এই তীর্থধামে মিলনের ব্রজে বেজে ওঠে মাথুরের বিদায়-বাঁশি। যে-বিরহ আনে অশ্রু, সেই বিরহই জ্বালায় আগুন। যে-মেঘ ফুল ফোটায়, সেই মেঘেই থাকে অশনি। বিরহের তপস্যা যে-পুরুষকে করেছে উদাসীন সন্ন্যাসী, মিলনের বিলাস-কুঞ্জে সে তার প্রিয়ার মৃত্যু কামনা করতে পারে না। তাই নির্মম হয়ে সে চলে যায় নিরুদ্দেশের পথে। পথের প্রান্তে লুটিয়ে কাঁদে তার বিরহিণী প্রিয়ার মতো তার গানের সুর–
(গান)
যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই কেন মনে রাখ তারে? ভুলে যাও মোরে ভুলে যাও একেবারে॥ আমি গান গাই আপনার দুখে, তুমি কেন আসি দাঁড়াও সুমুখে, আলেয়ার মতো ডাকিয়ো না আর নিশীথ-অন্ধকারে॥ দয়া করো মোরে দয়া করো, আর আমারে লইয়া খেলো না নিঠুর খেলা; শত কাঁদিলেও ফিরিবে না আর সেই শুভ লগনের বেলা। আমি ফিরি পথে, তাহে কার ক্ষতি, তব চোখে কেন সজল মিনতি? আমি কি ভুলেও কোনোদিন এসে দাঁড়ায়েছি তব দ্বারে॥ ভুলে যাও মোরে ভুলে যাও একেবারে।