মাটির দেওয়াল – ৪

নাওডুবিতে আসার পর থেকেই নামের কারণ খুঁজেছে শিরীষ। নিশ্চিতভাবে কিছু জানতে পারেনি। গ্রামের লোকের মুখে গল্পকথা কিছু শুনেছে। তার সঙ্গে যারা কাজ করছে তারাও বলেছে। এই গল্প মুখে মুখে ঘোরে।

একসময়ে গ্রামের পাশ দিয়ে একটা নদী গিয়েছিল। সেই নদী যে লম্বা চওড়ায় খুব বড় ছিল এমন নয়, তবে দামাল ছিল বেজায়। স্রোত ছিল প্রবল। সবাই অবাক হত, ছোট নদীতে এত দাপট কীভাবে হল? নদী কি এখানে এসে ক্রুদ্ধ হয়ে যায়? অভিশাপ লাগে? এক সময়ে নাকি নদীকে শান্ত করতে গ্রামের মানুষ পুজো-আচ্চা করত। কেউই বিজ্ঞানের দিকটা ভেবে দেখেনি। পরে জানা গিয়েছিল, নদী এই গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ কোনও ঢাল পেয়েছিল। তাতেই লাফানি ঝাঁপানি বেড়ে যেত। গ্রামের কাছে এসে বাঁক নিয়েছিল। যাকে বলে ‘শার্প বেন্ট’। রাতের বেলা নৌকোর মাঝিমাল্লারা এই বাঁক বুঝতে পারত না। তার ওপর ঢাল। নৌকো টাল খেয়ে উলটে পড়ত। ফলে প্রায়ই নৌকোডুবির ঘটনা ঘটত। অন্যত্র যে নামই থাক, এখানে এসে নদীর নাম হয়েছে নাওডুবি নদী। আর তার পাশের গ্রাম হল নাওডুবি গাঁ। এই গল্প উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। সত্যি হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। একটা বিজ্ঞানও রয়েছে। তবে পুরোপুরি মেনে নেওয়াও যায় না। কারণ ওরকম কোনও নদীর খোঁজ শিরীষ এখনও পায়নি।

সোমদত্তাই শিরীষকে ঠেলে সেই নাওডুবিতে পাঠিয়েছিল।

“যাও না, জমিটা দেখে এসো। দাম কত হতে পারে খোঁজ নাও। বেচে দেব। মেয়েটার লেখাপড়ার তো খরচ অনেক।”

খুব বিরক্ত হয়েছিল শিরীষ। বলেছিল, “তুমি কি পাগল হয়ে গেছ সোম? দোতারার লেখাপড়ার জন্য দাদুর জমি বিক্রি করতে হবে? তা ছাড়া ও তো আমার-তোমার পয়সায় পড়াশোনা করে না। জয়েন্ট এন্ট্রাসে টপারদের একজন হয়ে ফুল স্কলারশিপে লেখাপড়া করছে।”

সোমদত্তা বলেছিল, “আরে, আজ না লাগুক, কাল বাদে পরশু তো লাগতে পারে। মেয়ে বাইরে গিয়ে লেখাপড়া করবে। এত রাগারাগির কী হয়েছে? এমনভাবে বলছ যেন কেউ কখনও মামাবাড়ির সম্পত্তি পায় না, তুমি এই প্রথম পেলে! জামশেদপুরের বাড়ি বিক্রির টাকার ভাগও তো তোমার প্রাপ্য। প্রাপ্য নয়?”

শিরীষ এবার আরও রেগে যায়। বলে, “না জেনে বাজে কথা বোলো না। মা বেঁচে থাকতেই ওই বাড়ির অধিকার ছেড়ে দিয়েছিলেন। তোমার এত কীসের চাহিদা সোমদত্তা? জীবনে কম তো পাওনি। নিজেও অর্জন করেছ।”

“থামো দেখি, অনেক লেকচার হয়েছে! আমি তোমার সঙ্গে জমিটা দেখতে যাব।” শিরীষ বলল, “আচ্ছা, যাব। তবে ওই একবারই যাব। আমি আর কিছুতে থাকব না। এরপর থেকে তুমি যা বুঝবে করবে।”

সোমদত্তা বলেছিল, “আচ্ছা তাই বুঝব। যা করার আমি করব। এই শনিবারই চলো।”

শুক্রবার সোমদত্তার পা মচকাল, শিরীষ প্রোগ্রাম পিছোতে চেয়েছিল। সোমদত্তা ঠেলে পাঠাল।

“পরের বার আমি যাব। তুমি কালই দেখে এসো। ওখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আসবে। জমি কেনাবেচার জন্য গ্রামে দালাল থাকে। অফিসে সবাই বলছিল।”

শিরীষ অবাক হয়ে বলল, “এর মধ্যেই তুমি অফিসে জমির গল্প করে ফেলেছ!”

সোমদত্তা বলল, “বাঃ করব না? আমরা চুরি করেছি না কাউকে ঠকিয়েছি? যে শুনেছে সে-ই কনগ্র্যাচুলেট করেছে। তবে বলেছে যত তাড়াতাড়ি পারো বেচে দাও। এতদিনে যে বেদখল হয়ে যায়নি তাই রক্ষে। তুমি আগে গিয়ে সবটা বুঝে এসো। বড়মামা বুড়ো হয়েছেন, কী বুঝতে কী বুঝেছেন ঠিক আছে?”

“আচ্ছা সোম, তুমি জমিটা পাওয়া নিয়ে কত কী ভাবছ! আচ্ছা, একবার ভাবলে না তো, দাদু কেন জমিটা কিনেছিলেন? হঠাৎ কী মনে হল, সেই জামশেদপুর থেকে এসে, একটা অজানা অজ গাঁয়ে খানিকটা জমি কিনে নিলেন! ওঁর স্বপ্নটা একবার ভেবে দেখো। কী আশ্চর্য!”

সোমদত্তা বলল, “এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আগেকার দিনের মানুষরা সস্তায় পেলে জমিজমা কিনে রাখতেন। ইনভেস্টমেন্ট। পরে দাম বাড়লে বিক্রি করে দিতেন। কোথায় কিনলেন ভাবতেন না। জমি তো সব জায়গাতেই সোনা।”

শিরীষ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছিল, “তুমি হিসেবি চিরকালই, কিন্তু এতটা কোনওদিনও ছিলে না। তুমি এখন শুধু হিসেব বোঝো, স্বপ্ন বোঝো না।”

সোমদত্তা বলল, “ভাগ্যিস বুঝি না। তা হলে আর উন্নতি করতে হত না।”

শিরীষ কথা বাড়ায়নি। শনিবার সকালে রওনা হয়েছিল।

পথে গাড়ি খারাপ হওয়ায় নাওডুবিতে পৌছল বিকেলে। বড়মামা বলে দিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে বলতে, ‘জামশেদপুরের মহীতোষ চ্যাটার্জির কাছ থেকে এসেছি।’ একজন গিয়ে জমিটা দেখিয়ে দেবে। শিরীষ জানত, অবধারিতভাবে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ হয়ে যাবে। গিয়ে লাভ হবে না। ফিরে আসতে হবে। কেউ চিনিয়ে না দিলে চেনা মুশকিল। তারপরেও খুঁজে খুঁজে পঞ্চায়েত অফিস গেল। গিয়ে দেখল, যা ভেবেছিল তাই। অফিসের দরজায় তালা। বাইরের রোয়াকে একজন মাঝবয়সি লোক বসে খবরে কাগজ পড়ছিল। শিরীষ গাড়ি থেকে নেমে এদিক ওদিকে দেখতে লাগল।

“কাউকে খুঁজছেন?”

শিরীষ আমতা আমতা করে বলল, “কাউকে ঠিক খুঁজছিনা… পঞ্চায়েত অফিসের সবাই চলে গিয়েছেন না?”

“কী চাই?”

শিরীষ বলল, “আসলে কলকাতা থেকে আসছি, জামশেদপুরের…”

এই পর্যন্ত বলতেই সেই লোক বলল, “জমির ব্যাপারে? মহীতোষবাবু পাঠিয়েছেন?”

শিরীষ বুঝতে পারল, বরাতজোরে ঠিক লোককে পেয়ে গিয়েছে। উৎসাহ নিয়ে বলল, “হ্যাঁ, আমি ওঁর ভাগনে।”

“এত বেলা করে এসেছেন কেন?”

শিরীষ কাঁচুমাচু হয়ে বলল, “বেরিয়েছি সেই সকালে, পথে আটকে গিয়েছিলাম।”

মাঝবয়সি আড়মোড়া ভেঙে বলল, “জমি দেখতে হলে সকালে আসতে হয়।”

শিরীষ অনুরোধের ঢঙে বলল, “এখন একটু ব্যবস্থা করা যায় না দাদা? আবার কবে আসতে পারব…”

“এই অন্ধকারে জমি কী বুঝবেন?”

শিরীষ বলল, “অন্ধকার হতে দেরি আছে।”

মাঝবয়সি বলল, “আরে বাবা, জমি তো এখানে নয়, যেতে যেতে অন্ধকার হয়ে যাবে।”

শিরীষ বলল, “তা হোক, যেটুকু বুঝব তাই যথেষ্ট। একটু কষ্ট করে যদি গাড়িতে ওঠেন।”

মাঝবয়সি এবার ঝট করে উঠে পড়লেন। বলল, “চলুন। আপনার মামাকে কথা দেওয়া আছে। উনি লোকটা ভাল। দিন তিনেক গ্রামেই থেকে গিয়েছিলেন।”

শিরীষ ভাঙা রাস্তার ওপর গাড়ি চালাতে লাগল সাবধানে। এখানে গাড়ি ভাঙলে কেলেঙ্কারি। সত্যি বড়মামা মানুষটা অতি ভাল। নইলে এত ব্যবস্থা করে যায়। টাকা পয়সাও দিয়ে গিয়েছে হয়তো। জামশেদপুরের বাড়ির উপর থেকে মায়ের দাবি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভুলতে পারেননি নিশ্চয়ই। অন্যদিক থেকে পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে একেবার আঁকড়ে ধরেছেন।

“এই তো এখানে দাঁড়ান। বাঁদিকে রাস্তা থেকে নেমে খানিকটা হেঁটে গেলেই আপনার মামার জমি। যান।”

গাড়ি থেকে নেমে খানিকটা হেঁটে গিয়ে দাঁড়াল শিরীষ।

সেই প্রথম দাদুর স্বপ্নের জমি দেখল শিরীষ। অস্ত যাওয়া সূর্যের আলোয় দু’চোখ ভরে দেখল।

গভীর রাতে বাড়ি ফিরল শিরীষ। গরম জলে স্নান সেরে বেডরুমে এল। সোমদত্তা ঘুম জড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করল, “ফোন ধরছিলে না কেন?”

“ওখানে টাওয়ার নেই।”

“পরে তো রিপ্লাই করতে পারতে।”

“হাইওয়েতে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। ফোন ধরা যায় না।”

“খাবার গরম করে দিচ্ছি।”

শিরীষ বলল, “খাব না। পথে ধাবায় খেয়েছি।”

সোমদত্তা বলল, “জমি দেখলে?”

শিরীষ বলল, “দেখলাম।”

সোমদত্তা বলল, “কেমন দেখলে? দাম কেমন পাওয়া যাবে?”

শিরীষ একটু চুপ করে থেকে বলল, “আমি ওই জমি বেচব না সোম।”

সোমদত্তা এবার ধড়ফড় করে উঠে বসল। বলল, “মানে! বেচবে না তো কী করবে?”

শিরীষ ততক্ষণে কাবার্ড থেকে বোতল এবং গ্লাস বের করে ফেলেছে। বোতল থেকে হুইস্কি ঢালতে ঢালতে বলল, “সোম, আমি ওই জমিতে চাষ করব। দাদু কেন অমন স্বপ্ন দেখেছিল আমি জানতে চাই। শুধুই কি শহুরে জীবনে ক্লান্তি? নাকি রিটার্ন টু রুটস্‌? শিকড়ের সন্ধানে? তুমি এখন ঘুমোও। বাকি কথা কাল হবে। গুড নাইট।”

বুঝিয়ে, কান্নাকাটি করে, তুমুল ঝগড়া করে, আত্মহত্যার হুমকি দিয়েও সোমদওার কোনও লাভ হল না। শিরীষ সত্যি লোকজন জোগাড় করে নাওডুবির জমিতে কাজ শুরু করে ফেলল। সে বড় ম্যানেজার। ম্যানেজমেন্ট পড়ার সময় তাকে শেখানো হয়েছে, বাধা বিপত্তি কীভাবে জয় করতে হয়। কিন্তু এখানে এসে যেসব বাধার সম্মুখীন হতে হল সেসব টপকানোর শিক্ষা তার ছিল না। নিজের বুদ্ধি দিয়ে একটা-একটা করে কাঁটা সরাতে লাগল। বাইরে থেকে হুট করে গিয়ে চাষবাস করতে দেখলে, গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করবে কেন? টাকাও যেমন খরচ করতে হল, তেমন মানুষের বিশ্বাসও অর্জন করতে হয়েছে।

একদিন ল্যাপটপে দোতারাকে চিঠি লিখে ফেলল— ‘তারা, তোর সঙ্গে আমার সপ্তাহে একদিন দেখা হয়, তারপরেও তোকে এই চিঠি লিখতে বসেছি। কারণ, কিছু কথা মুখে বলার চেয়ে, লিখে বলতে ভাল লাগে।

তারা, এমন একটা কঠিন আর সুন্দর কাজের মধ্যে এসে পড়ব ভাবতেও পারিনি। যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে চলেছি তাতে কখনও কান্না পাচ্ছে, কখনও আবার আনন্দে মন ভরে যাচ্ছে। নিজের হাতে ফসল ফলাব আমি, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। এতকাল একধরনের জীবন যাপন করেছি, এখন আর এক জীবনের মধ্যে ঢুকে পড়ছি। জানি, এই জীবন শুধু আনন্দের নয়, খুব কষ্টেরও। শুধু ফসল ফলানোর শারীরিক কষ্ট নয়, প্রাপ্য মূল্য, মর্যাদা, ঋণের বোঝা মেটাতে না পারার কষ্টও রয়েছে। জানি, খেতের ধান বড় হতে যেমন দেখব, তেমন যে ধান ফলায় তার কষ্টকেও দেখব খুব কাছ থেকে। তারা, মানুষের কষ্ট বুঝতে পারাটাও জীবনের একটা অংশ। যত দিন যাচ্ছে, মনে হচ্ছে, সব মানুষেরই এই দু’ধরনের জীবনের মধ্যে দিয়ে একবার না একবার চলা দরকার। একটা জীবন শুধু দৌড়োয় আর দৌড়োয়, অন্য একটা জীবন চুপ করে বসে থাকে শান্ত দিঘির পাড়ে। সেখানে হাঁস সাঁতার কেটে বেড়ায়, পানকৌড়ি ডুব দিয়ে যায়, মাছে ঘাই দেয়। কথাটা বললাম বটে, তা বলে ভাবিস না, আমি এখানে এসে দিঘির পাড়ে বসে থাকি। একদিনও চুপ করে বসে থাকতে পারিনি। মনটাকে শান্ত দিঘির পাড়ে বসিয়ে নিজে সদা অশান্ত হয়ে রয়েছি। চাষবাসের কিছুই জানতাম না। একটু একটু করে জানছি। খুব ইন্টারেস্টিং। তোর ইলেকট্রনিক্সের চেয়ে কম কিছু নয়।

রুক্ষ জমির জন্য জল আনার ব্যবস্থা করতে হয়েছে অনেকটা দূর থেকে। এরপর ট্র্যাক্টর দিয়ে জমি ওলটপালট হবে। আমি জেনেছি, ধান হয় বছরে দু’বার। খরালি আর বর্ষালি। তুই জানতিস? ঘেঁচু জানতিস। আমার জমিতে হবে বর্ষালি। ধানের বীজ থেকে একমাসে তৈরি হবে বিছান। আচ্ছা, বিছান কী বল দেখি? বীজ থেকে চারা তৈরিকে বলে বিছান। বিছানের জন্য বীজ বাছতে হয় যত্ন করে। পাতান না থেকে যায়। পাতান শব্দটা শুনে নিশ্চয় আমার টপার হওয়া মেয়ে চমকে যাচ্ছে। পাতান হল হালকা, ভাঙা বীজ। কাজে লাগে না। তোর মায়ের কাছে আমি এখন ওই পাতানের মতো। সে যাই হোক, আষাঢ় মাসে বিছান তৈরি, অগ্রহায়ণ শ্রাবণে যদি রোপণ করা যায়, অগ্রহায়ণ মাসে ধান পেকে উঠবে। আমি নবান্ন উৎসব করব। তোরা সবাই আসবি। তারা, ঠিক করেছি, প্রথমবার দু’ধরনের ধান লাগাব। একটা চালু। যাতে ভাল ফসল হবে। আমনের মধ্যে বেশি ফলন কে দেয় জানিস? সেই ধানের নাম স্বর্ণ। ভারী সুন্দর নাম না? আর একটা করব যার চালটা ভাল, নিজেরা খাব। বাঁকুড়া বীরভূমে এখন চলছে, নাম হাই লিং খাস। তোর বাবা এখন ড্রাইভ পেজও জানে, সেট আপ ইউলিটিও জানে, কম্পোনেন্টওয়্যারও জানে, আবার ধানের নামও জানে।

তারা, আর একটা ঘটনা ঘটেছে। একটা ভারী সুন্দর মেয়ের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তোর চেয়ে একটু বয়স বেশি। নাম ত্রপা। ত্রপা মানে জানিস? ত্রপা মানে লজ্জা। এই সুন্দর মেয়েটার সঙ্গে কীভাবে তোর বাবার আলাপ হল জানিস? বলব না। তোরা হিংসে করবি। একদিন হয়েছিল কী…’

এই চিঠি দোতারাকে পাঠায়নি শিরীষ। ডিলিট করে দিয়েছিল। কারণ পারিবারিক পরিস্থিতি জটিল হতে লাগল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *