অধ্যায় তেতাল্লিশ – বর্তমান সময়
শাহী ঈদগাহ, সিলেট
রাগের চোটে নিজেকে তানভীরের একটা বোমা মনে হচ্ছে, যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে এমন এক বোমা। কানা মাতবরের বাহিনীর সঙ্গে ওদের গোলাগুলিতে কানা মাতবরের মৃত্যুর পর ওর সঙ্গে কথা হয়েছে টমির। আর টমির সঙ্গে কথা বলার পরই কানা মাতবরের ওখানে থাকা সাদা চামড়ার বিশালদেহী লোকটার উপস্থিতির রহস্য পরিষ্কার হয়েছে ওর কাছে। সেই থেকে রাগে জ্বলছে ওর গা।
জোরকদমে ল্যাবের করিডর ধরে সামনে এগোচ্ছে তানভীর। একটু আগেই সে এক সিকিউরিটিকে প্রশ্ন করে জেনে নিয়েছে পুলিশ হাসপাতাল থেকে ল্যাবে নিয়ে আসা ডক্টর মিতায়নকে কোথায় রাখা হয়েছে। এখন ডক্টর মিতায়নের রুমের দিকেই এগিয়ে চলেছে সে।
সকালবেলা পুলিশ হাসপাতাল থেকে বের হবার পর ওর কাছে মনে হয়েছে পুলিশ হাসপাতালে সিকিউরিটির অবস্থা বেশি সুবিধের না। কাজেই ডক্টর মিতায়নকে সেখানে রাখাটা ঠিক হবে না। সেইসঙ্গে তার শারীরিক পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হবার ফলে তাকে সরিয়ে নির্মাণাধীন ল্যাবের মেডিকেল সেন্টারের একটা কেবিনে ট্রান্সফার করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল ও নিজেই। সেখানেই রাখা হয়েছে ডক্টর মিতায়নকে।
রাগের সঙ্গে ঝটকা দিয়ে ডক্টরের কেবিনের ভেতরে প্রবেশ করল ও। ওর পেছনে প্রায় দৌড়ে আসছিল সুলতান, তার থেকেও খানিকটা পেছনে জালাল।
ডক্টর মিতায়নের কেবিনে প্রবেশ করে একবার চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিল তানভীর। এই রুমটা অনেকটা পুলিশ হাসপাতালের রুমটার মতোই, তবে আকারে কিছুটা ছোটো। রুমের ভেতরে রাখা ছোটো কটের মতো বিছানার একটায় বসে শায়লা আর তার মা গল্প করছিল, অন্যদিকে বিছানায় আধাশোয়া হয়ে থাকা ডক্টরকে মুখে তুলে কিছু একটা খাইয়ে দিচ্ছিল লায়লা। ওকে প্রবেশ করতে দেখে সবাই থেমে গেল, ফিরে তাকাল ওর দিকে।
‘তানভীর ভাই,’ শায়লা কট থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তানভীর ধমকে উঠল, ‘শায়লা, তোরা বাইরে যা, ডক্টরের সঙ্গে আমার কথা আছে।
‘এই ছেলে, তুমি এভাবে কথা বলছো কেন?’ নিজের স্বাভাবিক উদ্ধত ভঙ্গিতে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল লায়লা-শায়লার মা। তবে সে কথা শেষ করার আগেই প্রায় চিৎকার করে উঠল তানভীর। ‘আউট।’
‘দেখো তুমি যদি, মহিলা কিছু বলার আগেই শায়লা তাকে টানতে টানতে নিয়ে বেরিয়ে গেল। ‘মা, চলো আমরা…’
‘লায়লা তুমিও,’ একটা আঙুল তুলে লায়লাকেও বেরুতে বলল ও। আমরা কিছু প্রফেশনাল কথা বলব, তোমার না থাকাই ভালো।’ লায়লা তানভীরের দিকে তাকিয়ে রইল, তারপর কিছু না বলে বাটিটা টেবিলে নামিয়ে রেখে একটা টিস্যু তুলে নিয়ে ডক্টরকে ধরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল।
‘কি ব্যাপার কমান্ডার, শুনলাম…’
‘আপনি জানতেন, তাই না ডক্টর?’ একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ল তানভীর। নিজের হোলস্টার থেকে পিস্তলের খাপটা মুক্ত করে রেখে দিল পাশের টেবিলের
ওপরে।
‘কি জানতাম আমি, কমান্ডার?’ ডক্টরের চেহারা সকাল থেকে ভালো দেখাচ্ছে। গায়ের রংও উজ্জ্বল হয়েছে, সেইসঙ্গে শেভ করাতে তাকে পরিচ্ছন্নও লাগছে।
‘জেড মাস্টার,’ তানভীর ডক্টরের একেবারে চোখের গভীরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল। ‘জেড মাস্টারের ব্যাপারটা আপনি জানতেন কিন্তু সকালে আপনি বলেননি। আর কী কী লুকাচ্ছেন আপনি আমাদের কাছ থেকে, বলেন তো?’ বলেই তানভীর একটা হাত তুলে ডক্টরের দিকে নির্দেশ করে বলল, ‘দয়া করে এখন বলবেন না যে আপনি জেড মাস্টারের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।’
‘আমি জানি না বা জানতাম না সেটা বলব না কিন্তু আমি জানতাম সেটাও বলব না,’ ডক্টরের গলার অনেকটাই নরম হয়ে গেছে। তানভীর কিছু বলার আগেই ডক্টর বলে উঠল, ‘আচ্ছা কমান্ডার, জেড় মাস্টারের ব্যাপারে আপনারা কি নিশ্চিত?’
‘দেখুন ডক্টর, কথা ঘোরাবেন না। ঘোলা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আপনি যদি নিজেকে বাঁচাতে চান তবে একটা কথা বলি, আপনাকে আমি অন্তত ছাড়ব না,’ বলে একবার সুলতান আর জালালকে দেখে নিয়ে যোগ করল। ‘অবশ্যই, আমরা নিশ্চিত নই কিন্তু আজ দুপুরে জেড মাস্টারের ডান হাত রাশিয়ান দানব শেখারভের সঙ্গে মোলাকাত হয়েছিল আমাদের। আর সত্যি কথাটা বলি, সেই মোলাকাত মোটেই সুখের ছিল না বলাই বাহুল্য। একেবারেই অপ্রস্তুত অবস্থায় আমরা তার সামনে পড়ে গেছি। এই ঘটনাটা ঘটত না, যদি আপনি আমাকে সকালবেলা কথোপকথনে সময়ে জেড মাস্টারে ব্যাপারটা একবারও উল্লেখ করতেন।’
‘হেকমত আবদুল্লাহ গং, ব্ল্যাক বুদ্ধা গং, আমার সঙ্গীসাথিদের কারো খবর নেই, আপনাদের কথা থেকে যা বুঝতে পারছি আরো একটা মেজর ব্লু আপনারা হারিয়ে বসেছেন, তাহলে আমাকে বলেন কমান্ডার এরপর কি আমার পালা?’ ডক্টরের কথার জবাবে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তানভীর কিন্তু তাকে থামিয়ে দিল ডক্টর। ‘কমান্ডার, আপনি আমাকে একটা কথা বলেন তো, জীবনের ঝুঁকিতে থাকা একজন মানুষ কখন আপনার সঙ্গে কোনো তথ্য শেয়ার করতে চাইবে না?’ বলে সে নিজেই যোগ করল। ‘যখন সে ব্যাপারটা নিয়ে নিজেই নিশ্চিত থাকবে না, তখন।’
‘কিন্তু আপনি জানতেন, একেবারে সঠিক না জানলেও অন্তত অনুমান করতে পেরেছিলেন, তাই না,’ বলেই রাগের সঙ্গে ঝটকা দিয়ে উঠে দাঁড়াল তানভীর। ‘আশ্চর্য কাণ্ড, ডক্টর। আপনি—,’ রাগের সঙ্গে থাবা দিয়ে টেবিলের ওপর থেকে একটা পানির বোতল মাটিতে ফেলে দিয়ে ফিরে তাকাল ডক্টরের দিকে।
ডক্টরও রাগের সঙ্গে ঝটকা দিয়ে ফেলে দিল গায়ের ওপরের চাদরটা, উঠে দাঁড়িয়ে সোজা তাকাল তানভীরের দিকে। এই প্রথমবারের মতো ডক্টরকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেল তানভীর, সেইসঙ্গে অবাক হয়ে খেয়াল করল ডক্টরের উচ্চতা একেবারেই কম। ‘কমান্ডার, আমি আপনাকে কিভাবে বেঝাব যে লোকটার সঙ্গে আমি এতদিন কাটিয়েছি সে আসলে কুখ্যাত একজন আন্তর্জাতিক অপরাধী। যেখানে আমি নিজেই নিশ্চিত ছিলাম না,’ বলে সে তানভীরের সামনে থেকে সরে গেল খানিকটা,’ একটু খুঁড়িয়ে হেঁটে গিয়ে দাঁড়াল জানলার পাশে। বাইরের দিকে তাকিয়ে যখন কথা বলতে শুরু করল কণ্ঠস্বর খানিকটা উদাস শোনাল।
‘টেড চ্যাঙ নামের যে মানুষটার সঙ্গে আমার তিন বছর ধরে পরিচয়, আমি তাকে বন্ধুর চেয়ে কোনো অংশে কম মনে করতাম না। সত্যি কথা হলো, সে ছিল আমার বন্ধু যার প্রতিটা কাজ আমাকে মুগ্ধ করত। তার জ্ঞান, তার প্রজ্ঞা তার জীবনবোধ, এমনকি তার নেতৃত্ব ইত্যাদি প্রতিটি ব্যাপারে সে ছিল আমার হিরো। আমি শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম আর চিন্তা করতাম এই মানুষটা আসলে কী দিয়ে তৈরি। তবে শেষ দিকটায়…’ এই পর্যন্ত বলে ডক্টর ফিরে তাকাল তানভীরের দিকে। একবার তানভীর তারপর জালালকে একবার দেখে নিয়ে সে আবারো বাইরের দিকে তাকিয়ে বলে চলল, ‘শেষ দিকটায় এসে তার চেহারা পুরোপুরি পরিবর্তিত হতে শুরু করে। সে শর্ট টেম্পার্ড হয়ে যাচ্ছিল। ব্ল্যাক বুদ্ধা আবিষ্কারের সময়টাতে যেন অস্থির হয়ে উঠেছিল সে। তখনই তার আসল চেহারা আমি খানিকটা দেখতে পাই। মানুষটার জীবনবোধ ঠিক যতটা প্রখর ছিল তেমনি তার ভেতরের পশুত্বও তেমনটাই হিংস্র ছিল।’
‘আপনি তাহলে নিশ্চিত ছিলেন না যে টেড চ্যাঙ নামের যে মানুষটার সঙ্গে আপনি কাজ করছেন সে আসলে আন্তর্জাতিক অ্যান্টিক চোরাচালানি জগতের একজন কুখ্যাত মানুষ, যাকে সবাই জেড মাস্টার নামে চেনে,’ তানভীর জানতে চাইল।
‘আমি কিভাবে নিশ্চিত হবো, বলেন। যেখানে ইন্টারপোলের মতো সংগঠনের কাছে জেড মাস্টারের কোনো ছবি নেই, নেই কোনো সঠিক শারীরিক বিবরণ, ডক্টর খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল ।
তাহলে কখন তার ওপর আপনার সন্দেহ গিয়ে পড়ে?’ তানভীর শান্তভাবে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছে।
‘আপনাদের তো বলেছিই আসামে উলফাদের একটা সিস্টার টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনের সঙ্গে আমাদের টক্কর লেগেছিল। এক পর্যায়ে ওদের একটা দল ধরা পড়ে যায় আমাদের হাতে, তিনজনের একটা দল। একটা মেয়ে, দুটো ছেলে। আমি প্রথমেই তাকে বলি, ওদেরকে আসামিজ অথরিটির হাতে তুলে দিতে কিন্তু টেড সেটা করতে নারাজ ছিল। সে নিজে ওদের কাছ থেকে তথ্য বের করার জন্যে চাপ দিতে শুরু করে,’ বলে ডক্টর কাঁধ ঝাঁকাল। ‘সোজা কথায় বলতে গেলে ওদেরকে টর্চার করতে শুরু করে। তখনই আমার খানিকটা সন্দেহ লাগে। কারণ আমি জানতাম টেডের কোনো পুলিশ বা মিলিটারি ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল না। কিন্তু সে যেভাবে ওদেরকে টর্চার করতে শুরু করে তাতে আমার সন্দেহ লাগে। আমি এক পর্যায়ে তার স্যাটেলাইট ফোন ঘাঁটার সুযোগ পেয়ে ওটা চেক করে কল লিস্টে একজনের নাম দেখতে পাই, শেখারভ।’
‘রাশান এক্স প্যারামিলিশিয়া, ওর সঙ্গেই আজ সকালে আমাদের মোলাকাত হয়েছিল,’ তানভীর আনমনেই বলে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে ওর মনে পড়ে গেল সকালে দেখা বিশালাকায় লোকটার কথা। অজান্তেই একটা হাত চলে গেল গলায়। তানভীর সবসময় নিজেকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী ভাবত, আন-আর্মড কমব্যাটে ডাবল ব্ল্যাকবেল্ট জেতার পরে একটা সময় মনে হতো শরীরিক শক্তিতে কিংবা আন- আর্মড কমব্যাটে কেউ ওকে হারাতে পারবে না কিন্তু আজ সকালে সেই লোকটা ওকে একটা শিশুর মতো শূন্যে তুলে ওর সেই আত্মবিশ্বাসে বিরাট একটা চিড় ধরিয়ে দিয়েছে। শারীরিকভাবে এতটা অসহায় কখনো লাগেনি ওর।
‘হ্যাঁ, ওই নামটা টেডের স্যাটেলাইট ফোনের লিস্টে দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমার সন্দেহ প্রকট হয়। কারণ আমি জানতাম জেড মাস্টারকে আজ পর্যন্ত কেউই কখনো ধরতে পারেনি। তবে ইন্টারপোলের এক অপারেশনে জেড মাস্টারের রাশান সঙ্গী শেখারভ প্রায় ধরা পড়ে গেছিল। তখনই শেখারভ লোকটার চেহারা ইন্টারপোলের কাছে ফাঁস হয়ে যায়। সেখান থেকেই সবাই জানে জেড মাস্টারের একজন রাশান সহকারী আছে। আমি নিজে অ্যান্টিক জগতের মানুষ তাই এই তথ্যটা অন্তত আমার বেশ ভালোভাবেই জানা ছিল, ডক্টর একটু থেমে আবার বলতে শুরু করল।
‘তো যাই হোক, এরপর থেকে আমি একদিকে তার ওপরে নজর রাখতে থাকি। একটা সময় সবকিছু বিবেচনা করে বুঝতে পারি টেড চ্যাঙের জেড মাস্টার হবার একটা সম্ভাবনা আছে। কারণ এসব বিষয়ে আগাদ জ্ঞান থেকে শুরু করে তার আন্তর্জাতিক কানেকশন ইত্যাদি সব মেলে। এর পাশাপাশি সে নিজেও একটা বিরাট আন্তর্জাতিক সংস্থার একটা অংশের প্রধান। কাজেই তার এই পরিচয়ের আড়ালে জেড মাস্টার হিসেবে অপারেট করাটা তার জন্যে অবশ্যই সম্ভব। তবে সত্যি কথা হলো, মন মানতে চাইছিল না, হাসিখুশি টেড চ্যাঙ, সন্ন্যাসীদের মতো ধ্যানী টেড চ্যাঙ আসলে জেড মাস্টার, ভাবতেই পারছিলাম না আমি। তাই ঠিক করি, আগে ব্ল্যাক বুদ্ধা উদ্ধার হয়ে যাক, এরপরে দেশে ফিরে যা করার করব কিন্তু দেশে ফেরার পথে সে আমাকে ড্রাগ পুশ করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। এরপর যখন জ্ঞান ফেরে সে সম্ভবত আমাকে মেরেই ফেলত যদি না আমাদের ওপরে আক্রমণ হতো।’
তার মানে তো আপনাদের ওপরে আক্রমণ হয়ে আপনার জন্যে ভালো হয়েছে। আপনি প্রাণে বেঁচে গেছেন,’ অনেকক্ষণ পর জালাল বলে উঠল।
‘প্রফেসর—’ তানভীর কিছু বলার আগেই ডক্টর এমন এক কাণ্ড করল কেউ ভাবতেও পারেনি সে এমন করবে, বিশেষ করে তানভীর।
ডক্টর মিতায়ন দুই পা এগিয়ে এসে তানভীরের একটা হাত ধরে ফেলল। ‘কমান্ডার, আমি একজন সেল্ফ মেইড ম্যান। ট্রাইবাল কমিউনিটির ছোট্ট এক গ্রাম থেকে উঠে এসে আজকের অবস্থানে এসেছি আমি স্রেফ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমের জোরে। আজ পর্যন্ত আমি কাউকেই কোনো কিছুর জন্যে অনুরোধ করিনি। কারো কাছে কোনো কিছুর জন্যে হাত পাতিনি। আজ আপনার কাছে হাত পাতছি। আমি জানি টেড চ্যাঙ অর্থাৎ জেড মাস্টার এই শহরের চৌহদ্দির ভেতরেই আছে, কারণ আমার বিশ্বাস সে বেঈমানির শিকার হয়েছে নিজের লোকদের হাতেই… এবং তার সঙ্গে ব্ল্যাক বুদ্ধাও আছে। আপনি ব্ল্যাক বুদ্ধা উদ্ধার করে টেড চ্যাঙকে গ্রেপ্তার করুন। তা না হলে একদিকে ইতিহাসের এই মূল্যবান অংশটুকু চিরতরে হারিয়ে যাবে, অন্যদিকে আমাকে সে বাঁচতে দেবে না। আমাকে তো সে মেরে ফেলবেই সেইসঙ্গে আমার পরিবারকেও। জেড মাস্টারের ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন, সে আজ পর্যন্ত তার সঙ্গে বিরুদ্ধচারণ করা কাউকেই বাঁচতে দেয়নি। প্রত্যেককে সে পরিবারসহ নিশ্চন্ন করেছে। আমি জানি সে যদি একবারর এই শহরের গণ্ডি থেকে বেরুতে পারে তবে পৃথিবীর যেখানেই যাই সে আমাকে বাঁচতে দেবে না, সেইসঙ্গে লায়লাকেও—’ ডক্টর মিতায়নের চোখ থেকে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তানভীরের হাতে।
তানভীর দুইবার মুখ খুলল কথা বলার জন্যে কিন্তু কিছু বলতে পারল না। তৃতীয়বারের সময় সফল হলো সে, ‘ডক্টর–’ কিন্তু কথা শেষ করার আগেই হন্তদন্ত হয়ে রুমের ভেতরে এসে ঢুকল এক সিকিউরিটি গার্ড।
‘টমি স্যার আপনাকে আর জালাল স্যারকে এক্ষুণি মিটিং রুমে যেতে বলেছেন।’