পাঞ্জাবি রক্তে ভেসে যাচ্ছে, মেঝেতেও টপ টপ করে পড়ছে রক্ত। মুখখানা একেবারে থ্যাঁতলানো, একটা চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসছে। একেবারে বীভৎস দৃশ্য! আমি প্রথমে ভাবলুম, চোখের ভুল, ভালো করে চোখ কচলে দেখলুম। সত্যিই একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। এগিয়ে আসছে আমার দিকে। আমি আর থাকতে না পেরে এক দৌড়! পরের দিন গিয়ে দেখি, মেঝেতে রক্তটক্ত কিছু নেই, পাশের ঘরে ঘড়িও নেই। এটা কি করে ব্যাখ্যা করবো তা আমি এখনও জানি না। সেই দৃশ্যটা ভাবলে এখনও আমার বুক কাঁপে।

বিশ্বমামা জানতে চাইলেন, নিশ্চয়ই এর পিছনে কোনো গল্প আছে? পুরোনো জমিদারবাড়ি, ওইভাবে কেউ খুনটুন হয়েছিল।

চরণদাদা বললেন, সে গল্প আমরা ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি। ওই বাড়িতে জমিদারের ছোট ছেলেটি ছিল দারুণ অত্যাচারী। কত প্রজার বাড়ি সে জ্বালিয়ে দিয়েছে তার ঠিক নেই। একবার এক গোমস্তার ওপর রাগ করে তার গলা টিপে মেরে ফেলেছিল। তারপর সেই গোমস্তার ভাই একটা রাইফেল নিয়ে গুলি চালিয়ে দেয়। গুলিটা লেগেছিল মুখে। সেই ছোট কুমারের অতৃপ্ত আত্মাই ফিরে ফিরে আসে প্রতিশোধ নিতে।

বিশ্বমামা বললেন, অর্থাৎ গল্প হলো সত্যি। সব পুরোনো ভাঙা—বাড়ি সম্পর্কেই এই রকম একটা না একটা গল্প থাকে। অনেক দিন ধরেই শুনতে শুনতে মনে হয় সত্যি। কেউ প্রথমেই একবার রটিয়ে দেয় যে ওই রকম একটা ভূত দেখেছে, তারপর অন্যরা সেই কথা ভাবতে ভাবতে ভূত দেখে ফেলে। এ হলো, মনে মনে তৈরি করা ভূত।

চরণদাদা বললেন, কিন্তু আমি নিজে দেখেছি।

বিশ্বমামা বললেন, তা তো দেখতেই পারো। মরুভূমিতে গিয়ে মরীচিকা দেখে না? তাও তো নিজের চোখেই দেখে। একলা একলা অনেকক্ষণ ধরে একটা কথা ভাবলে, সেটা হঠাৎ চোখের সামনে দেখা যেতেই পারে। এটা হচ্ছে মনের ছবি। আসলে সত্যি নয়!

চরণদাদা বললেন, তুমি ওই বাড়িতে একলা থাকতে পারবে রাত্তিরে?

বিশ্বমামা বললেন, সে তো আমি তোমার গল্প শুনতে শুনতেই ঠিক করে ফেলেছি। আজ রাত্তিরে গিয়ে থাকবো, একবার লোকের ভয় ভেঙে গেলে তোমরা ওই বাড়িটা সারিয়ে—টারিয়ে ইস্কুল করতে পার, কিংবা হাসপাতাল।

আমি আর বিলুদা বায়না ধরেছিলুম, বিশ্বমামার সঙ্গে থাকবো। আমাদেরও ভূত দেখার খুব ইচ্ছে।

বিশ্বমামা গম্ভীরভাবে বললেন, না, নিলু আর বিলুকে সঙ্গে নেওয়া যাবে না। তিনজনে মিলে আড্ডা মারলে মনটা একাগ্র হয় না। আর কিছু দেখা যায় না।

রানীগঞ্জ থেকে ফেরার পথে আমরা চরণদাদাদের গ্রামে এসেছি বেড়াতে। এখানকার আম খুব বিখ্যাত। আর চরণদাদার বাড়ির পেছনের পুকুরে রয়েছে বড় বড় গলদা চিংড়ি। চরণদাদা হঠাৎ মত পাল্টে বললেন, না, থাক বিশ্ব তোমার যাবার দরকার নেই। কী দরকার ওসব ঝঞ্ঝাটে।

বিশ্বমামা বললেন, তুমি ভয় পাচ্ছ নাকি? আমার ব্যাপারে ভয়ের কী আছে? আমি যাচ্ছি একটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করতে। যদি সত্যি সত্যিই একটা ভূত দেখতে পাই, তাহলে নতুন করে আবার বিজ্ঞানচর্চা শুরু করতে হবে। আমি জানি, ভূত বলে কিছু থাকতে পারে না। মরা মানুষের পক্ষে আবার শরীর ধারণ করা ফিজিকসের নিয়ম অনুযায়ী অসম্ভব। ভূতটাকে দেখলেই জাপ্টে ধরে দেখতে হবে, সতিত্থ্য সত্যিই তার শরীর আছে, না সবটাই কল্পনা।

চরণদাদা বললেন, সে যদি তোমার কোনো ক্ষতি করে?

বিশ্বমামা বললেন, ভূতে আবার কী ক্ষতি করবে? লোকে ভূত দেখে ভয় পায়, ভয়ে পালাতে গিয়ে আছাড় খেয়ে হাত—পা ভাঙে, কিন্তু ভূত কি কারুকে ছোঁয়? সেরকম তো শোনা যায় না।

চরণদাদা বললেন, জটাধারীর নাকি গলা টিপে ধরেছিল।

বিশ্বমামা বললেন, সে তো একটা পাগল। সে যা খুশি বলতে পারে। নাঃ, শেষে ভূতের পক্ষে মানুষকে ছোঁওয়া সম্ভব নয়। একজন ফরাসী বৈজ্ঞানিক স্বয়ং শয়তানকে দেখে কী বলেছিলেন জানো না! বাইবেলের যে শয়তান, তার মাথায় দুটো শিং আছে, পায়ে আছে ঘোড়ার মতন ক্ষুর। বৈজ্ঞানিকটি তাঁর বাড়ির বাগানে সেই শয়তানকে দেখে বললেন, ওহে শয়তান, তুমি তো মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না? মিছিমিছি তোমাকে দেখে এতকাল লোকে ভয় পেয়েছে কেন? তোমার মাথায় শিং আর পায়ে ক্ষুর, অর্থাৎ তুমি গোরু—ঘোড়ার মতন তৃণভোজী প্রাণী। মানুষকে কামড়াবার ক্ষমতা তো তোমার নেই।

সুতরাং বিশ্বমামার জন্য সেই মল্লিকদের বাড়িতে রাত কাটবার সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হলো। আটটার মধ্যে খাওয়া—দাওয়া সেরে বিশ্বমামা বিশেষ একটা কবিতার বই, একটা টর্চ ও একটা হ্যাজাক বাতি নিয়ে রওনা হলেন। রওনা হবার আগে বললেন, তোমাদের একটা ব্যাপারে সাবধান করে দিয়ে যাচ্ছি। মাঝরাত্তিরে তোমরা কেউ ভূত সেজে আমাকে ভয় দেখাতে যেও না। অনেক সময় চোর—ডাকাতরা নিজেদের একটা আস্তানা গোপন রাখার জন্য এই সব বাড়িতে লুকিয়ে থেকে অজ্ঞ লোকদের ভয় দেখায়। সেরকম কেউ যদি আসে, তার কপালে বিপদ আছে। আমি সঙ্গে রিভলভার রেখেছি, সেরকম কিছু দেখলেই গুলি করবো।

আমরা খানিকদূর পর্যন্ত এগিয়ে দিলুম বিশ্বমামাকে। দরজা দিয়ে উনি একাই ভেতরে চলে গেলেন। একটু পরে দোতলার ঘরটার ভাঙা জানলায় দেখা গেল হ্যাজাকের আলো। বিশ্বমামা জানলার কাছে দাঁড়ালেন, আমরা দেখতে পেলুম ওঁর সিলুয়েট মূর্তি।

চরণদাদার বাড়ি খানিকটা দূরে, সেখান থেকে মল্লিকবাড়ি দেখা যায় না। কিন্তু ন’টার পরই গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আলো নিভে যায়, দূর থেকেও বিশ্বমামার হ্যাজাকের আলোটা একটু একটু চোখে পড়ে। একটু পরেই সারা গ্রাম নিস্তব্ধ। কুকুরের ডাক ছাড়া আর কিছুই শোনা যায় না।

বিশ্বমামা বললেন, আমাদের রাত জেগে অপেক্ষা করার দরকার নেই। উনি সারা রাত কবিতা পড়ে কাটিয়ে দেবেন, যাতে ভূতের চিন্তা মাথায় না ফেরে। কবিতা পড়ার সময় অন্য কোনো চিন্তা মাথায় আসে না। যদি ঘুম এসে যায় সেজন্য সঙ্গে নস্যি রেখেছেন, নস্যি টেনে ঘুম তাড়াবেন।

আমরা শুয়ে শুয়ে গল্প করতে লাগলাম। চরণদাদার পাহাড়ে চড়ার গল্প। পাহাড়েও নাকি অনেকে ভূতের ভয় পায়। যদি কেউ বেশ অনেক ঘণ্টা একা বসে থাকে, তাহলেই ওই ভয়টা এসে চেপে ধরে। যে—সব অভিযাত্রী সেই পাহাড়ে উঠতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে, তাদের কারুকে কারুকে দেখা যায় চোখের সামনে। চরণদাদা অবশ্য সেরকম কিছু দেখেননি। আর কোথাও তিনি অবশ্য ভূতের ভয় পাননি, শুধু এই মল্লিকবাড়িতেই—

বিলুদা আমাকে জিজ্ঞেস করল, নিলু, তুই পারবি এরকম বাড়িতে একা থাকতে?

আমি বললুম, একা? তা পারবো না। অন্যদের সঙ্গে পারবো। নিজের বাড়িতেই একা একা শুতে এক—একদিন ভয় করে!

চরণদাদা জিজ্ঞেস করলেন, বিলু, তুমি পারবে?

বিলুদা বললো, বিশ্বমামাটা বড্ড গোঁয়ার। কেন আমাদের সঙ্গে নিল না? আমি রাত্তিরে কোনো অচেনা বাড়িতে একলা থাকার কথা ভাবতেই পারি না। আমি ভূত বিশ্বাস করি না, কিন্তু ভয় পাই! একটা কঙ্কাল কখনো হাঁটতে পারে না জানি, তার চোখ নেই, সে দেখতে পারে না, তার মাথায় ঘিলু নেই, সে চিন্তা করতে পারে না, তার পেশী কিংবা স্নায়ু নেই, সে হাত—পা নাড়তে পারবে না, এসবই জানি, তবু রাত্তিরে চোখের সামনে একটা কঙ্কাল দেখতে পেলে সব ভুলে গিয়ে ভয় পেয়ে যাব।

 আমি জিজ্ঞেস করলুম, কটা বাজে?

চরণদাদা বালিশের তলা থেকে হাতঘড়ি বার করে নিয়ে দেখে বললেন, সওয়া বারোটা।

আমি বললুম, দূরে বিশ্বমামার হ্যাজাক বাতিটা যে মিটমিট করছিল, সেটা আর দেখা যাচ্ছে না।

বিলুদা বললো, চুপ চুপ। কিসের যেন শব্দ শোনা যাচ্ছে না দূরে?

