অধ্যায় চার – সময় : ১৮০ খ্রিস্টপূবাদ
শান্তির মঠ, লাসা, তিব্বত
খুব হালকা মিষ্টি একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গেল শামানের। ঘুমটা ভেঙে যেতেই চট করে উঠে বসল ও। শক্ত কাঠের বিছানার ওপরে পাহাড়ি শালুক গাছের পাতা দিয়ে তৈরি পাতলা পাটিতে হাত বুলাল আনমনেই।
পাহাড় কেটে তৈরি মঠের অভ্যন্তরীণ কামরাটাতে চোখ বুলাল একবার। শেষবার এখানে আসার পর, কত শত বছর যেন পার হয়ে গেছে, কিন্তু সবকিছু ঠিক আগের মতোই আছে। বিছানা থেকে উঠতে উঠতে শামানের মনে পড়ে গেল ডুকপা লামা ওদেরকে পাঠ দান করার সময়ে মাঝে মাঝে বলতেন ‘কিছু কিছু জায়গা আর মানুষকে নাকি সময় ভুলে যায়’। নিজের শৈশবের সেই কামরাটাতে দাঁড়িয়ে হাজারো স্মৃতির ভিড়ে ডুকপা লামার বলা সেই কথাটা মনে পড়ে গেল শামানের।
সত্যিই স্মৃতি আর সময় যেন একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সময়কে আটকে রেখেছে এই কামরাতে। উঠে দাঁড়িয়ে বাইরে থেকে পরিচ্ছন্ন হয়ে কামরায় ফিরে এসে ও দেখতে পেল কামরায় ছোটো একটা টুলের ওপরে গেরুয়া রঙের পোশাক রেখে যাওয়া হয়েছে। কাপড়টা তুলে নিতেই শৈশবের পরিচিত সেই সোঁদা গন্ধে মনটা আনচান করে উঠল।
চামড়ার ফতুয়া আর নিম্নবস্ত্র পাল্টে একখণ্ড গেরুয়া গায়ে চড়িয়ে নিল ও। কামরা থেকে বেরিয়ে মঠের কিনারায় এসে দাঁড়াল শামান।
সকালের প্রথম প্রহরের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে পবিত্র ধূপের গন্ধ। শাস্ত্র মতে এই গন্ধ নাকি সকল নেতিবাচক প্রভাবকে সরিয়ে ইতিবাচক একটা অনুভূতি বজায় রাখে। সেইসঙ্গে কানে এলো সেই সুমিষ্ট আওয়াজ। যে আওয়াজে ঘুম ভেঙেছিল ওর।
শামান মঠ ছেড়েছে আজ প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় আগে, অথচ এই আওয়াজ এখনো ঘুমের মাঝে শুনতে পায় ও। প্রবল ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সময়ে মনের কোণে বাজতে থাকা এই আওয়াজ শান্তি ফিরিয়ে আনে ওর মনে। এতদিন পরে সেই সুমিষ্ট শব্দ ফিরিয়ে নিয়ে আসছে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য স্মৃতি।
গেরুয়া কাপড় খণ্ডটা গায়ে ভালোভাবে জড়িয়ে মঠের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়াল শামান। পাহাড়ের গা কেটে নির্মিত এই মঠের তিব্বতি ভাষায় দেয়া নামের অর্থ শান্তির মঠ। মঠের ওপর থেকে একদিকে শত মাইলব্যাপী বিস্তৃত হিমালয়ের সারি চোখে পড়ে। অন্যদিকে তিব্বতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড়ি উপত্যকার অনেকটাই চোখে পড়ে এখান থেকে। ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে শামানের মনে পড়ে গেল এই মঠের বিস্তৃত সৌন্দর্য শত শত বছর ধরে মানুষকে বিমোহিত করে আসছে।
পাহাড়ের কিনারায় ঝুলবারান্দা ধরে হাঁটতে হাঁটতে শামানের মনে পড়ল এই মঠে শত বছরের নিয়মের ব্যতিক্রম করেছিল সেই প্রথম। ওর কারণেই এক সময় শান্তির মঠে নেমে এসেছিল অশান্তির ছায়া।
ও হাঁটতে হাঁটতে জনসম্মুখে চলে এলো। ছোটো ছোটো ছেলেরা সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে প্রাত্যহিক প্রার্থনায় অংশ গ্রহণ করছে। ওকে দেখতে পেয়ে ছেলেদের অনেকেই ফিরে তাকাল। ওর ব্যতিক্রমী চেহারা এই এলাকার মানুষের সঙ্গে একেবারেই মেলে না। আর এই ব্যতিক্রম বাচ্চাদেরকে আকর্ষণ করারই কথা। বিশেষ করে ওর কাঁধ পর্যন্ত নেমে আসা লাল চুল আর নীল চোখ খুব সহজেই আকর্ষণ সৃষ্টি করে।
প্রার্থনারত বাচ্চাদের সারি পার হয়ে ও চলে এলো মঠের আরেক ধাপ ওপরে। মঠের এই প্রান্তে নিয়মিত কঠিন শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় নবীন ছাত্রদের। শামানেরও যুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেয়া হয়েছিল এখানেই। ওর মনে পড়ে গেল ছোটোবেলায় প্রশিক্ষণের সেই সব কঠিন দিনগুলো। তবে এসব জায়গার কোনোটাই ওর প্রিয় নয়। নিজের সেই প্রিয় জায়গাটাতে যাবার জন্যে দ্রুত পা চালাল ও।
মঠের একের পর এক দোর পার হয়ে ও চলে এলো একেবারে ওপরের দোরে। এই জায়গাটা একেবারে পাহাড়ের ওপরে। কার্নিশ দিয়ে ঘেরা জায়গাটার ঠিক মাঝামাঝি বিরাট আকারের সোনালি রঙের একটা বিরাট বুদ্ধ মূর্তি। অত্যাধিক উঁচু এই মূর্তিটা আশপাশের দশ ক্রোশের ভেতরে যেকোনো জায়গা থেকে চোখে পড়ে। মূর্তিটার চারপাশে তঞ্জুরের সারি বসানো। আসতে যেতে একবার হাত বুলালেই আরেকটু কাছে পৌঁছে যাওয়া যাবে স্রষ্টার।
ওপরে উঠে শামান একটু হাঁপাতে লাগল। ছোটোবেলা থেকেই ওর যখন মন খারাপ হতো, দুঃস্বপ্ন দেখতো কিংবা নিজের মা-বাবার জন্যে মনটা হাহাকার করত—এখানে চলে আসত ও। পাহাড়ের একেবারে ওপরে এই জায়গাটাতে এসে বুদ্ধের সামনে বসলেই অশান্ত মনটা শান্ত হয়ে আসত ওর।
তবে এখানে এলে বেশির ভাগ সময় ও দেখতে পেত বুদ্ধ মূর্তির সামনে নিমগ্ন হয়ে প্রার্থনারত ডুকপা লামাকে। শান্ত সৌম্য প্রার্থনারত ডুকপা লামার পাশে গিয়ে বসে পড়ত ছোট্ট শামান। ঠিক তার মতো করে অনুকরণ করার চেষ্টা করত ও। তারপর এক সময় ঘুমিয়ে পড়ত প্রার্থনারত ডুকপা লামার কোলে। কখনো কখনো ওর সঙ্গে গল্প করত ডুকপা লামা। ওকে নানা দেশের গল্প শোনাত সে। আবারো কখনো কখনো ওকে শেখাতো ধ্যানের নিয়মাবলি, শোনাত বুদ্ধের জীবনের নানা গল্প।
আজো এখানে দৌড়ে এসে ও ভেবেছিল প্রার্থনারত ডুকপা লামাকে দেখতে পাবে কিন্তু বুদ্ধ মূর্তির সামনের ফাঁকা জায়গাটা যেন ব্যঙ্গ করল ওকে
পরনের গেরুয়া বসন সামলে, পায়ের খড়ম খুলে ও উঠে পড়ল জায়গাটাতে। সাবধানে নির্দিষ্ট আসনে বসে কিছুক্ষণ নীরবে নিশ্বাসের ব্যায়াম করল। তারপর ধ্যানের মাধ্যমে মনোযোগ স্থাপন করল নিজের মাথার তালুতে। ধীরে ধীরে নিজের মস্তিষ্কের সমস্ত শক্তি নিয়ে এলো দুই চোখের ঠিক মাঝখানে।
দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে খানিকটা মরচে পড়ে গেছে ধ্যানের পরিক্রমায়। অনেকক্ষণ চেষ্টার পর খানিকটা ধ্যনমগ্ন হয়েছে হঠাৎ সামনে বসানো তত্ত্বরগুলো থেকে ঘুর্ণনের আওয়াজ ভেসে এলো। একটু চমকে উঠে চোখ খুলল শামান। ঘুর্ণনরত তঞ্জুরগুলোর সামনে থেকে হাসিমুখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ওর ধর্মের বড়ো ভাই, লামা উপাধিপ্রাপ্ত নোরবু। আবারো হাত দিয়ে তঞ্জুরগুলোকে নাড়িয়ে দিল সে। হেসে উঠে আপন মনে মাথা নাড়ল শামান।
যদিও মঠের মানুষেরা সাধারণ মানুষদের চেয়ে অনেক বেশি সংযত হয়। এমনকি তাদের আনন্দ বা দুঃখের বহিঃপ্রকাশও এর ব্যতিক্রম নয়। তবুও নোরবুকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারল না শামান। মূর্তির পাদদেশ থেকে নিচে নেমে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল তাকে। ধরেই রাখল।
‘আরে, আস্তে,’ বলে জোরে হেসে উঠল নোরবু। তাকে আরো কিছুক্ষণ শক্ত আলিঙ্গনে নিষ্পেষিত করে অবশেষে ছাড়ল শামান। ছেড়ে দিতেই নিজের দুই হাতে ওর শক্ত দুই কাঁধ চেপে ধরল নোর
‘দেখেছো, ছেলে কত বড়ো হয়ে গেছে!’ বলে ওর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে। ছোটোখাটো নোরবুর চেয়ে শামান আরো প্রায় এক ফুট বেশি লম্বা। সময় কত দ্রুত পার হয়ে যায়, তাই না?’ বলে সে শামানকে পাশে নিয়ে চলে এলো ছাদের কিনারায়।
‘সেই দিনটার কথা আজো আমার পরিষ্কার মনে আছে। বরাবরের মতোই দ্বিবার্ষিক সফর শেষ করে ফিরে আসছিলেন ডুকপা লামা। আসার পথে পাহাড়ের ধারে জঙ্গলের কিনারায় কুড়িয়ে পায় ছোট্ট একটা ছেলেকে। অদ্ভুত নীল চোখ তার, আর লাল চুল মাথায়। শুধুই কাঁদছিল সে, কিছুই বলতে পারছিল না,’ বলে সে শামানের কাঁধ ছাড়িয়ে নেমে আসা চুলগুলো একটু নেড়ে দিল। ‘আমার পরিষ্কার মনে পড়ে, মঠে ঢোকার পর সে অবাক হয়ে দেখছিল চারপাশ আর বারবার ডুকপা লামার পেছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়ছিল,’ বলে সে হেসে উঠল। ‘কত আগের কথা, অথচ মনে হয় এইতো সেদিন
তার হাসিতে যোগ দিল শামান। ‘হ্যাঁ, প্রায় ছাব্বিশ বছর আগের কথা। মঠে আসার পরে সেই অদ্ভুত দেখতে ছেলেটার দায়িত্ব পড়ে আরেক অদ্ভুত ছেলের ওপরে, যে তখন মঠের ছোটো ছোটো ছেলেদের প্রার্থনাগুরু,’ বলে শামান আবারো হেসে উঠল নোরবুর দিকে তাকিয়ে। ‘এরপরে একদিন সেই লালচুলের অদ্ভুত ছেলেটা তার প্রতি মঠের সমস্ত ভালোবাসা আর অর্জন মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে মঠের নাম বদনাম করে পালাল, তাই না?’ শামানের চোখ সামান্য ভিজে উঠল।
শামান, আমাদের প্রত্যেকের একটা নিয়তি আছে। চাইলেও সেই নিয়তি আমারা এড়াতে পারি না। যা ঘটেছিল সেটার জন্যে মনের গহিনের অব্যক্ত যন্ত্রণাগুলোকে প্রশ্রয় না দেওয়াই ভালো। তাতে মন শান্ত থাকে, জীবন সুখের হয়,’ বলে নোরবু আবারো হেসে উঠল। ‘শামান, তোমার নাম, তোমার অর্জন সবই জানি আমরা। অন্যদের ব্যাপারে জানি না তবে আমি তোমাকে নিয়ে গর্বিত।’
‘সেটা আপনার মহানুভবতা। তবে আমি আপনাকে নিয়ে অধিক গর্বিত। আপনার লামা উপাধি পাবার খবর শুনে আমি কী যে খুশি হয়েছিলাম-বলার নয়,’ বলে শামান আবারো নোরবুর দুই হাত চেপে ধরল। ‘আচ্ছা তখন থেকে শুধু কথাই বলে যাচ্ছি। ডুকপা লামা কেমন আছেন? আমি তার সঙ্গে দেখা করার জন্যে অস্থির হয়ে আছি। সরাসরি তার ওখানে চলে যাইনি কারণ ভেবেছিলাম হয়তো তার সকালের প্রার্থনা এখনো শেষ হয়নি। কেমন আছেন উনি?’
‘তুমি কাল রাতে কখন এসে পৌঁছেছো? এখানে পৌঁছাতে কোনো কষ্ট হয়নি তো?’
নোরবুর হঠাৎ এই প্রসঙ্গ পরিবর্তন একটু অবাক করল শামানকে। ‘আমি মাঝরাতের আগে দিয়েই পৌঁছেছি,’ ডাকাতের কবল থেকে রক্ষা করা সেই গ্রাম থেকে রওনা দিয়ে দুই দিনের মাথায় শামান আর ওর দল নিজেদের ডেরায় পৌঁছায়। ওর দলের দ্বিতীয় প্রধান খোম্বুকে দলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে শামান রওনা দেয় মঠের উদ্দেশ্যে। তিনদিনের পথ দুই দিনে পাড়ি দিয়ে কাল রাতে এসে পৌছায় মঠে। মঠের ভেতরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ নিষেধ, তাই মঠের বাইরেই নিজের ঘোড়া একজন সহিসকে বুঝিয়ে দিয়ে অস্ত্র দোররক্ষীর কাছে জমা দিয়ে ও চলে আসে পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত মঠে। সেখানে পৌঁছে দেখে ছোটোবেলায় ও যে কামরাটায় থাকত সেখানেই ওর থাকার ব্যবস্থা করেছে নোরবু। যাত্রার ধকলে ক্লান্ত শামান ঘুমিয়ে যায় প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই।
‘নাহ, আমার কোনো সমস্যা হয়নি,’ বলেই ও হঠাৎ থেমে গেল। কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে। ‘যে আপনি গত প্রায় অর্ধ যুগে কোনো দিন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, সেই আপনি নিজে থেকে হঠাৎ আমাকে জরুরি তলব পাঠালেন। এরপরে এখন ডুকপা লামার কথা বলতেই আপনি প্রসঙ্গ পরিবর্তন করছেন, ব্যাপারটা কি, বলুন তো?’ দুজনে পাশাপাশি হাঁটছিল। হঠাৎ থেমে গেল শামান। ওর সঙ্গে থেমে গেছে নোরবুও।
একটা ব্যাপার খেয়াল করে তাজ্জব হয়ে গেল শামান। এই ধরনের মঠে সাধারণত যেসব ছেলেরা ছোটোবেলা থেকে দীক্ষা নিয়ে থাকে তারা সবাই তীব্র সংযম, শরীরিক কসরৎ আর মানসিক শক্তিকে বছরের পর বছর ধরে চর্চা করতে করতে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যায় কোনো সাধারণ ব্যাপারকেই এরা অন্য দশজন সাধারণ মানুষের থেকে খুব সহজেই আলাদাভাবে সামলাতে পারে। এমনকি নিজের আবেগও। সত্যি কথা বলতে এরা সবাই একেকজন মানুষ নামের যন্ত্রের মতো। সেই যন্ত্রদের কারো চোখে যখন পানি দেখা যায় তখন সেটা অবাক করার মতোই বটে। শামান জীবনে বহু অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছে কিন্তু এমন অবাক করার মতো ব্যাপার দেখেনি।
লামা নোরবুর চোখে পানি।
‘নোরবু, আপনি কাঁদছেন?’ বলে ও এক পা এগিয়ে গেল নোরবুর দিকে। ‘কেউ যদি আমাকে বলত হিমালয়ের সবচেয়ে বড়ো চূড়াটা ধসে গেছে, তাও আমি এতটা অবাক হতাম না। যতটা আপনার চোখে পানি দেখে হয়েছি। কি হয়েছে নোরবু?’
নোরবু নিজেকে সামলানোর যথাসম্ভব চেষ্টা করছে কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হয় না।
‘শামান…শামান,’ বলে সে ভেজা চোখে শামানের দিকে ফিরে তাকাল। ডুকপা লামা হারিয়ে গেছে। তাকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। একমাত্র তুমিই পারো তাকে ফিরিয়ে আনতে,’ বলে সে একটু থেমে যোগ করল। ‘যদি এরই মধ্যে তাকে মেরে ফেলা না হয়ে থাকে।