মৌর্য – ৯০

৯০

অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল মহামন্ত্রী চাণক্যের এক গুপ্তচর। অনুষ্ঠান শেষ হতেই কানের কাছে এসে বলল, জরুরি কথা ছিল, আচার্য।

আচার্য নিরিবিলি জায়গায় চলে এলেন। খুবই অনুচ্চ স্বরে গুপ্তচর যা জানাল, তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হচ্ছিল আচার্যের মুখমণ্ডলজুড়ে। চক্ষু বিস্ফারিত হচ্ছিল বারবার। ক্রমে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলেন। সব শুনে বললেন, তুমি যাও, তাদের গতিবিধির ওপর চোখ রাখো।

অনুষ্ঠান থেকে ফিরেই তিনি তাঁর দ্বিতীয় গোয়েন্দাকে সংবাদ পাঠালেন। সে এসে জানাল, সংবাদটা সঠিক। ক্ষুব্ধ এক সেনাপতি যুদ্ধ প্রস্তুতির কথা তাঁকেও বলেছেন।

সে সেনাপতির সাথে রাজার খারাপ সম্পর্কের কারণ কী?

যুদ্ধজয়ের পরও অভিনন্দিত না হয়ে অপমানিত হয়েছেন, উচ্চপদ ও ক্ষমতাবলয় থেকে ছিটকে পড়েছেন। রাজার কাছে ন্যায়বিচার চাইতে গিয়ে তৎকর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন।

তাহলে ঠিক আছে। তার সংবাদ সত্য হবে। তবু যাচাইয়ের সুযোগ ছিল কি?

ছিল আচার্য। রাজপরিবারের বিদ্বেষপ্রবণ এবং রাজার ওপর অসন্তুষ্ট এক সদস্য, দাসীপুত্র বলে ঘৃণ্য, আমি তাঁকে চিনি। তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজাকে উৎখাতের। রাজধানী ত্যাগ করলেই তা দখল করে নেওয়ার ইচ্ছা তাঁর।

সম্রাটের সঙ্গে তার যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া কি সম্ভব?

সম্ভব, আচার্য।

তুমি জরুরিভাবে তাকে নিয়ে এসো।

এখানেই নিয়ে আসব?

না, তুমি তাকে বিশ্রাম কুটিরে নিয়ে এসো। পোশাকটা যেন পরে আসে কুটিরবাসী মানুষের।

মহামন্ত্রী চাণক্য বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন। কাউকে বলবেন বা পরামর্শ করবেন, এমন অবস্থা নেই। সবেমাত্র বসন্ত উৎসব শেষ হয়েছে। তার রেশ আরও কয়েক দিন থাকবে। বিশেষ করে সম্রাট-সম্রাজ্ঞী বসন্তকালটাকে শেষাবধি পুরোমাত্রায় উপভোগ করতে চাইবেন। যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার মতো একটি অপ্রিয় খেলায় সম্রাট এ মুহূর্তে প্রস্তুত বলে মনে হয় না। তবু কারও সঙ্গে তাঁর পরামর্শ করা দরকার। তিনি ভেবে পরে সিদ্ধান্তে এলেন, এ ব্যাপারে কেবল আচার্য ভদ্রবাহুর সঙ্গেই আলোচনা হতে পারে।

দক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলোর মধ্যে সভ্যতার আলো নেই। পরস্পর যেমন হানাহানিতে লিপ্ত, তেমনি নিজের রাজ্যের ভেতরেও নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাত। উচ্চাভিলাষী অমাত্য, সেনাপতি, মন্ত্রী- সবার মধ্যেই ক্ষমতার লোভ। দক্ষিণে সম্পদের অজস্র সমাহার। কলিঙ্গ দেশের ইন্দ্রবান অঞ্চলে পাওয়া যায় দামি হীরা এন্দ্রবাণক। মুলাটি পুষ্পকবর্ণ তার। মনোলোভা। মণিমস্তক পর্বতে আছে মণিমস্তক এবং কটঙ্গীতে উৎপন্ন হয় শ্রীকটনক। এ ছাড়া কৌট ও মালেয়ক মণি সহজলভ্য মালয় সাগর ও রোহণ পার্বত্য এলাকায়। তাম্রবণিক মুক্তা সেখানে নদী মোহনায় এবং পাণ্ড্যকবাটক পাণ্ড্যদেশের মলয় কোটি পর্বতে পাওয়া যায়। সিংহল দ্বীপের ময়ূরগ্রামের কূলা নদীতে যে মণি পাওয়া যায়, তার বাজার দক্ষিণাত্যেই। সাপের ফণায় যে মণি-মাণিক্য থাকে, তা-ও এখানেই মেলে। ভারতবিখ্যাত মাহিষক বস্ত্র কুন্তল দেশের রাজধানী মহিশুরে উৎপন্ন হয়। সমুদ্রজাত সম্পদের শেষ এখানে। দাক্ষিণাত্যে আক্রমণ করে প্রচুর সম্পদ আহরণ করা যায়। গ্রিকদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেও যা পাওয়া যায় নি, সৈন্যরা দাক্ষিণাত্য আক্রমণ করে সহজেই তার শতগুণ বেশি সম্পদ লাভ করবে। সৈন্যরা সম্পদ লাভ করার অর্থ হচ্ছে দেশীয় বাজারে যাবে এ অর্থ। কেনাকাটায় রাজস্ব হিসেবে সম্পদের বড় একটা অংশ যাবে রাজকোষে। সম্রাটকে তা বোঝানো যাবে। আরেকটা ব্যাপার, সীমান্তে শত্রু রেখে যেমন নিরাপদবোধ করা যায় না, তেমনি শত্রুরাজ্য জয়ে নিরাপত্তার পাশাপাশি গৌরব লাভ করা যায়।

শত্রু সেনাপতি সামনে এসে দাঁড়াতেই চাণক্য রুক্ষ কণ্ঠে বলে উঠলেন, তুমি তোমার নিজের রাজার পক্ষ ত্যাগ করছ, আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে না, তার প্রমাণ কী? জানো তো আমাদের বিচারে তার শাস্তি হলো মৃত্যু।

মৃত্যুর চেয়ে ভয়ংকর আর অপমানকর জীবন বয়ে চলেছি, আচার্য। যে রাজ্যে ন্যায়বিচার নেই, জোর-জুলুম, অত্যাচার-উৎপীড়ন নিত্যসঙ্গী, সে রাজ্যের রাজার অনুগত থেকে পাপকার্যে প্রবৃত্ত হতে চাই না। আমরা শুনেছি, মৌর্য সাম্রাজ্যে ন্যায়বিচার আছে। সম্রাট প্রজাপীড়ন করেন না, তাঁর অমাত্য-সেনাপতিরা কাজের উপযুক্ত স্বীকৃতি ও সম্মানী পান। একজন অমাত্য ও সেনাপতির এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার নেই।

আমরা তোমার রাজ্য দখল করে নিলে তোমার কী লাভ হবে?

প্রজাগণ রাজার পীড়ন থেকে রক্ষা পাবে। আমি ন্যায়বিচার পাব, তার চেয়ে বেশি কিছু চাই না।

রাজার সৈন্যসামন্ত কত?

আচার্য, তা এক রহস্য।

কী রকম?

আমি নিজেও জানব না আমার অধীনে কত সৈন্য আছে। প্রধান সেনাপতি রাজার আদেশে প্রায় প্রতিদিন সেনা পরিবর্তন ও হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটান। রাজ্যের সমর্থবান যুবক-প্রৌঢ় কেউ বাদ নেই…সবাইকে সৈন্য হিসেবে কাজ করতে হয়।

আমাদের তাতে তো কোনো সমস্যা নেই?

কেন থাকবে না, আচার্য?

ওদের ক্ষমতায় ঘাটতি আছে?

তা নেই। তাদের দক্ষ করে তোলা হয়েছে আর এরা যুদ্ধ করতেই উৎসাহী। কারণ, আর্থিকভাবে রাজার কাছ থেকে কিছুই পায় না এরা। শত্রুসম্পত্তি লুটপাট করে যা পায়, তা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে।

কেন? তোমাদের স্থায়ী সেনাবাহিনী নেই? এরা বেতন পায় না?

আছে। ওরা সংখ্যায় খুব কম। এরা রাজার নিরাপত্তায়ই ব্যস্ত থাকে।

পুরো সেনাবাহিনী?

রাজার অনেক শত্রু। অনিয়মিত সৈন্য তাঁর ধারেকাছে যেতে পারে না। রাজা কোনো দিকে বের হবেন বলে ঢাক পেটালে দিনের পর দিন মানুষ ঘর হতে বের হয় না। আবার ঢাক পেটালেই শুধু বের হতে পারে।

খুব অত্যাচারী তোমাদের রাজা।

অতিষ্ঠ জনগণ, আচার্য।

রাজার দুর্বল দিক কী কী?

চারিত্রিক না শক্তিগত?

দুটোই বলো।

তিনি শিকার, জুয়া, মদ্যপান ও নারী সম্ভোগে আসক্ত। আর যদি শক্তির কথা বলেন, অজস্র সৈন্য রয়েছে তার। তবে বোঝার উপায় নেই। কারণ, সৈন্যরা সাধারণ মানুষের বেশে থাকে।

তোমাকে সৈন্যশক্তির কথা বলি নি। সক্ষমতা বা বল সম্পর্কে বলো।

সেনাপতি চাণক্যের কথা বুঝতে পারলেন না। হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন।

চাণক্য বললেন, তোমার বিদ্যার জোর দেখছি কম। আরে বোকা, তিন শক্তির কথা বলছি আমি। জানো তুমি তিন শক্তি কী?

সেনাপতি এবারও হাবার মতো তাকিয়ে রইলেন। তক্ষশীলায় রাজপুত্রদের পাঠদানের মতো চাণক্য বললেন, মন্ত্রশক্তি, প্রভুশক্তি আর উৎসাহশক্তি। জ্ঞানের মাধ্যমে যোগ ও ক্ষেম সাধনের সামর্থ্যকে বলে মন্ত্রশক্তি। কোষ ও দণ্ডের মাধ্যমে যোগ ও ক্ষেম সাধনের সামর্থ্যকে বলা হয় প্রভুশক্তি। আর বিক্রমের মাধ্যমে যোগ ও ক্ষেম সাধনের সামর্থ্যকে বলা হয় উৎসাহশক্তি। জেনে রাখো, সিদ্ধিও তিন রকম—মন্ত্রসিদ্ধি, প্রভুসিদ্ধি ও উৎসাহসিদ্ধি (অর্থশাস্ত্র)।

আমি বুঝতে পেরেছি, আচার্য।

কী বুঝতে পেরেছ?

মন্ত্র সামর্থ্যে মন্ত্রসিদ্ধি, প্রভুসামর্থ্যে প্রভুসিদ্ধি, আর…

বুঝতে পেরেছি, আর বলার দরকার নেই। এখন বলো, তোমাদের রাজার শক্তি কিসে?

আচার্য, রাজা যদি তার অমাত্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন, শারীরিকভাবে নিপীড়ন করেন কিংবা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন, তাহলে তার সব শক্তি নিষ্ফল বা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। মন্ত্র কিংবা কোনো প্রভু তাকে রক্ষা করতে পারে না।

ঠিক বলেছ, তোমাকে যতটা বোকা ভেবেছিলাম, তুমি ততটা নও। তোমাকে সম্রাটের সামনে উপস্থিত করা হবে, তুমি সেখানে বুদ্ধিমানের মতো কথা বলবে, না হয় মৃত্যুই তোমার অনিবার্য নিয়তি। আরেকটা কথা, রাজপুত্র সম্পর্কে কিছু বললে না।

আচার্য, দক্ষিণের রাজপুত্ররা রাজবিদ্বেষী নয়, এরা রাজানুগত্য দেখিয়ে নিজেরা ক্ষমতা ভোগ করে। আমি বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, আমাদের রাজপুত্র বরাবরই মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতি বিদ্বেষী। তাকে সমুচিত শাস্তি দেওয়া দরকার।

সম্রাটকে এ কথাও বলবে।

.

এদিকে এন্টিওকাস কিছুটা আস্থার সংকটে পড়ে গেছেন। স্ত্রীর কথায় এন্টিগোনাস এবং তার পুত্র দিমিত্রিয়াসের সঙ্গে আঁতাত করতে গিয়ে পিতার শ্যেনদৃষ্টিতে আছেন বলে মনে করছেন। স্ত্রীর ওপরও খেপে উঠেছেন। স্ত্রী বললেন, এ নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমি যা করেছি, ঠিক করেছি। সেলুসিড বাহিনী ইন্ডিয়ার মতো দিমিত্রিয়াসের কাছে হেরে গেলে পরিণাম কী দাঁড়াত। পিতার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী তুমিই। কাজেই তোমাকে পায়ে ঠেলবে না।

তুমি ভুলে যেয়ো না, আমার এক ভাই রয়ে গেছে।

তাকে তুমি কৌশলে শেষ করে দাও। অবশ্য আমি মনে করি, তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই। ব্যবসা করেই জীবন কাটিয়ে দিতে চায়।

তা আর সম্ভব নয়, এখন পাপের বোঝা বাড়ানো ঠিক হবে না। জয়লাভ করে সেলুসিডরা তুঙ্গে আছে।

সুযোগ অবশ্যই আসবে, ভুল ওরাও করবে। শুনেছি সিরিয়ার আরেক রাজকুমারীকে হস্তগত করেছে তোমার বাবা।

ঠিক শুনেছ। সে দিমিত্রিয়াসের কন্যা। মজার ব্যাপার হলো, তার নামও স্ট্রেটোনিস।

আমার নামে নাম?

তাই তো শুনলাম।

বুড়ো ওই মেয়েটার কী করবে? সে তো…

হয়েছে, এবার থামো।

স্ট্রেটোনিস স্বামীকে কিছু না বলে স্বগত উক্তি করল, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবে।

তা শুনে এন্টিওকাস মনে মনে বললেন, তাহলে কি সে এখনো মনে রেখেছে, তা না হলে মেয়েটাকে সহ্য করতে পারছে না কেন?

.

মেগাস্থিনিস সেলুসিয়ায় পৌঁছে প্রথমে সম্রাট সেলুকাসকে এন্টিগোনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভের জন্য অভিনন্দন জানালেন। সেলুকাস অভিনন্দনের জবাবে দূতকে বললেন, আমি শুনেছি তুমি সেখানে পপুলার হয়ে উঠেছ। চন্দ্রগুপ্ত তোমাকে খুব পছন্দ করছে।

ইন্ডিয়া এক অদ্ভুত জায়গা, সম্রাট।

অদ্ভুত কী দেখলে, সে কথা আগে বলো।

নুলো পর্বতে উল্টো পায়ের মানুষেরা বাস করে। এদের প্রতি পায়ে আটটি করে আঙুল। কুকুরের মতো মাথা। পশু চামড়া পরিধান করে। ঘেউ ঘেউ করে কথা বলে। হাত লম্বা লম্বা নখরযুক্ত।

বলো কী!

বড়ই অদ্ভুত।

আর কী কী দেখলে?

লোমশ মানব। গাছে বাস করে। লাফিয়ে লাফিয়ে ডাল থেকে ডালে গমন করে। ফলমূল খায়। অন্য কিছু খায় না, এমনকি জলও পান করে না। বস্ত্র পরে না।

মানুষ এরা?

দেখতে সে রকমই। আর একশ্রেণির মানুষ আছে, এরা দার্শনিক। এরা দুভাগে বিভক্ত। এক ভাগ হচ্ছে সারমনাই। এরা নগরের বাইরে বাস করে। গাছের বাকল পরিধান করে। কোনো পাত্রে জল পান করে না, দুহাতে কোষ করে জলপান করে। সারা জীবন অবিবাহিত থাকে। অপর ভাগটিকে বলে ব্রাচমনাই। এরা খুব স্বাধীন জীবন যাপন করে। সারা জীবন উলঙ্গ থাকে। বলে যে দেহটা হচ্ছে আত্মার দেয়াল, দেয়াল ঢাকবার প্রয়োজন কী? মাছ-মাংস খায় না, ফল খায়, তবে গাছ থেকে পেড়ে নয়, গাছের নিচে থেকে কুড়িয়ে। বিয়ে করে না। বড়ই সংযমী এরা।

তুমি কি ভদ্রবাহুদের কথা বলছ?

ঠিক ধরেছেন, সম্রাট। এদের নারীরাও সংযমী, উলঙ্গ থাকে, তবে বুদ্ধিমতী। একজনকে আমি চিনি। গ্রিক জানে। নাম শর্মিলা।

গ্রিক জানে! অবাক হন সম্রাট।

খুবই ভালো গ্রিক জানে। আমাকে সহযোগিতা করে।

ভদ্রবাহুর সঙ্গে তোমার সম্পর্ক কেমন?

প্রথমে ভালো লাগত না। একজন দার্শনিক উলঙ্গ অবস্থায় সম্রাটের দরবারে বিচরণ করেন, বড় বিশ্রী মনে হতো। এখন স্বাভাবিক মনে হয়। বিবস্ত্র থাকার কারণগুলো বেশ যৌক্তিক। শর্মিলা আমাকে বলেছে, বস্ত্রের কাজটা করবে মন। লজ্জা থাকে মনে, এ ছাড়া সবাই এভাবে চললে সমস্যা কোথায়? শর্মিলা বলে, সবকিছুই মানসিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে।

তাহলেও ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে নি, বললেন সম্রাট।

শর্মিলার সঙ্গে আপনার আলাপ হলে এ মনোভাবের পরিবর্তন হতো, সম্রাট।

আর কী দেখলে?

কৌকাসোসে উপজাতিরা থাকে। এরা প্রকাশ্যে সংগম করে এবং আত্মীয়ের মাংস খায়।

এরা কি বানর প্রজাতির মানুষ?

এ কথার জবাব না দিয়ে মেগাস্থিনিস বললেন, শর্মিলা বলেছিল, তুমি সেখানে যাবে না, ওরা তোমার মাংসও খাবে।

সম্রাট দেখলেন, মেগাস্থিনিস বারবারই শর্মিলার কথা বলছেন। মনে মনে বললেন, বেচারা। রীতি মোতাবেক মেগাস্থিনিস সম্রাটের কাছে একটি অফিশিয়াল রিপোর্ট দাখিল করলেন। পরে একটি ছোট প্যাকেট সম্রাটের হাতে দিয়ে বললেন, সম্রাট, চন্দ্রগুপ্ত এটি আপনার জন্য পাঠিয়েছেন।

সম্রাট স্মিতহাস্যসহকারে এটি গ্রহণ করলেন। তাঁর মনে উদয় হলো নতুন রাজকুমারীর হাস্যোজ্জ্বল মুখচ্ছবি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *