মা কষ্ট পেলে আমাদের কিছু যায় আসত না
আমার একটি মা ছিল
চমৎকার দেখতে একটি মা,
একটি মা আমার ছিল
মা আমাদের খাওয়াত শোয়াত ঘুম পাড়াত,
গায়ে কোনও ধুলো লাগতে
দিত, পিঁপড়ে উঠতে না,
মনে কোনও আঁচড় পড়তে দিত না
মাথায় কোনও চোট পেতে না।
অথচ
মাকে লোকেরা
কালো পেঁচি বলত,
আমরাও।
বোকা বুদ্ধু বলে গাল দিতাম মা’কে।
মা কষ্ট পেত।
মা কষ্ট পেলে আমাদের কিছু যায় আসত না।
আমাদের কিছুতে কিছু যায় আসত না,
মা জ্বরে ভুগলেও না,
মা জলে পড়লেও না,
মা না খেয়ে শুকিয়ে কাঁটা হয়ে গেলেও না
পরণের শাড়ি ছিঁড়ে ত্যানা
হয়ে গেলেও না,
মা’কে মা বলে মনে হত, মানুষ বলে না।
মা মানে সংসারের ঘানি টানে যে
মা মানে সবচেয়ে ভাল রাঁধে যে, বাড়ে যে,
কাপড় চোপড় ধুয়ে রাখে গুছিয়ে রাখে যে
মা মানে হাড় মাংস কালি করে সকাল সন্ধে খাটে
যে
যার খেতে নেই, শুতে নেই, ঘুমোতে নেই
যার হাসতে নেই
যাকে কেবল কাঁদলে মানায়
শোকের নদীতে যার
নাক অবদি ডুবে থাকা মানায়
মা মানে যার নিজের কোনও জীবন থাকে না।
মা’দের নিজের কোনও জীবন থাকতে নেই!
মা ব্যাথায় চেঁচাতে থাকেলে বলি
ও কিছু না, খামোকা
আহ্লাদ!
মরে গেলে মাকে পুঁতে রাখে মাটির তলায়,
ভাবি যে বিষম এক কর্তব্য পালন হল
মা নেই।
আমাদের এতেও কিছু যায় আসে না।