মনুষ্যত্ব রক্ষার্থে
এক সন্ধ্যায়, বন্ধু জর্জ বিষণ্ণ নিঃশ্বাস ফেলে আমাকে বলল, ‘আমার এক বন্ধু রয়েছে সে একটা Klutz.’
আমি জ্ঞানীর মতন মাথা নাড়লাম। ‘এক পালকের পাখি সব।’
আশ্চর্য হয়ে জর্জ আমার দিকে তাকাল, ‘এর মধ্যে পাখির পালক এল কোথা থেকে? কোনো একটি বিষয় থেকে চট করে সরে যাওয়ার চমৎকার ক্ষমতা রয়েছে তোমার। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমি মনে করি, বার বার প্রমাণ করার দরকার নেই, তোমার অপ্রতুল বুদ্ধির দৌড়ই এর কারণ।’
‘বেশ, বেশ,’ আমি বললাম, ‘তাহলে, তাই-ই সই। যখন তুমি তোমার বন্ধুকে Klutz, বলছ, ইঙ্গিত কি তোমার আজাজেল্ এর দিকে!
আজাজেল্ হচ্ছে দুই সে.মি. জিন বা অপার্থিব চরিত্র (যা খুশি ভাবুন), যার সম্বন্ধে জর্জ অনবরত বক্ করে।
জমে যাওয়ার মতো হয়ে, সে বলল, ‘আজাজেল্ আমাদের কথোপকথনের বিষয়বস্তু নয়। আর আমি বুঝতে পারি না, কোথা থেকে তার কথা তুমি শুনেছ।
‘একদিন, আমি তোমার এক মাইলের মধ্যে ছিলাম,’ আমি বলি।
জর্জ একেবারেই পাত্তা না দিয়ে বলল, ‘প্রকৃত অর্থে আমার বন্ধু মিনান্ডার ব্লক এর সঙ্গে কথাবার্তায় আমি প্রথমে ঐ কর্কশ Klutz. শব্দটি শুনি। আমার ধারণা, তুমি তাকে কখনো দেখনি। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানুষ, বেছে বেছে বন্ধুত্ব করে, আর তোমাকে দেখলে, তাকে কেউ এ বিষয়ে দোষ দেবে না।’
‘Klutz. শব্দটি জবরজং বদখত মানুষকে বোঝায় আর সে হচ্ছি আমি।’ মিনান্ডার ব্লক বলেছিল আমাকে, ‘শব্দটি এসেছে ইড্ডিশ ভাষা থেকে। আক্ষরিক অর্থে যার মানে হল এক টুকরো কাঠ, গাছের গুঁড়ি, কাঠের ব্লক, আর অবশ্যই আমার নাম, নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, ‘ব্লক’।
সে বুক খালি করে নিঃশ্বাস ফেলল। ‘এবং তবু, শব্দটির সঠিক অর্থ অনুযায়ী, আমি কিন্তু Klutz. নই। আমার মধ্যে শুকনো কাঠের মতো, গাছের গুঁড়ির মতন বা ব্লক মাফিক কিছুই নেই। আমি মৃদুমন্দ বায়ু আন্দোলনের মতন হাল্কাভাবে এবং পতঙ্গের সৌষ্ঠবে নাচতে পারি। প্রতিটি চলনে আমি তন্বীর ন্যায়। তরুণীর দল আমার নৈপুণ্য যাচাই করে দেখতে পারে, প্রণয়কলার শিষ্য হিসেবে, অবশ্যই, আমি যদি তেমন অনুমতি দেওয়া নিরাপদ মনে করি। আমাকে বাদ দিয়ে, আমার চতুর্পার্শ্বস্থ সব কিছু Klutzish। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যেন নিজের মহাজাগতিক চরণে খসে পড়েছে। যদি গ্রীক এবং ইড্ডিস দুটি ভাষার সমন্বয় করেন, তবে আমি একজন teleklutz.
‘কতদিন ধরে এসব চলছে, মিনান্ডার?’ আমি বলি।
‘সারা জীবন। কিন্তু অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরই আমার এই অদ্ভুত গুণের কথা নিজে হৃদয়ঙ্গম করি। যৌবনপ্রাপ্তির আগে পর্যন্ত সরল মনেই ভাবতাম, যা আমার সঙ্গে ঘটে চলেছে, সবই স্বাভাবিক ঘটনা।
‘তুমি কি এসব কারো সঙ্গে আলোচনা করেছ?’
‘অবশ্যই নয়, জর্জ। আমাকে লোকে পাগল বলবে। তুমি কি কোনো মনোবিজ্ঞানীকে দেখেছ, teleklutzism-এর বিরোধিতা করবে। আমার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ পর্বের পরই সে মজা পেয়ে যাবে। এক নতুন মনোবিকার আবিষ্কারের আনন্দে, সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে অর্ধেক পথ। এরই ফলে কোটিপতি। কোনো মনোরোগ চিকিৎসককে সমৃদ্ধ করে তোলার মতন, গণ্ডমুর্খ হয়ে আমি জন্মাইনি। আমি একথা যে কাউকে বলতে পারবো না।’
‘তাহলে আমাকে একথা বলছ কেন, মিনান্ডার।’
‘কারণ, অন্যদিকে আমার মনে হয়, কর্মক্ষম থাকতে, আমার কাউকে বলা উচিত। যেমন ঘটেছে, আপনিই সেই লোক, আমি জানি।’
তার ব্যাখ্যাটা আমি বুঝলাম না। কিন্তু দেখতে পেলাম, আবার আমি আমার বন্ধুদের আস্থায় এসে যাচ্ছি। যদিও আমার কাছে তা অবাঞ্ছিত। এটাই যথার্থ মূল্য। বেশ ভাল জানি, আমার বোঝবার ক্ষমতা, সহানুভূতি, সবচেয়ে বড় কথা আমার মুখবন্ধ বাক সংযম। আমার কাছ থেকে কারো কোনো গোপন কথা অন্য কারো কানে পৌঁছায় না। তবে তোমার কথা আলাদা অবশ্যই, কেন না সবাই জানে, তুমি মনোযোগ দাও পাঁচ সেকেন্ড এবং তোমার স্মরণশক্তি তার চেয়েও কম।’
আমি আরেকটি পানীয়ের সঙ্কেত জানালাম এবং এক রহস্যময় ইশারায় নির্দেশ দিলাম, যা একমাত্র আমিই জানি যে, এটা মিনান্ডারের বিলে ঢোকাতে হবে। একজন শ্রমিক নিয়োগ করলেও তার মজুরি দিতে হয়। আমি বললাম, ‘ঠিক কিভাবে এই teleklutzism প্রকাশ পেল, মিনান্ডার?’
‘খুব সহজ ব্যাপার। সরল আকারে ব্যাপারটা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রথম। আমার ভ্রমণের সঙ্গী হতে থাকে অদ্ভুত আবহাওয়া। আমি খুব একটা বেড়াতে যাই না। তবে যখনই বার হই, গাড়িতে, আর তখন বৃষ্টি পড়বেই পড়বে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যাই-ই থাকুক না কেন, কিছুই যায় আসে না। আমার বেরোবার সময়, যতই রোদ ঝলমল করুক, মেঘ জমা হবে, ঘন হবে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি শুরু হবে, তারপর ঢেলে। যখন আমার teleklutzism এক বিশেষ মেজাজে থাকে, তখন তাপমাত্রা নেমে যায় আর তুষারের ঝড় ওঠে।
অবশ্যই বোকা না বনতে, আমি সতর্ক থাকি। যতদিন না ভালোয় ভালোয় মার্চ মাস কেটে যাচ্ছে, আমি নিউ ইংল্যান্ডে একেবারেই যাই না। গত বসন্তে ৬ এপ্রিল বোস্টনে গিয়েছিলাম গাড়ি নিয়ে, আর তখনি বোস্টন আবহাওয়া দপ্তরের ইতিহাসে ঘটে গেল প্রথম প্রবল হিমঝঞ্ঝা। মার্চের ২৮ তারিখে ভার্জিনিয়ার উইলিয়ামসবার্গে গেলাম একবার, ভাবলাম, যখন ডিক্সিতে ঢুকছি, কিছুদিনের জন্য দূরে যাওয়া যাবে। আঃ উইলিয়ামসবার্গে সেদিন নয় ইঞ্চি পুরু বরফ, আর স্থানীয় অধিবাসীরা আঙুলে তুলে নিয়ে ঘষছে আর পরস্পর বলাবলি করছে, সাদা জিনিসটা কি।
আমি প্রায়ই ভেবেছি, যদি আমি কল্পনা করি, বিশ্ব ঈশ্বরের নির্দেশাধীন তাহলে ঈশ্বরের উদ্দেশে, গ্যাব্রিয়েল যদি চিৎকার করতে করতে ধাবমান হয় যে, দুটি গ্যালাক্সি প্রায় পরস্পর সংঘাতে এসে পড়েছে, সাংঘাতিক বিপর্যয় সামনে, তখন হয়তো ঈশ্বর বলবেন, আমাকে এখন বিরক্ত করো না গ্যাব্রিয়েল, আমি এখন মিনান্ডারের ওপর বৃষ্টি ঢালতে ব্যস্ত রয়েছি।’
আমি বললাম, ‘তোমার এর থেকে মস্ত ফায়দা ওঠানো উচিত, মিনান্ডার। অবিশ্বাস্য অঙ্কে, কেননা খরা অঞ্চলে তোমার কেরামতি বিক্রি করে দাও।’
‘আমি তেমন ভেবেছিলাম। কিন্তু চিন্তা করা মাত্রই ভ্রমণকালীন যে বৃষ্টি অবধারিত তাও শুকিয়ে যায়। তাছাড়া দরকারের সময় যদি বৃষ্টি আসে, তবে হয়তো বন্যা বইয়ে দেবে।
আবার শুধু তো বৃষ্টিই নয়, ট্রাফিক জ্যাম, জমির চৌহদ্দি নির্দেশক চিহ্নের উবে যাওয়া। অযুত সংখ্যক ঝঞ্ঝা আছে। আমার উপস্থিতিতে দামী জিনিসপত্র ভেঙে যায় কিংবা অন্যের হাত থেকে পড়ে যায়। যদিও আমার ঘাড়ে দোষ পড়ে না। ইল্লিনয়েস এ বাটাভিয়ায় আধুনিক Particle Accelater (পার্টকল এ্যাক্সিলেটর) চালু ছিল। একদিন এক অতীব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নষ্ট হয়ে গেল। তাতে অভ্যন্তরীণ শূন্যতা আনতে না পারায়, সম্পূর্ণ নিষ্কাশন ব্যর্থতায় পরদিন যখন আমি ঘটনাটি সংবাদপত্রে দেখলাম, একমাত্র আমিই জানলাম, সেই ব্যর্থতার মুহূর্তে, বাটাভিয়ার পাশ দিয়ে বাসে করে আমিই যাচ্ছিলাম। অবশ্যই তখন বৃষ্টিও পড়ছিল।
ঠিক এই মুহূর্তে দাদা, এই সুন্দর প্রতিষ্ঠানের ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারে সংরক্ষিত পাঁচদিনের পুরাতন কয়েকটি ওয়াইন উবে যাচ্ছে। এই টেবিলের পাশ দিয়ে এই মুহূর্তে যে যাচ্ছে, বাড়ি গিয়ে হয়তো দেখবে, তার ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারে পাইপ ফেটে গিয়েছে। কিন্তু সে জানবে না, সেই মুহূর্তে সে আমার পাশ দিয়ে গিয়েছিল। এবং এভাবে ডজনখানেক দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।
আমার তরুণ বন্ধুর জন্য আমার দুঃখ হল। আর এই চিন্তায় আমার রক্ত হিম হয়ে গেল যে, আমি তো পাশেই বসে রয়েছি আর এই নিশ্চিন্ত আরামের মধ্যেই অকল্পনীয় সর্বনাশ ঘটে যেতে পারে।
আমি বললাম, ‘সংক্ষেপে তুমি হচ্ছো এক jinx বা দুর্ভাগা।’
‘মিনান্ডার পিছন দিকে মাথা হেলাল এবং নাকের নিচ দিয়ে তাকিয়ে বিশ্রীভাবে বলল, ‘jinx হচ্ছে সাধারণ শব্দ আর teleklutz হল বিজ্ঞানসম্মত।’
‘বেশ, তাহলে jinx বা teleklutz। ধরে নাও আমি বলছি, তোমার এই অভিশাপ আমি দূর করে দিতে পারি।’
‘অভিশাপ তো ঠিক আসে।’ বিষাদভরে মিনান্ডার জানায়,
‘আমি প্রায়ই ভেবেছি। আমার জন্ম সময়ে এক কুপ্রকৃতির পরী আমার নামকরণে নিমন্ত্রণ না পাওয়ায় বিরক্ত হয়েছেন। আপনি কি বলতে চাইছেন, আপনি সে অভিশাপ দূর করে দেবেন। কারণ আপনি সুপ্রকৃতির পরী।
‘আমি কোনো প্রকার পরীই নই। কঠোরভাবে বলি, ‘শুধু মনে করে নাও, আমি তোমাকে এই অভিশাপ, এই অবস্থা থেকে মুক্ত করবো।’
‘এই পৃথিবীতে আপনি কেমন করে তা পারবেন!
‘না, ঠিক পৃথিবীর ওপর নয়,’ আমি বলি, ‘কিন্তু তাতে কি যায় আসে!’
‘আপনি এর থেকে কী পাচ্ছেন?’ সে সন্দেহজনক প্রশ্ন রাখে।
‘এক ভয়ঙ্কর জীবন থেকে এক বন্ধুকে রক্ষা করার মর্মস্পর্শী অনুভূতি। মিনান্ডার এ সম্বন্ধে ভাবনা করে, জোরে মাথা নেড়ে বলল, ‘সেটা তো যথেষ্ট নয়।’
‘অবশ্যই, তবে তুমি যদি আমাকে সামান্য টাকা…
‘আরে না না। আমি এভাবে আপনাকে অসম্মান করতে পারি না। বন্ধুকে টাকা দেওয়া! বন্ধুত্বের ওপর ব্যবসায়িক মূল্য আরোপ করা? জর্জ, আপনি এমন কথা ভাবলেন কী করে! আমি যা বলতে চাইছি, তাহল শুধু আমাকে teleklutzism থেকে মুক্ত করা যথেষ্ট নয়। আপনাকে তার চেয়েও বেশি কিছু করতে হবে।’
‘কেমন করে একজন আরো কিছু করতে পারে?’
‘ভেবে দেখুন। সারাজীবন ধরে আমি হয়তো বিপর্যয় ঘটিয়ে লক্ষ নিরপরাধ লোকের অসুবিধা সৃষ্টির জন্য দায়ী। এমন কী যদি এই মুহূর্ত থেকে আমি আর একজন লোকেরও দুর্ভাগ্যের কারণ না হই, যে সব দুষ্কর্ম আমার কারণে সম্পাদিত হয়েছে, যদিও কোনোটাই আমার ইচ্ছাকৃত ছিল না বা কোনো মতই আমার অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে, আমার সহ্য ক্ষমতা অনেক বেশি হবে। আমার কিছু একটা চাই, যা এইসব কিছু বাতিল করে দিতে পারে।
‘কিসের মতন?’
‘মানবতা বাঁচাতে, আমাকে যোগ্য স্থানে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।’
‘মানবতা বাঁচাতে?’
‘যেসব অপূরণীয় ক্ষতি আমার দ্বারা হয়েছে, সেগুলো পূরণ হবে কীভাবে? জর্জ, আমি জোর করছি। যদি আপনি আমার অভিশাপ দূর করতেই চান, তাহলে কোনো কোনো দারুণ সঙ্কটে মানবতা রক্ষার সামর্থ্য দিয়ে তা প্রতিস্থাপিত করুন।
‘আমি নিশ্চিত নই, তা আমি পারব।’
‘চেষ্টা করুন, জর্জ। এই সঙ্কটে আর দ্বিধা করবেন না। যদি সত্যিই একটা কাজ করতে চান, তবে ভাল করে করুন আমি সব সময় বলি। মানবতার কথা চিন্তা করুন। দাদা।’
‘এক মুহূর্ত অপেক্ষা কর,’ আমি চকিত হয়ে বলি, ‘তুমি সমস্ত কিছু আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছ।
‘অবশ্যই দিচ্ছি জর্জ।’ মিনান্ডার সাদরে বলল, ‘প্রশস্ত স্কন্ধ, মঙ্গলময় স্কন্ধ। বোঝা বইতে প্রস্তুত। বাড়ি যান জর্জ আর আমাকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করুন।’
অকৃতজ্ঞ মানবধর্ম আপনার ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করবে। অবশ্য কোনো দিন এসব কথা কেউ শুনবে না। কারণ আমি কাউকে বলব না। আপনার সুকর্ম জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়ে, আপনাকে বিব্রত করবে না। বিশ্বাস করুন আমাকে, আমি কখনো প্রকাশ করবো না।’
নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বে আশ্চর্য কিছু রয়েছে, যার সঙ্গে পৃথিবীর কোনো কিছুর তুলনা চলে না। আমি তক্ষুনি কাজে লেগে পড়লাম, আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে পড়লাম। ডিনারের অর্ধেক বিল না মিটিয়েই, অনায়াসে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে এলাম। ততক্ষণ পর্যন্ত মিনান্ডার লক্ষ্যই করল না।
আজাজেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমাকে বেগ পেতে হল আর যখন আমি পারলাম, তাকে মোটেই প্রীতিপরায়ণ মনে হলো না। তার দুই সে.মি. লম্বা শরীরে গোলাপী আভা ছড়ানো ছিল আর এক বাঁশির মতন স্বরে সে বলল তোমার কি মনে ছিল যে আমি স্নানে রয়েছি। বাস্তবিক তার ঘরে মৃদু অ্যামোনিয়ার গন্ধ ছিল।
আমি বিনয়ের সঙ্গে বললাম, ‘এটা বরং একটা বিশাল সংকট। ওহে বলশালী, যাকে জানাতে শব্দ চয়নের প্রয়োজন পড়ে না।
‘বেশ বল তাহলে। কিন্তু মনে রেখো, এর জন্য দিনভর সময় নেবে না।’
‘নিশ্চয়ই।’ আমি বললাম এবং বিষয়টি যথার্থ ও যথাযথভাবে ছকে দিলাম।
‘হুম!’ আজাজেল্ বলল, ‘এক বারের জন্য তাহলে তুমি একটা কৌতূহলকর সমস্যা উপহার দিলে!’
‘সত্যিই। তুমি কি মনে কর, সত্যি teleklutzism বলে কোনো বস্তু রয়েছে!’
‘ওঃ, হ্যাঁ, দেখ, কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝিয়ে দিয়েছে যে, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে ধর্ম কিছুটা পর্যবেক্ষকের উপরও নির্ভর করে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ভার যেমন পর্যবেক্ষকের ওপর পড়ে, তেমনিই পর্যবেক্ষণের দৃষ্টিভঙ্গীও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ওপর ভিন্ন ভিন্ন হয়। একজন পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে নক্ষত্রের বিস্ফোরণ ত্বরান্বিত হতে পারে, আবার ঐ মুহূর্তে ঐ নক্ষত্রের অবস্থানের নৈকট্য অনুভব অন্য পর্যবেক্ষককে পীড়িত করতে পারে।’
‘আচ্ছা! বেশ, তুমি কি আমার বন্ধু মিনান্ডারকে সাহায্য করতে পারবে : তবে তার এই কোয়ান্টাম পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রভাব দূর করে দাও।’
ওঃ, অবশ্যই খুব সোজা ব্যাপার। এতো মোটে দশ সেকেন্ড লাগবে এবং ফিরেই তবে না আমি স্নান করে ‘লাস্কোরাতি’ আচার পালনে যাব, সঙ্গে থাকবে অকল্পনীয় সুন্দরী দুই সামিনি।
‘দাঁড়াও। দাঁড়াও। ওরা যথেষ্ট নয়।’
‘বোকার মতন কথা বলো না। দুজন সামিনিই যথেষ্ট। একজন কামুকই তিনজন চাইতে পারে।’
‘আরে আমি বলছি teleklutzism দূর করাই যথেষ্ট নয়। মিনান্ডার মানবধর্ম বাঁচাতে একটা ভূমিকা নিতে চায়।’
‘এক মিনিটের জন্য ভাবলাম, আজাজেল্ আমাদের দীর্ঘবন্ধুত্ব ভুলতে চাইছে এবং যে কৌতূহলকর সমস্যা দিয়ে তার মনোরঞ্জন করছি ও তার যাদুক্ষমতা বাড়িয়েছি, সে সব সে ভুলে যেতে বসেছে।
সে যা বলল, তার সবটা আমি বুঝলাম না। কারণ, অধিকাংশ শব্দই তার নিজের ভাষায় এবং আমার অপরিচিত, কিন্তু শুনে মনে হচ্ছিল, যেন মরচে পড়া পেরেকে করাত ঘষা চলছে।
শেষ পর্যন্ত তার গরম মেজাজ নরম হল, বলল, ‘এখন কেমন করে আমাকে ওটা করতে হবে।
অবিশ্বাস্য ঘটনার প্রচারকের পক্ষে এটা কি খুব বেশি?
‘তুমি বরং…. আচ্ছা দেখা যাক!’ একটুক্ষণ ভেবে সে ফেটে পড়ল, কিন্তু পৃথিবীতে কে মানবধর্ম বাঁচাতে চাইবে? এতে কী ভাল হবে? সমস্ত জাতিকে নিয়ে কতকটা বাঁচাবে। আচ্ছা, আচ্ছা, আমার মনে হয়, করা যেতে পারে।
দশ সেকেন্ডে হলো না। আধঘণ্টা লাগল আর খুব বিরক্তিকর আধঘণ্টা। কিছুক্ষণ আজাজেল্ গজ্জ্ করছিল এবং বাকি সময়টা থেমে গিয়ে চিন্তা করছিল, সামিনিরা তার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে কিনা!
ঘটনাচক্রে হয়ে গেল অবশ্যই। তার সাথে মিনান্ডার ব্লকের ওপর তা ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা, যাচাই করা বাকি রইল।
.
পরে যখন মিনান্ডারের সঙ্গে দেখা হল, বললাম, ‘তুমি সেরে গেছো।’
সে আমার দিকে রেগে তাকিয়ে রইল, ‘জানেন, সে রাতে আপনি ডিনারের বিল না দিয়ে চলে গিয়েছিলেন!’
‘তুমি যে সেরে উঠেছো, তার তুলনায় ওটা নেহাতই তুচ্ছ ব্যাপার।’
‘আমার মনে হয় না, আমি সেরে গিয়েছি।’
‘এস, ঠিক আছে। আমরা গাড়ি নিয়ে বেরোই। তুমি চালাও।’
‘এখনই মেঘলা হয়ে এসেছে। কিছু উপকার হয়েছে কি?
‘গাড়ি নিয়ে বেরোই তো! আমাদের খোয়াবার কি আছে!’
সে গ্যারেজ থেকে গাড়ি বার করল। রাস্তার উল্টোদিকে এক পথিক ভরাভর্তি জঞ্জালের টিনের ওপর উল্টে পড়ল না।
মিনান্ডার গাড়ি চালাচ্ছে। যেতে যেতে সে লাল সিগনালে আটকাল না। মোড়ের মাথায় দুটো গাড়ি প্রায় মুখোমুখি লাগতে লাগতেও বেশ তফাত রেখেই অনায়াসে বেরিয়ে গেল। যতক্ষণ সে ব্রিজে উঠল, মেঘ পাতলা হয়ে এসেছে। নরম রোদ গাড়ির ওপর পড়েছে, কিন্তু ওর চোখে পড়ছিল না।
শেষ পর্যন্ত আমরা বাড়ি পৌঁছলাম, সে বেহায়ার মতন কাঁদছিল। আমিই তার হয়ে গাড়ি পার্ক করলাম। একটু ঘষে গেল। কিন্তু আমি তো আর সে নই, যার teleklutzism. ঠিক হয়ে গেছে। এতে আমার অবস্থা হয়তো আরো মন্দ। আমার নিজের গাড়িও ঘষে ফেলতে পারি।
পরের দিন কয়েক, মিনান্ডার আমাকে অনবরত খুঁজেছিল। আমিই একমাত্র, যে বুঝতে পারত, কি আশ্চর্য ‘চমৎকার’ ঘটে গেছে।
সে বলত! ‘আমি নাচের পার্টিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো জোড়াই একে অপরের গায়ে জড়িয়ে পড়ে যায়নি, বা হাত পায়ের হাড় ভাঙেনি। আমি তন্বীসুলভ তৎপরতায় চূড়ান্ত বেপরোয়া নাচতে পারি। আমার পার্টনার গান্ডেপিন্ডে গিলেও অসুস্থ হয় নি।’
অথবা ‘কাজের জায়গায় নতুন শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসছে। কিন্তু মিস্ত্রীর ঘাড়ে পড়েনি বা পাকাপাকি আঙুল ভাঙেনি তার। কিংবা, এমন কি আমি হাসপাতালে বন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলাম, যা আমি একদা স্বপ্নেও ভাবতে পারতাম না। আর আমি যে কোনও ঘরের পাশ দিয়েই যাই না কেন, শিরা থেকে ইনজেকশনের সূচ বেরিয়ে আসেনি, ইনজেকশন লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। কখনো কখনো ভাঙা স্বরে বলত, ‘আপনি কি নিশ্চিত, যে মানবধর্ম রক্ষা করার সুযোগ আমি পাব?’
‘সম্পূর্ণভাবে,’ আমি বলতাম, ‘সেরে ওঠার সেটাই তো একটা লক্ষণ। কিন্তু একদিন মুখে ভ্রূকুটি নিয়ে আমার কাছে এল সে ‘শুনুন,’ সে বলল, ‘আমি ব্যাংকে গিয়েছিলাম। শুধুমাত্র আমার ব্যাংক ব্যালান্স নিয়ে একটা প্রশ্ন করতে। যা হওয়া উচিত তার চেয়ে কিছু কম ছিল, কারণ সেদিন আপনি বিল না মিটিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব মেলেনি। আমি ঘরে ঢোকা মাত্র কম্পিউটার অকেজো হয়ে গিয়েছিল। প্রত্যেকে হতবুদ্ধি। এই কি আমার সেরে ওঠার লক্ষণ!’
‘এমন হতে পারে না।’ আমি বলি, ‘এর সঙ্গে হয়তো তোমার কোনো সম্পর্ক নেই। হয়তো আশেপাশে অন্য কোনো teleklutz থাকবে, যে সেরে ওঠেনি। নয়তো সেও সে সময় যাচ্ছিল, যেমন তুমি গিয়েছিলে।’
কিন্তু তা তো নয়। ব্যাংকের কম্পিউটার আরো দুবার অকেজো হয়ে পড়লো। যখনই সে তার ব্যাংক ব্যালান্স জানতে যাচ্ছিল। তুচ্ছ টাকার অঙ্কের জন্য তার এই আবার যাওয়াকে আমার পাত্তা না দেওয়া তাকে বিরক্ত করে তুলেছিল। শেষমেষ যখন তার নিজের ফার্মের কম্পিউটার বিগড়ে গেল, যখন সে ঐ ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছে, সে আমার কাছে এল, দারুণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে। ‘ওটা আবার ফিরে এসেছে, আমি বলছি, ফিরে এসেছে।’ সে ককিয়ে উঠল, ‘আমি আর এখন সইতে পারব না। আমি এখন স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে অভ্যস্ত। আমি পুরনো জীবনে আর ফিরতে পারবো না। আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে।’
‘না, না। মিনান্ডার। তুমি বড় বেশি দূর ভাবছ।’
সে আরেকবার ককিয়ে উঠতে গিয়ে সংযত হল, আর আমার যুক্তিতে আশ্বস্ত হল ‘ঠিক বলেছেন,’ সে বলল, ‘বড্ড বেশি দূর চলে যাচ্ছি। ধরুন, তার বদলে যদি আপনাকে খুন করি। যতই হোক। তাতে কারো ক্ষতি হবে না আর আমিও একটু সুস্থ মনে করবো নিজেকে।’
আমি তার যুক্তি বুঝলাম। কিন্তু অতি সামান্য। বললাম, ‘কোনো কিছু করার আগে আমাকে একবার পরীক্ষা করে দেখতে দাও। যতই হোক, এখনো পর্যন্ত যা কিছু ঘটছে, কম্পিউটারকে ঘিরেই তো। কে কম্পিউটারকে গ্রাহ্য করে!
কিন্তু সে অগ্রসর হওয়া মাত্র, যদি কম্পিউটার বিগড়ে যেতে থাকে, তবে তাৎক্ষণিক ব্যাংক ব্যালান্স জানবার উপায়ই বা কি, এই প্রশ্ন ওঠার আগেই আমি তড়িঘড়ি পালালাম। সে তো এক বদ্ধ উন্মাদই।
অতএব আজাজেকে অন্য বিষয় নিয়ে পড়তে হলো। মনে হল, এবার সে প্রকৃতই সামিনিদ্বয়ের সঙ্গে যা করছিল তাতে ভাল রকম ব্যস্ত আর পৌঁছেই সে ডিগবাজি খাচ্ছিল। জানি না, এর সঙ্গে ডিগবাজির কোনো সম্পর্ক আছে কিনা। মনে হয় না, আজাজেল্ একেবারে ঠাণ্ডা হয়েছে, এতে কি ঘটেছিল যা করে সে আমাকে বোঝাতে পারল আর তখন, মিনান্ডারকে আমি বোঝাতে গেলাম।
পার্কে আসতে বললাম তাকে। একটু ভীড় সমাবেশের জায়গাই পছন্দ করলাম। যাতে তার মাথা বিগড়ালে, আমি নিজের মাথা রক্ষা করে পরিত্রাণ পেতে পারি।
আমি বললাম, ‘মিনান্ডার, তোমার teleklutzism এখনো কাজ করছে। কিন্তু শুধু কম্পিউটারের ক্ষেত্রে। আমার কথা বিশ্বাস কর। তুমি চিরদিনের জন্য অন্য সব বিষয়ে সেরে গেছো।
‘বেশ, তাহলে কম্পিউটারের ব্যাপারটারও সারিয়ে দাও।’
‘এখন যা ঘটেছে মিনান্ডার, সেটা সম্ভব নয়। তুমি কম্পিউটারের ক্ষেত্রে সুস্থ, কখনোই হবে না।’ শেষ কথাটি চুপিচুপি বললেও, সে শুনতে পেয়ে গেল।
‘কেন? রোগগ্রস্ত দুই কুঁজওলা উটের কোন ধরনের খরগোশ বুদ্ধি, অপগণ্ড, তামাশা দেখানেওয়ালা বদখত্ পুচ্ছ তুমি?’
‘এমনভাবে বলছ, যেন নানান ধরন রয়েছে। মিনান্ডার, আজেবাজে বকো না। তুমি কি বোঝ না, তুমি পৃথিবীকে রক্ষা করতে চেয়েছিলে। আর তাই-ই ঘটে চলেছে।’
‘না আমি বুঝলাম না। বোঝান আমাকে। আপনার সময় গুনে নিন, পনেরো সেকেন্ড।
‘বুঝদার হও। মানব জাতি কম্পিউটার বিস্ফোরণের মুখোমুখি হতে চলেছে। কম্পিউটার দ্রুত গতিতে আরো বেশি সক্ষম, আরো পারদর্শী আরো বুদ্ধিমান হতে অগ্রসরী। মানুষ উত্তরোত্তর কম্পিউটারের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ঘটনাক্রমে এমন এক কম্পিউটার তৈরি হবে যে বিশ্বের ভার নিয়ে মানবত্ত্বকে ছুঁড়ে ফেললে, মানুষের আর কিছু করণীয় থাকবে না। তখন সেই কম্পিউটার মানবত্ত্বকে অপ্রয়োজনীয় ভেবে সম্পূর্ণ মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেবে। অবশ্য আমরা আত্মতৃপ্ত হয়ে বলতেই পারি, লাগাম তো আমাদের হাতে। কিন্তু জেনো, তুমি তা করতে পারবে না। আমাদের ছাড়াই কম্পিউটার যথেষ্ট কুশলী হয়ে বিশ্বের কর্মভার গ্রহণ করে নেবে। নিজেকে নিজেই চালনা করবে। নিজের বিদ্যুৎ নিজেই খুঁজে নেবে। সে হবে অজেয়। আর মানবত্ব হবে পদানত। সরি বন্ধু, এখানেই তুমি আসছ। তখন তোমার উপস্থিতিই চাই। তুমিই হয়তো পারবে, সেই কম্পিউটারের কয়েক মাইলের মধ্যে উপস্থিত হয়ে মুহূর্তে তার বিনাশ ঘটাতে। আর বেঁচে যাবে মানুষ, রক্ষা পাবে মানবত্ব। ভাব একবার। ভাব দেখি!’
মিনান্ডার ভাবতে থাকল। কিন্তু তাকে খুশি দেখাল না। সে বলল, ‘কিন্তু তাহলে এর মধ্যে যে আমি কম্পিউটারের কাছে আসতে পারছি না!’
‘বেশ, কম্পিউটার klutzism খুলে বলতে বাধ্য হতেই হল। পুরোপুরি স্থায়ী করা হয়েছে তাকে, যাতে সময় এলে কোনো গণ্ডগোল না হয়, সেই কম্পিউটার যেন কিছুতেই তোমার হাত থেকে নিস্তার পেতে না পারে। তুমি নিজেই যে উদ্ধার কার্যের মহান দান চেয়েছিলে, এটা তারই দাম আর এ জন্য তুমি ভবিষ্যৎ ইতিহাসে সর্বত্র পূজিত হবে।’
‘হ্যাঁ।’ সে বলল, ‘কবে এই উদ্ধারকার্য সম্পন্ন হবে?
আমি বললাম, ‘আজা- আমার কর্তাটির মতে, ষাটবছর বা কাছাকাছি সময়ে। কিন্তু তুমি এর ভাল দিকটা দেখ। তুমি জানলে, তোমাকে নব্বই বছর পর্যন্ত বাঁচতে হবে
‘আর তার মধ্যে!’
মিনান্ডার সব ভুলে চিৎকার করে উঠল, আশপাশের লোকেরা আমাদের দিকে চমকে তাকিয়েছে। ‘এর মধ্যে পৃথিবী উত্তরোত্তর কম্পিউটার সমৃদ্ধ হয়ে পড়বে আর আমি আরো বেশি জায়গায় যেতে অপারগ হয়ে পড়ব। আমি আরো আরো কাজ করতে পারবো না, আর নিজের জালে নিজেই বন্দী হয়ে থাকব-!
‘কিন্তু, পরিণামে তো মানবত্ব রক্ষা করবে তুমি। তুমি তো তাই-ই চেয়েছিলে।’ মিনান্ডার তীক্ষ্ণ চিৎকার করে উঠল, ‘চুলোয় যাক মানবত্ব’ উঠে পড়ে আমার দিকে তেড়ে এল। আমি পালিয়ে বাঁচলাম। কেবলমাত্র আশেপাশের লোকেরা বেচারি মিনান্ডারকে ধরে ফেলেছিল, তাই বর্তমানে মিনান্ডার দৃঢ়চিত্ত এক ফ্রয়েডয়ান মনোবিদের সাথে গভীর বিশ্লেষণে নিয়োজিত। এতে তার ভোগান্তিই আছে, ভাল কিছু হবে না।’
জর্জ তার গল্প শেষ করে, নিজের সুরার পাত্রের দিকে তাকাল, জানি যার দাম আমাকেই দিতে হবে। সে বলল, ‘জান কি, গল্পটির একটা উপদেশ রয়েছে।’
‘সেটা কি?’
‘লোকজনের এতটুকু কৃতজ্ঞতা বোধ নেই।’