নয়
রানা ভেবেছিল, দক্ষ হাতে সার্চ করবে ওদেরকে। কিন্তু গায়ে হাত না দিয়ে আগাপাছতলা বুলিয়ে নেয়া হলো দীর্ঘ তারওয়ালা ভারী এক ডিভাইস দিয়ে। যন্ত্রটায় কোনও সুইচ নেই। সর্বক্ষণ জ্বলছে লাল বাতি।
‘ইলেকট্রোম্যাগনেট?’ জানতে চাইল রানা।
‘ঠিক,’ মাথা দোলালেন শিমেযু। ‘ব্যাটারি পাওয়ার্ড। অপারেট করা হয় ম্যানুয়ালি। যথেষ্ট শক্তিশালী। আপনাদের কাছে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থাকলে ওটা থেকে মুছে যাবে সব প্রোগ্রামিং।’
রানার ঘড়ি খুলে দেখে নিয়ে ফেরত দেয়া হলো। ওটা কবজিতে পরে জিজ্ঞেস করল ও, ‘কেন ভাবছেন এখানে এসে কিছু রেকর্ড করব আমরা?’
‘কারণ আপনারা বাঙালি হলেও এসেছেন আমেরিকান সংস্থা নুমা থেকে; আর হাতে হাত রেখে চলে আমেরিকান আর জাপান সরকার,’ বললেন শিমেযু। ‘ক’বছর হলো, কয়েকটা সরকারী এজেন্সি পেছনে লেগেছে। পিছু নেয়া হয় আমার ছাত্র-ছাত্রীদের। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।’
‘আমরা সরকারী কাজে আসিনি,’ জোর দিয়েই বলল রানা। ‘আসিফ জিয়োলজিস্ট, ও আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারবে, কেন এসেছি।’
এক পা সামনে বাড়ল আসিফ। ‘আমরা আসলে জানতে চাই যি-ওয়েভ সম্পর্কে। আগে কখনও ওই ধরনের ভূমিকম্পের কথা বলেনি কেউ।’
‘আপনার টেলিগ্রামে এটা লিখেছেন,’ বললেন শিমেযু। ‘কিন্তু এতদিন পর হঠাৎ কেন আগ্রহী হলেন? আর সবাই তো এককথায় আমাকে উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের ধারণা: আধুনিক যন্ত্র দিয়ে যি-ওয়েভ ধরা না গেলে, আমি কীভাবে সব জানছি? কথাটা বুঝতে পেরেছেন?’
‘যি-ওয়েভের সঙ্গে জড়িত অন্য একটি ব্যাপার, এ কারণেই আমরা আগ্রহী,’ বলল আসিফ। ‘প্রায় একবছর ধরেই হঠাৎ করে বাড়ছে সাগরের পানি।’
‘এগারো মাস আগে থেকে পাচ্ছি যি-ওয়েভ,’ বললেন শিমেযু।
সরাসরি কাজের কথায় এল তানিয়া, ‘আপনি কীভাবে ধরেছেন ওই ওয়েভ? মানে… আপনি তো আর আধুনিক টেকনোলজি…’
কড়া চোখে ওকে দেখলেন শিমে। ‘ও, তা হলে এটাই আপনাদের মস্ত প্রশ্ন? তো শুনে নিন, কমপিউটার আবিষ্কারের বহু আগেও ভূমিকম্প বা আরও অনেক কিছুর খবর জেনেছে মানুষ। যেমন, জন্তু-জানোয়াররা কিন্তু পৃথিবীর ভূকম্পন টের পায় অনেক আগেই। হয়তো জানেন, আজ থেকে বিশ শতক আগেই সাইসমোগ্রাফ তৈরি করেছিলেন চাইনি গবেষক ঝ্যাং হেং।’
‘মনে আছে ওটার কথা,’ বলল আসিফ। ‘দারুণ যন্ত্র। যতটা মনে পড়ে, বড় এক ব্রাসের ড্রামে নির্দিষ্ট সব জায়গায় ছিল কারুকাজ করা আটটা গিরগিটি। প্রতিটির মুখে থাকত একটা করে আলগা বল। প্রাসাদে ভূমিকম্প হলে গিরগিটির মুখ থেকে খসে পড়ত বল। বোঝা যেত কোনদিক থেকে আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প।’
‘প্রায় ঠিকই বলেছেন,’ বললেন শিমেযু। ‘পরে ওটার নকল দেখাব। গিরগিটি ছিল আসলে চাইনিয ড্রাগন। আর ওটার মুখ থেকে বল পড়লে গপ্ করে গিলে ফেলত ব্রোঞ্জের এক ব্যাঙ। এ অংশটুকু ভুলে গেছেন।’
‘জানতাম এখানে ড্রাগনের দেখা পাব,’ হালকা সুরে বলল সোহেল।
ওকে একবার দেখে নিয়ে শিমেযুর দিকে তাকাল রানা। ‘দেখাবেন আপনার যন্ত্রটা?’
বারান্দা থেকে নেমে ওদেরকে নিয়ে ফয়ে পার হয়ে দীর্ঘ এক করিডোর ধরে হেঁটে চললেন শিমেযু। রানা খেয়াল করেছে, একবারের জন্যেও গুরুর কাছ থেকে সরছে না হিনা। মেয়েটাকে কর্মচারী নয়, বডিগার্ড বলেই মনে হলো ওর।
বড় উঠান পেরিয়ে লেকের তীরে প্যারাপেটে পৌঁছুল ওরা। চাঁদের আলোয় রুপালি কাঁচের মত চকচক করছে লেক। বাইরের দেয়াল ও দুর্গের মাঝে শুকনো পরিখা।
রানার কাঁধে টোকা দিল সোহেল। ‘ওই দ্যাখ!’
শুকনো পরিখায় চোখ বোলাল রানা। খাদের মাঝে খাটো সব পায়ে ভর করে হেঁটে বেড়াচ্ছে ক’টা কমোডো ড্রাগন।
মৃদু হাসল সোহেল। ‘ওগুলো কীভাবে খায় দেখতে পেলে ভালো হতো।’
‘পরে দেখাব,’ বললেন শিমেযু।
পরিখার ওপর দিয়ে গেছে ছোট্ট সেতু। ওটা পেরিয়ে দুর্গের বড় এক ঘরে ঢুকল ওরা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জাপানি জিনিসপত্র। কোনওটা প্রাচীন, আবার কোনওটা গত শতাব্দীর প্রথমদিকের জাপানি শিল্প।
ঘরের একদিকের দেয়াল স্বচ্ছ কাঁচের। পুরো ছাতও তাই। একপাশে তামার বড় যন্ত্র। ওটা থেকে অন্যদিকের কাঁচের দেয়াল ভেদ করে পাইপ গেছে বাঁশের প্যানেলের পেছনে। ঘরের মাঝে লাল ভেলভেটের কয়েকটা কাউচ। অতিথিদেরকে ওখানে বসতে ইশারা করলেন শিমেযু। বসল ওরা। পাশেই পাথরের তৈরি ফায়ারপ্লেসে জ্বলছে আগুন। চট্পট আওয়াজে ফাটছে চ্যালা কাঠ। চারদিকে পলিশ করা কাঠের টেবিলে অ্যান্টিক গ্লোব ও অদ্ভুত সব মেকানিকাল ইকুইপমেন্ট। স্প্রিং, লিভার ও গিয়ার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে যন্ত্রগুলো।
অদ্ভুত দর্শন এক যন্ত্র আদিম কোনও অস্ত্র। কিছু অস্ত্র চিনল রানা। অন্যগুলো অচেনা। আরও রয়েছে ভালভ্ ও ছোট ট্যাঙ্কওয়ালা এক জিনিস। রানার মনে হলো, ওটা প্রাচীন কোনও ডাইভিং ইকুইপমেন্ট।
ঘরের কোণে হস্তচালিত পুরনো গ্যাটলিং গান।
‘মনে হচ্ছে হাজির হয়েছি অ্যান্টিকের দোকানে,’ বলল তানিয়া।
একদিকের দেয়ালের কাছে গিয়ে বড় একটা কেবিনেট দেখালেন শিমেযু। ‘এটাই আমার ডিটেক্টর।’ অস্বচ্ছ কাঁচের দরজা খুলে সরে দাঁড়ালেন। ভেতরে পোকার মত বিদঘুটে এক জিনিস। সারাশরীরে সরু হাজারখানেক তার। দেখলে মনে হবে মাকড়সার জাল। কোনও কোনও তারের ওপর বসে আছে নানা আকৃতি এবং আকারের চকচকে স্ফটিক।
‘আপনারা হয়তো জানেন, ইলেকট্রিকাল ফিল্ডে রাখলে কাঁপে কোয়ার্ট স্ফটিক। আর এসব প্রতিটি তার সোনার। সত্যিকারের নিখুঁত ইলেকট্রিকাল কণ্ডাক্টর। ভূমিকম্প হলে বেরিয়ে আসে মেকানিকাল এনার্জি। তার ভেতর কিছু হয়ে উঠবে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক। পৃথিবীর গভীর থেকে এনার্জি বেরোলে, এসব তারের মাধ্যমে ইলেকট্রিকাল চার্জ ঢুকবে স্ফটিকের ভেতর। ফলে তৈরি হবে সুরেলা কম্পন। সে কারণেই আমরা ধরতে পারি যি-ওয়েভের সিগনাল। পৃথিবীর আর কেউ এ ডিযাইন ব্যবহার করছে না, নইলে ঠিকই ধরা পড়ত যি-ওয়েভ।’
ভারী কেবিনেটের কাছে দেয়ালে ঝুলন্ত বিশ্বের মানচিত্রের সামনে থেমে জিজ্ঞেস করল সোহেল, ‘জিনিসটা আসলে কী?’ পুরো ঘরে প্রাচীন অ্যান্টিক জিনিসপত্র। মানচিত্রের চারদিকে চকচকে রুপোর পাতা। কাগজের একপাশে আধুনিক লাল কালিতে আঁকা অসংখ্য লাইন।
‘প্রতিটা যি-ওয়েভ আছে ওখানে,’ বললেন শিমেযু।
সোহেলের পাশে পৌঁছে গেল আসিফ। মনোযোগ দিয়ে দেখল মানচিত্র। একটু দূরে রানা ও তানিয়া। ভুরু কুঁচকে গেছে আসিফের। চোখ খুঁজছে কোনও খুঁত।
ফাটল ধরা একটা চাঁদা নিলেন শিমে। ওটাকে পয়েন্টার হিসেবে ধরে দেখালেন দীর্ঘ সব লাইন। ‘প্রতিটা ওয়েভ এলে তার শক্তি আর গতিপ্রকৃতি মেপে নিয়েছি। একেকটা ভূমিকম্পে তৈরি হয়েছে একটা করে রেখা বা লাইন। অন্য কেউ জানে না, তবে আমি এগুলোকে বলি: ভূতের কম্পন। তবে দুঃখজনক, জানতে পারিনি ভূমিকম্প আসে কোথা থেকে। জানা নেই শুরুটা হয়েছে কোথায়। তবে এটা জানি, এসেছে এদিকে।’
‘কোথায় শুরু তা বের করতে পারেননি?’ জানতে চাইল তানিয়া।
‘জানতে হলে চাই দ্বিতীয় স্টেশন,’ জোর দিয়ে বললেন শিমেযু। ‘ব্যাপারটা মাঝখান থেকে রেডিয়ো সিগনাল রিসিভ করার মত। একটা রিসিভার বড়জোর বলে দেবে ওয়েভ চলেছে কোনদিকে। কিন্তু দুটো রিসিভার হলে দুটোর মাধ্যমে ধরা পড়বে কোথা থেকে শুরু ওই কম্পন।’
‘তা হলে আরেকটা স্টেশন বসাতে পারতেন।’
‘পরে তাই করেছি,’ বললেন বিজ্ঞানী। ‘কিন্তু এরপর গত একটা সপ্তাহে ধরা পড়েনি কোনও কম্পন।’
‘এটা কেমন হলো?’ আনমনে বলল তানিয়া। ‘গেলেন পাহাড়ে ক্যাম্প করতে, হঠাৎ দেখলেন বিগফুট, কিন্তু তখনই মনে পড়ল, ফুরিয়ে গেছে ক্যামেরার ফিল্ম।’
‘কখনও কখনও এমনই হয়,’ বলল আসিফ। আবারও দেখল ম্যাপ। এসব লাইনের পাশের নম্বর কী বোঝাচ্ছে?’
‘তারিখ আর তরঙ্গের মাত্রা,’ বললেন শিমেযু।
বাংলা বা ইংরেজির মত নয় জাপানের তারিখ, মাস ও বছর। প্রথমে লেখা হয় বছর, তারপর মাস, শেষে তারিখ। সংখ্যাগুলো দেখে নিয়ে মানচিত্রে মনোযোগ দিল রানা। শিমেযুর যি-ওয়েভ প্রতি নব্বুই দিন পর পর বেড়েছে দ্বিগুণ।
ঠিক কবে কখন ওয়েভ শুরু হয়েছে তা ব্যাখ্যা করতে লাগলেন শিমেযু। আর তখনই অস্বচ্ছ কাঁচের দরজার ওদিকে মেশিনে জ্বলে উঠল নীল বাতি। দৌড়ে ওখানে গেলেন শিমেযু। মৃদু আওয়াজ শুরু করেছে ভেতরের একটা বাক্স। তিরতির করে কাঁপছে সোনালি কয়েকটা তার। খির-খির শব্দে দ্বিমাত্রার রেখাওয়ালা এক কাগজ বেরোতে লাগল পুরনো এক মেশিন থেকে।
‘নতুন ওয়েভ,’ উত্তেজিত হয়ে উত্তেজিত হয়ে বললেন শিমেযু, ‘সেকেণ্ডারি গ্রুপ, এবার জানব কোথায় আছে এপিসেন্টার।’
বড় এক ডেস্কের সামনে গেলেন তিনি, খপ্ করে তুলে নিলেন নিকেল করা পুরনো মাইক্রোফোন। এ ধরনের জিনিস ব্যবহার করা হতো প্রাচীন, ছোট রেডিয়ো স্টেশন বুথে। কয়েকটা বাটন টিপে বলে উঠলেন শিমেযু, ‘ইটো, আমি শিমে। শুনছ আমার কথা?’ টক সুইচ থেকে বুড়ো আঙুল সরিয়ে অপেক্ষা করছেন। কয়েক সেকেণ্ড পর টক সুইচ টিপে আবারও বললেন, ‘ইটো, আমি শিমেযু। শুনতে পাচ্ছ? ধরতে পেরেছ যি-ওয়েভ?’
কয়েক সেকেণ্ড পর উত্তেজিত কণ্ঠ এল দ্বিতীয় স্টেশন থেকে, ‘জী, মাস্টার শিমেযু। ধরতে পেরেছি ওয়েভ।’
‘কোন্ দিক থেকে আসছে?’
‘একমিনিট অপেক্ষা করুন। সরে যাচ্ছে সিগনাল।’
অতিথিদের দিকে তাকালেন বিজ্ঞানী। ‘এজন্যেই অপেক্ষা করছি। আপনাদের কপাল ভাল। ঠিক সময়ে হাজির হয়েছেন।’
অপেক্ষা করছে ওরা সবাই।
স্পিকারে ভেসে এল নারীকণ্ঠ: ‘আমার হিসেব অনু এটা থ্রি লেভেলের ওয়েভ। বেয়ারিং টু-ফোর-ফোর ডিগ্রি।’
‘স্ট্যাণ্ড বাই,’ বললেন শিমে। দৌড়ে গেলেন নিজের মেশিনের সামনে। খুব সাবধানে ঘোরাতে লাগলেন ব্রাসের বড় এক লিভার। সঙ্গে ঘুরছে পয়টার গাম্বাল। বেয়ারিঙের মার্কার দেখে নিয়ে গলা উঁচিয়ে বললেন, ‘টু-সিক্স-যিরো।’
গেলেন মানচিত্রের সামনে। হাতে বড় আকারের জ্যামিতিক চাঁদা। মানচিত্রের ঠিক জায়গায় ধরলেন ওটা। এ দুর্গ থেকে সোজা দুই শ’ ষাট ডিগ্রি ধরে মানচিত্রে জাপানের ওপর দিয়ে চলতে চলতে পৌঁছে গেলেন নাগাসাকি শহরে। ওখানে না থেমে গেলেন সাগরে। এবার খুঁজে পেলেন ইটোর স্টেশন। ওটা ছোট এক দ্বীপে। ওই স্টেশনের ওয়েভ মেপে পেলেন, দু’ শ’ পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি থেকে এসেছে রহস্যজনক তরঙ্গ।
এসব রেখা দেখাচ্ছে পুব চিন সাগর। তবে আশপাশে কোথাও নেই টেকটোনিক প্লেট। রানা দেখল, ওখানে আছে পাথরের কঠিন মহাদেশীয় শেলফ। জায়গাটা শাংহাই থেকে বড়জোর এক শ’ মাইল দূরে। বিজ্ঞানীর দিকে তাকাল রানা। বিস্ময় নিয়ে মানচিত্রের দিকে চেয়ে আছেন তিনি। গেলেন মাইক্রোফোনের কাছে। ‘নম্বর ঠিক আছে তো? ভুল হলো না তো? আবারও জানাও।’
আবারও লাইনে এল ইটো। ‘একমিনিট…‘
ওদিক থেকে এল কর্কশ আওয়াজ।
‘কী হচ্ছে…’ বলতে বলতে থেমে গেল তানিয়া।
‘গুলি করা হচ্ছে,’ বলল রানা।
‘ইটো, শুনছ?’ গলা উঁচু করে ডাকলেন বিজ্ঞানী, ‘তোমরা ঠিক আছ তো?’
এল জোরালো স্ট্যাটিকের আওয়াজ, তারপর বলে উঠল মেয়েটা, ‘টিলা বেয়ে উঠে আসছে একদল লোক! তাদের হাতে…’
গুলির আওয়াজে চাপা পড়ল তার কণ্ঠ। চেঁচিয়ে উঠল মেয়েটা। তারপর এল বিস্ফোরণের আওয়াজ।
‘ইটো?’ শক্ত হাতে মাইক্রোফোন ধরেছেন শিমেযু। ‘ইটো!’ ফ্যাকাসে হয়ে গেছেন। থরথর করে কাঁপছে হাত।
ভদ্রলোক অভিনয় করছেন না, পরিষ্কার বুঝল রানা। জবাবের জন্যে অপেক্ষা করছেন শিমেযু। হঠাৎ করেই দুর্গের কোথাও থেকে বেজে উঠল গম্ভীর আওয়াজে ভারী একটা ঘণ্টা। বারবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বিষাদ ভরা শব্দ।
‘কী হয়েছে?’ জানতে চাইল রানা।
‘ওটা আমাদের সতর্কতামূলক ঘণ্টি,’ বললেন শিমেষু।
ওদের পেছনে ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ল ছাতের কাঁচ একইসময়ে জানালার কাঁচ চুরমার করে মেঝেতে এসে পড়ল সবজেটে, গোল কী যেন!
গড়াতে শুরু করে এগিয়ে এল রানাদের দিকে!