প্রথম খণ্ড - মানুষের ঘরবাড়ি
দ্বিতীয় খণ্ড - মৃন্ময়ী
তৃতীয় খণ্ড - অন্নভোগ

মানুষের ঘরবাড়ি – ৪

চার 

পড়াশোনার ব্যাপারটা আমাদের এখনও কিছু তেমন ঠিকঠাক হয়নি। দেশ ছেড়ে আসার সময় আমার কিছু বই সম্বল ছিল। ইতিহাস, ভূগোল, অঙ্ক সব ক্লাসেই চলবে এমন ভেবে বাবা পাকাপাকিভাবে বাক্সে তুলে রেখেছিলেন। দুটো একটা বের করে নিতে বলেছেন। বাবার ধারণা ঠিকঠাক হয়ে বসতে না পারলে পড়াশোনায় মন বসবে না আমার। 

বিউগিল বাজলেই বুঝতে পারতাম পাঁচটা বাজে। সকাল হয়ে গেছে। ব্যারাকে ফল-ইনের সময়। এবারে দূরে মানুষজন দেখতে পাব বলে, বারান্দায় এসে দাঁড়াতাম আমরা। বাছারি ঘরটার টিনগুলি বাইরে টানা। ছায়া পড়লে বারান্দা হয়ে যায়। ঘরটার একমাত্র দরজা খলপা দিয়ে তৈরি। একটা তেলতেলে বাঁশের খুটি— ঝাঁপটা ধরে রাখার জন্য ঠ্যাকার কাজ করে। একপাশে ছোট্ট বেড়া দিয়ে মাকে ঘরের সংলগ্ন রান্নাঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোবরে লেপা উনুনের পাশে আছে বড় একটা মেটে হাঁড়ি কাঁঠালের বিচি ভরা। সকালের জলখাবার গোনাগুনতি কাঁঠাল বিচি ভাজা। কারো ভাগে একটা কম হতে পারত না, বেশি হতে পারত না। বাবা কখনও ছেলেমানুষের মত হাত পেতে বলতেন, বেশ খেতে। আর দুটো দাও না। 

মা নির্বিকার। এমন উদাসীন মা, একটা আর কথা বলত না বাবার সঙ্গে। বাবা ভয়ে ভয়ে উঠে যেতেন। 

তখন বাদশাহী সড়কের ওপর দিয়ে মার্চ করে যেত পুলিসেরা। কখনও ডবল মার্চ, কখনও কুইক মার্চ করে তারা যাচ্ছে। আমার ভীষণ ইচ্ছে হত, বড় হলে আর স্টেশনমাস্টার হয়ে কাজ নেই। বরং পুলিস হব। বাবা বলেছেন, এতে খুব উন্নতি। খুব বড় সাহেবসুবা হতে বাধে না। কাজ দেখাতে পারলে দারোগা পর্যন্ত হওয়া যায়। কোনো হাবিলদার বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় ডাকতেন, ঠাকুরমশাই আছেন। বাবার সঙ্গে কি সব কথাবার্তা হত। এবং কথাবার্তা শেষে বাবাকে মনে হত খুব অসহায়। এমন অবিষয়ী মানুষের জন্য বোধহয় লোকটারও করুণা হত। বলত, কি ঠাকুরমশাই, মরতে আর জায়গা পেলেন না। এমন পান্ডববর্জিত জায়গায় বাস করতে চলে এলেন। 

বাবা কিছুতেই অবশ্য শেষ পর্যন্ত দমে যেতেন না। কারণ দমে গেলেই মা বাবাকে পেয়ে বসবে। কোথায় কি কথাবার্তা হয় মা’র কান খাড়া করে শোনার অভ্যাস। লোকটা কি বললো গো। সুতরাং বাবা বিচলিত হতেন না শেষ পর্যন্ত। খুব আত্মবিশ্বাসের গলায় বলতেন, মাটি, বুঝলে না, একবার সব আগাছা সাফ করতে পারলে দেখবে ফসল। জমি জুরে শুধু ধান। শীতের দিনে কলাই। সামনের জমিটাতে আম, জাম, লিচুর গাছ লাগিয়ে দেব। বড় হলে কত ফল। কত পাখপাখালি দেখবে তখন উড়ে আসবে। জমির ধানে সমবৎসর চলে গেলে দুটো একটা বাতাবি লেবুর গাছ লাগিয়ে দেব ভাবছি। এমন জমি মানুষ পতিত ফেলে রাখে। 

আসল কথা অবশ্য কাউকে বলা যাবে না। বাবা খবর পেলেন মানুকাকা বহরমপুরে থাকে। বাবার সম্পর্কে পিসতুতো ভাই। খবর পেয়েই লটবহর নিয়ে রওনা। এবং কোনো দ্বিধা না করে পরম আত্মীয়ের মতো ভাই-এর বাড়িতে উঠে পড়লেন। আমাদের সেই কাকাটি বাবাকে দেখে একেবারে হতবাক। এতগুলো ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো খবর না দিয়ে কেউ কখনও আসে! দেশে অবশ্য খুবই যাওয়া-আসা ছিল। কাকার মা, এবং ভাইবোনেরা ঠাকুরদা ঠাকুমা বেঁচে থাকতে বর্ষায় দু-চার হপ্তা বেড়িয়ে যে না গেছেন তাও না। সংসারে কোনো অভাব ছিল না বলে বাবা কিছুতেই তাঁর পিসিকে এবং ভাই বোনেদের যেতে দিতেন না। সেই সুবাদে খবর পেয়েই সোজা সেখানে উঠে বললেন, চলে এলাম মানু। দেশ থেকে যা এনেছি শেষ। শোনলাম তুই এখানে আছিস। তুই যখন আছিস তখন আর ভাবনা কি। কিছু একটা ঠিক হয়ে যাবে। কি বলিস! কাকা ঢোক গিলে বললেন, তা হয়ে যাবে। 

কদিন যেতে না যেতেই কাকীমার গঞ্জনা শুরু হয়ে গেল। কাকা সারাটা দিন বাড়ি থাকে না। অফিসে থাকে। বাবা চুপচাপ বসে থাকেন মাদুরে। আগে তবু একটা চেষ্টা ছিল, এখানে এসে ওঠার পর বাবা কদিনেই কেমন ভালমানুষ হয়ে গেছিলেন। 

কাকা একদিন বলল, সরকারী ক্যাম্পে উঠে যান দাদা। ক্যাম্পের খাওয়াদাওয়া মন্দ না। আমাদের অফিসের বড়বাবুর ভাই ক্যাম্পে চলে গেছে। 

অভাব অনটনের কথা বোধহয় পাড়তে যাচ্ছিল, বাবা বললেন, ক্যাম্পে কোনো জাত বিচার নেই। আমি যাই কি করে! তার চেয়ে এদিকে কোথাও পুজোআর্চা করে যদি থেকে যেতে পারতাম। তোর বৌদির তাই ইচ্ছা। 

অবশ্য আমি বুঝতে পেরেছিলাম, বাবার পৃথিবীটা কবেই ধুয়ে মুছে শেষ হয়ে গেছে। মানুকাকারও বিড়ম্বনা। তাঁর ছেলেমেয়েরা আমার বয়সী, শহুরে মানুষ। পরিচয় দিতে কিছুটা কুণ্ঠাবোধ হওয়া স্বাভাবিক! এবং আমার মা কেমন সেই প্রথম মনে হল বাবাকে ডেকে গোপনে কিছু বলল। বাবা বললেন, তাই বুঝি। এবং পরদিনই বাবা মানুকাকার সঙ্গে কোথায় গেলেন। ফিরলেন রাত করে। বাবা ফিরেই বললেন, সব ঠিক হয়ে গেল, আর তোমাদের ভাবনা নেই। 

.

সলতে জ্বালাবার শেষ তেলটুকু গোপনে এতদিন কি করে এত কষ্টের মধ্যেও সঞ্চয় করে রেখেছিল মা ভাবলে অবাক হতে হয়। অবশ্য জমি এবং যথার্থ বনভূমিতে হাজির হয়ে মার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছিল—তাই বলে শেষ পর্যন্ত এখানে! 

বাবা বলেছিলেন, একেবারে জলের দরে জমি। একশ টাকায় কত জমি দেখ। তা তোমার পুরো একশও ছিল না। মানু কিছু দিয়েছে। জমির শেষ কোথায়, সীমানা কোথায় কিছুই বোঝার উপায় নেই। বাবা উত্তরে দক্ষিণে পুবে পশ্চিমে চারটে গাছ দেখিয়ে বললেন, এই তোমাদের সীমানা। এ জায়গা তোমাদের। বনের ভেতর সেই যে চারটে গাছ, সব কটাই শিরীষ। এবং লম্বা আকাশ বরাবর আর যা আছে মাঝখানে, তার মালিক আমার বাবা। বাবা বনটার পাশে গ্রীকরাজের মতো দণ্ডায়মান ছিলেন। যেন বনটা রাজা পুরুর মতো বশ্যতা স্বীকার করতে চাইছে না। বাবা বললেন, এখানেই জঙ্গল সাফ করে তোমাদের আবাস তৈরি হবে। আগাছা জঙ্গল সাফ করে বুঝতে হবে কতটা জমি শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল। রাজবাড়ির আমলারা তো বেজায় খুশী। বলেছে, বনটায় লোকবসতি দেখলেই জমির দর বাড়বে! এবং যা বললেন, তাতে মনে হয়েছিল, টাকা না দিলেও প্রথম আবাস করার দুঃসাহসের জন্য মিনি-মাগনায় জমিটা পাওয়া যেত। সুতরাং জলের দরে জমি —অদূরে গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছিল জমির সীমানাটা কোথায় শেষ! জঙ্গল সাফ করে শেষ পর্যন্ত কবে সেখানে পৌঁছনো যাবে সেটা বাবার ঈশ্বরই একমাত্র বলতে পারেন। বরং জমি না বলে বন বলা ভাল। বাঘের নিবাস ছিল, এবং যে দুটো-একটা এখনও নেই কে বলবে। বাবা যতই সাহসী হোন অদূরে পুলিস ব্যারাক না থাকলে এখানে বাড়িঘর করার সাহস পেতেন না। সব বাবলা গাছ, নানা রকমের সব লতা, কাঁটা ঝোপ, কোথাও কোথাও সব মরা গাছের গুড়ি, ভাঙা ইঁটের ডাঁই। যত সাফ করে এগোনো যাচ্ছে, তত সব আবিষ্কার করা যাচ্ছে। হেস্টিংসের আমলের কুঠিবাড়িও বনের ভেতর মিলে যেতে পারে—কিংবা নগর-টগর ছিল—এখন শুধু তার ধ্বংসাবশেষ। বাবা সারাদিন কোদাল কুপিয়ে আগাছা তুলছেন, সঙ্গে আমি এবং পিলু। আর ঠুং করে কোদালে শব্দ হলেই বাবা খুব সচকিত হয়ে উঠতেন। বুঝি আছে কোথাও কোন গুপ্তধন। তিনি ঝুঁকে বসতেন, কোদাল মেরে সেই ইষ্টক খণ্ডের নাড়িসুদ্ধু টেনে তুলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতেন—ইষ্টকখণ্ড, না আসলে স্বর্ণপিণ্ড—বহুকাল মাটির নিচে পড়ে থাকায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। 

সবাই দৌড়ে আসত। মা পর্যন্ত। মার মুখের কাছে নিয়ে বাবা বলতেন, কি মনে হয়? কেমন শক্ত দেখ। পাথর। পাথর আসবে কোত্থেকে। মা কিছু না বলা পর্যন্ত ফেলে দিতে পারতেন না। 

মা বলত, আর কি মনে হয়! আমাদের কপাল খুলবে, তালেই হয়েছে। 

বাবা অভয় দিয়ে বলতেন, পেয়ে যাব। ঠিক পেয়ে যাব। বুঝলে এটা কাশিমবাজার কুঠির কাছাকাছি জায়গা। একসময় খুব বড় নগর ছিল এখানে। কলকাতা শহর আর কত বড়, তার চেয়ে বড় শহর ছিল। মানুষজন, কুঠি সাহেবরা, পৃথিবীর সোনাদানা সব লুটেপুটে এখানে এনেই জড় করেছিল। নবাব বাদশা সদাগর, বেনে কি না ছিল! কত নীলকুঠির ধনরত্ন এখানে সেখানে মাটির নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ঠিক পেয়ে যাব। 

একদিন ছোট দুটো শালগাছের চারা আবিষ্কার করা গেল। বাবা বললেন, থাক, বড় হলে কাজে লাগবে। 

সারাদিনে বাপ বেটা মিলে পাঁচ-সাত হাত জমি সাফ করে ওঠা যেত না। আর মাঝে-মধ্যেই বাবার রহস্যময় অন্তর্ধান তো লেগেই আছে। তখন আমার পিলুর ছুটি। পিলু এখন এই বনভূমিটার ছোটখাটো একজন সামন্ত রাজ। আর আমি হচ্ছি তার দাদা। 

কত রকমের সব যে লতাপাতা! আশ্চর্য নীল ফুল বনের গভীরে ফুটে আছে। জঙ্গলের ভেতরে অদ্ভুত বড় বড় সব গিরগিটি, গোসাপ, বেজি। একটু সমতল মতো জায়গায়, যেখানে বেশ সবুজ ঘাস আছে এবং একটা ছোটখাটো উপত্যকার মতো মনে হয়, ঢুকে গেলে, দেখা গেল দুরন্ত খরগোশেরা ছুটছে। আমাদের মটরশুঁটি গাছগুলোর ডগা রাখা যাচ্ছে না। কারা খায় বোঝাও যাচ্ছে না। সজারু এসে খেতে পারে—পিলু বলেছিল। বাবা বলেছিলেন, সজারু ডগা খায় না। মূল খায়। এবং এক সময় খরগোশের খবর প্রথম পিলুই এনে দিয়েছিল বাবাকে। 

বাবা বললেন, খরগোশের মাংস খুব সুস্বাদু। কখনো খেয়েছ? আমরা কি খাই না খাই বাবার চেয়ে আর কে ভাল জানে। তবু তাঁর এমনধারা প্রশ্ন ছিল। যেন আমরা কত কিছু তাঁকে না দিয়ে খেয়ে নিচ্ছি। 

বাবা আরও বললেন, সজারুর মাংস খেতেও বেশ। তবে একটা দিন মাটির নিচে রাখতে হয়। তা না হলে গায়ের বুনো গন্ধ যায় না। 

বাবার রহস্যময় অন্তর্ধানের সময় আমরা একেবারে শুধু বনআলু খেয়ে দিন কাটাই সেটা বোধহয় তাঁর খুব মনঃপুত ছিল না। সঙ্গে মাংসের ঝালঝোল, বেশ জমবে তবে। আর বাবাও নিশ্চিন্তে দুটো দিন দেরি করে ফেললে, কিছু আসবে যাবে না। এ সব ব্যাপারে বাবা পিলুকে যতটা গুরুত্ব দিতেন, আমাকে তার সিকি ভাগ দিতেন না। এবং একবার বাবা না থাকায় পিলু ঠিক দুটো খরগোশ শিকার করে চলে এল। মা বলল, করেছিস কি। এমন সুন্দর দুটো খরগোশকে মেরে ফেললি! 

পিলু খুব মুষড়ে পড়ল। বলল, বাবা যে বলেছেন খরগোশের মাংস খেতে বেশ। 

—তোমার বাবা এবার আরও কি তোমাদের খেতে বলবেন কে জানে। 

পিলু খুব একটা অপরাধ করে ফেলেছে—কি করা যায়। মা কিছুতেই রাঁধতে রাজী হচ্ছে না। অগত্যা এ-সব ক্ষেত্রে সে আমারই শরণাপন্ন হতে পছন্দ করে। মায়া তো উল্টে-পাল্টে দেখে ওক তুলে ফেলল। এবং আমিই বললাম, ঠিক আছে, তোমরা কেউ খাবে না। আমি, পিলু খাব। এবং যখন কেটেকুটে থালায় রাখা হল, হলুদ বেটে মাখা হল, সামান্য আদা বাটা, রসুন, পেঁয়াজ দিয়ে বেশ সুঘ্রাণ তৈরি হয়ে গেল, তখন মা বলল, দাও রেঁধে দিচ্ছি। তোমরা তো দেশ ছেড়ে এসে এক-একজন বকরাক্ষস হয়ে গেছ। এখন যা পাবে তাই খাবে। 

কিছু চাল ছিল ঘরে, মা দুটো ভাতও ফুটিয়ে দিল। এবং খেতে বসে দেখা গেল, কেউ বাদ গেল না। মা নিজেও বড় পরিতৃপ্তি সহকারে খেয়ে ফেলল শেষটুকু। বলল, খেতে তো বেশ। তোর বাবা এলে আবার দুটো ধরে আনবি তো। 

বাবা বাড়ি থাকলে ঝোপজঙ্গল কেটে রাখা আমাদের কাজ। এবং টেনে আনা, অথবা কোন ঝোপজঙ্গল টেনে আনতে না পারলে রেখে দেওয়া। শুকোলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া। কতসব গাছের গুঁড়ি আর ইঁটের চাতাল। কোনো ঢিবি আবিষ্কার করলেই বাবা গুপ্তধনের গন্ধ পেতেন। সহজে হাত দিতেন না। মনে হত বুঝি ঢিবিটা আছে থাক। সময় মতো খুঁড়ে ধনরত্ন তোলা যাবে। 

জঙ্গল কাটতে কাটতেই বাবা কখনও চেঁচিয়ে বলতেন, ওদিকে না। এদিকে চলে এস। তেনারা পড়ে আছেন। 

তেনারা কে এবং কি রকমের আমাদের এতদিনে বেশ ভাল জানা হয়ে গেছে। বলতাম কোথায় বাবা? 

ঐ দেখ। আলিসান ভুজঙ্গ। এতটুকু ভয় ভীতি নেই। পিলুটার ছিল আবার খুব বাড়াবাড়ি। সে লাঠি তুলে তেড়ে গেলে বাবা বলতেন, তোমার তো কোনো অনিষ্ট করেনি। কেন মারতে যাচ্ছ। এতবড় আলিসান ভুজঙ্গ দেখে আমাদের হৃৎকম্প দেখা দিত। বাবা কিন্তু নির্বিকার। কাজ করে যাচ্ছেন। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *