।। ব্রহ্মান্ডোৎপত্তি বিস্তারবর্ণনম্।।
।। ব্রহ্মান্ডোৎপত্তি বিস্তার বর্ণন।।
ইদানীং বিস্তরং বিভাগং রূপমৈশ্বরম্। বক্ষে কল্পানুসারেন মন্বন্তরশতানুগম্।।১।। আসীত্তমোময়ং সর্বমপ্রজ্ঞাতমলক্ষণম্। তত্র চৈকো মহানাসীদ্রুদ্রঃ পরমকারণম্।।২।। আত্মাণা স্বয়মাত্মানং সঞ্চিত্য ভগবান বিভুঃ। মনঃ সংসৃজতে পূর্বমহংকারং চ পৃষ্ঠতঃ।।৩ অহংকারাৎ প্রজানাতি মহাভূতানি পঞ্চ চ।। অষ্টো প্রকৃতয়ঃ প্রোক্তা বিকারাশ্চৈব ষোড়শ।।৪।।
এখন আমি এই বিরাট ব্রহ্মান্ডের উৎপত্তির বিস্তার বিভাগ ও ঐশ্বর রূপ বর্ণনা করবো এবং কল্পানুসারে মন্বন্তর শত’র অনুকূল চলার কথা বলব।। ১।। আরম্ভে যা সম্পূর্ণ তমোময়, অপ্রজ্ঞাত ও লক্ষণহীন ছিল। সেখানে এক মহান পরম কারণ রুদ্র ছিল।।২।।
ভগবান বিভু নিজ আত্মা থেকে নিজেকে স্বয়ং সঞ্চিত করে প্রথমে মন সৃজন করে এবং তারপর অহংকার সৃষ্টি করে।।৩।।
অহংকার থেকে পাঁচ মহাভূত উৎপন্ন করে। এইভাবে এই আট প্রকৃতির কথা বলা হয় এবং ষোড়শ বিকার বলা হয়।। ৪।।
শদ্বঃ স্পর্শশ্চ রূপং চ রসো গন্ধস্তথৈব চ। প্রাণোহপানঃ সমানশ্চোদনব্যানৌ তথৈব চ।। ৫। সত্ত্বং রজস্তমশ্চৈব গুণাঃ প্রোক্তাস্তু তে ত্ৰয়ঃ। তস্মাদ ভাগবতো ব্রহ্মা তস্মাদ বিষ্ণুরজায়ত।।৬।। ব্ৰহ্মবিষ্ণুমোহনাথং ততঃ শম্ভুস্তু তেজসা। অশরীরা বাসুদেবো হ্যনুৎপত্তিরয়োনিজঃ।।৭ ॥ ব্যামোহয়িত্বা তৎসর্বং তেজসাহমোহয়জ্জগৎ। তস্মাৎপরতং নাস্তি তস্মাৎপরতং ন হি।।৮।। ব্রহ্মা বিষ্ণুশ্চ দ্বাবেতাবুদভূতৌ ভগবৎসুতৌ। কল্পেকল্পে তু তৎসর্বং সৃজতেহসৌ জনং জগৎ।।৯।। উপসহরতে চেব নানাভূতানি সর্বশঃ। দ্বাসপ্ততিযুগান্যেব মন্বন্তর ইতি স্মৃতঃ।।১০।। চতুদর্শ তু তান্যেবং কল্প ইত্যভিধীয়তে। দিনৈকং ব্রহ্মণঃ প্রোক্তং নিশি কল্পস্তথোচ্যতে।।১১।।
শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস এবং গন্ধ তথা প্রাণ, অপান, সমান, উদান ও ব্যান হয়।। ৫।।
সত্ত্ব, রজ এবং তম যে গুণের কথা বলা হয়, সেগুলি তিনটি হয়। তা থেকে ভগবান ব্রহ্মা এবং বিষ্ণু উৎপন্নহন।।৬।।
ব্রহ্মা এবং বিষ্ণুর মোহনের জন্য এর পর তেজ থেকে শম্ভু উৎপন্ন হয়। ভগবান বাসুদেব শরীরহীন, উৎপত্তিহীন এবং অযোনিজ।।৭।।
ওদের সকলকে ব্যামোহিত করে তেজ দ্বারা এই জগৎকে মোহিত করে। ওর পর কেউ নেই এবং ওর উপর অন্যও কিছু নেই। ৮।।
ব্রহ্মা ও বিষ্ণু দু’জন এই ভগবানের পুত্র উৎভূত হয়েছিল। তা কল্প দ্বারা এই সবের জগৎ সৃষ্টি করেন।।৯।।
অনের প্রকার প্রাণীদের এবং সবের উপসংহারও করেন। বাহাত্তর যুগে এক মন্বন্তর বলা হয়।।১০।।
চৌদ্দ মন্বন্তর যখন সমাপ্ত হয় তথন এক কল্প হয়। এই কল্প ব্রহ্মার এক দিন বলা হয় এবং এই ভাবে অন্য দ্বিতীয় কল্প ব্রহ্মার রাত্রি হয়।।১১।।
এবং মাসশ্চ বর্ষঞ্চ তথা চাষ্টশতং দ্বিজাঃ। এবং বুদ্ধীন্দ্রিয়স্যাস্য বিষ্ণোশ্চ নিমিযঃ স্মৃতঃ।।১২।। ব্রহ্মাদিস্তংবপর্যন্তং নিমেষশ্চ ধ্রুবস্য বৈ। নিমেষজীবনং সর্বং সর্বং লোকচার চরম্।।১৩।। ভূলোকহথ ভূবলোকং স্বলোকশ্চ প্রকীর্তিতঃ। জনস্তাপশ্চ সত্যং চ ব্ৰহ্মলোকশ্চ সপ্তমঃ।।১৪।। পাতালং বিতলং তদ্ধি অতলং তলমেব চ। পঞ্চমং বিদ্ধি সতুলং সপ্তং চ রসাতলম্।।১৫।। এতেষু সপ্ত বিখ্যায়া অধঃপাতালবাসিনঃ। তেষামাদৌ মধ্যে চ অন্তে রুদ্রঃ প্রকীর্তিতঃ।।১৬।। এসতে জায়তে লোকান ক্রীনীর্থং তু মহেশ্বরঃ। ব্রহ্মলোকপরীপযুনাং গতিরুধ্বং প্রকীর্তিতা।।১৭।।
এইভাবে মাস এবং বছর হয়। হে দ্বিজগণ! এইভাবে আটশত হয়। এভাবে এর বুদ্ধি এবং ইন্দ্রিয় হয়। এই এত সময় ভগবান বিষ্ণুর এক নিমেষ হয়।। ১২।।
ব্রহ্মা থেকে স্তম্ব পর্যন্ত ঔ ধ্রুবের নিমেষ হয়। এই সমস্ত চরাচর লোক নিমেষ মাত্র জীবনযুক্ত হয়।।১৩।।
ভূলোক, ভুবলোক এবং স্বর্গলোক বলা হয়। জনলোক, তয়োলোক, সত্যলোক এবং সপ্তম ব্রহ্মলোক হয়।।১৪।।
নীচ লোকের নাম পাতাল, বিতল, অতল। তল, পঞ্চম, সুতল এবং ৭ম রসাতল হয়।।১৫।।
এখানে নীচে সপ্তবিধ পাতালবাসী বিখ্যাত। এর প্রথমে, মধ্যে এবং শেষে রুদ্র বলা হয়।।১৬।।
মহেশ্বর ভগবান ক্রীড়ার জন্য লোকের উৎপন্ন করেন এবং গ্রাস করেন। যে ব্রহ্মলোকের পরীঙ্গু হয় তার গতি ঊর্ধ্ব বলা হয়।।১৭।।
পৃথিবীং চান্তরিক্ষং চ দিশশ্চ বিদিশস্তথা। সমুদ্রাণাং গিরীণাং চ অধস্তিযৰ্ক প্ৰসংখ্যয়া।।১৮।।
সমুদ্রাণাং চ বিস্তারং প্রমাণং চ ততঃ শৃণু। স্থাবরাণাং চ শৈলানাং দেবানাং চ দিবৌকসাম্।।১৯।। চতুষ্পদানাং দ্বিপদাম তথা ধমৈকভাযিণাম্। সহস্রগুণমাখ্যাতং স্থাবরাণং প্রকীর্তিতম্।।২০।। সহস্রগুণশীলাশ্চ ত্যিাহ ভগবান্মুনিঃ। ঋষিস্তু প্রথমং কুর্বন প্রকৃতিং নামনামতঃ।।২১।। তস্যা ব্রহ্মা প্রকৃত্যাস্ত উৎপন্ন সহ বিষ্ণুনা। তস্মাদ বুদ্ধয়া প্রকুরুতে সৃষ্টিং নৈমিত্তিকীং দ্বিজাঃ।।২২।। তস্মাৎ স্বয়ম্ভূবো ব্রহ্মা ব্রাহ্মণান্ সমতকল্পয়ৎ। পাদহীনান ক্ষত্রিয়াংশ্চ তস্মাদ্ধীনাং স্তবৈশ্যকান্।।২৩।। চতুর্থ পাদহীণাংশ্চ আচারেষু বহিষ্কৃতাম্। পৃথিবীং চান্তরিক্ষং চ দিশশ্চৈবাপ্যকল্পয়ৎ।।২৪।।
পৃথিবী, অন্তরীক্ষ, দিক-বিদিক, সমুদ্র এবং পর্বতের প্রসংখ্যা থেকে অধঃ এবং তির্যক্ গতি হয়।। ১৮।।
এখন সমুদ্রের বিস্তার এবং এর পর ওর প্রমাণ আমার থেকে শ্রবণ করো। স্থাবর, শৈল, দেবতা এবং দিবৌকসের, চতুস্পদ, দ্বিপদের তথা ধর্মভাষীর সহস্র গুণের কথা বলা হয়েছে।।১৯-২০।।
ভগবান মুনি বলেছেন যে, সহস্র গুণশীলযুক্ত হয়। ঋষি প্রকৃতি নামক তত্ত্বকে সবার আগে করেছেন।।২১।।
ঐ প্রকৃতি থেকে বিষ্ণুর সাথে ব্রহ্মা উৎপন্নহন। হে দ্বিজগণ! ওকে বুদ্ধি দ্বারা নৈমিত্তিক সৃষ্টি করা হয়েছে।।২২।
এই স্বয়ম্ভূ থেকে ব্রহ্মা ব্রাহ্মণকে সৃষ্টি করেন। তার থেকে এক পাদ হীন ক্ষত্রিয়দের ও তার থেকে এক পাদ হীন বৈশ্যদের সৃষ্টি করেন।।২৩।।
চতুর্থপাদহীন এবং আচারে বহিষ্কৃত শূদ্রদের সৃষ্টি করেন, পৃথিবী অন্তরীক্ষ এবং দিকসমূহের কল্পনা করেন।।২৪।।
লোকলোকস্য সংস্থা চ দ্বীপানামুদধেস্তথা। সরিতাং সাগরাণাং চ তীর্থান্যায়তনানি চ।। ২৫।। মেঘস্তনিতনি ঘোষরোহিতেন্দ্রধনুংষি চ। উল্কানিঘাতকেতুংশ্চ জ্যোতীয্যায়নানি চ।।২৬।। উৎপন্নং তস্য দেহে ভূয়ঃ কালেন পীড়য়েৎ।।২৭।।
লোকালোক পর্বতের সংস্থা, দ্বীপের তথা সমুদ্রের, নদীর এবং সাগরের সংস্থাপনা করেন। তীর্থ ও আয়তন সৃষ্টি করেন।।২৫।।
মেঘ, ইন্দ্রধনু, উল্কা, নির্ঘাতকেতু এবং জ্যোতিষ্ক প্রভৃতি ওর দেহ থেকে উৎপন্ন হয় এবং আবার কাল দ্বারা পীড়িত হয়।।২৬-২৭।।