ষষ্ঠ অধ্যায়
১০০৭ ত্রিপুরাব্দে (১৫৯৭ খ্রিস্টাব্দে) অমর মাণিক্য সিংহাসনে অধিরোহণ করেন। রাজ্যভার গ্রহণ করিয়াই তিনি ত্রিপুরারাজ্যস্থ সমস্ত সামন্ত নরপতি ও জমিদারবর্গকে লিখিলেন যে একটি সুদীর্ঘ দীর্ঘিকা খনন করা হইবে, এজন্য তাহারা সকলেই যেন কুলী প্রেরণ করেন। তদনুসারে ৯ জন জমিদার ৭৩০০ কুলী পাঠাইয়া দেন। তদ্দ্বারা তিনি যে বৃহৎ দীর্ঘিকা খনন করেন, তাহা অদ্যাপি উদয়পুরের পূর্বদিকে, পর্বত মধ্যে “অমরসাগর” নামে প্রসিদ্ধ আছে। এই সরোবর তীরে মহারাজ অমর মাণিক্য যে প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, তাহার চিহ্ন অদ্যাপি ভ্রমণকারীদিগের বিস্ময় উৎপাদন করিয়া থাকে। এই রাজ নিকেতন “অমরপুর” আখ্যা প্রাপ্ত হয়। কিঞ্চিদূন শত বৎসর পূর্বে ব্রহ্মরাজ চট্টগ্রামের শাসনকৰ্ত্তাকে যে পত্র লিখিয়াছিলেন তাহাতে ব্রহ্মরাজ কর্তৃক ত্রিপুর নরপতি “ অমরপুরের ছত্রধারি (স্বাধীন) রাজা” বলিয়া উক্ত হইয়াছেন।
শ্রীহট্টের অন্তর্গত তরপের জমিদার তাঁহার অনুমতি ক্রমে কুলী প্রেরণ করেন নাই। মহারাজ অমর মাণিক্য তাঁহাকে বন্দি করিয়া আনিবার নিমিত্ত দ্বাবিংশতি সহস্র সৈন্য প্রেরণ করিলেন। ত্রিপুর সৈন্যের আগমণবার্তা শ্রবণে জমিদার পলায়ন করিলেন, সৈন্যগণ তাঁহার পুত্রকে বন্দী করিয়া আনয়ন করিল। জমিদার স্বয়ং শ্রীহট্টের মুসলমান শাসনকর্তার আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। অমর মাণিক্য এই সংবাদ শ্রবণ মাত্র স্বয়ং শ্রীহট্টের শাসনকর্তার প্রতিকূলে গমন করিলেন।
মহারাজ অমর মাণিক্য রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইয়া গরুড় ব্যূহ রচনা করেন; সৈন্যগণ দেহ, সম্মুখস্থ দুইজন প্রধান সৈনিকপুরুষ চঞ্চু এবং উভয় পার্শ্বস্থিত সেনানীগণকে পক্ষ বলিয়া বোধ হইল। অমর মাণিক্য গজারূঢ় হইয়া ব্যূহের পৃষ্ঠদেশে ছিলেন। সূর্য্যোদয়কালে উভয় দলের ঘোরতর যুদ্ধ (৬৯) আরম্ভ হয়। সায়ংকালে মুসলমানেরা পরাজিত হইয়া পলায়ন করিল। সম্ভবত ১০০৯ ত্রিপুরাব্দে এই ঘটনা হইয়াছিল। এই ঘটনার পর মুসলমানেরা যাবৎ শ্রীহট্টের পুণরুদ্ধার সাধন না করিয়াছিল তাবৎ উহা ত্রিপুরারাজ্যের করপ্রদ ছিল।
অমর মাণিক্য সুজন্মা নহেন, অতএব তিনি রাজ্যের বৈধ অধিকারী হইতে পারেন না, এই বলিয়া ভুলোয়ার অধিপতি রাজা বলরাম সুর কর প্রদানে অসম্মত হন, কিন্তু অমর মাণিক্য একদল সৈন্য প্রেরণ করিয়া তাহাকে করপ্রদ করিলেন। এই সংগ্রাম সময়ে ভূলোয়াপতির একজন ব্রাহ্মণ কর্মচারী নিহত হওয়াতে অমর মাণিক্য যার পর নাই দুঃখিত হইয়া হত্যাকারীকে শাস্তি দিবার জন্য গোপনে অনুসন্ধান করেন, কিন্তু তাহা নির্ণয় করিতে পারেন নাই।
তৎকালে বাকলা চন্দ্রদ্বীপ সাতিশয় সমৃদ্ধিশালী রাজ্য ছিল। মহারাজ অমর মাণিক্য ইহা শ্রবণ করিয়া অর্থ সংগ্রহের জন্য এই স্থান আক্রমণ ও অধিকার করেন। তিনি প্রত্যাগমন কালে সেই স্থান লুণ্ঠন করিয়া অসংখ্য ধন এবং বহুসংখ্যক লোককে দাসরূপে বন্দি করিয়া আনয়ন করেন। অমর মাণিক্য দীর্ঘিকা উৎসর্গ এবং ব্রাহ্মণ দম্পতিদান ও “তুলা” প্রভৃতি হিন্দু শাস্ত্রোক্ত অনেক সৎকার্য করিয়াছিলেন। (৭০)
ত্রিপুরেশ কিয়ৎকাল মাত্র শান্তিভোগ করিয়াছিলেন। বিজাতীয় শত্রুদমন জন্য পুনরায় তাঁহাকে অস্ত্রধারণ করিতে হইয়াছিল। বঙ্গীয় শাসনকর্তা সেখ ইসলামখাঁ ঢাকা নগরীতে রাজধানী স্থাপন করিয়া ১০১৯ ত্রিপুরাব্দে ত্রিপুরা আক্রমণ করেন। অমর মাণিক্য ঈশাখাঁ নামক একজন সেনাপতিকে বৃহৎ এক দল সৈন্যের সহিত তদভিমুখে প্রেরণ করিলেন। ঈশাখাঁ শত্রু সম্মুখীন হইয়াও সুসময়ের অপেক্ষায় বিপক্ষ আক্রমণে ক্ষান্ত রহিলেন। ত্রিপুরার প্রধানমন্ত্রী এই সংবাদ শ্রবণে আরও একদল সৈন্য তাঁহার সাহায্যার্থে প্রেরণ করিয়া লিখিলেন, তিনি এই পত্র পাইবার পর কাল গৌণ না করিয়া যেন সংগ্রামে প্রবৃত্ত হন। ঐ সময় অমরমাণিক্যের রাজ্ঞীও ঈশাখাঁকে পাদোদক প্রেরণ করিয়া বলিয়া পাঠাইলেন যে, ঈশা খাঁ তাহা গ্রহণ করিয়া শীঘ্র শত্রু বিনাশ পূর্বক রাজধানীতে প্রত্যাগমন করেন। ঈশাখা রাজ্ঞীর স্নেহসূচক বাক্য শ্রবণ পূর্বক যার পর নাই আহ্লাদিত হইয়া সেই পাদোদক গ্রহণ করিলেন। তিনি সমস্ত সৈন্যকে পশ্চাতে রাখিয়া স্বয়ং দ্বাদশ সহস্র অশ্বারোহী ও অল্পমাত্র পদাতিক লইয়া বিপক্ষগণকে আক্রমণ করিলেন। মুসলমানেরা প্রথম উদ্যমেই পরাজিত হইয়া পলায়ন করিল। ঈশা খাঁ জয়ী হইয়া রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিলেন। রাজা ও রাজ্ঞী উভয়েই তাঁহাকে বহুবিধ পুরস্কার প্রদান করিয়াছিলেন।(৭১) কথিত আছে তৎপরে উদয়পুরে ভূতের দৌরাত্ম হইয়াছিল, এবং মহারাজ অমর মাণিক্য তন্নিবারণ জন্য একটি নরবলি দিয়াছিলেন।
মহারাজ অমর মাণিক্য তাম্রশাসন দ্বারা দেবোত্তর ও ব্রহ্মোত্তর রূপে চতুৰ্দ্দশ খানা গ্রাম দান করেন। তিনি মৃগয়া উপলক্ষে সরাইল গ্রামে গমন করিয়াছিলেন। সরাইলের দক্ষিণ দিগস্থ বন জঙ্গল পরিষ্কার করিয়া অমর মাণিক্যের অনুমত্যানুসারে তৎপুত্র রাজধর বেয়াল্লিশ নামক নগর কিন্তু অদ্যাপি সরাইল পরগণার দক্ষিণাংশ “তপে বেয়াল্লিশ” আখ্যায় পরিচিত হইয়া থাকে।
অমর মাণিক্য পুনরায় অস্ত্রধারণ করিতে বাধ্য হইয়া আরাকান আক্রমণ করেন এবং ক্রমশ কয়েকটি স্থান অধিকার করেন। অনন্তর আরাকানপতি পুনঃ পুনঃ পরাজিত হইয়া পর্তুগীজদিগের নিকট সাহায্য প্রার্থী হইলেন এবং তাঁহাদিগের সাহায্যবলে ত্রিপুরেশ্বকে আক্রমণ করিলেন। প্রথম যুদ্ধে ত্রিপুরাপতি পরাজিত হইলেন। কিন্তু তিনি ভগ্নোৎসাহ হইলেন না; পুনরায় তাঁহাদিগকে আক্রমণের চেষ্টা করিলেন। আরাকানপতি আগামী বৎসর পর্য্যন্ত যুদ্ধ স্থগিত রাখিবার জন্য অনুরোধ করিলে তিনি তাহাতে সম্মত (৭২) হইয়া তৎকালে সৈন্যগণের সহিত রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিলেন। প্রত্যাগত হইবার অব্যবহিত পরে সংবাদ পাইলেন যে, আরাকানপতি স্বীয় প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া চট্টগ্রাম অধিকার করিয়াছেন। ত্রিপুরাপতি আশু তাহার প্রতিহিংসা লওয়া কৰ্ত্তব্য বিবেচনা করিলেন। তিনি স্বয়ং ক্লান্ত ছিলেন বলিয়া তাঁহার তিন পুত্রকে বৃহৎ একদল সৈন্যের সহিত প্রেরণ করিলেন। ত্রিপুর সৈন্যগণ চট্টগ্রামে উপস্থিত হইলে আরাকানপতি ভয় প্রযুক্ত পুনর্বার সন্ধি প্রার্থনা করিয়া পত্র লিখিলেন, এবং তৎসহ একটি বহুমূল্য রত্ন-খচিত গজদন্ত নির্ম্মিত রাজমুকট উপঢৌকন স্বরূপ প্রেরণ করিলেন।
যে একতাশূন্য হইয়া সোনার ভারত ছারখার হইয়াছে, যে একতাহীনতায় আমাদিগকে যবন পদানত হইতে হইয়াছিল, এক্ষণে সেই একতা অমরের কুমারদিগের মধ্যে তিরোহিত হইল। একতাশূন্য হইয়া কুমারগণ যে কেবল চট্টগ্রামাদি হারাইয়াছিলেন এমত নহে, তাহাতেই ত্রিপুরার সর্বনাশের সূত্রপাত হইল। কুমারেরা সকলেই মুকুট গ্রহণ করিবেন বলিয়া পরস্পর বিরোধ করিতে লাগিলেন। আরাকানপতি এই সংবাদ শ্রবণে উপযুক্ত সময় বুঝিয়া পরমাহ্লাদিচিত্তে ত্রিপুর সৈন্য আক্রমণ করেন। কুমারদিগের মধ্যে ঐক্য না থাকায় তাঁহারা সহজেই পরাজিত হইয়া দুইজন সসৈন্যে পলায়ন করিলেন এবং একজন স্বীয় বাহন হস্তী॥৭৩ কর্তৃক নিহত হইলেন। মগেরা পলায়িত ত্রিপুর কুমারদিগের পশ্চাদ্ধাবিত হইল। কুমারেরা আপনাদিগকে নিতান্ত অপমানিত বোধ করিয়া পুনর্বার মগদিগের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন, কিন্তু সেইবারও তাঁহারা অশ্বারোহিগণের অবাধ্যতায় পরাজিত হন। মগেরা রণমদে মত্ত হইয়া ত্রিপুর সৈন্য ছিন্ন ভিন্ন করিয়া, অবশেষে রাজধানী উদয়পুরে উপস্থিত হইল। তাহাতে অমরমাণিক্য নিতান্ত ভীত হইয়া মনু নদীর তীরস্থিত তেতৈয়া নামক স্থানে পলায়ন করিলেন।[১] মগেরা পর্তুগীজদিগের সাহায্যে অবাধে উদয়পুর লুণ্ঠন এবং ত্রিপুরার সর্বস্বাপহরণ করিয়া প্রস্থান করিল।[২] (৭৪)
অমর মাণিক্য রাজ্যের তদানীন্তন অবস্থা চিন্তা করিয়া দুঃখে ম্রিয়মাণ হইলেন। তিনি মনু নদীর জলে স্নাত হইয়া অহিফেন ভক্ষণে প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন, তাঁহার প্রধান মহিষী সহমৃতা হইলেন।
১০২১ ত্রিপুরাব্দে (১৬১১ খ্রিস্টাব্দে) অমর মাণিক্যের পুত্র রাজধর মাণিক্য সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণদিগকে অপরমিত ভূমি দান করাতে অমাত্যগণ নিতান্ত বিস্মিত হইয়া তাঁহাকে ইহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি তদুত্তরে বলিলেন “শেষ অবস্থায় আমার অদৃষ্টে কি আছে তাহা কে বলিতে পারে।” রাজধর সমরোৎসাহ পরিত্যাগ করিয়া কেবল দৈবকার্য্যে লিপ্ত হইলেন। তিনি একটি উৎকৃষ্ট বিষ্ণু মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন; তাহাতে সর্বদা বিষ্ণুর উপাসনা করিতেন। তিনি আটজন গায়ক নিযুক্ত করিয়াছিলেন, তাহারা সর্বদা তাঁহাকে হরি সঙ্কীর্ত্তণ শ্রবণ করাইত।
বঙ্গীয় মুসলমান শাসনকর্তা রাজধর মাণিক্যের এইরূপ অবস্থা শ্রবণে, ত্রিপুরা আক্রমণের জন্য একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। কিন্তু মন্ত্রী এবং সৈনিকগণের পরাক্রম ও অধ্যবসায়ে মুসলমানেরা পরাজিত হইল। রাজধর ৩ বৎসর মাত্র রাজ্যশাসন করিয়া, গোমতী নদীর জলে নিমগ্ন হইয়া মানবলীলা সম্বরণ করেন। ॥৭৫
১০২৩ ত্রিপুরাব্দে (১৬১৩ খৃষ্টাব্দে) রাজধরের পুত্র যশোধর সিংহাসনে অধিরূঢ় হইলেন। সিংহাসনে আরোহণ করিয়াই তাঁহাকে মগদিগের উৎপাত নিবারণ জন্য অস্ত্রধারী হইতে হইয়াছিল। কিন্তু অল্পদিন পরেই তাঁহাকে আর এক ভীষণ যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হইতে হইল। দিল্লীশ্বর জাহাঙ্গীর তাঁহার নিকট কয়েকটি হস্তী ও অশ্ব রাজকর স্বরূপ চাহিয়া পাঠান। রাজধর করদানে অসম্মত হইলেন। সম্রাট তদ্বিরুদ্ধে একদল সৈন্য প্রেরণ করিবার জন্য বাঙ্গালার শাসনকর্তাকে অনুমতি করিলেন। মোগল সৈন্য ত্রিপুরা আক্রমণ করিল। মহারাজ যশোধর মাণিক্য পরাভূত হইলেন। মোগলেরা তাহাকে বন্দি করিয়া দিল্লীতে প্রেরণ এবং লুণ্ঠন দ্বারা ত্রিপুরার রাজকোষ শূন্য এবং প্রজাগণের সর্বস্বাপহরণ করিল। যশোধর দিল্লীতে উপস্থিত হইলে জাহাঙ্গীর তাঁহাকে মুক্ত করিয়া এই বলিয়া পুনর্বার রাজ্য প্রদান করেন যে, তিনি করস্বরূপ প্রতি বৎসর কেবল কতিপয় হস্তী এবং অশ্ব প্রদান করিলেই তদ্বিরুদ্ধে আর কোন যুদ্ধাদি হইবে না। কিন্তু যশোধর স্বীয় রাজ্যের দুরবস্থা চিন্তা করিয়া তাহাতে অসম্মত হইলেন। তিনি তীর্থ পর্যটনে কৃতসংকল্প হইয়া প্রয়াগ, মথুরা প্রভৃতি স্থান ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। পরিশেষে ৭২ বৎসর বয়সে বৃন্দাবনে বিষ্ণু উপাসনা করিয়া প্রাণত্যাগ করেন। (৭৬)
এই সময় মোগলগণ ত্রিপুরার সমতল ক্ষেত্র অধিকার পূর্বক তাহার বন্দোবস্ত ও রাজস্বের হিসাব প্রস্তুত করেন। যে সকল পরগণা সামন্ত নরপতি কিম্বা জমিদারদিগের অধিকার ভুক্ত ছিল তাহা ত্রিপুরা হইতে বিচ্ছিন্ন করা হইয়াছিল। কয়েকটি পরগণায় মুসলমান জমিদার নিযুক্ত করা হয়। তদ্ব্যতীত যে সকল স্থান মহারাজের খাসদখলে ছিল, মোগলগণ তাহাকে “সরকার উদয়পুর” আখ্যা প্রদান পূর্বক নুরনগর মেহেরকুল, প্রভৃতি চারটি পরগণায় বিভক্ত করিয়া তাহার বার্ষিক রাজস্ব ৯৯৮৬০ টাকা অবধারণ করেন। প্রায় দুই বৎসর কাল তাঁহারা এইরূপ ত্রিপুরার সমতল ক্ষেত্র শাসন করিয়াছিলেন।
.
টীকা
১. তেতৈয়ার প্রান্তবাহিনী স্রোতস্বতী অধুনা খোয়াই নামে পরিচিত।
২. আমরা বাল্যকালে এই সময়ের একটি গ্রাম্যগীতি শ্রবণ করিয়াছি, তাহার যে দুই একটি পদ অদ্যাপি স্মরণ রহিয়াছে, তাহা এস্থলে উদ্ধৃত করিতেছি,
রাজ্য ভাগল খাইলারে।
উদয়পুরের সিংহাসন কারে দিলারে।
পানিত কাঁদে পানি খাউরি,
শুকনায় কাঁদে উদ।
উদয়পুরের গোয়ালে কাঁদে
কারে দিবাম দুধ। ইত্যাদি ইত্যাদি।