চরণদাদা বললেন, বিশ্বর গলা নাকি? সবাই মিলে আমরা উঠে পড়ে ছুট দিলুম মল্লিকবাড়ির দিকে।

বেশি দূর যেতে হলো না, খানিকটা গিয়েই দেখা গেল বিশ্বমামা টর্চ জ্বেলে দৌড়ে আসছেন এদিকে। আমাদের দেখতে পেয়ে বললেন, বাপরে বাপ! উফ! এখানে টেকা যায়?

চরণদাদা ব্যগ্র হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, দেখলে? তুমিও তাহলে দেখতে পেলে?

বিশ্বমামা বললেন, কি দেখবো!

—ভূত; মানে, সেই ছোট কুমারকে, রক্তমাখা মুখ।

—ধুৎ! যত সব গাঁজাখুরি গল্প! ভূত বলে কিছু আছে নাকি? আমি মন দিয়ে কবিতা পড়েছি, তাই ওসব আজেবাজে চিন্তাও আমার মাথায় আসেনি। ভূত তাড়াবার খুব ভালো ওষুধ হচ্ছে কবিতা পড়া!

—তাহলে পালিয়ে এলে কেন?

—ভয়ের চোটে!

—তুমি ভয় পেয়েছো? তাহলে, তুমিও শেষ পর্যন্ত ভয় পেলে!

—পাব না কেন? ভূতের ভয় নেই, তা বলে অন্য কিছুতে ভয় পাব না, তা কি বলেছি?

—কিসের ভয় পেলে?

—বারোটার পরেই ওগুলো এলো! রিভলভার থাকলেও, কোন কাজে লাগলো না। কামান দেগেও ওদের শেষ করা যায় না।

—কামান দেগেও শেষ করা যায় না? কি? ও বুঝেছি, মশা মারতে কামান দাগা!

—না, মশা নয়, আরশোলা! আমি বই পড়ছিলাম, হঠাৎ শুনি ফরফর শব্দ। আরশোলা উড়ছে। প্রথমে একটা—দুটো তারপর অসংখ্য। মাঝে মাঝে আরশোলার সারা ঘর উড়ে বেড়াবার শখ হয়, গায়ে এসে পড়ে। কোথা থেকে এতো আরশোলা এলো কী জানি! আরশোলা গায়ে বসলে আমার ঘেন্নায় মরে যেতে ইচ্ছে করে! ওখানে আর থাকবো কী করে!

—আরশোলা মাঝে মাঝে ওড়ে বটে। কিন্তু অত আরশোলা!

—সকাল বেলা ওই ঘর ঝাঁট দিয়ে অনেক আরশোলার নাদি ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সেই রাগেই বোধ হয় ওরা আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছিল।

বিলুদা বললো, বিশ্বমামা, হঠাৎ অত আরশোলা, ভূতই তবে আরশোলার রূপ ধরে আসেনি তো?

বিশ্বমামা ধমক দিয়ে বললেন, ফের বাজে কথা? ভূত আবার কী? আরশোলা হচ্ছে আরশোলা!

বিলুদা বললো, তোমার তা হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাটা পুরো হলো না বলো! সারারাত না থাকলে…এক কাজ করলে হয়, কাল রাতে একটা মশারি টাঙিয়ে তুমি আবার থাকতে পারো। মশারি থাকলে মশা বা আরশোলা কিছু করতে পারবে না।

বিশ্বমামা বললেন, আর হবে না। আমার জরুরি কাজ আছে। কাল ভোরবেলাই কলকাতায় ফিরে যেতে হবে।

আমাদের এখানে আর তিন দিন থাকার কথা ছিল। হঠাৎ বিশ্বমামার কী জরুরি কাজের কথা মনে পড়লো জানি না। ভূত নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ব্যাপারেও তার আর কোনো উৎসাহ দেখা গেল না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *