ভাই এবং উপদেষ্টা

ভাই এবং উপদেষ্টা

গান-লেখক আজীম গোবিন্দপুরী এ. বি. সি. প্রোডাকশনে কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধু ভাটসাবের কথা তার মাথায় এল। ভাটসাবে সুরকার। জাতে মারাঠা। আজীম আর সে অনেকগুলো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিল। আজীম ভাটসাবের যোগ্যতা জানত। সে এও জানত যে স্টান্ট ফিল্মে সুরকারের বিশেষ কেরামতি দেখানোর জায়গা নেই। তাই ভাটসাবে এত গুণী হওয়া সত্ত্বেও খুব বেশি লোক তাকে চিনত না।

আজীম নিজের শেঠের সঙ্গে কথা বলল। শেঠ আজীমের কথায় এতটাই প্রভাবিত হল যে ভাটসাবেকে তৎক্ষণাৎ ডেকে তার সঙ্গে তিনহাজার টাকায় কাজের চুক্তি করে ফেলল।

চুক্তি সই করতেই ভাটসাবের হাতে পাঁচশো টাকা চলে এল। তার যত জায়গায় যত দেনা ছিল, সব চুকে গেল। তার কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ ছিল না। সে ভাবতে লাগল কীভাবে আজীম গোবিন্দপুরীর এই ঋণ শোধ করা যায়।

‘আজীম এত ভালো একজন মানুষ!…কোনো লাভ ছাড়াই আমার জন্য এত কিছু করল!…যাই হোক, পরের মাসেই…’—চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যেক মাসেই তার পাঁচশো টাকা করে পাওয়ার কথা। তাই সে তখুনি আজীমকে কিছু বলল না।

দুজন নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

আজীমের লেখা দশটা গানের মধ্যে চারটে শেঠের পছন্দ হল। ভাটসাবে তার মধ্যে দুটোয় সুর দিল। দুটো গানই প্রোডাকশনের প্রায় সবার মন জিতে নিল।

প্রথম গানটা ছিল কোরাস। তাতে অন্তত দশজন মেয়ে দরকার। প্রোডাকশন ম্যানেজার কোনো ব্যবস্থা করে উঠতে না পারায় ভাটসাবে মিস মালাকে ডেকে পাঠাল। মিস মালার গলা খুব সুন্দর। তার উপর সে পাঁচ-ছ’টা মেয়েকে চিনত যারা সুরে গাইতে পারত।

মিস মালা খান্ডেকার কোলাপুরের লোক। মারাঠী। অন্য অনেকের তুলনায় সে পরিষ্কার উর্দু উচ্চারণ করতে পারত। উর্দু ভাষায় তার উৎসাহও ছিল যথেষ্ট। বয়স খুব বেশি না, কিন্তু চেহারা আঁটোসাঁটো। কথাবার্তা শুনে বোঝা যেত যে সে জীবনে ওঠা-পড়া অনেক দেখেছে আর হয়তো তাই পৃথিবীর সম্বন্ধে বেশ ওয়াকিবহাল। স্টুডিওর সমস্ত লোককে সে ‘ভাই’ বলে ডাকত। লোকজনের সঙ্গে খুব অল্পেই বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলার ক্ষমতা তার ছিল।

ভাটসাবের ডাক পেয়ে মিস মালা যারপরনাই আনন্দিত হল। তাকে গানের মেয়ে জোগাড় করতে বলায় সে পরের দিনই বারোজন মেয়েকে নিয়ে হাজির হল।

ভাটসাবে তাদের পরীক্ষা নিল। সাতজনকে রাখা হল। বাকিদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল। ভাটসাবে ভাবল, ‘ঠিক আছে…সাতজনই যথেষ্ট।’

সাউন্ড রেকর্ডিস্ট জগতাপের সঙ্গে আলোচনা করতে জগতাপ বলল, ‘চিন্তার কিছু নেই দাদা!…ও আমি সামলে নেব। এমন রেকর্ডিং করব যে মনে হবে কুড়িজন গাইছে!…’

জগতাপ কাজ জানত। সাউন্ডপ্রূফ ঘরে রেকর্ডিং না করে সে গায়িকা আর বাদকের দলকে একটা মোটা দেওয়ালসমেত ঘরে বসাল। সে ঘরের দেওয়াল এমন যে কোনো আওয়াজই চেপে যাবে না।

ফিল্ম ‘বেওয়াফা’-র মহরত হল এই কোরাস গানেরই রেকর্ডিং দিয়ে। প্রচুর লোক এল। তার মধ্যে বড় বড় ফিল্মের শেঠ আর ডিস্ট্রিবিউটরও ছিল। এ. বি. সি. প্রোডাকশনের মালিক বেশ জাঁকজমক করেই আয়োজন করেছিল।

প্রথমে গানের রিহার্সাল হল। মিস মালা খান্ডেকার আর ভাটসাবে মিলে সব ব্যবস্থা করল। মিস মালা তার সাতজন মেয়েকে বারবার বলে দিল যেন তারা কোনো গণ্ডগোল না পাকায়।

ভাটসাবে প্রথম রিহার্সালেই সন্তুষ্ট ছিল। তবু মনের শান্তির জন্য আরো কয়েকবার রিহার্সাল করাল। জগতাপ কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনে আনন্দের সঙ্গে চেঁচিয়ে বলল, ‘ওকে’! প্রত্যেকটা স্বর, প্রত্যেকটা বাজনা ঠিক সুরে আছে।

অতিথিদের জন্য মাইক্রোফোনের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। রেকর্ডিং শুরু হতে মাইক্রোফোন অন করে দেওয়া হল।

ভাটসাবের গলা ভেসে এল, ‘সং নাম্বার ওয়ান, ফার্স্ট টেক…রেডি… ওয়ান, টু…’।

কোরাস শুরু হয়ে গেল।

কম্পোজিশনও দারুণ ছিল, আর মেয়েদের একজনও গাইতে গিয়ে কোনো ভুল করল না। অতিথিরা অকুণ্ঠ হাততালিতে হল ভরিয়ে দিল। শেঠ গানের গ-ও বুঝত না। কিন্তু লোকের প্রশংসা আর হাততালি শুনে সেও আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল।

ভাটসাবে বাজনদার আর গায়িকাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করল। বিশেষ করে মিস মালার, যার জন্য এত তাড়াতাড়ি ভালো গায়িকা পাওয়া গেছে। সাউন্ড রেকর্ডিস্ট জগতাপ আর ভাটসাবে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরল।

এমন সময় প্রোডাকশনের মালিক শেঠ রঞ্ছড়দাসের লোক এসে বলল, শেঠজি ভাটসাবে আর আজীম গোবিন্দপুরীকে ডাকছে।

স্টুডিওর যেদিকে আসর জমেছিল, সেখানে শেঠ রঞ্ছড়দাস অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে বসে গল্প করছিল। এরা যেতেই শেঠ দুজনের হাতে একশো টাকার একটা করে নোট দিল। ইনাম স্বরূপ। প্রথমে ভাটসাবের হাতে, তারপর আজীম গোবিন্দপুরীর হাতে। ছোট্ট জায়গাটা হাততালির আওয়াজে গমগম করে উঠল।

মহরত শেষ হলে ভাটসাবে আজীমকে বলল, ‘চলো!…মালকড়ি আছে এখন…আউটডোর যাই।’

আজীম বুঝতে না পেরে জিগ্যেস করল, ‘আউটডোর! কোথায়?’

ভাটসাবে হাসল, ‘মাজে মঙ্গে, আমরা ফুর্তিফার্তা করে আসি চলো। একশো টাকা তোমার কাছে, একশো আমার কাছে…।’

আজীম বুঝে গেল। কিন্তু ভাটসাবের ফুর্তিতে তার বিশেষ উৎসাহ ছিল না। তার বউ-বাচ্চা ছিল, আর সে কখনোই কোনওরকম লাম্পট্য করেনি। কিন্তু সেদিন সেও খুব খুশি ছিল। তাই বলল, ‘চলো যাই!…দেখি কী হয়!’

ভাটসাবে ট্যাক্সি ডাকল। দুজন তাতে উঠে বসল। ট্যাক্সি চলতে শুরু করল। গ্রান্ট রোডে পৌঁছে আজীম জিগ্যেস করল, ‘ভাই ভাটসাবে, আমরা কোথায় যাচ্ছি?’

ভাটসাবে হাসল, ‘আমার মাসির বাড়ি।’

মাসির বাড়ি আসলে মিস মালা খান্ডেকরের বাড়ি।

মিস মালা অভ্যর্থনা করে তাদের ভিতরে নিয়ে গেল। হোটেল থেকে চা আনিয়ে দুজনকে দিল।

চা শেষ করে ভাটসাবে মিস মালার দিকে তাকিয়ে অল্প হেসে বলল, ‘একটু ফুর্তিফার্তা করতে এসেছি…তোমার কাছে…একটা ব্যবস্থা কর।’

মিস মালা বুঝে ফেলল। সে এমনিতেই ভাটসাবের কাছে কৃতজ্ঞ ছিল। সে মারাঠিতে কিছু বলল যার অর্থ, ‘আমি আপনার খিদমতে সর্বদা প্রস্তুত।’

ভাটসাবে প্রকৃতপক্ষে আজীমকে খুশি করতে চেয়েছিল। সে কৃতজ্ঞ ছিল কারণ আজীমই তাকে চাকরিটা পাইয়ে দিয়েছিল। সে মালাকে বলল আজীমের জন্য একটা মেয়ের বন্দোবস্ত করতে।

মিস মালা তাড়াতাড়ি নিজের সাজগোজ ঠিক করে নিল। তিনজন বেরিয়ে ট্যাক্সিতে উঠল।

প্রথমে মিস মালা প্লেব্যাক সিঙ্গার শান্তা করনাকরনের বাড়ি গেল। কিন্তু সে আগেই অন্য কারোর সঙ্গে বেরিয়ে গেছিল। তারপর সে গেল কোনো এক অনসূয়ার বাড়ি। দুর্ভাগ্যক্রমে অনসূয়াও সেদিন এরকম অভিযানে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল না।

দু’জায়গায় ব্যর্থ হয়ে মিস মালা বেশ বিরক্ত হল। কিন্তু সে হাল ছাড়ার পাত্রী নয়। ট্যাক্সি ঘুরিয়ে তারা রওনা দিল গোলপেঠার দিকে। কৃষ্ণা থাকত সেখানে। কৃষ্ণা বছর পনেরো-ষোলোর এক গুজরাটি মেয়ে। নরম মিষ্টি গলায় গান গাইত। সেদিন রেকর্ডিংয়ের দলে সেও ছিল। মিস মালা তার বাড়ি ঢুকল। কিছুক্ষণের মধ্যেই কৃষ্ণাকে সঙ্গে নিয়ে সে বেরিয়ে এল।

কৃষ্ণা হাতজোড় করে আজীম আর ভাটসাবেকে নমস্কার করল।

মিস মালা পাকা দালালদের মতো আজীমের দিকে তাকিয়ে চোখ মারল। যেন বলতে চাইল, ‘এ আপনার জন্য।’

ভাটসাবে চোখের ইশারায় সম্মতি জানাল।

কৃষ্ণা আজীমের গা ঘেঁষে বসে পড়ল। ট্যাক্সি চলতে শুরু করল।

একটু পরে একটা বারের সামনে ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে ভাটসাবে আজীমকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল।

সঙ্গীত রচয়িতা আজীম গোবিন্দপুরী এর আগে মাত্র একদুবারই মদ খেয়েছে! তাও কাজের জন্য। সে মনে মনে বলল, ‘এও তো কাজেরই ব্যাপার!’

ভাটসাবের অনুরোধে তাড়াতাড়ি দু’পেগ রাম শেষ করে সে বেশ উদ্দীপ্ত হয়ে ট্যাক্সিতে এসে বসল।

ট্যাক্সি ওয়র্লি পৌঁছোল। সমুদ্রের ধারে। সেখানে শহরের সব শৌখিন লোক কোনো না কোনো মেয়েকে নিয়ে আসত। একটা পাহাড়ও ছিল—প্রাকৃতিক না কৃত্রিম তা জানা নেই।

চারজন পাহাড়টায় উঠল। পাহাড়টা বেশ উঁচু। উপরে দূরে দূরে বেঞ্চ পাতা। প্রত্যেক বেঞ্চে একজোড়া কপোতকপোতী বসে। প্রেমিক-প্রেমিকদের মধ্যে অলিখিত বোঝাপড়া ছিল যে একদল আরেকদলকে বিরক্ত করবে না।

ভাটসাবে আজীমকে খুশি করার জন্য একটা বেঞ্চ তাকে আর কৃষ্ণাকে ছেড়ে দিয়ে নিজে মিস মালার সঙ্গে আরেকটা বেঞ্চে গিয়ে বসল।

আজীম সারাজীবন অন্য মহিলাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে। কিন্তু তখন কৃষ্ণার পাশে বসে তার শালীনতা যেন গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে গেল।

কৃষ্ণা সমুদ্রতীরের মেয়ে। শ্যামলা রং। মজবুত, জোয়ান চেহারা। ছলাকলার প্রায় সব টোটকাই সে জানত।

আজীমের বেশ নেশা হয়েছিল। কতটা রামের জন্য আর কতটা কৃষ্ণার সান্নিধ্যে, তা বলতে পারব না। এমনিতে সে কম কথার মানুষ। একটু গম্ভীর প্রকৃতির। কিন্তু তখন সেসব ছেড়ে সে কৃষ্ণার সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি আরম্ভ করল। ভাঙা ভাঙা গুজরাটিতে তাকে আবোলতাবোল গল্পও শোনাতে লাগল।

হঠাৎ তার মাথায় কী চাপল, সে দুশো গজ মতো দূরে বসা ভাটসাবে আর মিস মালাকে হাঁক দিয়ে বলল, ‘ভাটসাবে, পুলিশ!’

ভাটসাবে আর মিস মালা এক লাফে উঠে দাঁড়াল। আজীম আর কৃষ্ণা হো-হো করে হেসে উঠল। বুঝতে পেরে ভাটসাবে একটা চোখা গাল পেড়ে নিজেও হাসতে শুরু করে দিল। তারপর তার মাথায় এল, ‘একদিকে ভালোই হয়েছে!…এর চেয়ে বরং কোনো একটা হোটেলে যাওয়া যাক… পুলিশের ভয় থাকবে না।’

চারজন নীচে নামতে শুরু করল। হঠাৎ রাস্তায় এক হলুদ পাগড়ি পরা সেপাইয়ের আবির্ভাব! সে পুলিশি কায়দায় জিগ্যেস করল, ‘রাত এগারোটায় তোমরা এখানে কী করছ?!…জানো না দশটার পর এখানে আসা বারণ!… নিয়ম নেই!’

আজীম নিজেকে সামলে নিয়ে উত্তর দিল, ‘জনাব, আমরা ফিল্মের লোক।…এই মেয়েটা’—বলে কৃষ্ণার দিকে ইশারা করল, ‘এও ফিল্মে কাজ করে। আমরা কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে আসিনি!…সামনের স্টুডিওতেই কাজ করি!…দিনভর কাজ করে ক্লান্ত হয়ে একটু হাওয়া খেতে বেরিয়েছি…বারোটা থেকে আবার শ্যুটিং শুরু!’

হলুদ পাগড়ি শান্ত হয়ে গেল। তারপর ভাটসাবের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল,’তুমি কে? তুমি এখানে কেন?’

ভাটসাবে একটু ঘাবড়ে গেল। তড়িঘড়ি সে মিস মালার হাত ধরে বলল, ‘এ আমার ওয়াইফ!…আমাদের ট্যাক্সি নীচে রাস্তায় দাঁড় করানো!’

একটুআধটু কথাবার্তার পর চারজন ছাড়া পেয়ে গেল।

নীচে নেমে ট্যাক্সিতে বসে ভাটসাবে ঠিক করল, কোনো হোটেলে যাবে। আজীম এই ধরনের হোটেলের সম্বন্ধে কিছুই জানত না।

একটু ভেবে ভাটসাবে ঠিক করল, ডকইয়ার্ডের ‘সি ভিউ’ হোটেলে যাবে। ট্যাক্সি সেদিকে চলতে শুরু করল।

‘সি ভিউ’ হোটেলে পৌঁছে ভাটসাবে দুটো ঘর নিল, একটা আজীম আর কৃষ্ণার জন্য, আরেকটা নিজের আর মিস মালার জন্য। ঘরে ঢোকার আগে আজীম আর ভাটসাবে আরো দু’পেগ করে খেয়ে নিল।

কৃষ্ণার আকর্ষণ ছিল চরম! কিন্তু চার পেগের পর আজীমের উপর যেন দর্শন ভর করল। কৃষ্ণার দিকে ভালো করে তাকিয়ে সে ভাবতে লাগল, এত অল্পবয়সি একটা মেয়ে এই জঘন্য রাস্তায় কেন পা বাড়িয়েছে! এত কীসের খামতি তার জীবনে! যে মেয়ে মাংস ছোঁয় না, সে এভাবে কতদিন নিজের মাংস বিক্রি করবে!!

‘কৃষ্ণা! এই পাপের পথ থেকে বেরিয়ে যাও!…যে রাস্তায় পা বাড়িয়েছ, সেটা ভালো নয়!…একদিন এমন খাদে পড়বে যে আর বেরোবার পথ থাকবে না!…বেশ্যাবৃত্তির চেয়ে খারাপ কিছু হয় না!…আজকের রাতটাকে নিজের জীবনের একটা সন্ধিক্ষণ মনে কর। আমি তোমায় তোমার ভালোর জন্যই বলছি!’

পনেরো-ষোলো বছরের কৃষ্ণার মাথায় এত কিছু ঢুকল না। সে ভাবল, আজীম তাকে আদর করছে। সে আজীমের শরীরের সঙ্গে লেপ্টে গেল। আজীমের যা জীবনদর্শন বাকি ছিল, সেসব শরীরের তাপে গলে গলে পড়তে লাগল।

ঘর থেকে বেরিয়ে আজীম দেখল, ভাটসাবে হোটেলের বারান্দায় ছটফট করতে করতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেন তার বুকে ভীমরুলে কামড় দিয়েছে!

আজীমকে দেখে ভাটসাবে দাঁড়িয়ে পড়ল। আনন্দে আপ্লুত কৃষ্ণার মুখের দিকে তাকিয়ে সে বিরক্ত হয়ে বলল, ‘মাগীটা চলে গেল।’

আজীম চমকে উঠে প্রশ্ন করল, ‘কে?’

‘ওই মালা।’

‘কেন?’

ভাটসাবে রাগে গজগজ করতে করতে বলল, ‘এতক্ষণ ধরে আমরা একে অন্যকে চুমু খেলাম! তারপর যেই আরেকটু এগোতে গেলাম, বলে কিনা, ‘আর কিছু না…তুমি আমার ভাইয়ের মতো…তার উপর আমার বিয়ে হয়ে গেছে’…তারপর এই বলে বেরিয়ে চলে গেল, যে তার বর এতক্ষণে নিশ্চয়ই বাড়ি এসে গেছে আর তাকে খুঁজছে!’…

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *