ছোটো গল্প
উপন্যাস
প্রবন্ধ
ফিচার
কবিতা

যুগে যুগে দ্বৈরথ

যুগে যুগে দ্বৈরথ

প্রাচীন যুগে তো বটেই, বর্তমানে বিংশ শতাব্দীতেও দ্বন্দ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার বিবরণ নিতান্ত বিরল নয়। মধ্যযুগের ইউরোপে তো দ্বন্দ্বযুদ্ধ দস্তুরমতো জনপ্রিয় ছিল। আগ্নেয়াস্ত্রের প্রচলন হওয়ার পর তলোয়ারের সঙ্গে বন্দুক বা পিস্তল নিয়ে ডুয়েল বা দ্বন্দ্বযুদ্ধ লড়ার রীতি প্রচলিত হয়। একসময়ে এই দ্বৈরথ যুদ্ধ বিরাট সম্মানের ব্যাপার ছিল, বিভিন্ন দেশের রাজকীয় আইনও দ্বন্দ্বযুদ্ধের সমর্থন করত। পরে অবশ্য সব দেশেই ডুয়েল বা দ্বন্দ্বযুদ্ধ বেআইনি বলে ঘোষিত হয়।

তবু অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে উনবিংশ শতকের মধ্যবর্তী কাল পর্যন্ত দ্বন্দ্বযুদ্ধের ঘটনা প্রায়ই ঘটত। ওই ঘটনাগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বী যোদ্ধাদের উদারতা, বীরত্ব প্রভৃতি গুণের পরিচয় পাওয়া যেত, আবার কয়েকটি ঘটনা হিংস্র পাশবিকতায় কলঙ্কিত। কখনো কখনো রক্তাক্ত ভীষণতার পরিবর্তে দ্বৈরথ-রণ হাস্যরসের উদ্রেক করত, একথাও সত্যি। বিভিন্ন যুগে সংঘটিত এইসব বিচিত্র দ্বন্দ্বযুদ্ধের ইতিহাস থেকে কয়েকটি ঘটনা পরিবেশন করছি। আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।

প্রথমেই পরিবেশন করছি উনবিংশ শতকের স্যাডি আর গ্যালাস ম্যাগ নামে কুখ্যাত দুটি মেয়ের দ্বৈরথ রণের কাহিনি। মেয়েদের দ্বন্দ্বযুদ্ধের কথা শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিংবদন্তীর অ্যামাজন নামক নারীজাতি ছিল দুর্ধর্ষ যোদ্ধা; ইতিহাসের পৃষ্ঠায় রানি বডিসিয়া, জোয়ান অব আর্ক প্রভৃতি রমণী পুরুষের মতোই বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন এবং আমাদের দেশের ইতিহাসও চাঁদ সুলতানা, ঝাঁসীর রানি লক্ষ্মীবাঈ প্রভৃতি বীরাঙ্গনার কাহিনিতে সমুজ্জ্বল–

অতএব দ্বন্দ্বযুদ্ধের ইতিহাসে মেয়েদের নাম এমনকী অসম্ভব ব্যাপার?

ভূমিকা শেষ করে এবার কাহিনির আসরে নামছি। ১৮৬০ সাল, নভেম্বর মাস; আমেরিকার গৃহযুদ্ধ যখন শুরু হওয়ার উপক্রম করছে, সেই সময় নিউইয়র্ক শহরে ফোর্থ ওয়ার্ড নামে এক বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল উত্তেজনা দেখা দিল।

না, গৃহযুদ্ধ নয়– গৃহযুদ্ধের বিষয়ে সেখানকার সমাজবিরোধীদের বিশেষ মাথাব্যথা ছিল না। পূর্বোক্ত এলাকার চোর, গুণ্ডা, খুনি আর জুয়াড়ীদের উত্তেজনার বিষয়টা ছিল গ্যালাস ম্যাগ আর স্যাডি নামে দুটি মেয়ের দ্বন্দ্বযুদ্ধ। মেয়ে দুটি ছিল দুর্দান্ত দুই গুণ্ডাদলের নেত্রী, তাই কেবলমাত্র সমাজবিরোধীরাই উক্ত দ্বৈরথ সম্পর্কে উৎসাহ প্রকাশ করছিল।

লড়াই-এর প্রকাশ্য কারণ হচ্ছে এক গুণ্ডার সর্দার– স্লবারি জিম। তাকে বিবাহ করার জন্য উন্মুখ মেয়ে দুটি দ্বন্দ্বযুদ্ধের মাধ্যমেই মীমাংসার পথ বেছে নিয়েছিল। তবে আসল কারণটা অন্য। মুখে প্রকাশ না করলেও বিরোধের সত্যিকার কারণ কারো অজ্ঞাত ছিল না। লড়াইতে যদি ম্যাগ জিততে পারে, তাহলে স্যাডি তার শালটন স্ট্রিটের গুণ্ডার দল নিয়ে ম্যাগের দলে ভিড়ে যাবে, এটাই ছিল অবধারিত সত্য। বলাই বাহুল্য, স্যাডি আর তার দলবলকে বিজয়িনী ম্যাগের আধিপত্য স্বীকার করে নিতে হবে এবং বারি জিমকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করার অধিকারও স্যাডির থাকবে না। পক্ষান্তরে স্যাডি জিতলে জিম স্যাডির বিশ্বস্ত স্বামী হয়ে তার বিশাল দল নিয়ে স্ত্রীর গুণ্ডাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করবে।

অর্থাৎ ওই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারই মূল উদ্দেশ্য। আর সেই জন্যই স্লবারি জিমকে দলে টানার দরকার মনে করেছিল পরস্পরবিরোধী দুই গুণ্ডাদলের দুই নেত্রী। বিয়ের ব্যাপারটা নিতান্তই অজুহাত, একটা মিষ্টি ছুতো ছাড়া আর কিছু নয়।

এইবার দুই দলনেত্রীর পরিচয় দিচ্ছি। প্রথমেই শুরু করছি গ্যালাস ম্যাগকে নিয়ে। গ্যালাস ম্যাগ খাঁটি ইংরেজ। তার দেহের উচ্চতা ছয় ফুট অতিক্রম করেছে, ওজন ২১০ পাউন্ড। ম্যাগের কোমরে একদিকে ঝুলত একটা প্রকাণ্ড পিস্তল আর একদিকে ভীষণ দর্শন একটি কাঠের গদা। ম্যাগের একটা মদের দোকান ছিল। সেই দোকানের মধ্যে কোনো হতভাগা খরিদ্দার যদি গোলমাল বাধাত, তাহলে তার রক্ষা ছিল না। ম্যাগের গদার বাড়ি পড়ত খরিদ্দারের মাথায়, সে হত ধরাশায়ী। পরক্ষণেই তার কান কামড়ে ধরে টানতে টানতে তাকে দরজা পর্যন্ত নিয়ে বাইরে বার করে দিত ম্যাগ। এই সময়ে লোকটা বাধা দিলে ম্যাগ দাঁত দিয়ে লোকটার কান কেটে ফেলত। তারপর সেই কান সাজিয়ে রাখত একটা কাঁচের পাত্রে। এইভাবে ওই পাত্রটির মধ্যে স্থান গ্রহণ করেছিল বহু মানুষের ছিন্ন কান। ম্যাগের ক্ষমতার নিদর্শন হিসাবে সেই কানগুলোকে সাজিয়ে রাখা হত মদ্য পরিবেশন করার জন্য নির্দিষ্ট টেবিলের ঠিক পিছনেই।

স্যাডি ছিল ছিপছিপে হালকা গড়নের তরুণী। ৩০৪ নং ওয়াটার স্ট্রিটে অবস্থিত জন অ্যালেনের নাচঘরে সে যখন নাচত, তখন নর্তকীদের মধ্যে সে ছিল অন্যতমা সুন্দরী। পরে অবশ্য নাচ ছেড়ে দিয়ে সে গুণ্ডাদলের নায়িকা হয়। স্যাডির গুণ্ডাদলের নায়িকা হওয়ার ইতিহাস বড়ো বিচিত্র, কিন্তু এখানে সে প্রসঙ্গ আর তুলব না। ম্যাগের মতোই স্যাডির কোমরে ঝুলত পিস্তল, তবে গদা সে রাখত না। কোমরে পিস্তল ঝুলিয়ে একটা ছোটো জাহাজ নিয়ে সে জলপথে ডাকাতি করত। দস্যু সমাজে ম্যাগের চাইতে তার প্রতিপত্তি কম ছিল না। স্যাডির লড়াই করার কায়দা অদ্ভুত হঠাৎ মাথা নীচু করে প্রতিপক্ষের পেটে সজোরে টু মেরে তাকে ফেলে দিত, তারপর ভূপতিত শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার মাথা মাটিতে ঠুকতে থাকত বারংবার। শত্রু বশ্যতা স্বীকার না করা পর্যন্ত স্যাডি তাকে ছাড়ত না।

লড়াই-এর দিনে আবহাওয়া ছিল চমৎকার। ভিড় জমেছিল যথেষ্ট। যে দোকানটা লড়াই-এর আখড়া হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিল, সেই দোকানের নাম দেয়ালের গর্ত। অদ্ভুত নামের এই আস্তানার অধিকারিণী ছিল গ্যালাস ম্যাগ।

গুণ্ডাদের দুটি দলই সেখানে ভিড় জমিয়েছিল দ্বন্দ্বযুদ্ধ দেখার জন্য। বারি জিম নামে বিশেষ সম্মানিত ব্যক্তি একটি কাঠের পাটাতনের উপর স্থান গ্রহণ করেছিল।

লড়াই-এর সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছিল মধ্যাহ্নে। কিন্তু পরের অনেক আগে থেকেই উৎসাহী জনতা সেইখানে ভিড় জমিয়েছিল। দ্বন্দ্বযুদ্ধের ফলাফল নিয়ে বাজি ধরা হচ্ছিল। একসময় হঠাৎ দুই নেত্রীর সমর্থকদের মধ্যে লড়াই লাগার উপক্রম। কয়েকজনের মধ্যস্থতায় আবার শান্তি স্থাপিত হতেও দেরি হল না। পুলিশের ভয় ছিল না। পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ওই সময়ে কোনো কারণেই তাদের দোকানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পুলিশ তাই দোকানের এলাকার ধারে-কাছে ছিল না, চুপ করে বসেছিল থানার মধ্যে।

সাড়ে এগারটার সময়ে দুই নারীযোদ্ধা অকুস্থলে উপস্থিত হল। টেবিলে ভর দিয়ে তারা পরস্পরকে জরিপ করছিল জ্বলন্ত চক্ষে। জ্যাক দি র‍্যাট নামে এক কুখ্যাত গুণ্ডা এসেছিল স্যাডির মধ্যস্থ হিসাবে, ম্যাগের তরফ থেকে অনুরূপ অংশ গ্রহণ করেছিল সো ম্যাডেন নামে আর এক হতচ্ছাড়া খুনি। দুই মধ্যস্থের পরামর্শের ফলে স্থির হল লড়াইতে পিস্তল ব্যবহার করা চলবে না, গ্যালাস ম্যাগ তার গদা ব্যবহার করতে পারে এবং স্যাডি ইচ্ছা করলে অস্ত্র হিসাবে গ্রহণ করতে পারে একটা হুইস্কির বোতল।

নির্দিষ্ট অস্ত্র দুটি পানাগারের প্রধান টেবিলের পিছনে রেখে দেওয়া হল। যুযুধান দুই নারী বারি জিমের দিকে তাকিয়ে মধুর হাসি বিতরণ করল, তারপর পরস্পরের দিকে তাকাল জ্বলন্ত চক্ষে। উত্তেজনা বাড়ল সমবেত দর্শকদের মধ্যে।

অতঃপর শুরু হল বাগযুদ্ধ। রক্ত গরম না হলে লড়াই জমবে কেন?

ম্যাগ, বিদ্রূপজড়িত স্বরে স্যাডি বলল, তুমি একটা হোল্কা চর্বির পুঁটলি ছাড়া কিছু নও।

তোমার উপর থেকে যখন আমি হাত সরিয়ে নেব, ম্যাগ পরিষ্কার ইংরেজিতে শুদ্ধ উচ্চারণে বলল, তখন তোমার রক্তমাংস দিয়ে লোকে ইঁদুরের টোপ তৈরি করবে। বুঝেছ স্যাডি?

ম্যাগ হাত বাড়িয়ে তার গদা টেনে নিল, স্যাডি তুলল হুইস্কির বোতল। তারপর ঘরের মধ্যে বৃত্তাকারে ঘুরতে লাগল যুযুধান দুই নারী।

হঠাৎ পরস্পরকে লক্ষ্য করে তারা এল। প্রথম রক্তদর্শন করল স্যাডি। লঘুচরণে বিড়ালীর মতো গদার আঘাত এড়িয়ে বোতল তুলল স্যাডি। উদবিগ্ন দৃষ্টিতে বোতলের দিকে তাকাল ম্যাগ। স্যাডি কিন্তু বোতল চালাল না, অন্য হাতটা বাড়িয়ে ম্যাগের গাল আঁচড়ে দিল। লম্বা লম্বা ধারাল নখের আঘাতে ম্যাগের গাল বেয়ে নামল রক্তের স্রোত। স্যাডির সমর্থকবৃন্দ উল্লাসে চিৎকার করে উঠল।

স্যাডি একটু পিছিয়ে গেল। ম্যাগ আবার গদা চালাল। স্যাডি সরে গিয়েও সম্পূর্ণভাবে আঘাত এড়িয়ে যেতে পারল না, গদা তার মাথা ছুঁয়ে ছিটকে গেল। মুহূর্তের জন্য স্যাডির পা টলে গেল। ম্যাগ এলোপাথাড়ি গদার বাড়ি মারতে শুরু করল। স্যাডি আর দাঁড়াতে পারল না, প্রচণ্ড প্রহারে জর্জরিত হয়ে পড়ে গেল মেঝের উপর। সঙ্গেসঙ্গে স্যাডিকে লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিল ম্যাগ, তার হাঁ-করা মুখের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা দাঁতগুলো হিংস্র আগ্রহে এগিয়ে এল স্যাডির কানের দিকে। কিন্তু হালকা গড়নের স্যাডি চটপট গড়িয়ে সরে গেল শত্রুর নাগালের বাইরে, পরক্ষণেই তার হাতের বোতল ম্যাগের মাথার খুলিতে পড়ে চুরমার হয়ে ভেঙে গেল। ম্যাগের মাথা বেয়ে নেমে এল গরম রক্তের ধারা। মার খেয়ে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয় ম্যাগ, সে স্যাডির শার্ট চেপে ধরে একটানে ছিঁড়ে ফেলল। দুটো দলই উল্লাসে চিৎকার করে দলনেত্রীদের সমর্থন জানাল।

ম্যাগ টলতে টলতে উঠে দাঁড়াল। স্যাডি মাথা নীচু করে ছুটে এল ম্যাগের দিকে। সেই ঢুঁ পেটে লাগলে ম্যাগ সেখানেই শুয়ে পড়ত। শেষ মুহূর্তে কোনোরকমে সরে গিয়ে আত্মরক্ষা করল ম্যাগ। নিজের গতিবেগ সামলাতে না পেরে স্যাডি গিয়ে পড়ল একটা কাঠের মূর্তির উপর। গুরুভার কাষ্ঠমুর্তি এতটুকু নড়ল না, মাথায় চোট পেয়ে মেঝের উপর শয্যাগ্রহণ করল স্যাডি, তার চৈতন্য তখন প্রায় অবলুপ্ত।

ম্যাগের অবস্থাও ভালো নয়, মাথার ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে ভীষণভাবে তবু নিজেকে সামলে নিয়ে আহত বাঘিনীর মতো স্যাডির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁ কানটা কামড়ে ধরল ম্যাগ, তারপর সেই অবস্থাতেই তাকে টানতে টানতে নিয়ে চলল দরজার দিকে। দুই হাতে প্রাণপণে চড়-ঘুষি চালিয়েও স্যাডি নিজেকে মুক্ত করতে পারল না। দরজার উপর দাঁড়িয়ে ম্যাগ যখন প্রহারে জর্জরিত স্যাডিকে বাইরে ফেলে দিল, তখন তার মুখের মধ্যে চলে এসেছে স্যাডির কান।

ম্যাগ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কানটা হাতে তুলে নাড়তে নাড়তে জানিয়ে দিল, দ্বন্দ্বযুদ্ধে সে জয়লাভ করেছে।

ম্যাগের সমর্থকবৃন্দ আনন্দে ফেটে পড়ল। হই-হট্টগোল, চিৎকার। স্লবারি জিম পাটাতনের সিংহাসন থেকে নেমে এসে গ্যালাস ম্যাগকে অভিনন্দন জানাল। সমবেত দর্শকদের মধ্যে যারা স্যাডির উপর বাজি ধরেছিল, তারা বিষণ্ণ বদনে টাকা গুনে দিল বিজয়ী পক্ষের হাতে।

দোকানঘরে যখন. নরক গুলজার হচ্ছে, সেই সময় কিড বার্ণ, স্ম্যাচেম আর জ্যাক নামে স্যাডির দলভুক্ত তিনটি গুণ্ডা নেত্রীর আহত কনের পরিচর্যা করে ক্ষতস্থান বেঁধে দিল, তারপর তাকে সযত্নে কাঁধে তুলে নিজেদের আস্তানার দিকে যাত্রা করল।

দ্বন্দ্বযুদ্ধের আসরে যবনিকা পড়লেও কাহিনি এখানেই শেষ নয়। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, লড়াই-এর পর কয়েকদিনের মধ্যেই ম্যাগ আর স্যাডির মধ্যে দারুণ বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে উঠল এবং দুজনে মিলে স্নবাবি জিমকে হত্যার চক্রান্তে লিপ্ত হল। প্যাটসি নামে এক দুর্ধর্ষ খুনি গুণ্ডাকে বলা হল জিমকে হত্যা করতে। কিন্তু স্লবারি জিম পাকা শয়তান, তাকে খুন করতে গিয়ে প্যাটসি নিজেই খুন হয়ে গেল জিমের হাতে। জিম বুঝল, এখানে থাকলে মৃত্যু অবধারিত। সে পালিয়ে গিয়ে সৈন্যদলে যোগ দিল। পরে সে কনফেডারেট পদাতিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন হয়েছিল। এদিকে পুলিশের সঙ্গে যুদ্ধে গ্যালাস ম্যাগের দলে বারোটা গুণ্ডা মারা পড়ল, সাতান্ন জন ধরা পড়ে গারদে ঢুকল। আচম্বিতে দলের এমন ভয়াবহ বিপর্যয়ে গুণ্ডামিতে ইস্তফা দিল গ্যালাস ম্যাগ। ফলে সমগ্র এলাকায় গুণ্ডাদের একমাত্র রানি হয়ে বসল বসল স্যাডি। পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘকাল লড়াই করে স্যাডি তার অস্তিত্ব বজায় রেখেছিল। পুলিশকে ফাঁকি দিতে পারলেও মহাকালের বিধানকে লঙ্ঘন করতে পারেনি স্যাডি; ১৮৯২ সালে হাডসন নদীতে পাওয়া গেল তার মৃতদেহ। মৃত্যুকালে স্যাডির বয়স হয়েছিল ষাট। এই বয়সেও তার দেহের গড়ন ছিল অতিশয় বলিষ্ঠ।

[যুগে যুগে দ্বৈরথ এর বাকি অংশ লালমাটি প্রকাশনের ময়ূখ চৌধুরী রচনা সমগ্র ১ম খন্ডের ডুয়েলএর অন্তর্গত।]

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *