ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

রথ সপ্তমী মাহাত্ম্য বর্ণন

।। রথসপ্তমীমাহাত্ম্যবর্ণনম্।।

।। রথ সপ্তমী মাহাত্ম্য বর্ণনম্।।

এই অধ্যায়ে আদিত্যদেব নৈমিত্তিক আরাধন ক্রম তথা রথ সপ্তমী মাহাত্ম্য বর্ণন করা হচ্ছে।।

নৈমিত্তিকং ততো বক্ষ্যে সজ্জাত্বা চ সমাসতঃ। সপ্তম্যাং গ্রহনে চৈব সংক্রান্তিষু বিশেষতঃ।।১।। শুক্লপক্ষস্য সপ্তম্যাং হবিভূত্বৈকদা দিবা। সম্যগাচম্য সন্ধ্যায়াং বারুণং প্রাণপত্য চ।।২।। ইন্দ্ৰিয়ানি চ সংযম্য কৃতং ধ্যাত্বা স্বপেদধঃ। দর্ভশয্যাগতো রাত্রৌ প্ৰাতঃ স্নাতঃ সুসংযতঃ।।৩।।

ভগবান্ বাসুদেব বললেন, এরপর নৈমিত্তিক আরাধন বিষয়ে সংক্ষেপে বলছি। সপ্তমীতে, গ্রহণকালে এবং বিশেষ করে সংক্রান্তিতে তথা শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে দিনে একবার হবিঃ ভোজন করে সংযমপূর্বক ধ্যান করবে এবং ভূমি শয্যা গ্রহণ করবে। রাত্রিতে কুশ শয্যা গ্রহণ করবে এবং প্রাতঃকালে স্নান করে সুসংযত হবে।। ১-৩।।

তত সন্ধ্যামুপাস্যাথ পূর্বোক্তং চ মনুংজপেৎ। জুহুয়াচ্চ তদা বহ্নি সূর্যাগ্নী পরিকল্প্য চ।।৪।। সূর্যাগ্নিকরণং বক্ষ্যে তপনং চ সমাসতঃ। অর্চনাগারমুল্লিখ্য প্রবিশ্যাচ জনেজনম।।৫।। প্রক্ষিপ্যস্তীর্য দভৈশ্চ কৃত্বা সাগ্রং প্রাদেশসংমিতম্।।৬।। তেন পাত্রানি সংপ্রেক্ষ্য সংশোধ্যাথ বিলোক্য চ। উদগগ্রে স্থিতে পাত্রে প্রজ্বাল্যাথোল্মুকেন চ।।৭।। পর্য গ্নিকরণং কৃত্বা তথাজ্যোত্যবনং ত্রিধা। পরিমূজ্য সুবাদীংশ্চ দভৈঃ সংপ্রক্ষয়েত্ততঃ।।৮।। জুহুয়াৎপ্রোক্ষ্য তান্বহ্নৌ তত্রার্কং পূর্ববদব্রজেৎ। অভূমৌ স্থিতপাত্রেন বিষ্টরেন তু পানিনা। দানেন যদুশার্দূল নান্তরিক্ষে স্থলে ক্বচিৎ।।৯।।

এরপর সন্ধোপাসনা করে পূর্বোক্ত মন্ত্রের যাগ করবে। সূর্যাগ্নি পরিকল্পিত করে অগ্নিতে হবন করতে হবে।।৪।।

সূর্যাগ্নি কিরণ ও তর্পণ বিধি আমি সংক্ষেপে বলবো। অর্চনা করার ঘরে উল্লেখ করে, অর্চনা করার যোগ্য ব্যক্তির সংগে সেখানে প্রবেশ করে জনকে সেখানে প্রক্ষিপ্ত করবে এবং দর্ভের আস্তরণ করে ক্রমানুসারে পাত্রাদি আলম্ভন করবে।। দুটি সাগ্র প্রাদেশপ্রমাণ কুশকে পবিত্র করে সমিধ প্রস্তুত করবে।।৫-৬।।

সেই কুশের দ্বারা পাত্র সম্প্রোক্ষণ, সংশোধন এবং বিলোকন করবে। উদগ্রপাত্রে পরে পর্যাগ্নিকরণ করে তিনপ্রকারে আজ্যোত্যবন করবে।। বাদি পাত্র পরিমার্জন করে দর্ভ দ্বারা সম্প্রোক্ষণ করবে।।৭-৮।।

প্রোক্ষণ করে অগ্নিতে হবন করবে। সেখানে অর্কের পূর্বদিকে গমন করবে। অভূমিস্থিতে পাত্রের দ্বারা, বিষ্টর দ্বারা, হস্তের দ্বারা, দানের দ্বারা অন্তরীক্ষে অথবা স্থলে, কদাপি অগ্নি গ্রহণ করবে না। পন্ডিতগণ দক্ষিণ হস্তে ধ্রুব গ্রহণ গক্ষিনেন স্রুবং গৃহ্য জুহুয়াৎপাবকং বুধঃ। হৃদয়েন ক্রিয়া সর্বাঃ কর্তব্যাঃ পূর্বচোদিতাঃ।।১০।। অকাদারভ্য সংজ্ঞার্থং দদ্যাতৄষ্ণী হুতিং স্থিতঃ। বরুণায় শতৈমার্ধে সপ্তম্যাং বরুণং যজেৎ।।১১।। যথাশক্ত্যা তু বিপ্রেভ্যঃ প্রদদ্যাৎ খন্ডবেষ্টকান্। দদ্যাচ্চ দক্ষিণাং শক্ত্যা প্রাপ্নোতি যাচিতং ফলম্।।১২। এবং বৈ ফাল্গুনে সূর্যং চৈত্রে বৈশাখ এব চ। বৈশাখে মাসি ধাতারমিন্দ্রং জেষ্ঠ খজেদ্রবিম্।।১৩।। আষাঢ়ে শ্রাবণে মাসি নভং ভাদ্রপদে যমম্। তথাশ্চযুজি পর্জন্যং ত্বষ্টারং কার্তিকে যজেৎ।।১৪।। মার্গশীর্ষে চ মিত্ৰং চ পৌষে বিষ্ণুং তজেদ্যদি। সংবৎ সরেন যৎপ্রোক্তং ফলমিষ্টং দিনেদিনে। তৎসর্বমাপুয়াৎক্ষিপ্ৰং ভক্ত্যা শ্রদ্ধান্বিতো ব্ৰতী।।১৫।।

করে অগ্নিকে হবন করেন। পূর্বোক্ত সকল ক্রিয়া একাগ্রচিত্তে করবে।।৯-১০।।

অর্ক থেকে আরম্ভ করে সংজ্ঞার্থ নিশ্চুপ ভাবে আহুতি প্রদান করবে মাঘ মাসে বরুণের উদ্দেশ্যে শত আহুতি দিতে হবে সপ্তমীতে।।১১।।

যথাশক্তি বিপ্রের জন্য খন্ড বেষ্টক দান করবে। নিজ শক্তি অনুসারে দক্ষিণাও দেবে, তাহলে যেকোনো ঈপ্সিত ফললাভ করবে।।১২।।

এইরূপে ফাল্গুনে ও চৈত্রমাসে সূর্য, বৈশখে ধাতা, জ্যৈষ্ঠে ইন্দ্র নাম্নী রবিব বন্দনা করবে। আষাঢ়ে ও শ্রাবণে নভঃ, ভাদ্রমাসে যম, অশ্বিনে পর্জন্য এবং কার্ত্তিকে ত্বষ্টাকে ভজনা করবে। অগ্রহায়ণ মাসে মিত্র, পৌষে বিষ্ণু নাম্নী সূর্যের ভজনা করলে শ্রদ্ধান্বিত ব্যক্তি সংবৎসর ধরে যথোক্ত ফল লাভ করেন।।১৩-১৫।।

মাঘস্য শুক্লপক্ষে তু পঞ্চম্যাং মৎকুলোদ্বহ। এবভক্তং সদাখ্যাতং যষ্টয়াং নক্তমুদাহৃতম্।।১৬।। সপ্তম্যামুপবাসং তু কেচিদিচ্ছন্তি সুব্রত। যষ্টয়াং কেচিদ্বদন্তীহ সপ্তম্যাং পারণং কিল।।১৭।। কৃতোপবাসঃ যষ্টায়াং তু পূজয়েদ্ভাস্করং বুধঃ। রক্তচন্দনমিশ্রৈস্ত করবীরৈশ্চ সুব্রত।।১৮।। গুগুলেন মহাবাহো সংযাবেন চ সুব্রত। পূজ্যয়েদ্দেব দেবেশং শংকরং ভাস্করং রবিম্।।১৯।। এবং হি চতুরো মাসান মাঘাদীন পূজয়েন্দ্রবিম। আত্মনশ্চচাপি শুদ্ধয়র্থং প্রাশনং গোময়স্য চ।।২০।। স্নানংচ গোময়েনেহ কৰ্তব্যং চাতুশুদ্ধয়ে। ব্রাহ্মণান্দিব্য ভৌমাংশ্চ ভোজয়েচ্চাপি শক্তিতঃ।।২১। জ্যেষ্ঠাদিম্বথ মাসেষু শ্বেতচন্দনমুচ্যতে। শ্বেতানি চাপি পুষ্পানি শুভগন্ধান্বিতানি বৈ।।২২।। কৃষ্ণগরুস্তথা ধূপো নৈবেদ্যং পায়সং স্মৃতম্। তেনৈব ব্রাহ্মণাংস্তুষ্টান ভোজয়েচ্চ মহামতে।।২৩।।

মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী বা ষষ্ঠী তিথিতে বা সপ্তমী তিথিতে রাত্রে উপবাস করে পারণ করবে। ষষ্ঠী তিথিতে উপবাস করে ধীমানগণ ভাস্করকে তথা ভগবান্ শংকরকে রক্তচন্দন, করবীপুষ্প, গুল দ্বারা পূজা করবে।।১৬-১৯।।

মাঘ মাস থেকে চারমাস যাবৎ রবি পূজন করবে। নিজ শুদ্ধির জন্য গোময় প্রাশন করবে ও গোময় দ্বারা স্নান করবে। তৎপরে ব্রাহ্মণ ভোজন করাবে। জ্যৈষ্ঠাদি মাস থেকে শ্বেতচন্দন, শ্বেতপুষ্প, কৃষ্ণ অগুরু, ধূপ, নৈবেদ্য, পায়স,দ্বারা ব্রাহ্মণ ভোজন করাবে।।২০-২৩।।

প্রাশয়েৎ পঞ্চগব্যং তু স্নানং তেনৈব পুত্রক। কার্তিকাদিযু মাসেষু অগস্তিকুসুমৈঃ স্মৃতম্।। ২৪।। ভূজয়েন্নরশার্দূল ধূপশ্চৈ বাপরাজিতেঃ। নৈবেদ্যং গুড়পূপাস্তু তথা চেক্ষুরসং স্মৃতম্।। ২৫।। তেনৈব ব্ৰাহ্মণাংস্তাত ভোজয়স্ব স্বশক্তিতঃ। কুশোদকং প্রাশয়েথাঃ সাণং চ কুরুশুদ্ধয়ে।।২৬।। তৃতীয়ে পারণস্যান্তে মাঘে মাসি মহামতে ভোজনং তত্র দানং চ দ্বিগুণং সমুদাহৃতম্।।২৭।। দেবদেবস্য পূজা চ কর্তব্যা শক্তিতো বুধেঃ। রথস্য চাপি দানং তু রথযাত্রা তু সুব্রত।।২৮।। ইত্যেমা কথিতা পুত্র রথাহ্রা সপ্তমী শুভা।।২৯।। মহাসপ্তমী বিশ্যাতা মহাপুন্যা মহোদয়া। যামুপোষ্য ধনং পুত্রন কীর্তিবিদ্যামবাপুয়াৎ। তথাখিলং কুবলয়ং চন্দ্ৰেন চ সমোচিযা।।৩০।।

পঞ্চগব্যের প্রাশন দ্বারা স্নান করে কার্তিক মাসেলঅগাস্তিকুসুম দ্বা ধূপ, অপরাজিতা নৈবেদ্য, গুড়, পূপ তথা ইক্ষুরস ইত্যাদি দিয়ে নিজ শক্তি মতো ব্রাহ্মণ সেবা করবে।।২৪-২৬।।

মাঘমাসের তৃতীয় পারণে ভোজন ও দান দ্বিগুণ করবে। যথাশক্তি দেবদেবের পূজা করবে। অতঃপর সপ্তমী তিথিতে রথযাত্রা করবে। এই পূণ্য তিথি রথসপ্তমী নামে খ্যাত। এই মহাপুণ্য তিথিতে পূজন করলে ধন-পুত্রাদি, বিদ্যাসহ অখিল জগৎ ভোগ করবে এবং চন্দ্রতুল্য গৌরব লাভ করেন।। ২৭-৩০।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *