উপসংহার
ইতিহাস বলে, নকল শিশুকে সত্যি ভেবে বাদশাহ আনন্দিত হয়েছিলেন। তিনি তাকে হারেমে মানুষ করবার আদেশ দিয়েছিলেন। তাঁর কন্যা জেবুন্নেসা শিশুটির নামকরণ করেছিলেন ‘মহম্মদীরাজ’। এই মহম্মদীরাজ পরিণত বয়স অবধি বেঁচে থাকেনি। তরুণ বয়সেই তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর কিছু আগে বাদশাহ রাঠোরদের কৌশল ধরে ফেলেন এবং বুঝতে পারেন প্রকৃত যশোবন্ত-পুত্র তাঁর নাগালের বাইরে।
ইতিহাস থেকে আরও অনেক কিছুই জানা যায়। শুধু জানা যায় না রত্নার অবশিষ্ট জীবনের কথা। কারণ সে তো ঐতিহাসিক চরিত্র নয়। তাকে নিয়ে ইতিহাস-রচয়িতাদের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। সে হারেমের কোন প্রকোষ্ঠে মাথা ঠুকেছে—কিংবা অনশনে প্রাণত্যাগ করেছে, কেউ বলতে পারে না। সে বাদশাহজাদাদের প্রথম যৌবনের কামবহ্নির আহুতি হবার প্রাক্কালে সেই ক্ষুদ্র ছুরিকা বীরসিংহের নির্দেশমতো হৃদপিণ্ডের ঠিক জায়গায় বিদ্ধ করেছিল কিনা তা-ও জানা নেই! ইতিহাস এক্ষেত্রে নিষ্করুণ রূপে স্তব্ধ—মৃতের মতো মুক।