মনে করি, খুনির নাম এক্স
আসুন, ইন্সপেক্টর—আসুন। এই দুর্ঘটনা-গৃহে আপনাকে স্বাগত জানাই। কী বলছেন? দুর্ঘটনা নয়, খুন? না, না, খুন কেমন করে হবে! খামোকা কেন কাকাকে কেউ খুন করতে যাবে? হ্যাঁ, এটা ঠিকই যে, আমার কাকা বিনোদন সামন্ত লোক খুব সুবিধের ছিল না। নামের সঙ্গে কাজকর্মের দারুণ মিল ছিল। হোল লাইফ বিনোদন করে গেল কোনওরকম অ্যামিউজমেন্ট ট্যাক্স ছাড়াই। কাকিমার দিকে ফিরেও তাকাত না। আর ছেলে, রাকেশ, সে যেন থেকেও নেই। ছেলেটা গতবছর স্টার পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করার পর রেজাল্ট নিয়ে যখন বাড়ি ফিরল ওর বাবা তখন জলপথের একজন ইয়ারকে নিয়ে মাইফেল করতে রওনা দিচ্ছে। বুঝুন! রাকেশ মার্কশিট দেখাতে চাইলে জবাব দিল, দেখার আবার কী আছে! ওটা বাঁধিয়ে গলায় ঝুলিয়ে চরকি কাট। তা হলেই দেখুন কীরকম বাবা! বাবা তো নয়, একেবারে পিতাশ্রী!
আপনি আবার আমাদের স্টেটমেন্ট নেবেন? কোনও মানে হয়! কী বলছেন? আপনার হাতে কিছু সূত্র এসেছে? পরিভাষায় যাকে বলে ক্লু? বেশ, আবার নিন জবানবন্দি। তবে, বন্দি করবেন না, প্লিজ—অন্তত আমাকে। আমি মশাই আগাপাস্তলা নির্দোষ। যদিও আমি কাকাকে খুব একটা পছন্দ করতাম না।
না, নতুন কী আর বলব!
পরশু সকালে কাকিমা প্রথম চেঁচামেচি শুরু করে। আপনার কাছে লুকিয়ে লাভ নেই, ইন্সপেক্টরবাবু। কাকা আলাদা ঘরে শুত। কাকিমা আর রাকেশ অন্য ঘরে। সকালে কাকার জন্যে চা নিয়ে ঘরে ঢুকতে গিয়ে কাকিমা দ্যাখে দরজা তখনও বন্ধ। কাকিমা হেভি পতিব্রতা ওয়াইফ। ব্যস, শুরু হয়ে গেল দরজা ধাক্কাধাক্কি আর চিৎকার। রাকেশ ছুটে এল। একতলার ঘর থেকে আমি ছুটে গেলাম। ছোটকা ছুটে এল। হ্যাঁ, ছোটকা মানে কাকার ছোটভাই—সনাতন সামন্ত। ওরও আবার নামের সঙ্গে কাজকর্মের দারুণ মিল। একেবারে তিলক কাঁটা গৌর-নিতাই। দাদাকে—মানে, আমার কাকাকে—যমের মতো ঘেন্না করত। সুযোগ পেলেই জ্ঞান দিত, বলত, ভগবান তোমাকে উচিত শিক্ষা দেবে।
তো ভগবান উচিত শিক্ষা দিল।
দরজা ভেঙে দেখি কাকা চন্দ্রবিন্দু।
কাকিমা একেবারে বাংলা সিনেমার মতো কান্নাকাটি জুড়ে দিল। ছোটকা থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে ছিল। বলল, ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্যে। আর রাকেশ চোয়াল শক্ত করে মা-কে সামলানোর চেষ্টা করছিল।
আমার কথা জিগ্যেস করছেন, ইন্সপেক্টর?
আমি বাউন্ডুলে মানুষ। শখের নাটক-ফাটক করি। দু-একটা টিউশানি করি বটে, কিন্তু তাতে আর ক’পয়সা হয়! কাকাই আমাকে টাকাটা পয়সাটা দিত। কাকা চলে গিয়ে আমার বেশ প্রবলেম হয়ে গেল। ছোটকা আমাকে—এই দামড়া বেকার ভাইপোটাকে—খুব একটা লাইক করে না। সে যাই হোক, কাকা চলে যাওয়ায় আমি শক পেয়েছি কিনা জিগ্যেস করছেন? বেশক, বেশক। একে তো আত্মীয়, তার ওপরে লক্ষ্মী-টক্ষি দিত। তবে বেচারি কাকিমাকে উদোম টরচার করত। এখন রাকেশ বড় হয়ে গেছে…আগে তো বিনোদন সামন্তের মেইন বিনোদন ছিল যখন-তখন বউয়ের গায়ে হাত তোলা। আমি তো বহুবার প্রোটেস্ট করেছি, কাকাকে ধরে থামিয়েছি। কিন্তু পেটে জলপানি পড়ল কাকার আর জ্ঞান থাকত না। কী বলব আপনাকে…তখন খেঁদি-পেঁচিকেও নূরজাহান দেখাত। আর নূরজাহানকে খেঁদি-পেঁচি।
কী বলছেন? কাকা কীভাবে মারা গেছে? কেন, হার্টফেল করে! না, না—আপনার খুন বলে মনে হচ্ছে কেন? পোস্ট মর্টেমে সেরকম কিছু কি পাওয়া গেছে? ও, পাওয়া যায়নি! তবে আর সমস্যাটা কোথায়! কাকা পাতি হার্টফেল করে মারা গেছে। কী বলছেন? ইলেকট্রিক শক দিলেও মানুষ হার্টফেল করে মারা যায়? তা আপনি কি সেরকম কোনও ইয়ে, মানে, ক্লু পেয়েছেন?
না, দেখুন, একটা লম্বা ইলেকট্রিকের তার খুঁজে পাওয়াটা কোনও ব্যাপার নয়। আপনি কি বলতে চান এটা কোনও প্রমাণ? কোনও দরকারে কেউ তো তারটা কিনে থাকতেই পারে। কিন্তু তারটা আপনি পেলেন কোথায়? ছোটকার ঘরে! দাঁড়ান, ছোটকাকে ডাকছি। মিছিমিছি কাউকে সন্দেহ করা ঠিক নয়, ইন্সপেক্টর।
এই যে, ছোটকা, তুমি একটা লম্বা ইলেকট্রিকের তার কিনেছিলে? এই পুলিশ অফিসার বলছেন…কী কেনোনি! চমৎকার! দেখলেন তো, অফিসার, ছোটকা তার-টার কিছু কেনেনি। আপনার সন্দেহ-টন্দেহর কোনও মানে হয় না।
কী বলছেন? তারটা অন্য কেউ কিনে ছোটকার ঘরে লুকিয়ে রেখেছিল? যাঃ, এটা কখনও হয়! আর কে তার কিনবে! আমি, কাকিমা, রাকেশ…আমাদের কারও তার দরকার পড়েনি। কাকার পায়ের চেটোয় আপনি পোড়া দাগ পেয়েছেন বলছেন? হতে পারে কাকা হয়তো জ্বলন্ত সিগারেটের ওপরে ভুল করে পা ফেলেছিল। কেন, এটা অসম্ভব বলছেন কেন? পোড়া দাগ দু-পায়ের তলাতেই রয়েছে। হ্যাঁ, এটা একটু অদ্ভুত মানছি। একসঙ্গে দু-দুটো জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা—তা-ও আবার দু-পায়ের তলায়!
আচ্ছা, আপনিই বলুন—কাকাকে খুন করে আমাদের কী লাভ! কাকিমা নিশ্চয়ই নিজে থেকে বিধবা হতে চাইবে না! রাকেশের পক্ষে বাবাকে খুন করা অসম্ভব। ছোটকা ধার্মিক মানুষ। এ ধরনের লোক বিশ্বাস করে, কাউকে শাস্তি-টাস্তি যা দেওয়ার ভগবানই দেবেন। কী বলছেন, আমি? হাসালেন, ইন্সপেক্টর। যে আমাকে রোজ সোনার ডিম পেড়ে দেয় তাকে আমি খুন করতে যাব কেন! না, না, সন্দেহ আপনি করতেই পারেন। কারণ, সন্দেহ করার, জন্যেই আপনি মাইনে পান।
ইন্সপেক্টর, একটা গুপ্তকথা আপনাকে বলি। কাকা ব্যাপক ভিতু ছিল। ভূতের গল্প একটুও সহ্য করতে পারত না। টিভিতে ওরকম ফিলিম-টিলিম কিছু হলে ভয়ে কেঁপে উঠে টিভি অফ করে দিত। রাকেশকে এইসব ছবি দেখা নিয়ে বেশ বাজেভাবে বকাঝকাও করত। খেয়াল রাখত না যে, ছেলে বড় হচ্ছে। এই তো রাকেশ এসেছে। ওকেই জিগ্যেস করে দেখুন—।
আচ্ছা, ইন্সপেক্টর, আপনাকে দেখে তো বেশ চালাক-চতুর বুদ্ধিমান বলে মনে হচ্ছে। আপনি নিশ্চয়ই এলিমিনেশান থিয়োরির কথা শুনেছেন। কাকা যদি সত্যি-সত্যিই খুন হয়ে থাকে, তা হলে আপনি মনে-মনে একটা লিস্ট তৈরি করুন—তাতে লিখুন, কারা-কারা কাকাকে খুন করতে পারে। সেই লিস্টে নিশ্চয়ই আমাদের তিনজন কি চারজনের নামই থাকবে। এইবার আপনি যুক্তি দিয়ে, লজিক দিয়ে, অ্যানালিসিস করে একে-একে নাম বাদ দিয়ে লিস্টটাকে ছোট করে আনুন। মানে, মেথড অফ এলিমিনেশান আর কী! তা হলেই দেখবেন, সব নামই একে-একে বাদ হয়ে গেছে। হাতে রইল শূন্য। হাঃ-হাঃ-হাঃ-হাঃ।
কী, আপনি ওসব লিস্ট-ফিস্ট বানাতে চান না? ওগুলো গল্পে-টল্পে হয়? আপনার টেকনিক একটু আলাদা? আপনি ভীষণ একবগ্গা টাইপের লোক দেখছি। বলুন তো, বাড়ি সার্চ করে আপনার কী লাভ! এখনও আমাদের অশৌচ কাটেনি, তার মধ্যে আপনার তত্ত্বতালাশের ঝঞ্ঝাট!
ওই দেখুন, আপনার সিপাইরা কী নিয়ে এসেছে। আশ্চর্য! এ তো দেখছি ড্রাকুলার ড্রেস! কালো আর লাল রঙের আলখাল্লা! লম্বা ছুঁচলো দুটো নকল দাঁত! কী বলছেন, কাকাকে এই পোশাক পরে কেউ হয়তো ভয় দেখিয়েছিল?
হ্যাঁ, কাকার হার্ট খুব উইক ছিল, তার ওপর কাকা ছিল রামভিতু—আগেই তো আপনাকে বলেছি। ড্রাকুলার মেকাপ নিয়ে রাতে কাকাকে কেউ ভয় দেখালেই কাজ শেষ। কিন্তু কে ভয় দেখাবে? আচ্ছা, আপনি আলখাল্লার হাইটটা মাপুন তো…হ্যাঁ, প্রায় সাড়ে পাঁচফুট। তা হলে তো কাকিমা আর রাকেশ সরাসরি বাদের খাতায়—ওদের হাইট অনেক কম। বাকি রইলাম আমি আর ছোটকা…আমাদের আপনি মিছিমিছি সন্দেহ করছেন।
কী বলছেন, আপনার কথা আমি বুঝতে পারিনি? ড্রাকুলার ছদ্মবেশে কেউ কাকাকে ভয় দেখালেও কাজ হয়নি—কাকা তাতে মারা যায়নি! ও…তারপরই খুনি শিওর হওয়ার জন্যে কাকাকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে খতম করেছে! ও মাই গড!
ড্রাকুলার ড্রেসটা কোথায় খুঁজে পেল ওরা? কী? আমার ঘরে! সুটকেসের ভেতরে! ইমপসিবল! না, না—খুঁজে পাওয়াটা অসম্ভব বলছি না, বলছি, ড্রেসটা আমার ঘরে থাকাটাই আজগুবি। বলুন তো, ওরকম হতচ্ছাড়া একটা ড্রেস আমি খামোখা কিনতে যাব কেন! না, না, আমার কোনও নাটকে ড্রাকুলার সিন-ফিন নেই। এ তো আচ্ছা মুশকিল! বলছি আমি কিচ্ছু জানি না, তবুও আপনি আমাকে হ্যারাস করছেন! বিশ্বাস করুন, আমি একটুও বানিয়ে বলছি না।
কী, আমাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে চাইছেন? নিয়ে কীসের সঙ্গে মেলাবেন? ও, ওটা আপনার সিক্রেট ব্যাপার! ভালো। না, না, আমি কিছু জানতে চাই না। আমি বরং জানাতে চাই যে, আপনি ঠিক পথে এগোচ্ছেন না। নিন, নিন, প্রাণভরে ছাপ নিন। এ-এ-এই। এবার ছোটকা, তুমি দাও। হুঁ, এইবার রাকেশ।
কী বললেন? কাকিমারও ফিঙ্গারপ্রিন্ট আপনার চাই? আপনি কি মানুষ, না কসাই! ঠিক আছে, মশাই ডাকছি। রাকেশ, যা তো, তোর মা-কে ডেকে দে। বল, হবিষ্যি পরে হবে। আগে খুনের তদন্ত। আমাদের রেসপেক্টেড ইন্সপেক্টর এই ফরমান জারি করেছেন।
এই যে, কাকিমা, কিছু মাইন্ড কোরো না। তোমার ডানহাত আর বাঁ হাতের আঙুলের ডগাগুলো এই প্লেটটার ওপরে চেপে ধরো। ব্যস…কাজ শেষ। থ্যাংক ইউ, কাকিমা।
বলুন, আর কী বাকি রইল, ইন্সপেক্টর? এবার ছাপ মেলানোর কাজ শুরু করুন…।
কী বলছেন? আঙুলের ছাপ মিলিয়েই আপনি আসল খুনির সন্ধান পেয়ে গেছেন? যাঃ, আপনি ঠাট্টা করছেন! বলছেন ঠাট্টা নয়! ঠিক আছে, বলুন, শুনি কে সেই মিস্টার এক্স।
ড্রাকুলার ড্রেসটা আমার সুটকেসে কেউ ঢুকিয়ে রেখেছিল…যাতে সন্দেহটা আমার ঘাড়ে পড়ে? আচ্ছা…তারপর? ও, ছোটকার ইলেকট্রিক তারের কেসটাও তাই! বাঃ, চমৎকার। বলুন, বলুন, আমি কান পেতে আছি।
কী, রাকেশ খুনিকে চেনে! ও-ই খুনের একমাত্র আই উইটনেস! খুনি রাকেশের খুব ক্লোজ? কী বলছেন আপনি! কাকিমা কখখনও এ-কাজ করতে পারে না। প্লিজ, আপনি কিন্তু লিমিটের বাইরে চলে যাচ্ছেন, ইন্সপেক্টর! কাকিমা কী টাইপের ওয়াইফ আপনি জানেন না! কাকা যতই ইয়ে হোক, কাকিমা সবসময় কাকাকে ভাবত—স্বামী নয়—স্বামীদেবতা। কাকিমার পক্ষে এ-কাজ অসম্ভব! প্লিজ, স্টপ, ইন্সপেক্টর…ফর গডস সেক শাট ইয়োর মাউথ। কাকিমা…।
কী, আপনার কথা আমি ঠিকমতো বুঝতে পারিনি? কাকিমা নয়, রাকেশ। রাকেশ ওর বাবাকে খুন করেছে! কীসব আনসান বকছেন আপনি! এই মুহূর্তে বেরিয়ে যান বাড়ি থেকে। জাস্ট…গেট…আউট!
আচ্ছা, রাকেশ কী করে খুন করবে বলুন তো! ওইটুকু ছেলে! সবে সতেরো ছুঁয়েছে। কাকার খাটে ওর আঙুলের ছাপ পেয়েছেন? সে তো থাকতেই পারে। কী বলছেন? ইলেকট্রিকের তারটার নানান জায়গায় ওরই আঙুলের ছাপ? ওর রাফ খাতায় আরও প্রমাণ পেয়েছেন? কী প্রমাণ? ও ডায়েরি লিখত! জানতাম না তো! কী লিখেছে সেখানে? মায়ের ওপরে বাবার টরচার ও আর সইতে পারছিল না? বাবাকে ও ভয় দেখিয়ে কিংবা শক দিয়ে খতম করবে? হতেই পারে না! ফুলের মতো ওইটুকু ছেলে! দেখি ওর সেই ডায়েরি…।
ও মাই গড! মা-কে এত ভালোবাসে ও! আমি বা ছোটকা যে-কাজ করতে পারিনি তাই করে দেখাল রাকেশ! আমার ছোট ভাইয়ের ওইটুকু বুকে এত সাহস লুকিয়ে ছিল!
এ তুই কী করলি, রাকেশ! এ তুই কী করলি! রাকেশ রে…রাকেশ…! এই দাদাটাকে একবার বললি না তোর মনের কথা? তোর মা-কে তুই এত ভালোবাসিস! আমিও তো তোর মা-কে ভালোবাসি…তোকে ভালোবাসি! মনে-মনে তোর বাবাকে আমি দুশো সাঁইতিরিশবার খুন করেছি। হ্যাঁ, দুশো সাঁইতিরিশবার। মনে-মনে। আর তুই করেছিস মাত্র একবার—তবে মনে-মনে নয়, সত্যি-সত্যি। কী করে পারলি রে তুই? আমাকে তুই ভালোবাসার টানে হারিয়ে দিলি?
ইন্সপেক্টর, প্লিজ, রাকেশকে আপনি ছেড়ে দিন। আপনার দুটি পায় পড়ি। ওর জীবন তো সবে শুরু। কত আলো, কত আকাশ ওর দেখার বাকি আছে। আর আমি? স্রেফ একজন বেকার যুবক, অন্যায় ভালোবাসা বুকের ভেতরে লুকিয়ে চোরের মতো বেঁচে আছি। বিশ্বাস করুন, রাকেশের জেল কিংবা ফাঁসি-টাসি হলে কাকিমা নির্ঘাত সুইসাইড করবে। আর ও সুইসাইড করলে…। তারপর বাকি থাকব শুধু আমি…। কিন্তু যে-দুজনের কথা ভেবে আমার ছন্নছাড়া ছিন্নছেঁড়া জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখতে ইচ্ছে করত, তারা দুজনেই যদি না থাকে তা হলে আমার আর বেঁচে থেকে লাভ কী! সে বেঁচে থাকার কোনও মানে আছে বলে আপনি মনে করেন, ইন্সপেক্টর?
আচ্ছা, একটা লাস্ট রিকোয়েস্ট করব আপনাকে? একটা কথা রাখবেন আমার? আমাকে ফাঁসি দেবেন? কিংবা যাবজ্জীবন? প্লিজ, আপনার পায়ে ধরছি, ইন্সপেক্টর। হ্যাঁ, আমিই খুন করেছি কাকাকে। আমিই খুন করেছি। আমি-আমি আমি! এবার অন্তত আমাকে আপনি অ্যারেস্ট করুন। প্লিজ, অ্যারেস্ট করুন আমাকে…।
আসুন, রাকেশের ওই দুরন্ত ভালোবাসার কাছে অন্তত একটিবারের জন্যে আমরা হেরে যাই…।