শেষ অধ্যায়
সৌরজগতের কোনও এক প্রান্তে চিরস্থির শূন্যের মধ্যে মিহি আলোড়ন দেখা দেয়। অন্ধকারের বুকে একটা কিছু বায়বীয় পদার্থ নড়ে ওঠে।এখানে বায়ুমণ্ডল নেই শব্দএর অস্তিত্ত নেই।কেবল অনন্ত নিরবতা।
বহুদূরে একদানা কাঁচ ভাঙ্গা ধুলোর মত নীলচে পৃথিবী চোখে পড়ে।তার গা পেরিয়ে ছড়িয়ে আছে আরো কিছু বিক্ষিপ্ত নক্ষত্র। এরা স্থির ,এরা শাশ্বত,এখানে সচরাচর কিছু বদলায় না।
অনন্ত মহাশূন্যের মধ্যে একটা ছোট্ট অংশে একটা মিহি আলোড়ন বেড়ে চলেছে।বড় হচ্ছে সেটা। ধোঁয়ার মত কিছু একটা ছড়িয়ে পড়ছে। কোনো আকৃতি নিচ্ছে কি?
ছড়িয়ে পড়তে পড়তে স্থির হয়ে যায় ধোঁয়াটা ।এবার যেনো একটু ঘন হতে শুরু করেছে।জমাট বাঁধছে।একটু একটু করে কোনো অবয়ব ফুটে উঠছে।নিকষ কালো মেঘের মত গম্ভীর,অথচ তাতে স্পন্দন আছে ,প্রাণ আছে।
ক্রমশ সেই অবয়বে একটা মুখমন্ডল ফুটে উঠতে থাকে।বুকের দুপাশ থেকে দুটো হাত বের হয়ে আসে।একটা হাত সামনে এগিয়ে ধরে সে।তারপর মুঠো খুলে দেয়।ছোট বাক্স জাতীয় কিছু ধরা আছে হাতের মুঠোয়। হাত থেকে বেরিয়ে এসেই খুলে যায় বাক্সের ডালাটা ।তার ভিতর থেকে হাওয়ায় ভেসে বেরিয়ে আসে কিছুটা পোড়া ধুলো আর ছাই।
এখানে মাধ্যকর্ষণ নেই।তাই হাওয়ায় ভেসে উপরের দিকে এগিয়ে যায় ছাইটা।একে অপরের থেকে দূরে,আরো দূরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
সেই অন্ধকার মেঘের মত প্রাণীটা দুটো স্থির চোখে চেয়ে থাকে সেই উড়ন্ত ছাইটার দিকে।যতক্ষণ পর্যন্ত তারা মহাশূন্যে মিশে না যায় ততক্ষণ চেয়ে থাকে একটানা।
ছাইটা মিলিয়ে আসতে মেঘটাও ঝাপসা হয়ে আসে।একটু একটু করে যেনো সেও মিলিয়ে যায় মহাশূন্যের বুকে। মহাবিশ্বের এইটুকু অংশ আবার আগের মত স্পন্দনহীন হয়ে যায়।
কয়েক লক্ষকোটি আলোকবর্ষ পার করে এই অন্তহীন, চিরস্থির, চীররহস্্যাবৃত মহাবিশ্ব — গ্রহ ,নক্ষত্র,ধূমকেতু আর ধূলিকণা বুকে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কোনো বিশেষ সময়ের…
ভাসানবাড়ির মত….