মহাভারত

মহাভারত

আপনাকে গুলি করতে বললাম। করলেন না কেন? কাওয়ার্ড !

যাকে বলা সেই নীরদ দত্ত খুব মন দিয়ে কপি লিখছেন। ছােটোখাটো মানুষটি। দেওয়াল ঘড়িতে রাত দুটো পঁয়ত্রিশ। টেলিপ্রিন্টারে খবর এসেই চলেছে। কট কট আওয়াজের কোনও থামা নেই। সারা অফিস প্রায় খাঁ খাঁ করছে। ডিসেম্বর মাসে সারা বছরের ছুটি পাছে পচে যায়—তাই বেশির ভাগই ক্যাজুয়াল ছুটি নিয়ে বসে আছেন।

মর্নিং ওয়াকে খুব ভাের ভাের জুবিলি পার্কে হাঁটতে আসত ইনস্পেক্টর চার্লস। বিপ্লবীদের টর্চার করতে ইনস্পেক্টর চার্লসের জুড়ি ছিল না। আপনাকে ভার দেওয়া হল ওকে গুলি করার। আর আপনি ঠিক ফেল করলেন! ছিঃ! ছিঃ ! আমিই নীরদবাবু, আপনাকে নিয়ে তিনদিন ধরে ঘুরে ঘুরে সারাটা লক্ষ্মৌ শহর চেনালাম। রেসিডেন্সি, হজরতগঞ্জ, আমিনাবাদ, গােমতী রেলব্রিজ। সব। আপনি ডিসেম্বরের ভােরে কুয়াশার ভেতর মুখােশ পরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে চার্লর্সকে সাবাড় করেই চলে আসবেন—এই ছিল কথা। আমি কাইজারবাগের পাশে চাটুজ্যেদের হােটেল ঘরে বসে সেকেন্ড-মিনিট গুনছি। আর আপনি ফিরলেন কাপতে কাপতে—এই তাে আপনাদের অনুশীলন পার্টি! যুগান্তর পার্টির আমরা—

শিশির ঘােষ বলা যায় সবচেয়ে জুনিয়র সাব-এডিটর। তার হাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কপি। আর দশ মিনিটের ভেতর হেডিং দিয়ে প্রেসে পাঠাতে হবে। নইলে আজ ভােরের কাগজে ধরানাে যাবে না। গুলি, চার্লস, জুবিলি পার্ক, লক্ষ্ণৌ শহর, গােমতী রেল ব্রিজ—এসব কথা সাতাশ-আটাশ বছরের শিশিরকে চঞ্চল করে তুলল। সে জানতে চাইল, বাসবদা, কোথাকার কথা বলছেন? কবেকার কথা? যুগান্তর? অনুশীলন ?

বাসব পালিত বিয়ে থা করেননি। যাট পেরিয়ে এক্সটেনশনে আছেন। বলেন, ভাইপাের বাড়িতে টাকা দিয়ে থাকি। রােগামতাে মানুষটির গায়ে খদ্দরের পাঞ্জাবির ওপর ফুলহাতা রঙচটা একটি জাম্পার। হাতে কলম। সামনে খবর লেখার নিউজপ্রিন্টের প্যাড। শিশিরের কথায় তিনি চিড়বিড় করে উঠলেন, এসব তােমার জানার কথাই নয়। অনুশীলন, যুগান্তর তুমি বুঝবে না। তুমি বুঝবে অহিংসা-স্বাধীনতা-গান্ধীজি—ওই কঙ্করবাবুদের কথা!

কঙ্কর ঘােষাল খদ্দরের ধুতি-পাঞ্জাবিতে ঢাকা। পায়ে গরম মােজাসুদ্ধ দুই পা পাম্পসুর ভেতর। চোখে চশমা। মাথাটি সাদা। টেলিপ্রিন্টার থেকে কেটে আনা লম্বা কাগজে খবর খুঁজছিলেন। নিজের নাম শুনে কঙ্কর ঘােষাল চোখ তুলে একবার বাসব পালিতকে দেখেই হাতের কাগজে ফের চোখ নামালেন। খুবই তুচ্ছ করে চাপা গলায় বললেন, হ্যা! আপনারা টেররিস্টরাই তাে স্বাধীনতা এনেছেন!!

শিশির দৈনিক সুপ্রভাত-এর উঁদে নাইট এডিটর এই কঙ্কর ঘােষালকে যমের মতাে ভয় করে। যে-খবর আদৌ ছাপা হবে না—তেমন তেমন গাদাগুচ্ছের খবর লিখতে দিয়ে কঙ্করদা বলবেন, তাড়াতাড়ি লিখে দাও। কাল বিহার ডাকের কাগজে যাবে।

শিশির যে বলবে—নাইট ডিউটিতে এসে কাল দুপুরের খবর লিখব? কঙ্করদার সামনে এমন ন্যায্য কোশ্চেন করাও তার সাহসে কুলােয় না। কোশ্চেন করলে যদি কঙ্করদা ফের এক গাদা লেখার পানিশমেন্ট দেন।

বরং শিশির কঙ্করদাকে তার প্রিয় টপিকগুলাে বলে। যেমন, স্বাধীনতার অনেক আগে ভলান্টিয়ার হিসেবে কঙ্করদার ওপর সােদপুরের গান্ধী আশ্রমে গান্ধীজিকে দেখাশােনার ভার পড়ে। মােহনদাস করমচাঁদ গান্ধী পায়খানায় গেছেন। ভলান্টিয়ার কঙ্করদা জলভর্তি গাডু গান্ধীজিকে এগিয়ে দিয়ে দেখেন—গান্ধীজির ঝােলার ভেতর থেকে একখানি চিঠি বেরিয়ে আছে। তাড়াতাড়ি সেখানা পড়ে নিয়ে বুঝতে পারলেন, চিঠিখানি বেঙ্গল কংগ্রেসের খুব কাজে আসবে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা সরিয়ে ফেললেন।

দৈনিক সুপ্রভাত-এর মালিক তখন বেঙ্গল কংগ্রেসের মাথা। তাঁকে গান্ধীজির জরুরি চিঠিখানি চুরি করে পৌঁছে দিয়ে সুপ্রভাত-এ কঙ্করদা চাকরি পেয়ে যান। সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে বেঙ্গল কংগ্রেসের তখন সেন্ট্রাল কংগ্রেসের সঙ্গে ঝগড়া চলছে। তখনকার কাগজ স্বাধীনতা আন্দোলনের লােকজন দিয়েই ভরানাে হত। ওঁদের কাছে খবরের কাগজ ছিল স্বাধীনতার মুখপাত্র—স্বাধীনতার অস্ত্র। সেই সুবাদেই কঙ্কর ঘােষাল, বাসব পালিত, নীরদ দত্তর মতাে মানুষজন—তাঁদের জীবনের শেষদিকে স্বাধীনতার পর ডিসেম্বরের এক শেষরাতে দৈনিক সুপ্রভাত-এর নিউজরুমে বসে খবর লিখছিলেন। খবর বাছছিলেন।

শিশির তাকিয়ে দেখল। কঙ্করদা প্রায় ষাট। বাসবদার বয়স বােঝা যায় । চৌষট্টি-পঁয়ষট্টি হবেন। একসময় নাকি জার্ডিনের খেলা সুপ্রভাত-এ পাতায় রিপাের্ট করে বিখ্যাত হয়েছিলেন। নীরদদা তিপ্পান্ন-চুয়ান্ন।

বাসবদাকে কঙ্করদার এই তাচ্ছিল্য শিশিরের ভালাে লাগল না। আট মাস হল সে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর ডুব দিয়ে দিয়ে তার আর ক্যাজুয়াল ছুটি নেই। ভূমিকম্প হলেও একত্রিশে ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে অফিসে আসতেই হবে। নইলে ডুব দিলে মাইনে কাটা যাবে। শিশির এতক্ষণ তক্কে তক্কে ছিল—হাতের কাজ যদি শেষ হয়ে যায় তাে নাইট রিপাের্টারের গাড়িতে বাড়ি ফিরে যাবে। বাড়ি ফিরে স্বাতীর পাশে নিজের বিছানায় রাতের শেষটুকু ঘুমােবে। সে এখনও স্বাতীকে ভালাে করে জানেই না। ঘুমন্ত স্বাতী মশারির ভেতর নিশুতি রাতে একদম অন্যরকম। দিনে দিনে লজ্জাবতী লতাটি। কিন্তু রাতে ঘুমের ভেতর ও স্বপ্নে চলাফেরা করে।

কিন্তু কঙ্করদা এমন কাজই দিলেন—তার আর বাড়ি যাওয়া হল না। নাইট রিপাের্টার অফিসের গাড়িতে হেডলাইট জ্বালিয়ে কলকাতার নিশুতি রাতের ফাঁকা রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ঘন্টাখানেক।

শিশিরের বাসব পালিতকে দেখে মায়া হল। ওঁরা স্বাধীনতা এনেছেন কিনা তাই নিয়ে চুলচেরা বিচার করতে সে চায় না। তা ছাড়া তার মনে হয়—ওঁদের মতাে মানুষকে বিচার করার আমি কে? শিশির ক্লাস টেনে পড়ার সময় ইন্ডিয়াকে স্বাধীন হতে দেখেছে।

শিশির বলল, আচ্ছা বাসবদা, নীরদদাকে গুলি করতে বলেছিলেন কেন? কবেকার কথা? কী হয়েছিল?

মাথা নিচু করে খবর লিখতে লিখতে বাসব পালিত রাগে গর গর করতে করতে বললেন, জুবিলি পার্ক জানাে না? লক্ষ্মৌর ফেমাস পার্ক। নাইনটিন থার্টি থ্রির টেনথ ডিসেম্বর নীরদবাবু আর আমার ওপর ইনস্পেক্টর চালর্সকে গুলি করার ভার পড়েছিল।

কাজ করতে করতে মাথা তুললেন নীরদদা। শীতের রাতের ফঁাকা অফিসে গম্ভীর হয়ে বললেন, ইন্ডিয়ার ফার্স্ট প্রাইম মিনিস্টার জওহরলাল নেহরুর শরীর খারাপ। আফটার নেহরু হু?

বাসব পালিত ফের তিড়বিড় করে উঠলেন। ফেলে দিন তাে আপনার ওসব ধাঁধা। আফটার নেহরু হু? সেদিন ভােররাতে জুবিলি পার্কে আপনি নিজেকে কাওয়ার্ড প্রমাণ করেননি?

শিশির ঘােষ হিসেব করে দেখল, সে জন্মেছে সেই নাইনটিন থার্টি থ্রিতেই—যে-বছর নীরদ দত্ত বাসব পালিতের চোখে পাকাপাকিভাবে কাওয়ার্ড

প্রমাণিত হয়ে যান। শিশির বলে উঠল, কী হচ্ছে বাসবদা?

বাসব পালিত অবাক হয়ে বললেন, কী ? এটা নাইনটিন সিক্সটিওয়ান। কবেই দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। স্বাধীন হয়েছে না ছাই!

আপনি মানুন বা না-মানুন, ইন্ডিয়া আজ চোদ্দো বছর হল ফ্রি। এতবছর পর আপনি নীরদদার কাজের কৈফিয়ত চাইছেন?

নীরদদা হাসতে হাসতে চেঁচিয়ে বললেন, বুঝলে শিশির—এই, নীরদ দত্ত কোনেদিনই কাওয়ার্ড নয়। জেলে থাকতে তামিল, তেলেগু, উর্দু, মালয়ালাম শিখেছিলাম। তােমরা তাে দেখেছ—সেইসব ভাষায় স্কুল সিলেবাসের গ্রামার লিখে একসময় আমি সংসার চালিয়েছি। ওয়েজ বাের্ড হবার আগে কী মাইনে ছিল কাগজে!

বাসব পালিত ফোড়ন কাটলেন, বিয়ে করেছেন অনেক ছেলেমেয়ে হয়েছে। তাদের মুখে ভাত জোটাতে উর্দু গ্রামার তাে লিখতে হবেই !! | এ ঠাট্টা গায়ে না মেখে নীরদদা রে রে করে বলে উঠলেন, কাওয়ার্ড আমি নই। আপনারা। এমন একটা জংধরা রিভলভার দিয়েছিলেন—যার ঘােড়া টিপলাম তিন তিনবার। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে। একটাও গুলি বেরােল না। উল্টো ইনস্পেক্টর চার্লস আমাকেই কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি চালাল। অল্পের জন্যে বেঁচে গিয়েছিলাম।

বাসব পালিত রীতিমতাে অবাক হয়ে নীরদ দত্তর মুখে তাকালেন। এতদিন একথা তাে বলেননি আমাকে? | কী বলব! তার আগেই তাে আপনারা আমাকে রেনিগেড দুর্নাম দিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করে দিলেন। শেষে আপনাদের গুলির ভয়েই পালিয়ে থাকতাম। ভাগ্যিস পুলিস অ্যারেস্ট করে নিয়ে গিয়ে আমায় বাঁচিয়ে দিল। রিভলভারটা ফেরত দেননি কেন। পরীক্ষা করে দেখা যেত।

দেব কী! ওটাসুদ্ধ ধরা পড়লে তাে চিত্তির হয়ে যেত। গােমতীর জলে ছুড়ে ফেলে দিলাম।

জার্মান মাউজার রিভলভার ছিল। অনেক কষ্টে জোগাড় করা হয়েছিল নীরদবাবু।

কথা আরও এগােত। কিন্তু আর এগােল না। ভূদেবদার মােটা গলা শােনা গেল। ওরে শিশির—আমার মাথার বালিশটা কোথায় গেল।

 ভূদেব গুহ এই পঁয়তাল্লিশ-ছেচল্লিশ। রীতিমতাে গাট্টাগােট্টা। শিশিরের চেয়ে অনেক সিনিয়র। কখন খবর লিখে বিছানা পেতে ফেলেছেন টেবিল জোড়া দিয়ে। ঘুমােবেন সেই বেলা ন-টা অবধি। তারপর অফিসেই চা খেয়ে বাজার করতে যাবেন। বাজার করে বাড়ি ফিরবেন।

ভূদেবদার বিছানা পাতা মানে আজকের রাতের মতাে খবর লেখা শেষ। ঘড়িতে রাত সওয়া তিনটে। এসব লােক কেন যে ডিসেম্বরের রাতেও খবর লিখতে আসেন তা জানে শিশির। ছুটি অনেক জমা আছে ভূদেবদার—নতুন বছরে ঢুকেই অফিসকে বেচে দেবেন!

আমার মাথার বালিশটা কোথায় জানিস?

আমি জানব কী করে? অফিসের বিছানা-অফিসের বালিশ—অফিস জানে।

দে না ভাই একটু খুঁজে। আমি এখন বাসবদার সঙ্গে কথা বলছি। শােন না। একটা কথা শুনে যা—

কাছে গেল শিশির। ভূদেব গুহ চাপা গলায় বললেন, ওই দুজনের এই কাজিয়া আমি সেই কবে থেকে দেখে আসছি। যুগান্তর? না, অনুশীলন? না, অহিংসা? ওরফে গান্ধীজি ? এ কাজিয়া শেষ হবার নয় রে শিশির! শুনে শুনে আমার কান পচে গেছে। তুই ওসবের ভেতর থাকিস না। নে—আমার বালিশটা খুঁজে দে ভাই—

আপনি কবে থেকে শুনে আসছেন ?

ওরে বােকা! আমার বাবা যখন জলপাইগুড়ি জেলের জেলার—তখন বাসবদা, নীরদদা দুজনই সেখানে প্রিজনার ছিলেন। স্বাধীনতার অনেক আগে। আমি তখন স্কুলের নিচু ক্লাসে পড়ি। বাবার কোয়ার্টার জেলের সঙ্গেই ছিল। আমি ওঁদের সেলের পাশে ঘােরাঘুরি করতাম ছােটোবেলায়। তখন যা শুনতাম—আজও তাই শুনলাম। দে না ভাই–বালিশটা যদি খুঁজে দিতে পারিস। ওসব ফালতু কথায় থেকে কী লাভ!

রাত পৌনে চারটের ভেতর সবাই শুয়ে পড়ল। ভূদেব গুহর নাক ডাকছে। কঙ্করদা টেবলল্যাম্প জ্বেলে বসে। প্রথম ছাপা কাগজখানা দেখে ছাপার অর্ডার দিয়ে শুয়ে পড়বেন। মনে পড়ল শিশিরের—ওঁরই মুখে শুনেছিল—দৈনিক সুপ্রভাত-এর মাথাকে পরাধীন আমলে জেলে যেতে হয়েছিল। তখন জেলারসাহেব তার দেখাশুনাে করতেন। তাঁরই রিকোয়েস্টে তাঁর ছেলে ভুদেবদা সুপ্রভাতে চাকরি পান। তখন স্বাধীনতা আসতে পাঁচ-ছ-বছর বাকি।

গান্ধীজির চিঠিচোর কখন ঘুমিয়ে পড়লেন—কেউ তা দেখতে পেলেন না। কারণ, তার আগেই সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন।

একেবারে ফিকে ভােরে টেলিফোন বেজে ওঠায় শিশিরের ঘুম ভেঙে গেল। পাতলা কম্বলের নীচে গাঁইগুই করতে থাকলেন ভূদেব গুহ। তিনি জড়ানাে গলায় বললেন, আবার এখন কে মারা গেল?

কঙ্কর ঘােষাল কম্বলের ভেতর থেকেই বললেন, তেমন কেউ মারা গেলে দরকারে উঠতে হবে—প্লেট চেঞ্জ করতে হবে—এটা খবরের কাগজ—দেখ

তাে শিশির ।

শিশিরেরও উঠতে কষ্ট হল। সে খােলা জানালা দিয়ে দেখল রীতিমতাে কুয়াশা। ঘড়িতে পাঁচটা বেজে পনেরাে। মনে মনে বলল, ইনস্পেক্টর চার্লস নয়তাে?

ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ভারী গলা, বাসব আছে? বাসব পালিত ? ঘুমােচ্ছেন। আপনি কে বলছেন? বলুন ভূপেন দত্ত। শিশিরের রাগ চড়ে গেল। এত ভােরে কে আবার এই ভূপেন দত্ত? সে জানতে চাইল, কোন ভূপেন দত্ত?

ভূপেন দত্ত আবার ক-জন! আই অ্যাম ওয়ান অ্যান্ড ওনলি ওয়ান ভূপেন দত্ত। বাসব জানে। তাকে দিন। বললাম তাে ঘুমােচ্ছেন।

আঃ! বুঝছেন না কেন? ওঁর সঙ্গে ডিসকাশন আছে আমার। যুগান্তর পার্টির ইতিহাস নিয়ে—

গভীর ঘুমে এখন বাসববাবু।

কিছু হবে না। ডেকে তুলে দিন। বলুন আমি ডাকছি। ভূপেন দত্ত। ও হ্যা। আমার আরও একটা পরিচয় আছে। আমি স্বামী বিবেকানন্দর ছােটভাই। বলুন—খুব জরুরি। যুগান্তর পার্টির হিস্ট্রি নিয়ে। নাইনটিন থার্টি থ্রি-র একটা ব্যাপারে—বাসব সব জানে।

ফোনটা শিশিরের হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল। সে বাসব পালিতকে ডেকে দিতে গেল। কয়েক পা মাত্র। হঠাৎ তার মনে হল—গােমতীর জলে ডুবুরি নামালে নীরদদার ছুড়ে দেওয়া রিভলভারটা কি এখন খুঁজে পাওয়া যাবে?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *