ভূমিকা (মনোমোহন দত্ত)
মনোমোহন দত্ত তাঁর ভাবশিষ্যদের কাছে ‘মহর্ষি’ নামে সুপরিচিত। তাঁর রচিত গানগুলোকে অনুরাগীরা ‘ভাবগান’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। সেটার যুতসই কারণও রয়েছে বটে। খোদ মনোমোহনই তাঁর প্রকাশিত গানের সংকলনে ‘ভাবসংগীত’ শব্দবন্ধটি জুড়ে দিয়েছেন। মলয়া বা ভাবসঙ্গীত শীর্ষক তাঁর বিখ্যাত গানের সংকলনের কথা এ প্রসঙ্গে আমরা স্মরণ করতে পারি।
বাউলগানকে বিভিন্ন অঞ্চলে ‘ভাবগান’ অভিধায়ও কেউ কেউ চিহ্নিত করে থাকেন। যদিও এই ভাবগানের ভেতরেই মনোমোহন ‘বাউলের সুর’ উল্লেখ করে বেশ গান তাঁর প্রকাশিত গানের সংকলনগুলোতে ঠাঁই দিয়েছেন। মনোমোহন বাউল কি না—তা নিয়ে বিস্তর মতপার্থক্য সত্ত্বেও বাউলসাধনার পরিপূর্ণ রূপ তাঁর মধ্যে পাওয়া যায় সেটি তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
বাউল-সাধনার পরম্পরা অনুযায়ী মনোমোহনও বিশ্বাস করতেন গুরু-ভজনা ছাড়া স্রষ্টার প্রকৃত রূপ অনুসন্ধান সম্ভব নয়। কেবল গুরুই পারেন সাধনায় সঠিক পথের সন্ধান জানাতে। তাই তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণ :
ওরে মন মাঝি রে –
লাগাও তরি শ্রীগুরুর ঘাটে।
যদি সুখে রবি, সুখ পাইবি, পাড় হবি ভব সংকটে।
ঘাটে আছে এক বাজার, সাধু সঙ্গ নাম তার,
কত হীরে মাণিক বিনামূল্যে বিকাইছে সেই হাটে।
হাল দিয়া কাণ্ডারির হাতে, দাঁড় টান ভাই বসে বসে,
ভাব বুঝে সে দিবে শলা, যখন যেমন খাটে।
ভয় করো না ঝড়-তুফানে, চালাও তরি প্রাণপণে,
দেখবে তরি নামের গুণে, আপনি লাগাবে ঘাটে।
বাউলদের গুপ্ত দেহসাধনার বিষয়টি মনোমোহন উপর্যুক্ত গানে উল্লেখ করেছেন। কামরূপী ‘মায়া সাগর’-এ যতই ‘ঝড়-তুফান’ আসুক না কেন, তাতে শিষ্যকে তরি বাইতে হলে শক্ত হাতে ‘দাঁড় টানা’ লাগবে। আর সেটা একমাত্র গুরু-নির্দেশিত পথে বাইতে হবে। মনোমোহন বাউলদের গুপ্ত দেহসাধনার যে-বিষয়টি উল্লেখ করেছেন, সেটিকে সমাজের এক শ্রেণির মানুষ ‘শাস্ত্রবিরোধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। তবে এটি নিয়ে সাধকেরা মোটেই বিচলিত নন। কারণ গোপনীয়তাই গুরুবাদী বাউল-মতবাদের চারিত্র্য।
সাধনায় যে চারচন্দ্র ভেদ কিংবা দেহমিলন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, সে সম্পর্কে কিন্তু বাউল-ফকিরদের কোনো উচ্চবাচ্য নেই। সেটাও তাঁদের সাধনারই অংশ। সাধকেরা সমাজের মানুষদের আচার-সংস্কৃতি-চিন্তা-ভাবনা নিয়ে কখনোই মাথা ঘামাননি। তাঁরা বরং গুরুর প্রতি আত্ম-নিবেদন এবং সাধনায় ব্যস্ত থাকেন বেশি। প্রতি সাধকের কণ্ঠেই পলে পলে উচ্চারিত হয়—’পথ দেখায়ে দাও আমারে/কেমনে যাব তোমার কাছে/তুমি নইলে কে দেখাবে/তোমার মতন আর কে আছে’।
বাউলেরা যে পথের সন্ধান করে চলেন জীবনভর সেটা মনোমোহনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ছিল। নিজের মধ্যে ঈশ্বরকে খোঁজা আর আত্মানুসন্ধানের পাশাপাশি ‘ভবসাগর’ পাড়ি দেওয়ার জন্য গুরুর প্রতি সর্বস্ব নিবেদনের অব্যাহত প্রচেষ্টা ছিল তাঁর মধ্যে :
গুরু সত্য, ব্রহ্মময়।
যে ভাবেতে ভাব, সে ভাব উদয় ॥
অনন্ত এই বিশ্ব, দ্রষ্টা, দৃক, দৃশ্য,
ত্রিগুণে নির্গুণে লীলা নিত্যময় ॥
নিত্য নিরাকার, রহস্য সাকার,
অনন্ত স্বভাবে ভাবের পরিচয় ॥
করে খণ্ড খণ্ড, ভাবরে অখণ্ড,
স্বরূপে অরূপে ব্ৰহ্ম দয়াময় ॥
স্বভাব করো সিদ্ধি, হবে ভূত শুদ্ধি,
হয়ে জ্ঞান-বুদ্ধি বিদ্যার উদয় ॥
পরাৎপরা বিদ্যা, নাশিবে অবিদ্যা,
হলে যুক্ত বিদ্যা সিদ্ধ মৃত্যুঞ্জয় ॥
কালে দিয়ে ফাঁকি, পাবে দিবা আঁখি,
দেখিবে ব্রহ্মাণ্ড শুধু আত্মময় ॥
শক্তি আর চৈতন্য, দেখিবে অভিন্ন,
জড় বস্তু জ্ঞান হয়ে যাবে লয় ॥
বাসনা, কামনা, কিছু রহিবে না,
ভাবে ভাব যুক্ত হইবে হৃদয় ॥
আশা-পথ চেয়ে, গাছতলাতে শুয়ে,
আছে মনোমোহন, হয় কি না হয় ॥
গুরুর প্রতি আত্ম-নিবেদিত হয়েই সাধনপথে অগ্রসর হতে হয়—এটাই বাউল মতবাদের রীতি। সে রীতি মনোমোহন ও মানতেন। তাই সাধনায় তাঁর আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের পাশাপাশি পাপক্ষয় কীভাবে সম্ভব তা নিয়েও গুরুর প্রতি জিজ্ঞাসা ছিল। মনোমোহন সে কারণেই বলেছিলেন :
সাধনা কি আছে আর বিনে আত্ম পরিচয়।
আমি বা কে, তুমি বা কে, কেবা আমি তুমি কয়?
কার কর্ম কেবা করে, কেবা বাঁচে কেবা মরে,
সৃষ্টি বা কি, স্থিতি বা কি, কেমনে কোথায় লয়?
দুহিতা ভগিনী ভ্রাতা, জায়া পতি পিতা মাতা,
কেবা কোথা চেয়ে দেখো, ঘুচিবে সংশয়।
এক শক্তি থরে থরে, বিরাজিছে এ সংসারে,
সাধ্য কি, সাধনা করে করবে তুমি পাপক্ষয়।
আবশ্যক কর্ম যাহা, সতত করো রে তাহা,
পাপ পুণ্য শূন্য এ বিশ্ব বিভূতিময়।
মনোমোহন দত্ত বাউল-মতবাদের তত্ত্বাশ্রিত কথাই যেন গানের পঙ্ক্তিতে ধারণ করে রেখেছেন— ‘সাধনা করে করবে তুমি পাপক্ষয়’। কিন্তু সেটা কেমন করে সম্ভব? এর উত্তর বাউল-মতবাদ অনুসারেই জানা যায়, সাধনায় বীর্যক্ষয় না-হলেই কেবল জগতে পাপকর্ম ও ভবযন্ত্রণা থেকে বাঁচা সম্ভব। নারী যোনীতে বীর্য পতন না- হলে সন্তান উৎপন্ন হবে না। ফলে ভববন্ধনে জড়ানোরও কোনো সম্ভাবনা হবে না। এতে করে সাধকের পাপের জালে জড়ানোরও কোনো সুযোগ থাকবে না।
পাপের বেড়াজাল থেকে মুক্ত থাকার জন্য বারংবার সাধকেরা গুরু/মুর্শিদ ভজনার বিষয়টিতে জোরারোপ করে থাকেন। মনোমোহনও গুরু-চরণেই তাঁর সত্তা উৎসর্গ করার অভিপ্রায় অনেক গানেই ব্যক্ত করেছেন। গুরুপদ মান্যতার ক্ষেত্রে তাঁর নির্মোহ উক্তি :
গুরুপদ তরি সাজাইয়া
চল ভাসায়ে দেই প্রীতি সমীরে।
চিন্তা তরঙ্গে—
নাচিয়া নাচিয়া যাইবে ছুটিয়া কূলের ধারে।
আগু পাছু হয়ে কাজ কিছু নাই
যাবে যদি পারে ত্বরা করো ভাই
দৌড়াদৌড়ি করে—
তরি বসো চড়ে, ভয় কিছু নাই আনন্দ অন্তরে।
কর্ণধার হরি আপনি সাজিয়া
পার করে নিছে ডাকিয়া ডাকিয়া
কেন রে বসিয়া—
চল রে ছুটিয়া, ধর যেয়ে তরি আকুল অন্তরে।
পাড়ি বহুদূর যেতে ভব পাড়ে
মেলা কর সবে সত্বরে সত্বরে
নইলে পড়ে ফেরে—
ঘুরতে হবে তোর, কি কাজ ঘুরিয়া চল ত্বরা করে।
কেবল গুরুপদে মজে থাকলেই চলবে না। গুরুর নির্দেশনাধর্মী তত্ত্বগুলো সাধনায় যথার্থভাবে প্রয়োগও করতে হবে। এর আগে অবশ্যই দেহে অবস্থিত সাধন-প্রক্রিয়ার সব বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণাও রাখতে হবে। তবেই একজন যথার্থ সাধক হিসেবে নিজেকে বাউলসমাজে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
সাধনার গুহ্য বিষয় সম্পর্কে মনোমোহন তাঁর লেখা একাধিক গান/কবিতায় উল্লেখ করেছেন। সাধনায় যে ‘ষড়চক্র’-এর গুরুত্ব অপরিসীম সেটির একটি দীর্ঘ পরিচিতিমূলক বর্ণনা মনোমোহন এভাবেই দিয়েছেন :
কিবা কারিকরের আজব কারিকুরি,
তার মধ্যে ছয় পদ্ম রাখিয়াছে পূরি।
সহস্রারে হয় পদ্ম সহস্রেক দল,
তার তলে রহিয়াছে পরম শিবের স্থল!
নাসামূলে দ্বিদল পদ্ম খঞ্জনাক্ষি,
কণ্ঠেতে ষোড়শ দল পদ্ম দিল রাখি।
হৃদপদ্মে নির্মিত আছে শত দলে,
কুলকুণ্ডলিনী, দশ হয় না নাভিমূলে।
নাভির নিম্ন ভাগে প্রেম সরোবর,
অষ্টদল পদ্ম হয় তার ভিতর।
তস্য পরে নাড়ী ধরে সার্দ্ধ তিন কোটি,
ব্ৰহ্মাণ্ড সংস্থান দেহে নাহি কিছু ত্রুটি।
স্থূলমূলে ষড়শলাম্বুজ নিয়োজিত,
গুহ্যমূলে চতুৰ্দ্দল পদ্ম বিরাজিত।
এই অষ্ট পদ্ম দেহ মধ্যেতে আছয়,
মতান্তরে হৃদপদ্ম দ্বাদশ দল কয়
সহস্র দল, অষ্ট দল দেহ মধ্যে নয়,
এই দুই পদ্ম, নিত্য বস্তু আধার হয়
ষড়চক্রের মূলে মৃণাল হয় মেরুদণ্ড,
শিরসি পর্যন্ত সে ভেদ করি অন্ত।
দণ্ড দুই পার্শ্বেতে ঈড়া পিঙ্গলা রহে,
মধ্যে স্থিত সুষম্মা সদা প্ৰবল বহে।
মূলচক্র হয় হংস যোগের আধার,
অষ্ট দল চক্রে হয় লীলার সঞ্চার।
দ্বিদল চক্রেতে হয় অমৃত নির্ভর,
আর পঞ্চ চক্রে পঞ্চ বায়ুর সঞ্চার।
প্রাণ, অপান, ব্যাণ, উদান, সমান,
কণ্ঠাম্বুজাবধি চতুৰ্দ্দলে অবস্থান।
কণ্ঠেতে উদান হৃদে বহে প্ৰাণ,
নাভির ভিতরে সমান করে সমাধান।
চতুৰ্দ্দলে অপান, সর্বভূতেতে ব্যাণ,
মুখ্য অনুলোম বিলোম প্ৰধান।
অজপা নামেতে হয় কুম্ভক রেচক,
অনুলোম উর্দ্ধগতি বিলোম প্রবর্তক।
প্রবর্ত সাধক হৃদ নাভি পদ্মে আশ্রয়,
সিদ্ধার্থ সহস্রারে আছয়ে নিশ্চয়।
রতিস্থির প্রেম সরোবর অষ্ট দলে,
সাধনের মূল এই চণ্ডীদাসে বলে।
২
মনোমোহন দত্ত বাউলাঙ্গিকের গান রচনার পাশাপাশি কৃষ্ণসংগীত, শ্যামাসংগীত, গৌরাঙ্গসংগীত, শিবসংগীত, ভাটিয়ালি, বিচ্ছেদ, কাওয়ালি, ফকিরি গান রচনা করেছেন। এছাড়া তাঁর রচিত কবিতা, যোগ-প্রণালি, প্রবচন, উপদেশ-বাণীর সংকলনও প্রকশিত হয়েছে। বাউল-ফকিরি-যোগ সাধনার নানা তাত্ত্বিকতা বিষয়ক প্রবচন ও ছোটো-ছোটো কয়েক পঙ্ক্তির সমন্বয়ে কবিতাও রয়েছে। এসব রচনায় মনোমোহনের সাধন ও যোগ-প্রণালি বিষয়ক জ্ঞানের প্রচ্ছন্ন পরিচয় পাওয়া যায়।
মনোমোহনের রচিত প্রবচন ও কবিতাগুচ্ছে তত্ত্বাশ্রিত বাক্যে ভরপুর। তিনি ছোটো একটি কবিতায় বলেছিলেন : ‘আমি আমি বলে করো তোমরা সংসার/তিনি তিনি বলে আমি দিয়াছি সাঁতার/তোমরা আপন স্বার্থ বিচার অন্তরে/পরার্থ কল্যাণ মম হৃদয়েতে স্কুরে/অন্তরের ভাবে মাত্র তোমাতে আমাতে/প্রভেদ, নতুবা মানুষ বটী দুজনাতে।’
মানুষ-বন্দনার উপযুক্ত নজির অবশ্য মনোমোহনের পূর্বসূরি বাউল-ফকিরদের মধ্যেও আমরা পাই। এর বাইরে তাঁর বস্তুবাদী সত্তাও তাঁর গান, কবিতা ও উপদেশবাণীর পঙ্ক্তিতে পাওয়া যায়।
৩
মনোমোহন দত্ত প্রচুর সংখ্যক বিচ্ছেদ গান রচনা করেছেন। তাঁর আবেগময়-পঙ্ক্তিতে বিচ্ছেদ যেন উপচে পড়ে। মনের গভীর থেকেই যেন বিরহকাতর মনোমোহনের আর্তি : ‘আমার ভাঙা প্রাণ কে দিবে জোড়া/গড়তে গেলে আরো ভাঙে হয়ে যায় যে দফা সারা।/কি ঔষুধি আছে তার, কে জানে বা প্রতিকার/জিজ্ঞাসিলে বলে দেব, অরো তাতে তিতে পোড়া/ক্ষণে ক্ষণে ফুটে উঠে, প্রতিঘাতে অগ্নি ছুটে/উড়ে যায় আর পড়ে থাকে ভাঙা প্রাণের এমনি ধারা’।
প্রাণনাথ বিহনে যখন প্রাণ যায় যায় অবস্থা তখন অসহায় মনোমোহন প্রিয়তমের কাছে আশ্রয় চান। তবে সেই প্রিয়তম কিংবা প্রাণনাথ হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা। যে সৃষ্টিকর্তা বা পরমপুরুষ মানুষের মধ্যেই বিরজমান। মনোমোহন তাঁকে পাওয়ার আকুলতা থেকে বলছেন :
কি আর-
চাহিব নাথ তোমারে ছাড়ি, জীবনের—
আশা তুমি, তৃষিতের পয়-বারি।
এই করো বিশ্বপতি
তোমাতেই থাকে মতি
বাঁধা রহে মনপ্রাণ-–
চরণে তুঁহারি।
তব রূপ ভাবনায়
জগত ভুলিয়া যাই
মহাপ্রেমে ডুবে থাকি—
দিবস শর্বরী।
পরমপুরুষকে পাওয়ার যে তীব্রতা সেটা একইভাবে টের পাওয়া যায় প্রেয়সীর জন্যও। যার প্রেমে বিভোর হয়ে মনপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসেন, তার জন্য লজ্জা-শরম ত্যাগ করে অপেক্ষার প্রহর গুনতেও তাঁর কোনো খেদ নেই। বরং সেই প্রেমই তাঁর কাছে আনন্দ ও ভালোলাগার। মনোমোহনের প্রেমিক চিত্ত উদ্ভাসিত হয় বন্ধুর প্রেমে। তাই তাঁর কাছে চণ্ডীদাস-রজকিনীর গভীর প্রেমের কাহিনিই শ্বাশত-প্রেমের উদাহরণ হিসেবে আবির্ভূত হয় :
৪
যার সনে যার মন বাঁধা
নয়ন বাঁধা যার রূপে;
সে কি তারে ভুলতে পারে,
একেবারে যে গেছে ডুবে।
চণ্ডীদাস আর রজকিনী
বিল্বমঙ্গল চিন্তামণি
তারা প্রেমের শিরোমণি
মিশে গেছে ভাবে ভাবে।
এক রশিতে দুজন বাঁধা
কখন হাসা কখন কান্দা
মনোমোহন হলো আঁধা
পিপড়ায় খাইল গুড়ের লাভে।
মনোমোহনের বাউলাঙ্গিকের গানের সংখ্যা তাঁর সৃষ্টির তুলনায় খুব বেশি নয়। এরপরও তাঁর সাধনসংক্রান্ত গানের নিগূঢ়-ব্যাখা- বিশ্লেষণের আবেদন বাউলসমাজে খুবই আদরণীয়। তাঁর সৃষ্টির অমিয়ধারা তাই যুগে-যুগে কালে-কালে পাঠকদের তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে সুশীতল পানির মতোই চিরপ্রবাহমান।
সুমনকুমার দাশ
.
তথ্যসূত্র
১. মনোমোহন দত্ত, মলয়া বা ভাব-সঙ্গীত দ্বিতীয় খণ্ড (কুমিল্লা : হরিচরণ দেবনাথ, ১৯৯১);
২. মনোমোহন দত্ত, পাথেয় (কুমিল্লা : সুধীর চন্দ্র দত্ত, ১৩৮৪ বাংলা);
৩. এস. এম. আব্দুল মান্নান (সম্পা.), তিন পাগলের মেলা (ঢাকা : আল-আমিন বুক ডিপো, ২০০৯)।