1 of 2

ব্রজবিহারী বর্মণ-কে

ব্রজবিহারী বর্মণ-কে

কৃষ্ণনগর

৯-১০-২৬

পরম স্নেহভাজনেষু –

স্নেহের ব্রজ! আজ সকাল ছটায় আমার একটি পুত্র-সন্তান হয়েছে। তোমার বউদি আপাতত ভালো আছে। আমিও আজ সকালে ফিরে এলাম যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, দৌলতপুর প্রভৃতি ঘুরে।২ টাকার বড্ড দরকার। যেমন করে পার পঁচিশটি টাকা আজই টেলিগ্রাফ মনিঅর্ডার করে পাঠাও। তুমি তো সব অবস্থা জান।৩ বলেও এসেছি তোমায়। কেবল ‘সঞ্চিতা’র প্রুফ পেলাম৪– ‘সর্বহারা’র শেষ প্রুফ কই? ‘সর্বহারা’ কখন বেরুবে? যেদিন বেরুবে অন্তত ৫০ কপি আমায় পাঠিয়ে দেবে।

ভুলো না যেন। টাকা কর্জ করেও পাঠাও। স্নেহাশিস নাও। পত্র দিয়ো। ইতি–

                            তোমার

                            কাজীদা

.

কৃষ্ণনগর

২০-১২-২৬

স্নেহের ব্রজ!

আজও আমি শয্যাগত। বড়ো যন্ত্রণা পাচ্ছি রোগের ও অন্যান্য চিন্তার জ্বালায়। চিন্তার মধ্যে অর্থ-চিন্তাটাই সবচেয়ে বড়ো। কী করে যে দিন যাচ্ছে আল্লাহ্ জানেন। তোমার প্রেরিত পনেরো টাকা পেয়েছি। পঁচিশ টাকা চেয়েছিলুম। অবশ্য, তোরাও বিপদ-আপদের কথা শুনলাম। আরও যদি পাঠাতে পার আমার এই দুর্দিনে, বড়ো উপকৃত হব। তুমি ছোটো ভাইয়ের মতো, তোমাকে বেশি কী লিখব। তোমার অন্যান্য খবর দিয়ো।’’সর্বহারা’কাটছে কেমন?

                           তোমার

                          ‘কাজীদা’

.

কলকাতা

স্নেহের ব্রজ!

এই ছেলেটির সাথে অবশ্য এসো – মিনিট কয়েকের জন্য। বিশেষ দরকার। আমি আজই একটার ট্রেনে কৃষ্ণনগর চলে যাচ্ছি। আসার পরে পরেই জ্বরে শয্যাগত, তাই দেখা করতে পারিনি।– ঘরে সব মরছে না খেয়ে – তাই এসেছিলাম টাকার জোগাড়ে। তুমি অন্তত পঁচিশটি টাকা নিয়ে আসবে এর সাথে। এখনও জ্বর ছাড়েনি। স্নেহাশিস নাও। ইতি –

                            তোমার

                            কাজীদা

.

কৃষ্ণনগর

১১.৩.২৭

স্নেহভাজনেষু –

ব্রজ! আগামী পরশু রবিবার রাত্তিরে আমার খোকার মুখেভাত দেওয়া উপলক্ষ্যে বন্ধু-বান্ধবদের আমন্ত্রণ করছি। কলকাতার ও স্থানীয় অনেক বন্ধু আসবেন। তুমি সেদিন অবশ্য এসো। না এলে দুঃখিত হব। হয় সকালের চট্টগ্রাম মেলে কিংবা দুপুর ১টা ৩৪ মিনিটের সময় Calcutta – মুর্শিদাবাদ প্যাসেঞ্জারে আসবে। এই দুটি ছাড়া আর ট্রেন নেই। এলে অন্যান্য কথা হবে।

তোমার প্রেরিত টাকা চব্বিশটা পেয়েছি। ‘ফণিমনসা’র প্রুফ পেলাম আজ। স্নেহাশিস নাও। ইতি –

                            শুভার্থী

                            নজরুল

.

কৃষ্ণনগর

২০.৪.২৭

স্নেহের বর্মণ!

আমি বড়ো বিপদে পড়িয়াছি। প্রায় প্রত্যহ slow fever আসিতেছে। গোপালের টাকা পাঠাইবার কথা ছিল। আজও টাকা পাঠাইল না। বাড়িতে একটা পয়সাও নাই।

তুমি পত্রপাঠমাত্রই অন্তত কুড়িটি টাকা T.M.O. করে পাঠাও। নইলে বড়ো মুশকিলে পড়ব। বাজার খরচের পর্যন্ত পয়সা নাই। টাকা না পাঠালে বড়ো বিপদে পড়ব। বহু দেনা করেছি, আর টাকা ধার পাওয়া যাবে না এখানে!

                            তোমার

                            কাজীদা

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *