অধ্যায় চুয়াল্লিশ – সময় : ১৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ
বিধোরী দুর্গ, কন্নোর, ভারতবর্ষ
ভেলাটা পাহাড়ি দেয়ালের গায়ে আছড়ে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে ধোয়ীকে জাপটে ধরে পানিতে লাফ দিয়েছিল কালন্তি। কিন্তু পানিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুজনে আলাদা হয়ে যায়। হুপ-হাপ কয়েক ঢোক পানি গিলে নাক-মুখ পানির ওপরে তুলল কালন্তি। একটু দূরেই দেখতে পেল ধোয়ী একটা ভাসমান গুঁড়ি ধরে ভেসে আসছে ওর দিকে। গুঁড়িটা ওর পাশে দিয়ে যাবার সময়ে ও সেটাকে ধরে ফেলল, দুজনে মিলে ভেসে যেতে লাগল জলপ্রপাতের দিকে।
ধোয়ী সামনেই একটা পাথর দেখিয়ে চিৎকার করে উঠল। সাবধান করে দেবার আগেই পাথরটা চলে এলো নাগালের মধ্যে। দুজনে প্রায় একই সঙ্গে গুঁড়িটা ছেড়ে দিয়ে পাশ দিয়ে যাবার সময়ে ধরে ফেলল পাথরটাকে। ওটাকে ধরে হাঁপাতে লাগল। আশপাশে তাকিয়ে দেখেতে পেল না কাউকে।
‘এখন, কি করা?’ সদা শান্ত ধোয়ী হাঁপাতে হাঁপাতে জানতে চাইল কালন্তির কাছে। পানি থেকে মুখ তুলে হাঁপাচ্ছিল কালন্তি। তাকিয়ে দেখল দূরে পাহাড়ের গায়ে কালো গুহামুখটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ওই পর্যন্ত পৌঁছাবে কিভাবে। ‘আমাদের কিছুটা সাঁতার কেটে মূল স্রোত থেকে সরে যেতে হবে। তারপর কিনারার দিকে এগোতে পারলে স্রোতের টানও কম লাগবে, সেইসঙ্গে গুহা মুখটার কাছে পৌঁছানোর একটা ব্যবস্থা হলে হয়েও যেতে পারে,’ আমি সরে গিয়ে দেখি স্রোতের টান কেমন। বলেই কালন্তি শরীরটাকে ঢিলে করে বুক ভরে দম নিল।
পাথরটার গা ঘেঁষে শরীরটাকে ঢিলে করে দিয়ে ধোয়ীর একটা হাত ধরে চিৎকার করে উঠল, ‘এখন,’ বলে দুজনে একসঙ্গে পাথরটার গায়ে পা দিয়ে ঠেলা দিয়ে সরে এলো বেশ খানিকটা তারপর টানা কিছুক্ষণ স্রোতের বিপরীতে সাঁতরে চলে এলো পাহাড়ের কিনারার দিকে। পাহাড়ের কাছাকাছি যেতেই স্রোতের তীব্র টান কমে আসতে লাগল। আরো খানিকটা কিনারায় যেতেই পায়ের নিচে মাটি পেল ওরা। পানি থেকে ধীরে ধীরে হেঁটে চলে এলো গুহা মুখটার কাছে। গুহার বেশ অনেকটা ভেতরে এসে পানি থেকে মাটিতে উঠে এলো দুজনে।
তীব্র স্রোত, সাঁতার আর সব মিলিয়ে কাহিল করে ফেলেছে দুজনকেই। গুহার ভেতরে খালের মতো জলধারার অন্যপাড় থেকে কেউ একজন নাম ধরে ডেকে উঠল ওদেরকে। কালন্তি তাকিয়ে দেখল শংকরাদিত্য আর তার দুই সঙ্গী। বাকি দুজন মনে হয় ভেসে গেছে স্রোতের টানে। ওদের উদ্দেশ্যে একবার হাত নেড়ে আবারো মাটিতে শুয়ে পড়ল কালন্তি। মনের কোণে চিন্তার ঝড়, ওরা তো পানি থেকে উঠে আসতে পেরেছে কিন্তু শামানদের কী অবস্থা কে জানে।
***
শামান অবশ্য এই মুহূর্তে ওপরে ওঠা নিয়ে চিন্তিত নয় বরং সে নিচে নামা নিয়ে বেশি ভয় করছে।
স্মৃতি হবার পর থেকেই নিজেকে পাহাড়ের বুকে আবিষ্কার করেছে শামান, পাহাড়েই বেড়ে ওঠা, পাহাড়েই চড়ে বেড়ানো, পাহাড়কে নিজের সবচেয়ে আপন মনে করা শামানের কাছে এই মুহূর্তে পাহাড়কেই সবচেয়ে বড়ো শত্রু মনে হচ্ছে।
রাজা বিক্রমের সঙ্গে বিধোরীর দুর্গ আক্রমণের বিশদ পরিকল্পনা করার সময়ে শামান জানত আসলে যতই পরিকল্পনা করা হোক, ব্যাপারগুলো এতটা সহজ হবে না, মাঠে নামার পর পরিকল্পনার অনেক অংশই কাজে লাগবে না। কিন্তু সে নিজে এভাবে পাহাড়ের বুকে ফেঁসে যাবে, এটা কল্পনাতেও আসেনি ওর।
পরিকল্পনাটা ছিল খুবই সুন্দর, ওরা তিনটে দল তিন দিক দিয়ে দুর্গে প্রবেশ করবে। বিধোরীর দুর্গটা একটা পাহাড়ের একপাশে অবস্থিত। এটার একদিকে পাহাড়, অন্যদিকটা একটা জলধারা দিয়ে জলপ্রপাতের সঙ্গে সংযুক্ত। আর তাই ওদের পরিকল্পনাটাও ছিল রাজা বিক্রম মূল ফটক দিয়ে লিচ্ছবী সৈন্যদের ছদ্মবেশে প্রবেশ করবে, কালন্তি আর শংকরাদিত্য প্রবেশ করবে পানির অংশটুকু দিয়ে, আর শামানেরা জঙ্গলের অন্যপাশের উপত্যকা দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে আসবে বিধোরীর দুর্গের পাশের পাহাড়ের ওপরে, তারপর নেমে আসবে খোলা শৈলশিলায়। শৈলশিলার এদিক দিয়ে দুর্গে প্রবেশ করার একটা গোপন পথ আছে। এই তথ্যটা রাজা বিক্রমই ওদেরকে জানিয়েছে। আর এ কারণেই পাহাড়ের এদিক দিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় শামান।
এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কিছু কারণ ছিল। প্রথমত, সম্পূর্ণ অভিযানে যারা আছে তাদের মধ্যে শামানই পাহাড়ে চড়তে সবচেয়ে বেশি দক্ষ। বাকিদের মধ্যে ওর দলে স্থান পেয়েছে ঘোষিত-কারণ ঘোষিত ভালো পাহাড় বাইতে পারে। তা ছাড়া ওদের সঙ্গে আছে আরো চারজন থারু আর শাক্য সৈন্য। ঘোষিত এই শৈলশিলার পথটা খুব ভালো চেনে-সেইসঙ্গে এদিক দিয়ে দুর্গের ভেতরে যাবার পথটাও তার চেনা।
সব ঠিকমতোই চলছিল এতক্ষণ। বরং বলা চলে ওদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফলতার দিকে এগোচ্ছিল অভিযান। ওরা প্রথমে থারুদের গ্রাম থেকে একসঙ্গে রওনা দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গাতে এসে আলাদা হয়ে যার যার মতো নির্দিষ্ট পথে এগোতে থাকে। শামানরা প্রথমে জঙ্গুলে পথ পাড়ি দিয়ে চলে আসে উপত্যকার মাঝামাঝি। তারপর উপত্যকার নির্দিষ্ট অংশে এসে পাহাড় বেয়ে ওপরে উঠতে শুরু করে। ওদের ধারণা অনুযায়ী যতটা সময় লাগবে বলে মনে করেছিল তারচেয়ে বেশি সময় লাগে কিন্তু পাহাড় বেয়ে উঠতে কোনো ঝামেলা হয়নি। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় পাহাড় বেয়ে নামার সময়ে।
একদিকে পাহাড়ের যে অংশটা দিয়ে ওরা উঠে এসেছে সেই অংশটা অনেক বেশি ঢালু, কিন্তু যেদিক দিয়ে নামতে হবে সেদিকটা অনেক বেশি খাড়াই। এ কারণেই দুর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যেই দুর্গের এই অংশটাকে এভাবে সাজানো হয়েছে। কিন্তু শামানরা দলে যারা আছে তারা প্রত্যেকেই পাহাড়ে চড়তে ওস্তাদ, এ কারণে কষ্ট হলেও তারা শামানের নেতৃত্বে সামান্য উপকরণ নিয়েই পাহাড় বেয়ে ধীরে ধীরে নেমে আসতে শুরু করে ওরা। বেশ অনেকদূর নামার পরে শৈলশিলার বেরিয়ে থাকা জিভের মতো জায়গাটার ওপরের চূড়ার একটা অংশ থেকে পরিষ্কার দেখতে পেয়ে খুশি হয়ে ওঠে ওরা। কিন্তু আরেকটু নিচে নামতেই মুখের হাসি উবে যায় সবার।
কারণ ওদের নিচে শৈলশিলার বেরিয়ে থাকা জিভের ওখানে মানুষের নড়াচড়া টের পাওয়া যাচ্ছে। আরেকটু ভালোভাবে খেয়াল করতেই এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে নিচে আসলে আগুন জ্বলছে, আর আগুনের আশপাশে যে নড়াচড়া চোখে পড়ছে সেটা যে লিচ্ছবীদের প্রহরারত সৈনিক সেই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এখন নামটাই বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ একদিকে পাহাড়ের খাড়াই এতটাই বেশি যে, ওটা থেকে শৈলশিলায় নামাটা ঝুঁকির ব্যাপার, তার ওপরে নিঃশব্দে নামাটা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ওরা নামতে গিয়ে শব্দ হলেই নিচের প্রহরারত সৈনিকেরা টের পেয়ে যাবে। আর একবার টের পেয়ে তারা যদি দুর্গের ভেতরে খবর পাঠিয়ে দেয় তবেই সর্বনাশ।
ওরা সবাই শরীরে দড়ি বেঁধে সারি দিয়ে সাবধানে নেমে আসছিল, নিচের আলোটা দেখে থেমে যায়। এখন কী করবে বুঝতে না পেরে সবাই চুপ করে আছে, কিন্তু ওদের অবস্থান এমন, এখানে খুব বেশিক্ষণ চুপচাপ অপেক্ষা করা যাবে না। শামান একবার সাবধানে উঁকি দিয়ে নিচে দেখল, তারপর ওপরের দিকে তাকিয়ে পথপ্রদর্শক শাক্য সৈন্যের দিকে ফিরে ইশারা করল একবার।
শামানের ঠিক পেছনেই ছিল ঘোষিত, তার পেছনে অন্যরা। কোনোমতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ঘোষিতের কাছে শামান নিজের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করল। শামানের পরিকল্পনা শুনে বেশ আপত্তির সঙ্গে মাথা ঝাঁকাল ঘোষিত, ‘অনেক বেশি ঝুঁকি অয়া যায়। যদি ওরা লোক বেশি থাহে তবে?’
‘এ ছাড়া আর কোনো উপায় আছে?’ একটু রাগের সঙ্গেই জানতে চাইল শামান। ঘোষিত কোনো জবাব না দিয়ে চুপ হয়ে রইল। পরিকল্পনামাফিক দুজনেই খুব সাবধানে অন্যদের সঙ্গে সংযুক্ত দড়িটা খুলে ফেলল। শামান ঘোষিতকে বলল সাবধানে সে যেন পরিকল্পনাটা অন্যদের জানিয়ে দেয়।
পরিকল্পনা হলো; যেহেতু সবাই একে একে নিচে নামতে পারছে না, কাজেই শামান আর ঘোষিত কোনো শব্দ না করে আরেকটু নিচে নেমে যাবে, সেখান থেকে ওরা লাফিয়ে নামবে নিচের শৈলশিলাতে, যেখানে লিচ্ছবী সৈন্যরা আগুন পোহাচ্ছে। তারপর ওরা দুজনে মিলে ওদেরকে ক্ষান্ত দেয়ার পর বাকিরা নেমে আসবে ধীরে ধীরে। তবে এতে অনেকগুলো সমস্যা। একে তো ওদের দুজনকে দড়ি ছাড়াই অনেকটা পথ নামতে হবে, যেটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে ওরা নিচে নেমে যদি দেখে সৈন্য সংখ্যা অনেক বেশি, তবে ওরা সৈন্যদেরকে ক্ষান্ত দেয়ার আগে ওরাই দুজনকে ক্ষান্ত দিয়ে দেবে।
তবে বেশি ভেবে লাভ নেই, শামানের বক্তব্য, যা করার দ্রুত করতে হবে, তা না হলে ওদের সব পরিকল্পনাই ব্যর্থ হবে। ওরা খুব সাবধানে নামতে লাগল নিচের দিকে। শামান আগে আগে নামছে, ওর ঠিক পেছনেই ঘোষিত। পথ যেমনটা খাড়া ঠক তেমনি ওরা যতই সাবধানে নামুক পায়ের সঙ্গে লেগে ঝুরঝুর করে বালির মতো পিছলে যাচ্ছে পা। শামান খানিকটা নেমে ঘোষিতকে সাবধান করার জন্যে মুখটা ঘোরাতেই দেখতে পেল ঘোষিত শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টালমাতাল করছে। যদিও খাড়া পথ তাও শামান দ্রুত চেষ্টা করল তার কাছে পৌঁছে তাকে ধরার জন্যে কিন্তু সেটা করার আগেই, ঘোষিত পা পিছলে সোজা ছুটে এলো ওর দিকে । পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের ছুটে আসার বেগ সামলানোর মতো জায়গায় নেই ওরা। ফলে যা হবার তাই হলো। ঘোষিত পা পিছলে ছুটে এলো শামানের দিকে, ওকে নিয়ে গড়িয়ে পড়তে শুরু করল নিচের দিকে।
না চাইতেও শামানের গলা দিয়ে বেরিয়ে এলো আর্তচিৎকার। ঘোষিতকে প্ৰায় আলিঙ্গনের ভঙ্গিতে ধরে দুজনেই ছুটে চলেছে নিচের দিকে। এই গতিতে নিচে পড়লে ভর্তা হয়ে যেতে হবে। খাদের প্রায় কিনারায় পৌঁছে গেছে, শামান এক হাতে খাদের কিরারা ধরে ফেলল, ওর অন্যহাতের সঙ্গে ঝুলছে ঘোষিত ।
দুজনেই হাপরের মতো হাঁপাতে লাগল নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে, যদিও নিচে তাকায়নি তবুও নিচ থেকে ভেসে আসা উত্তেজিত কণ্ঠস্বর শুনে শামান অনুধাবন করল আর লুকিয়ে লাভ নেই, ধরা পড়ে গেছে ওরা। কোনোমতে ঘাড় ঘুরিয়ে ঘোষিতের দিকে একবার ইশারা করেই তাকে ছেড়ে দিল ও। ঘোষিতকে নিচের দিকে ছুড়ে দিয়েই বুক ভরে একবার দম নিয়ে নিজের হাত আলগা করে দিল ও। মুহূর্তের জন্যে শরীরটা শূন্যে ঝুলে থেকেই ধুপ করে একটা শব্দের সঙ্গে শামান নিজেকে আবিষ্কার করল শৈলশিলার জিভের মতো জায়গাটায়। প্রাথমিক পতনের ধাক্কা সামলে লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল সে, দুই হাতে বেরিয়ে এসেছে উন্মুক্ত জোড়া হিম্বা।
মুহূর্তের মধ্যে ও দেখল, ওর থেকে আরেকটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে ঘোষিত, কিন্তু সে এখনো তলোয়ার বের করতে পারেনি। ওদের একপাশে একটা ছোটো অগ্নিকুণ্ড জ্বলছে, ওটাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে দুজন লিচ্ছবী সৈন্য। আরো দুজন বসে আছে। সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে অবাক বিস্ময়ে। আকাশ থেকে এভাবে মৃত্যু দূত পতিত হবে ভাবতেও পারেনি কেউ। প্রায় হাওয়ার বেগে শামান এগিয়ে গেল ওদের দিকে।
প্রথম একজনের হাতে লাকড়ির মতো কিছু একটা ছিল, ওর কাতানার উলটো পিঠের বাড়িতে সেগুলো উড়ে গেল, উড়ন্ত জিনিসগুলো ভেদ করে আবারো কাতানার উলটো পিঠ গিয়ে আঘাত করল লোকটার ঘাড়ে। দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় জন তলোয়ার বের করার আগেই বসে থাকা অন্য সৈন্য ভারী কিছু একটা ছুড়ে মারল শামানের দিকে। ভারী মাটির বাসনের মতো জিনিসটা উড়ে এসে ওর বুকের সঙ্গে লেগে টুকরো হয়ে গেল, ওটার ধাক্কা সামলানোর আগেই দ্বিতীয়জনের লাথি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল ও। এক হাত থেকে ছুটে গেল কাতানা। জিনিসটার দিকে হাত বাড়াবে তার আগেই, দ্বিতীয়জন যমের মতো ওর একেবারে ওপরে এসে দাঁড়াল। লোকটা ভারী একটা পাথর তুলে ধরেছে মাথার ওপরে, শামান অপর হাতে নিজের কাতানা তুলে ধরল, লোকটাও নিজের পাথরটা তুলে ধরেছে পেছন থেকে একটা তলোয়ারের মাথা তার পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে এলো।
লোকটা গড়িয়ে পড়ে গেল মাটিতে, পেছনে ঘোষিতকে দেখতে পেল ও, তলোয়ারটা টান দিয়ে বের করে নিতে। শামানও কাতানা হাতে উঠে দাঁড়িয়ে দুজনেই ফিরে তাকাল বাকি দুই সৈন্যের দিকে। দুজনেই প্রস্তুত, একজনের হাতে তলোয়ার আর অন্যজনের হাতে বিরাট আকারের একটা ধুনক। দ্বিতীয় লোকটা ধনুক তুলে ধরতেই শামানের হাতের কাতানা ছুটে গিয়ে তার গলায় বিঁধল, অন্য লোকটাকে শামান আর ঘোষিত মিলে কাবু করে বেঁধে ফেলল। তারপর বাকিদেরকে ইশারা করল নেমে আসার জন্যে।
‘রক্তগঙ্গা হয়া গেছে,’ ঘোষিত আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল তাকে হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলে ও ইশারা করল গুহার ভেতরে পথ দেখানোর জন্যে। এই পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছে ওরা কিন্তু এবার শুরু হবে মূল অভিযান, দেখা যাক সামনে কী অপেক্ষা করছে ওদের জন্যে।
ঘোষিত সামনে এগোতেই বাকিদের সাবধানে পেছন পেছন আসার জন্যে ইশারা করে সামনে এগোল শামান।