প্রথম অংশ : অন্তর্ধান
দ্বিতীয় অংশ : অন্ধকারের অবতার
1 of 2

ব্ল্যাক বুদ্ধা – ৯

অধ্যায় নয় – সময় : ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ
স্থান : নির্মাণাধীন ক্যাফেটেরিয়া,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, সিলেট

মেয়েটা এমনভাবে বান্ধবীদের দিকে আঙুল তুলে কথা বলছে যেন অস্ত্র তাক করে আছে।

যদিও কানে হেডফোন লাগানো থাকার ফলে বাইরের কোনো শব্দ তার কানে পৌঁছানোর কথা নয়, তবুও মেয়েগুলোর তীক্ষ্ণ গলা সে পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছে। কারণ আর কিছুই না তাদের অতি মাত্রায় উচ্চস্বর। হাত নেড়ে নেড়ে অতি উচ্চস্বরে কথা বলছে তারা।

পেন্সিলটা নামিয়ে রেখে লেখার খাতা থেকে চোখ তুলে আড়চোখে মেয়েগুলোর দিকে ফিরে তাকাল তানভীর। বিকেলের এই সময়ে সাধারণত এখানে কেউই আসে না, আর এ কারণেই এই জায়গাটা ওর অনেক প্রিয়। ক্লাসরুম আর ক্যান্টিন দুটোরই সংকট থাকার পরও নির্মাণাধীন ক্যাফেটেরিয়া আর ‘ই’ বিল্ডিংয়ের কাজ কোনো এক অজানা কারণে অনেকদিন ধরেই স্থগিত হয়ে আছে। এ কারণে ক্যাফেটেরিয়ার পেছনের এই জায়গাটা বলতে গেলে ব্যবহৃতই হয় না। নির্জনতার পাশাপাশি এই জায়গাটা তানভীরের প্রিয় হবার পেছনে আরেকটা কারণ আছে।

এখানে বসলে প্রচুর বাতাস তো আছেই সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকার চমৎকার একটা ভিউ পাওয়া যায় এখান থেকেই। তাই এখানে বসেই সে এটা-ওটা লিখতে পছন্দ করে। খোলা হাওয়া আর আর বিস্তৃত খোলা প্রান্তরের সামনে বসে হারিয়ে যেতে পারে নিজের ভাবনার জগতে।

‘ধূর…’ একবার আড়চোখে তাকালেও চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ও-কিন্তু ভেসে আসা উচ্চকিত কণ্ঠস্বরটা শুনে আবারো সেদিকে ফিরে তাকাল তানভীর।

চারটা মেয়ের একটা দল। দেখার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সে চিনতে পারল; এই মুহূর্তে চারজন হলেও এদের দলে আরেকজন আছে। সংখ্যায় এরা পাঁচজন। সাস্ট ক্যাম্পাসে এরা একনামে ‘টমবয়’ গ্রুপ নামে পরিচিত।

প্রতিটি মেয়েই বলতে গেলে প্রায় ছেলেদের মতো পোশাক পরা, যেটা এই সাস্ট ক্যাম্পাসে একরকম বিরল বলা চলে। এই গ্রুপটা ক্যাম্পাসে একেবারে ছেলেদের মতো চলাফেরা করে, একটা মেয়ে আছে রক মিউজিক গায়। একভাবে বলতে গেলে এই ক্যম্পাসের নারী মাস্তান এরা। সরাসরি এদের সঙ্গে কখনো কথা না হলেও তানভীর খুব ভালো করেই চেনে গ্রুপটাকে। প্রতিটি মেয়েই সুন্দরী, পোশাক-আশাকে বেশ আধুনিকতা, হলের বড়ো ভাই আর ফ্রেন্ডদের কাছে ও শুনেছে এই গ্রুপের দুয়েকটা মেয়ে বাদে বাকিদের প্রতেক্যেই নাকি খুব ভালো ছাত্রীও। তবে এই গ্রুপের মধ্যমণি আছে একটা মেয়ে, তার জন্যে বলতে গেলে সাধারণ ছাত্র থেকে শুরু করে বহু শিক্ষকও নাকি একবাক্যে বলতে গেলে ফিদা।

তানভীর দেখল একটু আগে গালি দেয়া মেয়েটা একটা সিগারেট ধরিয়ে টানছে, অন্য আরেকটা মেয়ে কথা বলে উঠল, ‘এই মরার প্রক্টর আসার আর টাইম পাইল না, মাত্র মুরগিটা ধরছিলাম…’ কথা বলতে বলতেই হঠাৎ ওদের দলের একজনের চোখ পড়ল তানভীরের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে সে অন্যদেরকে জানাল ব্যাপারটা। প্রায় সবাই একযোগে ফিরে তাকাল ওর দিকে। সিগারেট টানতে থাকা মেয়েটা হাতের ইশারায় ডাকল ওকে।

অনেকটা না দেখার ভান করে অন্যদিকে ফিরে তাকাল তানভীর। বেশ বুঝতে পারছে না চাইতেও একটা অযাচিত ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছে ও। তালির শব্দ শুনে চমকে উঠে ফিরে তাকাল ওদের দিকে। হাতের ইশারায় ডাকছে ওকে। এবার আর এড়িয়ে যাবার উপায় নেই।

অর্ধনির্মিত দেয়ালের ওপরে বসে পিলারে হেলান দিয়ে লিখছিল ও। সেখান থেকে নেমে হাতের খাতা ভাঁজ করে পায়ে পায়ে এগোল মেয়েগুলোর দিকে, দুই কানে গুঁজে রাখা হেডফোনের একটা খুলে ফেলল।

‘এই এদিকে আয়,’ সিগারেট টানতে থাকা মেয়েটা কড়া ভাষায় ডাক দিল ওকে। প্রায় সবগুলো মেয়েই তাকিয়ে আছে ওর দিকে। শুধু মাঝখানের একজন বাদে। তানভীর অনুমান করল, সম্ভবত এই মেয়েটাই দলের মধ্যমণি। ‘এই তোরে ডাক দিলাম দেখস নাই?’

‘জি, দেখেছি—’

‘তাইলে আইতে দেরি করলি ক্যান?’ বলেই সে টান দিয়ে ওর হাত থেকে রাইটিং প্যাডটা নিয়ে নিল।

‘কোনো ডিপার্টমেন্ট?’ একজন প্রশ্ন করল।

‘ওয়ান ওয়ান?’ আরেকজন জানতে চাইল। ফার্স্ট ইয়ার ফার্স্ট সেমিস্টারকে

ওয়ান ওয়ান বলা হয়।

‘জি-না, টু-ওয়ান,’ মানে তানভীর বলতে চাইছে ও সেকেন্ড ইয়ার ফার্স্ট সেমিস্টারে পড়ে।

‘এই তুই পোলা না? এমুন মাইয়াগো মতো করতাছোস ক্যান?’ একাধিক প্রশ্নবাণে জর্জরিত তানভীর বুঝতে পারছে আজ খবরই আছে, কঠিন একটা র‍্যাগ খেতে হবে।

‘আরে, গায়ে-গতরে তো ভালোই,’ পাশ থেকে আরেকটা মেয়ে টি-শার্টের ওপর দিয়ে ওর বাইসেপে জোরে চাপ দিল। ‘বাহ তোর বডি তো ভালোই, জিম করোস নাকি?’

কিছু না বলে ও মাথা উঁচু করে রাগত দৃষ্টিতে ফিরে তাকাল ওর হাতে চাপ দেয়া মেয়েটার দিকে। হঠাৎই ওর মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে, আর এটাও বেশ বুঝতে পারছে বেশি নরম হলে বেশি নাজেহাল হতে হবে।

ওকে আগুন চোখে তাকাতে দেখে চট করে গ্রুপ লিডার মেয়েটা ফিরে তাকাল ওর দিকে, এতক্ষণ সে সরাসরি তানভীরের দিকে তাকায়নি। তানভীরের দিকে সোজা তাকিয়ে আছে সে। তানভীরও বুঝতে পেরেছে এই মেয়েটাই সেই মেয়ে যার জন্যে পুরো সাস্ট ক্যাম্পাস দিওয়ানা। মেয়েটা উঠে দাঁড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল ওর সামনে, তানভীর সরাসরি তাকিয়ে আছে তার চোখের দিকে। এরকম ভয়ংকর সুন্দর চোখ তানভীর জীবনেও দেখেনি।

নিজেকে খুব বাহাদুর মনে করিস তুই, তাই না? তোর বাহাদুরি চাইলে… এই চোখ নামা,’ তানভীর এক দৃষ্টিতে মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। পাশ থেকে আরো দুটো মেয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে।

‘এই তোরে চোখ নামাইতে বলল না?’ সূর্যের চেয়ে বালি গরম, নেত্রীর চেয়ে তার চামচারা বেশি গরম। তানভীর তাকিয়েই আছে ভয়ংকর সুন্দর চোখ জোড়ার দিকে। মেয়েটাও তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ তার চোখের মণি নড়ে উঠল। মনে মনে খুশি হয়ে উঠল তানভীর, দৃষ্টির লড়াইয়ে হেরে যেতে বসেছে মেয়েটা।

চোখ নামিয়ে টান দিয়ে ওর বাঁ কান থেকে হেডফোনটা খুলে ফেলল মেয়েটা, ‘কানে আবার হেডফোন লাগায়া রাখছে। দেখি কি ছাতা-মাথা শুনছিস,’ বলেই সে হেডফোনটা কানে লাগাল। কয়েক সেকেন্ডের ভেতরে তার দৃষ্টি পরিবর্তন হয়ে আসতে লাগল। ‘ল্যায়লা’, এরিক ক্ল্যাপটন?’ বলে সে চোখ তুলে তাকাল তানভীরের দিকে। ‘আসলেই তুই ক্ল্যাপটন শুনছিলি নাকি হুদাহুদি?’

‘আমি এরিক ক্ল্যাপটনের ফ্যান,’ তানভীর শক্ত মুখেই বলে উঠল। যদিও ভেতরে ভেতরে ও জানে দৃষ্টির লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ভয়ংকর সুন্দরী এখন দুর্বল। তবুও বেশি কথা বলা ঠিক হবে না। এর চামচারা আবার ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। ‘তার সব গান আমার শোনা।’

মেয়েটা আরেকবার ওকে দেখল। ‘বাহ্, বিটলসের টি-শার্ট পরে আছিস, আবার গান শুনছিস ক্ল্যাপটনের, বিরাট মিউজিক বোদ্ধা মনে হয়। তোকে ছেড়ে দেব এক শর্তে,’ পাশ থেকে অন্য একটা মেয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিল তার আগেই হাত তুলে তাকে থামিয়ে দিল ভয়ংকর সুন্দরী। ‘বিটলস আর এরিক ক্ল্যাপটনের ল্যায়লার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে বলতে পারলে তুই ফ্রি।’

‘কচু বলতে পারবে…’ পাশ থেকে অন্য একটা মেয়ে ফোড়ন কাটতেই উঠতেই সবাই একযোগে হেসে উঠল।

‘বিটলসের জর্জ হ্যারিসনের ওয়াইফ প্যাটি বয়েডকে পছন্দ করত এরিক ক্ল্যাপটন, তাদের মধ্যে একটা সময় সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। ক্ল্যাপটন মূলত প্যাটি বয়েডকে উদ্দেশ্য করেই নির্মাণ করেছিল তার অনবদ্য সৃষ্টি ‘ল্যায়লা’,’ বলা শেষ করে তানভীর মৃদু হাসল।

সবাই একটু অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে। ভয়ংকর সুন্দরী এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ‘আমার নাম লু,’ বলে সে একটা হাত বাড়িয়ে দিল তানভীরের দিকে। ‘আমি ভাবতাম, এই ক্যাম্পাসে এরিক ক্ল্যাপটনের সবচেয়ে বড়ো ফ্যান আমি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে…’

‘এই এই প্রক্টর স্যারের গাড়ি, শালা আবারো…’

তানভীর মাটি থেকে ওর রাইটিং প্যাডটা তুলে নিল। মেয়েগুলো যেতে যেতে হঠাৎ পেছন ফিরে তাকাল ‘লু’ নামের সেই ভয়ংকর সুন্দরী, মুচকি হাসি দিয়ে উঠল সে।

‘স্যার…স্যার…’

বর্তমান সময়
সিলেট এয়ারপোর্ট

‘স্যার…’ এয়ার হোস্টেসের মৃদু ঝাঁকি খেয়ে চমকে উঠল তানভীর। ‘স্যার, প্লেন ল্যান্ড করতে যাচ্ছে। আপনার সিট বেল্টটা বেঁধে নিন প্লিজ।’

সিটবেল্ট বেঁধে নিয়ে বড়ো করে একবার দম নিল তানভীর। উফ্, আধাঘণ্টার এই ছোট্ট যাত্রার ভেতরেও ঘুমিয়ে গেছিল ও। কানে গুঁজে রাখা হেডফোনের ভেতর থেকে বিদায় নিয়েছে জন ডেনভার। সেখানে এখন একমনে গিটার বাজিয়ে চলেছে কার্লোস সান্তানা। গিটারের সুরলহরীর ভেতর দিয়ে মাঝে মাঝে ভেসে আসছে তার কণ্ঠস্বর,

‘ব্ল্যাক ম্যাজিক ওমেন…ব্ল্যাক ম্যাজিক ওমেন’

প্লেন ল্যান্ড করছে, কানের ব্যথায় দাঁতে দাঁত চেপে মনে মনে তানভীর বলে উঠল, এই হয় দুনিয়াতে, লায়লারা চলে যায়, রয়ে যায় ব্ল্যাক ম্যাজিক ওমেনরা।

আরো আধা ঘণ্টার ভেতরে ও যাবতীয় ফর্মালিটি সেরে বেরিয়ে এলো এয়ারপোর্টের বাইরে।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ারপোর্ট হিসেবে তানভীরের চোখে একটু ছোটোই মনে হলো। অবশ্য সদ্য দেশের বাইরে থেকে আসার কারণেও সেটা হতে পারে। এর আগে পাঁচ বছরের বেশি সময় সিলেট থাকলেও এয়ারপোর্টে কখনো আসা হয়নি ওর।

সময়টা প্রায় শীতকাল হলেও এয়ারপোর্টের বাইরে রোদের তেজ অত্যন্ত প্রখর। লেদার জ্যাকেটটা খুলে হাতে নিয়ে চোখে সানগ্লাস পরে নিল তানভীর। প্লেনে সামান্য সময়ের জন্যে ঘুমিয়ে পড়ায় মনে মনে একটু আফসোস হচ্ছে ওর। কারণ ওই সময়ে ফাইলটাতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারত ও। তবে ওর কমিউনিকেশন পারসনের নাম-নম্বর আর পাসওয়ার্ডটা ঠিক করাই আছে, কাজেই সমস্যা হবার কোনো কারণ নেই। এয়ারপোর্টের বাইরে এসে মূল ভবনটা পার হয়ে কার পার্কের কাছে চলে এলো তানভীর। লোকজন খুবই কম, আর যাত্রীর সংখ্যাও একেবারেই অপ্রতুল। কাজেই কেউই যদি নেম-প্লেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকত তবে অবশ্যই চোখে পড়ত ওর।

কারপার্কের সারিতে একেবারেই শুরুতে একটা ধূসর রঙের মাইক্রোর মতো দেখতে ভ্যান-টাইপের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। সেটার গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে লম্বামতো দেখতে জিন্স-শার্ট-গ্যাবার্ডিন জ্যাকেট আর কালো সানগ্লাস পরা এক মেয়ে। ক্ষণিকের জন্যে ভ্যানটা আর মেয়েটাকে পরখ করে ওটা পার হয়ে এলো ও।

মোবাইল বের করে একটু আগেই সেট করা নাম আর নম্বরটা দেখে নিল। পাশা স্যারের নির্দেশনা যদি ঠিক হয়ে থাকে তবে এই সুলতান হচ্ছে বাংলাদেশের সেরা পিস্তল শ্যুটারদের একজন। কল বাজতে লাগল কিন্তু কেউ ধরল না। আবারো কল দিল ও।

সুলতান শ্যুটার সুলতান, ব্যাটার নামটা বেশ ভালো মানিয়েছে, মনে মনে ভাবল ও। রিং বাজছে, এখনো কেউ ধরছে না। হঠাৎ পেছন থেকে রিংটোনের শব্দ শুনে চট করে ঘুরে দাঁড়াল তানভীর। আরেকটু হলেই মোবাইল ফেলে পিস্তলটা বের করে এনেছিল কিন্তু পেছন ফিরে বোকা বনে গেল ও।

পেছনে সেই গ্যাবার্ডিন জ্যাকেট আর সানগ্লাস পরা মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে একটা মোবাইল, সেটা ক্রমাগত বেজে চলেছে এই মুহূর্তে। তানভীর কলটা কেটে দিতেই সেটার রিংটোন বন্ধ হয়ে গেল। একটু অবাক হয়েই একবার তাকে দেখল আরেকবার হাতে ধরা মোবাইলটা দেখল তানভীর। আবারো কল দিয়ে নিশ্চিত হবে কি না ভাবছে-তার আগেই গ্যাবার্ডিন জ্যাকেট এগিয়ে এলো ওর দিকে।

তানভীর এবার ভালো করে খেয়াল করে দেখল মেয়েটার পরনের গ্যাবার্ডিন জ্যাকেটের হাতায় পুলিশি লোগো লাগানো। ও কিছু বলার আগেই প্রায় ওর সমান লম্বা মেয়েটা মাটিতে বুট ঠুকে, চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল, ‘স্যার, আমি সুলতান। আপনি নিশ্চয়ই তানভীর স্যার?’ বলেই সে ছয় ডিজিটের পাসওয়ার্ডটা আউড়ে গেল।

তানভীর এখনো নিজের বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সে মেয়েটার চেহারা

আর নামের মধ্যে সামঞ্জস্য খুঁজতে ব্যস্ত।

‘ও, আপনিই সুলতান, আমি আমি ভেবেছিলাম…যাই হোক,’ ও নিজের পাসওয়ার্ড উচ্চারণ করতেই মেয়েটা এগিয়ে এসে ওর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে ওকে পথ দেখাল।

মেয়েটা হঠাৎ ব্যাগটা নিয়ে নেওয়াতে একটু অস্বস্তি বোধ করলেও কিছু করার নেই কারণ এরমধ্যেই সে ব্যাগটা কাঁধে চাপিয়ে হাঁটতে শুরু করেছে। মনের মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, কিন্তু সেগুলো আপাতত পেটের ভেতরে চালান করে দিয়ে সুলতান নামক মেয়েটার পিছু পিছু হাঁটতে লাগল ও।

মেয়েটা ওকে নিয়ে সেই ভ্যানটার কাছে চলে এলো। ভ্যানের দরজায় দুবার টোকা দিতেই ড্রাইভারের দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। বয়স্ক দেখতে এক ড্রাইভার। সুলতানের হাত থেকে ব্যাগটা নিতে নিতে মুরুব্বি কিসিমের ড্রাইভার সালাম দিল ওকে। ‘স্লামালাইকুম ওয়া রহমতুল্লাআলাইহি। স্যার খিতা বালানি?’ বত্রিশ দন্ত প্রদর্শন করে খাস সিলেটি ভাষায় সম্ভাষণ জানাল ওকে ড্রাইভার।

‘ওয়ালাইকুম সালাম, জি ভালো, আপনি ভালো তো?’ বহুদিন পর সিলেটি ভাষা শুনে পুরনো অনেক স্মৃতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ওর। ‘আমরা এখান থেকে কোথায় যাব?’

‘ইতা তো বাখতা ভালা, ম্যাডাম খইতো ফারিয়ের,’ ড্রাইভার মাথা নেড়ে আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল তার আগেই হাতের ইশারায় তাকে থামিয়ে দিয়ে তানভীরের পাশ থেকে কথা বলে উঠল সুলতান।

‘স্যার, আপনি কি বিশ্রাম নিতে চান, নাকি—’

সুলতানকে কথা শেষ করতে না দিয়ে তানভীর বলে উঠল, ‘আমি সরাসরি কাজে নামতে চাই,’ বলে একটু ভাবল ও। কিন্তু তার আগে কেসের ব্যাপারে আমাকে বিস্তারিত জানতে হবে, সেইসঙ্গে ওয়ার্কপ্ল্যান ঠিক করে আমার টিম মেম্বারদের সঙ্গে বসতে হবে। সেটা কোথায় করব আমরা? মানে এ ব্যাপারে সরাসরি পিবিআইয়ের কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছি আমরা নাকি ইএএফের মাধ্যমে কাজ করতে হবে?’

ওর প্রশ্ন শুনে একটু ভাবল সুলতান। ‘স্যার, যদিও অপারেশনটা ইএএফের কিন্তু পাশা স্যার আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন ইএএফের কাছ থেকে সরাসরি সাহায্য যথাসম্ভব কম নিতে,’ বলে সে অস্বস্তির সঙ্গে একটু মাথা নাড়ল। ‘স্যার, এখানে একটু সমস্যা আছে। এই জায়গাটা…’ সে আরো কিছু বলতে চাচ্ছিল তার আগে তানভীর মাথা নেড়ে মানা করল। এই খোলা জায়গাতে ও বেশি কথা বলতে চাইছে না।

‘এক কাজ করেন, আমরা যদি এখান থেকে সরাসরি আম্বরখানা চলে যাই। সেখানে আমি একটা হোটেল রুম বুক করে একটু ফ্রেশও হতে চাই সেইসঙ্গে সম্পূর্ণ ব্যাপারে কিছু বিস্তারিত আলাপ-আলোচনাও করতে চাই। সেটা কি সম্ভব নাকি?’

‘অবশ্যই সম্ভব স্যার, তবে আমার মনে হয় সেটার প্রয়োজন হবে না। আমরা এখান থেকে আম্বরখানা গিয়ে টমি স্যারের ল্যাবে চলে যাব,’ বলে সে একটু বিরতি দিয়ে যোগ করল। ‘টমি স্যার এই মুহূর্তে পিবিআই আর হোমিসাইডের জন্যে নির্মাণাধীন বিশেষ ল্যাবে আছে। উনি আমাদের টিমেও আছেন। আমার মনে হয় আমরা ল্যাবে চলে যেতে পারি। সেখানকার ডর্মে গিয়ে আপনি ফ্রেশ হয়ে রেস্ট ও নিতে পারবেন। আর বাকি কাজগুলোও করা সম্ভব হবে। আর তা ছাড়া এই কেসের সমস্ত ডিটেইল টমি স্যারের কাছে থেকেও পাবেন স্যার।’

সব শুনে মাথা ঝাঁকাল তানভীর। ‘ঠিক আছে, তবে তাই চলুন।’

ওরা উঠে বসতেই গাড়ি ছেড়ে দিল বয়স্ক ড্রাইভার।

সুলতান নামের এই মহিলার কথা-বার্তা থেকে শুরু করে শারীরিক ভঙ্গি পর্যন্ত একেবারেই যান্ত্রিক। হঠাৎ তার কথা শুনলে কিংবা নড়া-চড়া দেখলে মনে হয় যেন কোনো রোবট। তবে তার একসঙ্গে কাজ করতে শুরু করলেই বোঝা যাবে সে আসলে কতটা কাজের, তবে পাশা স্যার যেহেতু রিকমেন্ড করেছে, মেয়েটা অবশ্যই কাজের হবার কথা। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে আশপাশের দৃশ্য দেখতে লাগল ও।

কত স্মৃতি, কত ভালোলাগা আর মন্দ লাগা এই শহরকে ঘিরে। কত বছর পর এলো আজ। অপরিসীম কষ্ট বুকে নিয়ে এই শহর ছাড়ার আগে ও পণ করেছিল আর কোনোদিন ফিরে আসবে না এখানে। ভাগ্যের ফেরে জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মিশনে এখানেই আসতে হলো ওকে।

একমনে গাড়ি চালাচ্ছে আর একটা পুরনো দিনের গানের কলি ভাজছে বুড়ো ড্রাইভার। ওর পাশে ঠিক রোবটের মতো বসে আছে সুলতান। মেরুদণ্ড সোজা- দৃষ্টি সামনের দিকে, মুখে কোনো ভাব নেই। মনে মনে ও ভাবল এই মহিলার নাম এমন অদ্ভুত কেন, আর এরকম এক ফোর্সে এই মহিলা শ্যুটার হিসেবেই বা কেন যোগ দিল। সময়-সুযোগ হলে ব্যাপারটা জেনে নিতে হবে।

গাড়ির জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে হঠাৎ মনে মনে একটু হেসে উঠল ও। একটা সময় লেখক হবার ইচ্ছে ছিল ওর। শার্লক হোমস পড়তে পড়তে মানুষ অবজার্ভ করা-মানুষের জীবনের গল্প শোনা নেশার মতো হয়ে গেছিল। সেই অভ্যাস এখনো রয়ে গেছে। তবে সেই একই কাজ এখনো করতে হয় পেশাগত কারণে। হঠাৎ কেন জানি খুব অসহায় আর বিরক্ত লাগল ওর। এভাবে প্রায় কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই, ডিটেইল ব্রিফিং ছাড়া মিশনে এসে খুব অসহায় লাগছে।

কে-কেন-কিভাবে, বলতে গেলে প্রায় কিছুই জানে না ও। এভাবে মাঠে নেমে কতটুকু কী করতে পারবে কে জানে। ‘আচ্ছা, আমরা যেখানে যাচ্ছি এই ল্যাবের ব্যাপারটা আসলে কি? এই ব্যাপারে তো আগে কিছু শুনিনি।’ দেশ ছাড়ার আগেও এ ব্যাপারে কিছুই জানত না ও।

ওর প্রশ্ন শুনে রোবটের মতোই ঘুরে গেল সুলতান, ‘স্যার, আপনি জানেন কি না, পিবিআই হোমিসাইড আর অন্যান্য দুয়েকটা প্রতিষ্ঠান মিলে দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে একটা করে অত্যাধুনিক ল্যাব স্থাপন করছে। এই কাজটা পরিচালিত হচ্ছে পাশা স্যারের অধীনেই। পাশা স্যারেরই সহকারী অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য আর অভিজ্ঞ মানুষ-ডক্টর মনিকা ম্যাডাম আর টমি স্যার এই কাজের দায়িত্বে আছেন। সিলেটের ল্যাবটা করা হচ্ছে আম্বরখানা আর শাহী ঈদগাহর মাঝামাঝি একটা জায়গায়। ল্যাবের তদারকির কাজে টমি স্যার এখন সিলেটেই আছেন। উনিই পুলিশ থেকে শুরু করে সব সংস্থার রিপোর্ট একসঙ্গে করে অ্যানালিসিস করা শুরু করেছেন।’

রোবট সুলতানের কথা শুনতে শুনতে আনমনেই মাথা নাড়ল তানভীর। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তার আগেই ওর মোবাইল বাজতে লাগল। পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখল মার কল।

সর্বনাশ, ও সিলেট চলে এসেছে-এখনো মাকে জানানো হয়নি। ব্যাপারটা জানতে পারলে নিশ্চিত সে এখন চিল্লাচিল্লি শুরু করে দেবে। কলটা কেটে দিতে গিয়েও কী মনে করে রিসিভ করল। ‘হ্যালো মা।’

তানভীর ওর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে গাড়ি শহরে প্রবেশ করে আম্বরখানা দিয়ে বামে মোড় নিয়ে চলে এলো শাহী ঈদগার কাছাকাছি। সেখানে এসে মূল রাস্তা থেকে বামে মোড় নিয়ে একটা বাউন্ডারির ভেতরে প্রবেশ করল ওদের মাইক্রো। বাউন্ডারির ভেতরে টিলার মতো উঁচু জায়গাতে নির্মাণাধীন একটা বিল্ডিং। সেটার সামনে এসে থেমে গেল মাইক্রো।

গাড়ির ভেতর থেকে মুখ অন্ধকার করে বেরিয়ে এলো তানভীর। মায়ের সঙ্গে কথোপকথনটা বেশি ভালো হয়নি। মাকে না জানিয়ে এভাবে সিলেট চলে আসায় খুব রাগ করেছে মা। আর নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে ওর। ছয় মাসের ট্রেনিং মাত্র শেষ করে এসেছে বিদেশ থেকে, এরপরে মাকে অন্তত কয়েকদিন সময় দেয়াটা খুব জরুরি ছিল।

মন খারাপ নিয়ে গাড়ি থেকে নামলেও জায়গাটা দেখে মন ভালো হয়ে গেল ওর। বিরাট জায়গা নিয়ে ঘেরা বাউন্ডারির ভেতরে গাছের সারি, তার মাঝখানে বেশ সবুজ একটা টিলা। টিলার ওপরে সুন্দর কাচঘেরা ভবন। এই মুহূর্তে শ্রমিকগোছের লোকজন আনাগোনা করছে। কারণ টিলার ওপরের বাড়িটা এখনো আন্ডার কন্সট্রাকশন

ভালোভাবে তাকিয়ে তানভীরের কাছে মনে হলো নির্মাণাধীন চারতলা বাড়িটা দুইভাবে বিভক্ত। দুটো বাড়িকে সংযোগকারী একটা ওয়াকিং ব্রিজ দেখতে পেল ও। মনে মনে বাড়িটার আর্কিটেকচারাল ডিজাইনকে প্রশংসা না করে পারল না ও। ল্যাব কাম বাড়িটার কাজ সম্পন্ন হলে দেখার মতো একটা বাড়ি হবে।

‘স্যার, এদিকে,’ সুলতানের ডাক শুনে তার দিকে ফিরে তাকিয়ে তানভীর দেখতে পেল ওর ব্যাকপ্যাকটা কেয়ারটেকার গোছের একজনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওকে এগোনোর জন্যে ইশারা করছে সে। সুলতানের পিছু নিয়ে চিকন একটা অসম্পূর্ণ সিঁড়ি বেয়ে টিলার ওপরে উঠে ওরা প্রবেশ করল বাড়িটার ভেতরে।

সুলতান ওকে নিয়ে নির্মাণাধীন ল্যাবের দোতলায় এসে সেই ব্রিজের মতো দেখতে অংশটার কাছে চলে এলো। তানভীর মনোযোগ দিয়ে দেখল, জায়গাটা অনেকটা দেখতে হ্যাঙ্গিং ব্রিজের মতো, দুটো বিল্ডিংকে সংযুক্ত করেছে।

ব্রিজটার কাছাকাছি আসতেই পুলিশের পোশাক পরা সুদর্শন এক তরুণ অফিসার ওদেরকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো।

প্রথমে সুলতানের দিকে তাকিয়ে সামান্য মাথা ঝাঁকিয়ে তানভীরের দিকে ফিরে স্যালুট ঠুকে ওর দিকে হ্যান্ডশেইকের ভঙ্গিতে হাত বাড়িয়ে দিল সে। ‘স্যার আমি, এসআই ইকবাল, ইকবাল মোল্লা।’

সুদর্শন এসআইয়ের দুই ভ্রুর মাঝে বড়ো একটা তিল, অনেকটা দেখতে টিপের মতো লাগে। এমনিতেই একটু বেশি ফরসা আর সুন্দর ছেলেটা, তার ওপরে কপালে এই অদ্ভুত তিলের কারণে তাকে দেখতে তানভীরের চোখে একটু মেয়েলি মনে হলো।

‘আমি তানভীর, তানভীর মালিক,’ বলে একটু অস্বস্তির মধ্যে পড়ে গেল। নিজের পরিচয় আরো একটু দেয়া উচিত মনে হচ্ছে ওর কাছে। অন্তত এই অপারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু একটা। তবে কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না। ওকে উদ্ধার করল সুলতান।

‘স্যার, এই অপারেশন কমান্ডের দায়িত্বে আছেন। আপনি কি ল্যাবের কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাকি এই অপারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট?’

সুদর্শন এসআই ইকবাল আরেকবার মাটিতে পা ঠুকল। ব্যাপারটার কি কোনো আলাদা গুরুত্ব আছে নাকি এটা এই ছেলের অভ্যাস, তা ঠিক বুঝতে পারল না তানভীর। তবে এসব নিয়ে বেশি ভাবার আগেই সুদর্শন এসআই কথা বলে উঠল, ‘স্যার, আমি এই অপারেশনে পুলিশ ফোর্সের প্রতিনিধিত্ব করছি।’

‘ইএএফের কেউ সংশ্লিষ্ট আছে নাকি এতে?’ তানভীর জানতে চাইল।

‘না স্যার, সরাসরি ওদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই, আমি যতদূর জানি এই কেসে আপনাকেই ইএএফের প্রতিনিধি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে,’ বলে সে একটু থেমে আবারো যোগ করল। ‘আমাকে পুলিশ ফোর্স থেকে পাঠানো হয়েছে আপনাকে সার্বিক সহায়তা করার জন্যে। কারণ একেবারে শুরু থেকেই এই কেস আমার অধীনে ছিল।’

ছেলেটার কথা শুনতে শুনতে তানভীরের মনের ভেতরে অনেকগুলো প্রশ্ন পাক দিয়ে উঠতে লাগল কিন্তু সেগুলো করতে গিয়েও থেমে গেল ও। বরং উলটো ঘুরে সুলতানের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইল, ‘আমরা এখান থেকে যাচ্ছি কোথায়?’

সুলতান যথারীতি তার সটান মেরুদণ্ড আরেকটু সটান করে জবাব দিল, ‘স্যার, আমরা যাচ্ছি এই ল্যাব সংশ্লিষ্ট ডরমেটরিতে। ডর্মের কাজও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি তবে ওখানে তিনটে কামরা মেহমানদের থাকার উপযোগী করে রাখা হয়েছে। স্যার ওখানেই যাচ্ছি আমরা, আপনি যাতে বিশ্রাম নিতে পারেন।

এক মুহূর্ত চিন্তা করল তানভীর। বিশ্রামের কোনোই দরকার নেই ওর, বরং কাজে নামতে হবে। কারণ অনেকগুলো বিষয় ওর কাছে একেবারেই এলোমেলো লাগছে। সেগুলো পরিষ্কার করে কাজে না নামা পর্যন্ত স্বস্তি বোধ করছে না ও। ‘বিশ্রামের দরকার নেই, তবে আমি একটু ফ্রেশ হতে চাই। সেটা করতে আমার মোটেও বেশি সময় লাগবে না,’ একবার নিজের ঘড়ি দেখে নিয়ে ও সুলতানের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইল, ‘এখানে কি কোনো মিটিং রুম আছে? মানে কাজ চালানোর মতো?’

‘আছে স্যার, সুলতান সামান্য মাথা নেড়ে জবাব দিল।

‘ভেরি গুড, আধা ঘণ্টার ভেতরে সেখানে এই কেসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এক হতে বলেন। প্রয়োজনীয় যা যা উপকরণ আর রিসোর্স দরকার সেগুলোও নিয়ে আসতে বলেন। আমি পুরো পরিস্থিতি অ্যানালিসিস করে এক ঘণ্টার ভেতরেই কাজে নামতে চাই। ঠিক আছে?’

ওর প্রশ্নের জবাবে সুদর্শন এসআই আর শ্যুটার সুলতান দুজনেই মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *