রাজার মন ভালো নেই

রাজার মন ভালো নেই

রাজার মন আর কিছুতেই ভালো হচ্ছে না। মন ভালো করতে লোকেরা কম মেহনত করেনি। রাজাকে গান শোনানো হয়েছে, নাচ দেখানো হয়েছে, বিদূষক এসে হাজার হাজার রকমের ভাঁড়ামি করেছে, যাত্রা, নাটক, মেলা-মচ্ছব, যাগযজ্ঞ, পূজোপাঠ সব হল। পুবের রাজ্য থেকে আনারস, উত্তরের হিমরাজ্য থেকে আপেল, পশ্চিম থেকে আখরোট, আঙুর, পেস্তা বাদাম, দেশ-বিদেশ থেকে ক্ষীর আর ছানার মিষ্টি এনে খাওয়ানো হয়েছে। এখন সাহেব আর চীন রসুইকররা দু-বেলা হরেক খাবার বানাচ্ছে। রাজা দেখছেন, শুনছেন, খাচ্ছেন, কিন্তু তবু ঘণ্টায় ঘণ্টায় বুক কাঁপিয়ে হুংকারে এক-একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। ‘না হে, মনটা ভালো নেই।’

রাজবৈদ্য এসে সারাদিন বসে নাড়ি টিপে চোখ বুজে থাকেন। নাড়ি কখনো তেজি কখনও মহা, কখনো মোটা, কখনও সরু। রাজবৈদ্য আপন মনে হুঁ হুঁ হুঁ করেন, তারপর শতক রকম শেকড়-বাকড় পাতা বেটে ওষুধ তৈরি করে শতক অনুপান দিয়ে রাজাকে খাওয়ান। রাজা খেয়ে যান! তারপর হড়াস করে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায়। ‘না হে মনটা ভালো নেই।’

রাজার মন ভালো করতে রাজপুত্তুর আর সেনাপতিরা আশপাশের গোটা দশেক রাজ্য জয় করে হেরো রাজাগুলোকে বন্দী করে নিয়ে এল। রাজা তাকিয়ে দেখলেন। তারপরই অজান্তে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন একটা। ‘মনটা বড়ো খারাপ হে।’

তখন মন্ত্রীমশাই রাজার তীর্থযাত্রা আর দেশভ্রমণের ব্যবস্থা করলেন। লোকলশকর পাইক-পেয়াদা নিয়ে রাজা শ-দেড়েক তীর্থ আর দেশ-দেশান্তর ঘুরে এসে হাত-মুখ ধুয়ে সিংহাসনে বসেই বললেন, ‘হায় হায়। মনটা একদম ভালো নেই।’

ওদিকে ভাঁড়ামি করে করে রাজার বিদূষক হেদিয়ে পড়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। রাজনর্তকীর পায়ে বাত। সভা-গায়কের গলা বসে গেছে। বাদ্যকরদের হাতে ব্যথা। রসুইকররা ছুটি চাইছে। রাজবৈদ্যকে ধরেছে ভীমরতি। সেনাপতি সন্ন্যাস নিয়েছেন। মন্ত্রীমশাইয়ের মাথায় একটু গন্ডগোল দেখা দিয়েছে বলে তাঁর স্ত্রী সন্দেহ করছেন।

রাজ-পুরোহিত হোম-যজ্ঞে এত ঘি পুড়িয়েছেন যে ঘিয়ের গন্ধ নাকে গেলে তাঁর মূর্ছা হয়। প্রজাদের মধ্যে কিছু অরাজকতা দেখা যাচ্ছে। সভাপন্ডিতেরা রাজার মন খারাপের কারণ নিয়ে দিনরাত গবেষণা করছেন। রাজজ্যোতিষী রাজার জন্মকুন্ডলী বিচার করতে করতে, আঁক কষে কষে দিস্তা-দিস্তা কাগজ ভরিয়ে ফেলেছেন।

একদিন বিকেলে রাজা মুখখানা শুকনো করে রাজবাড়ির বিশাল ফুল-বাগিচায় বসে আছেন। চারদিকে হাজারো রকমের ফুলের বন্যা, রঙে গন্ধে ছয়লাপ। মৌমাছি গুনগুন করছে, পাখিরা মধুর স্বরে ডাকছে। সামনের বিশাল সুন্দর দিঘিতে মৃদুমন্দ বাতাসে ঢেউ খেলছে, রাজহাঁস চরে বেড়াচ্ছে।

রাজা চুপচাপ বসে থেকে থেকে হঠাৎ সিংহগর্জনে বলে উঠলেন, ‘গর্দান চাই।’

মন্ত্রী পাশেই ছিলেন, আপন মনে বিড়বিড় করছিলেন, মাথা খারাপের লক্ষণ। রাজার হুংকারে চমকে উঠে বললেন, ‘কার গর্দান মহারাজ।’

রাজা লজ্জা পেয়ে বললেন, ‘দাঁড়াও, একটু ভেবে দেখি। হঠাৎ মনে হল কার যেন গর্দান নেওয়া দরকার।’

মন্ত্রী বললেন, ‘ভাবুন মহারাজ, আর একটু কষে ভাবুন। মনে পড়লেই গর্দান এনে হাজির করব।’

বহুকালের মধ্যেও রাজা কিছুই মুখ ফুটে চাননি। হঠাৎ এই গর্দান চাওয়ায় মন্ত্রীর আশা হল, এবার রাজার মনমতো একটা গর্দান দিলে বোধহয় মন ভালো হবে। রাজ্যে গর্দান খুবই সহজলভ্য।

পরদিন সকালে রাজসভার কাজ শেষ হওয়ার পর রাজা মন্ত্রীকে ডেকে বললেন, ‘না হে, গর্দান নয়। গর্দান চাই না। অন্য কী একটা যেন চেয়েছিলাম, এখন আর মনে পড়ছে না।’

বিকেলবেলা রাজা প্রাসাদের বিশাল ছাদে পায়চারি করছিলেন। সঙ্গে রাজকীয় কুকুর, তাম্বুলদার, মন্ত্রী। পায়চারি করতে করতে রাজা হঠাৎ নদীর ওপারের গ্রামের দিকে চেয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘বুড়ির ঘরে আগুন দে! দে আগুন বুড়ির ঘরে।’

মন্ত্রীর বিড়বিড় করা থেমে গেল। রাজার সুমুখে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে বললেন, ‘যো হুকুম মহারাজ। শুধু বুড়ির নামটা বলুন।’

রাজা অবাক হয়ে বললেন, ‘কী বললাম বলো তো।’

‘আজ্ঞে, এই যে বুড়ির ঘরে আগুন দিতে বললেন।’

রাজা ঘাড় চুলকে বললেন, ‘বলেছি নাকি? আচ্ছা, একটু ভেবে দেখি।’

সেদিনই শেষরাতে রাজা ঘুমের মধ্যে চেঁচিয়ে বললেন, ‘বিছুটি লাগা। শিগগির বিছুটি লাগা।’

পরদিনই খবর রটে গেল, রাজা বিছুটি লাগাতে বলেছেন। আতঙ্কে সবাই অস্থির।

মন্ত্রী রাজার কানে কানে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মহারাজ! কাকে বিছুটি লাগাতে হবে তার নামটা একবার বলুন, বিছুটি আনতে পশ্চিমের পাহাড়ে লোক পাঠিয়েছি।’

‘বিছুটি!’ বলে রাজা অবাক হয়ে গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলেন।

পশ্চিমের পাহাড়ের গায়ে সূর্য ঢলে পড়ল। গোরুরগাড়ি বোঝাই বিছুটি এনে রাজবাড়ির সামনের অঙ্গনে জমা করা হয়েছে। রাজার সেই দিকে মন নেই।

রাজা রঙ্গঘরে বসে বয়স্যদের সঙ্গে ঘুটি সাজিয়ে দাবা খেলছেন। মুখ গম্ভীর, চোখে অন্যমনস্ক ভাব। বয়স্যরা ভয়ে ভয়ে ভুল চাল দিয়ে রাজাকে যতবার সুযোগ করে দিচ্ছেন। কিন্তু রাজা দিচ্ছেন আরও মারাত্মক ভুল চাল।

খেলতে খেলতে রাজা একবার গড়গড়ার নলে মৃদু একটা টান দিয়ে বললেন, ‘পুঁতে ফেললে কেমন হয়?’

মন্ত্রী কাছেই ছিলেন। বিড়বিড় করা থামিয়ে বিগলিত হয়ে বললেন, ‘খুব ভালো হয় মহারাজ। শুধু একবার হুকুম করুন।’

রাজা আকাশ থেকে পড়ে বললেন, ‘কীসের ভালো হয়?’ কিছুতেই ভালো হবে না মন্ত্রী। মনটা একদম খারাপ।’

মন্ত্রী বিমর্ষ হয়ে আবার বিড়বিড় করতে লাগলেন।

পরদিন রাজা শিকারে গেলেন। সঙ্গে বিস্তর লোকলশকর, অস্ত্রশস্ত্র, ঘোড়া, রথ। বনের মধ্যে রাজার শিকারের সুবিধের জন্যই হরিণ, খরগোশ, পাখি ইত্যাদি বেঁধে বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে। একটা বাঘও আছে। রাজা ঘোড়ার পিঠে বসে অনেকক্ষণ ধরে ঘুরে ঘুরে দেখলেন, কিন্তু একটাও তির ছুড়লেন না। দুপুরে বনভোজনে বসে পোলাও দিয়ে মাংসের ঝোল মেখে খেতে খেতে বলে উঠলেন, ‘বাপরে। ভীষণ ভূত।’

মন্ত্রীমশাই সঙ্গেসঙ্গে মাংসের হাত মাথায় মুছে উঠে পড়লেন। রাজা মশাইয়ের সামনে এসে বললেন, ‘তাই বলুন মহারাজ! ভূত! তা তারই বা ভাবনা কী? ভূতের রোজাকে ধরে আনাচ্ছি, রাজ্যে যত ভূত আছে ধরে ধরে সব শূলে দেওয়া হবে।’

রাজা হাঁ করে রইলেন। বললেন, ‘ভূত। না না, ভূত নয়। ভূত হবে কী করে? ভূতের কি কখনও মাথা ধরে?’

মন্ত্রীমশাই আশার আলো দেখতে পেয়ে বিগলিত হয়ে বললেন, ‘মাথা ধরলেও বদ্যিভূত আছে। তারা ভূতের ওষুধ জানে।’

রাজা গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘আমি ভূতের কথা ভাবছি না। মনটা বড়ো খারাপ।’

কয়েকদিন পর রাজা এক জ্যোৎস্না রাতে অন্দরমহলের অলিন্দে রানির পাশাপাশি বসেছিলেন। হঠাৎ বললেন, ‘চলো রানি, চাঁদের আলোয় বসে পান্তাভাত খাই।’

রানি তো প্রথমে অবাক। তারপর তাড়াতাড়ি মন্ত্রীকে ডেকে পাঠালেন।

মন্ত্রী এসে হাতজোড় করে বললেন, ‘তা এ আর বেশি কথা কী? ওরে, তোরা সব পান্তাভাতের জোগাড় করো।’

রাজা অবাক হয়ে বললেন, ‘পান্তাভাত? পান্তাভাত কী জিনিস বলো তো?’

‘জলে ভেজানো ভাত মহারাজ, গরিবরা খায়। কিন্তু আপনি নিজেই তো পান্তাভাতের কথা বললেন।’

‘বলেছি! তা হবে। কখন যে কী বলি। মনটা ভালো নেই তো, ভাই।’

মন্ত্রীমশাই ফিরে গেলেন। তবে সেই রাত্রেই তিনি রাজ্যের সবচেয়ে সেরা বাছা বাছা চারজন গুপ্তচরকে ডেকে বললেন, ‘ওরে তোরা আজ থেকে পালা করে রাজামশাইয়ের ওপর নজর রাখবি। চব্বিশ ঘণ্টা।’

পরদিনই এক গুপ্তচর এসে খবর দিল, ‘রাজামশাই ভোর রাত্রে বিছানা থেকে নেমে অনেকক্ষণ হামা দিয়েছেন ঘরের মেঝেয়।’

আর একজন বলল, ‘রাজামশাই একা-একাই লালজামা নেব, লালজামা নেব, বলে খুঁতখুঁত করে কাঁদছেন।’

আর একজন এসে খবর দিল, ‘রাজামশাই এক দাসীর বাচ্চা ছেলের হাত থেকে একটা মণ্ডা কেড়ে নিয়ে নিজেই খেয়ে ফেললেন এইমাত্র।

চতুর্থ জন বলল, ‘আমি অতশত জানি না, শুধু শুনলাম রাজামশাই খুব ঘন ঘন ঢেঁকুর তুলছেন আর বলছেন সবই তো হল, আর কেন?’

মন্ত্রীর মাথা আরও গরম হল। তবু বললেন, ‘ঠিক আছে, নজর রেখে যা।’

পরদিনই প্রথম গুপ্তচর এসে বলল, ‘আজ্ঞে রাজামশাই আমাকে ধরে ফেলেছেন। রাত্রে শোওয়ার ঘরের জানালা দিয়ে যেই উঁকি দিয়েছি, দেখি রাজামশাই আমার দিকেই চেয়ে আছেন। দেখে বললেন, ‘নজর রাখছিস? রাখ’—বলে চোখ বুজে শুয়ে পড়লেন।’

দ্বিতীয় জন এসে বলে, ‘আজ্ঞে আমি ছিলাম রাজার খাটের তলায়। মাঝরাতে রাজামশাই হামাগুড়ি দিয়ে এসে আমাকে বললেন, ‘কানে কেন্নো ঢুকবে, বেরিয়ে আয়’।

তৃতীয় জন কান চুলকে লাজুক-লাজুক ভাব করে বলল, ‘আজ্ঞে আমি বিকেলে রাজার কুঞ্জবনে রাজার ভুঁইমালী সেজে গাছ ছাঁটছিলাম। রাজা ডেকে খুব আদরের গলায় বললেন, ‘ওরে ভালো গুপ্তচর হতে গেলে সব কাজ শিখতে হয়। ওভাবে কেউ গাছ ছাঁটে নাকি? আয় তোকে শিখিয়ে দিই।’ বলে রাজা নিজেই গাছ কেটে দেখিয়ে দিলেন।

কিন্তু সবচেয়ে তুখোড় যে গুপ্তচর সেই রাখহরি তখনও এসে পৌঁছোয়নি। মন্ত্রী একটু চিন্তায় পড়লেন।

ওদিকে রাখহরি কিন্তু বেশি কলাকৌশল করতে যায়নি। সকাল বেলা রাজার শোওয়ার ঘরের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। রাজা বেরোতেই প্রণাম করে বলল, ‘মহারাজ, আমি গুপ্তচর রাখহরি। আপনার ওপর নজর রাখছি।’

রাজা অবাক হলেও স্মিত হাসলেন। হাই তুলে বললেন, ‘বেশ বেশ, মন দিয়ে কাজ করো।’

তারপর রাজা যেখানে যান পেছনে রাখহরি ফিঙের মতো লেগে থাকে।

দুপুর পর্যন্ত বেশ কাটল। দুপুরে খাওয়ার পর পান চিবোতে চিবোতে রাজা হঠাৎ বললেন, ‘চিমটি দে। রাম চিমটি দে।’

সঙ্গেসঙ্গে রাখহরি রাজার পেটে এক বিশাল চিমটি বসিয়ে দিল। রাজা আঁৎকে উঠে বললেন, ‘করিস কী, করিস কী? ওরে বাবা।’

রাখহরি বলল, ‘বললেন যে।’

পেটে হাত বোলাতে বোলাতে রাজা কিন্তু হাসলেন।

আবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল। রাজা বাগানে বেড়াতে বেড়াতে হঠাৎ বলে উঠলেন, ‘ল্যাং মেরে ফেলে দে।’ বলতে-না-বলতেই রাখহরি ল্যাং মারল। রাজা চিৎপটাং হয়ে পড়ে চোখ পিটপিট করতে লাগলেন। রাখহরি রাজার গায়ের ধুলো-টুলো ঝেড়ে দাঁড় করিয়ে রাজার পায়ের ধুলো নিল। রাজা শ্বাস ফেলে বললেন, ‘হুঁ’।

রাত পর্যন্ত রাজা আর কোনো ঝামেলা করলেন না। রাখহরি রাজার পিছু-পিছু শোওয়ার ঘরে ঢুকল এবং রাজার সামনেই একটা আলমারির ধারে লুকিয়ে রইল। রাজা আড়চোখে দেখে একটু হাসলেন। আপত্তি করলেন না। তবে শোওয়ার কিছুক্ষণ পরেই রাজা হঠাৎ খুঁত-খুঁত করে বলে উঠলেন, ‘ঠাণ্ডা জলে চান করব, ঠাণ্ডা জলে…’ রাখহরি বিদ্যুৎগতিতে রাজার ঘরের সোনার কলসের কেওড়া আর গোলাপের সুগন্ধ মেশানো জলটা—সবটুকু রাজার গায়ে ঢেলে দিল।

রাজা চমকে হেঁচে কেসে উঠে বসলেন। কিন্তু খুব অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে মনে হল না। রাখহরির দিকে চেয়ে একটু হেসে বললেন, ‘আচ্ছা শুগে যা।’

রাখহরি অবশ্য শুতে গেল না। পাহারায় রইল।

সকালে উঠে রাজা হাই তুলে হঠাৎ বলে উঠলেন, ‘দে বুকে ছোরা বসিয়ে দে…’ চকিতে রাখহরি কোমরের ছোরাখানা খুলে রাজার বুকে ধরল।

ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে রাজা বললেন, ‘থাক থাক, ওতেই হবে। তোর কথা আমার মনে ছিল না।’

রাখহরি ছোরাটা খাপে ভরতেই রাজা হো: হো: করে হাসতে লাগলেন। সে এমন হাসি যে রাজবাড়ির সব লোকজন ছুটে এল। রাজা হাসতে হাসতে দু-হাতে পেট চেপে ধরে বললেন, ‘ওরে আমার যে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। ভীষণ হাসি পাচ্ছে।’

খবর পেয়ে মন্ত্রীও এসেছেন। রাজার বুকে-পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন, ‘যাক বাবা! মন খারাপটা গেছে তাহলে।’

হাসতে হাসতে রাজা বিষম খেয়ে বললেন, ‘ওঃ হো: হো:। কী আনন্দ! কী আনন্দ!’

তারপর থেকে রাজার মন খারাপ কেটে গেল। কিন্তু নতুন একটা সমস্যা দেখা দিল আবার। কারণ কিছু নেই, রাজা সবসময়ে কেবল ফিকফিক করে হেসে ফেলছেন। খুব দুঃসংবাদ দিলেও হাসতে থাকেন। যুদ্ধে হার হয়েছে? ফিকফিক। রাজ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে? ফিকফিক। দক্ষিণের রাজ্যের প্রজারা বিদ্রোহ করেছে? ফিকফিক।

রাজার হাসি বন্ধ করার জন্য মন্ত্রীকে এখন আবার দ্বিগুণ ভাবতে হচ্ছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *