মহাত্মাজীর প্রিয় ভজন
একটি নমস্কারে প্রভু, একটি নমস্কারে
সকল দেহ লুটিয়ে পড়ুক তোমার এ সংসারে।।
ঘন শ্রাবণ—মেঘের মতো রসের ভারে নম্র নত
একটি নমস্কারে, প্রভু, একটি নমস্কারে
সমস্তমন পড়িয়া থাক তব ভবনদ্বারে।।
নানা সুরের আকুল ধারা মিলিয়ে দিয়ে আত্মহারা
একটি নমস্কারে, প্রভু, একটি নমস্কারে
সমস্ত গান সমাপ্ত হোক নীরব পারাবারে।।
হংস যেমন মানসযাত্রী তেমনি সারা দিবসরাত্রি
একটি নমস্কারে, প্রভু, একটি নমস্কারে
সমস্ত প্রাণ উড়ে চলুক মহামরণ—পারে।।
—রবীন্দ্রনাথ
(২)
হিন্দি ভজন
রঘুপতি রাঘব রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম
মঙ্গল—পরশন রাজারাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
শুভ শান্তি বিধায়ক রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
বরাভয়—দানরত রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
নির্ভয় কর প্রভু রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
দীন দয়াল রাজা রাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
রাজা রাম জয় সীতারাম
পতিত পাবন সীতারাম।।
ঈশ্বর আল্লা তেরে নাম
সবকো সম্মতি দে ভগবান।।
(৩)
গুজরাটি ভজন
বৈষ্ণব জন তো তেনে কহীয়ে
যে পড়ি পরাঈ জানে রে।
পরদুঃখে উপকার করে তে
মন অভিমান ন আনে রে।।
সকল লোকমাঁ সহুনে বন্দে
নিন্দা ন করে কেনী রে।
বাচ কছ মন নিশ্চল রখে তো
ধন্য ধন্য জননী তেনী রে।।
সমদৃষ্টি নে তৃষ্ণা ত্যাগী
পরস্ত্রী জেনে মাত রে।
জিহ্বা থকী অসত্য ন বোলে
পরধন নও ঝালে হাত রে।।
মোহ মায়া ব্যাপে নহি তেনে
দৃঢ় বৈরাগ্য জেনা মনমাঁ রে।।
যশলোভী নে কপটরহিত ছে
কাম ক্রোধ নে নিবাযাঁ রে।।
ভণে নরসৈয়ো তেনু দবশন করতা
কুল একোতের তাযাঁ রে।।
(ভক্ত নরসি মেহতা)
বৈষ্ণব জন তো— ভজনের ভাবার্থ
[তাঁকেই তো বৈষ্ণব জন বলতে পারা যায়, যাঁর মনে পরহিতের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়ে আছে। যিনি পরদুঃখে উপকার করেন, মনে কোন অভিমান আসতে দেন না, সকল লোককে তিন সমানভাবে বন্দনা করেন, কারও নিন্দা করেন না, যার মন অবিচল, যিনি সমদৃষ্টি, যিনি তৃষ্ণা ত্যাগ করেছেন, তিনি পরস্ত্রীকে নিজ মাতার মত মনে করেন, যাঁর জিহ্বার দ্বারা অসত্য উচ্চচারিত হয় না, পর ধনে কখনো হাত দেন না, যার মন মোহ—মায়ায় আবদ্ধ নয়, যাঁর মনে দৃঢ় বৈরাগ্য যিনি রামনামে বিভোর হয়ে আছেন যার, দেহের মধেই সকল তীর্থ। যিনি কপটতারহিত, যিনি কাম ক্রোধ সম্বরণ করেছেন, তিনিই বৈষ্ণব। নরসিং ভণে, তাঁকে দরশন করে ভবসাগর পার হতে চাই।]